Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও করণীয়

ডা: মাও: লোকমান হেকিম | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ডেঙ্গু এখন আতঙ্কের নাম। কারণ প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী ভর্তি হচ্ছে নানা হাসপাতালে এই রোগের লক্ষণ নিয়ে। যে কোনো কারণেই হোক, এবার মশা নিধন বা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফলতার মুখ দেখেনি। ডেঙ্গু রোগের সাধারণ লক্ষণ যেসব থাকে তা অন্য ভাইরাস রোগের মতোই। অনেকেই তাই নিজ উদ্যোগে চিকিৎসা নিয়েছে এত দিন। কিন্তু এবার ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ পাল্টেছে। ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত একটি জ্বর। ডেঙ্গুর তেমন কার্যকরী প্রতিষেধক নেই। এ থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে একে প্রতিরোধ করা। তাই ডেঙ্গু জ্বর সচেতনতা সম্পর্কে আলোকপাত করছি। 

ডেঙ্গু কি? ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত একটি জ্বর। এডিস মশাবাহিত ৪ ধরণের ভাইরাসের যে কোনও একটির সংক্রমণে যে অসুস্থতা হয় সেটাই ডেঙ্গু। এর সাধারণত দু’টো ধরণ রয়েছে। এক. ক্লিনিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর। দুই. হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর বা হেমোরেজিক ফিভার। শেষেরটাই সবচেয়ে মারাত্মক হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস ঃ- ভাইরাসজনিত এই রোগের এখনও কোনো প্রতিষেধক নেই। লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে এর মোকাবিলা করা হয়। অন্য ভাইরাল ফিভারের মতো এটিও আপনা-আপনিই সেরে যায় সাত দিনের মধ্যে। তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর ভয়াবহ হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ঃ- হঠাৎ করে জ্বর। কপালে, গায়ে ব্যথা। চোখে ব্যথা, চোখ নাড়ালে এদিকে ওদিকে তাকালে ব্যথা। দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া। পায়খানার সঙ্গে রক্ত অথবা কালো কিংবা লালচে কালো রঙের পায়খানা এমনকি প্রস্রাবের সঙ্গেও অনেক সময় রক্ত যেতে পারে ।
ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার খুবই মারাত্মক। এতে মস্তিস্কেও রক্তক্ষরণ হতে পারে।
*শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে ১০৪ ডিগ্রি-১০৬ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। *গলা ব্যথা, চরম অবসন্নতা এবং বিষাদগ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। *অরুচি, বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। *রোগীর চোখ লাল হতে পারে এবং ত্বকও লাল হতে পারে। *জ্বর ৩-৭ দিন স্থায়ী হয়।
*শরীরের চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ হয়। *সাধারণত জ্বর শুরু হওয়ার ৩-৪ দিন পর থেকে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ জনিত উপসর্গ দেখা যায় ত্বকে।
চিকিৎসা : সত্যিকার অর্থে ডেঙ্গুর সুনির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। উপসর্গ অনুযায়ী রোগের চিকিৎসা করা হয়। বেশির ভাগ ডেঙ্গু জ্বরই সাতদিনের মধ্যে সেরে যায়, অধিকাংশই মারাত্মক হয় না। প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে পানি, বিশ্রাম এবং প্রচুর তরলখাবার। সঙ্গে জ্বর কমানোর জন্য কোন মতেই প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ নয়। সাধারণ ডেঙ্গুর চিকিৎসা এই। তবে ব্যথানাশক ওষুধ হিসেবে এসপিরিন বা ক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ দেওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে। হেমোরেজিক বা রক্তক্ষয়ী ডেঙ্গু (যা খুবই কম হয়ে থাকে) বেশি মারাত্মক। এতে মৃত্যুও হতে পারে। জ্বর, সঙ্গে রক্তক্ষরণের লক্ষণ দেখামাত্র হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে বিশেষ চিকিৎসার জন্য। জ্বর কমানোর জন্য বারবার গা মোছাতে হবে ভেজা কাপড় দিয়ে। হেমোরেজিক ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি। এক্ষেত্রে রোগীকে শিরাপথে সেলাইন, প্রয়োজনে রক্তের প্লাটিলেট ট্রান্সফিউশন করতে হবে।
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীকে মশারির মধ্যে রাখা শ্রেয়। কারণ এসব রোগীকে কোনও স্বাভাবিক এডিস মশা কামড় দিলে সেই মশাটিও ডেঙ্গুর জীবাণু বাহক হয়ে পড়বে এবং তখন মশাটি সুস্থ কোনও ব্যক্তিকে কামড় দিলে সুস্থ ব্যক্তিটিও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে। বিশেষ করে, ডেঙ্গুর রুগিকে ২.৫ থেকে ৩.৫ লিটার তরল খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এটিই ডেঙ্গুর আসল চিকিৎসা। না খেতে পারলে স্যালাইন দিতে হবে।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা : ডেঙ্গু মশা, মানে এডিস মশা সকাল-সন্ধ্যা কামড়ায়। অর্থাৎ ভোরে সূর্যোদয়ের আধাঘন্টার মধ্যে এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের আধাঘন্টা আগে এডিস মশা কামড়াতে পছন্দ করে। সুতরাং এই দুই সময়ে মশার কামড় থেকে সাবধান থাকতে হবে। সেই সাথে এডিস মশা নির্মূল করে ডেঙ্গুকে প্রতিহত করা যায়। যেসব স্থানে এডিস মশা বাস করে সেই সব স্থানের এডিস মশার আবাস ধ্বংস করে দিতে হবে। তাই দিনের বেলা ঘরে যাতে মশা ঢুকতে না পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। জমে থাকা পানিতে এরা বংশ বিস্তার করে। ফুলের টব, কৃত্রিম পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, গাছের কোঠর, বাঁশের গোড়ার কোঠর, ডাবের খোসা, বাসার ছাদ প্রভৃতি স্থানে জমে থাকা পানিতে এদের বংশ বিস্তার ঘটে বলে সেখানটায় মশা নিধক ওষুধ ছিটিয়ে দিতে হবে। আর এভাবেই সম্ভব ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা। বাড়ির আশপাশের নদর্মা ও আবদ্ধ জলাশয়ে ওষুধ ছিটিয়ে মশা মারতে হবে। ঝোপঝাড় পরিস্কার করতে হবে। সর্বোপরি জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মশা ধ্বংসের মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই দিনে ঘুমানোর সময়ও মশারী ব্যবহার করুন এবং ডেঙ্গু জ্বরের কবল থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।

চিকিৎসক-কলামিস্ট, মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০



 

Show all comments
  • anwar hossain ৪ মে, ২০২০, ১০:৫৪ পিএম says : 0
    amr babar jor 103. ga kamrai jor komse na
    Total Reply(0) Reply
  • মো: আব্দুস সামাদ ২৯ জুলাই, ২০২১, ৮:১২ পিএম says : 0
    ধন্যবাদ চমৎকার উপস্থাপনার জন্য।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->