Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভেঙে পড়বে টাওয়ার!

মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘কেইসি’র পুকুর চুরি স্বল্প গভীরতার পাইলে টাওয়ার স্থাপন পিআইটি-কিউব টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট অনুসন্ধানে দুদকের লুকোচুরি

সাঈদ আহমেদ | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনে পুকুর চুরি করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’। কম গভীরতায় ৪শ’ কিলোভোল্টের (৪০০ কেভি) টাওয়ার স্থাপন করে তুলে নিয়েছে শত শত কোটি টাকার বিল। বিপরীতে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনকে ঠেলে দেয়া হয়েছে ভয়াবহ ঝুঁকিতে। কম গভীরতায় স্থাপিত টাওয়ারগুলোর লোড ক্যাপাসিটি কম। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সামান্য কারণেই যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে টাওয়ার। দুর্ঘটনাবশত ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে জাতীয় গ্রিডে, যা জাতীয় গ্রিডকে ফেলবে ভয়াবহ ঝুঁকিতে। তবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বৃহৎ এই দুর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ’ (পিজিসিবি)-এর সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)ও বিষয়টি নিয়ে করছে এক ধরনের লুকোচুরি। তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রের।

পিজিসিবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে এ থেকে ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রকল্প চালুর লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়েছে দীর্ঘ সঞ্চালন লাইন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)’ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেইসিকে দিয়ে সঞ্চালন লাইন স্থাপন করেছে। শত ভাগ বিদ্যুতায়িত এই দেশে এখন অন্তত ১৩ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের দৈর্ঘ্য ৬ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে পিজিসিবি কাজ করছে।

গত ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। ১৭টি প্রকল্প এখন চলমান। বাস্তবায়িত প্রকল্পের মধ্যে পিজিবি’র বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে ‘মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট (২)’র ‘মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন’। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হয়েছে চলতি বছর জুনে। সঞ্চালন লাইনটির দৈর্ঘ্য ৯২ কিলোমিটার। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৯৫ কোটি টাকা। জাইকা এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নের প্রকল্প এটি। ইতোমধ্যেই সঞ্চালন লাইন পিজিসিবির কাছে হস্তান্তর করেছে কেইসি। তবে এখনও এতে বিদ্যুৎ সঞ্চার করা হয়নি। এ পরিস্থিতে সঞ্চালন লাইন স্থাপনে উঠেছে পুকুর চুরির অভিযোগ।

সূত্রটি জানায়, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ পায় ভারতের ট্রান্সমিশন টাওয়ার প্রস্তুতকারী কোম্পানি ‘কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটি নিজেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান বলে দাবি করে। মাতারবাড়ী-চট্টগ্রাম মদুনাঘাট পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপনে উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবেই কার্যাদেশ পায় প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৪শ’ কেভি লাইন স্থাপনে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করে পিজিসিবি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে তৎকালীন কোম্পানি সচিব মো. আশরাফ হোসেন এবং কেইসি’র পক্ষে কান্ট্রি হেড ও মহাব্যবস্থাপক কুলদ্বীপ কুমার সিনহা (কে কে সিনহা) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী ৩০ মাসের মধ্যে টার্নকি পদ্ধতিতে কাজটি শেষ করে পিজিসিবি’র কাছে হস্তান্তর করার কথা। সঞ্চালন লাইনটি মদুনাঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট পর্যন্ত নির্মাণাধীন ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। লাইনটি চালু হলে বিদ্যুতের সিস্টেম লস হ্রাস পাবে। কারিগরি জটিলতাও অনেকাংশে কমবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ভবিষ্যতে যেন বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা যায়, সে লক্ষ্যে মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইনে উচ্চতর প্রযুক্তি এবং কন্ডাক্টর (তার) ব্যবহৃত হয়েছে। যার মাধ্যমে ২৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন সম্ভব।

সূত্রমতে, মাতারবাড়ী থেকে চট্টগ্রামের মদুনাঘাট পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনটি টানা হয়েছে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, মহেশখালী, চকোরিয়া এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, পটিয়া ও রাউজান উপজেলার ওপর দিয়ে। ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ সঞ্চালন লাইন টানতে স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন উচ্চতার অন্তত সাড়ে ৩শ’ টাওয়ার। টাওয়ার স্থাপনকালে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কেইসি ইন্টারন্যাশনালের প্রজেক্ট ম্যানেজার ভরত রাজ নিজেদের অত্যন্ত অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান, পর্যাপ্ত জনবল এবং বিপুল যান্ত্রিক কাঠামো রয়েছে বলে দাবি করেন। দুর্নীতি যাতে কেউ ধরতে না পারে, পাইলিংয়ের মাপ পরীক্ষার জন্য পিজিসিবি অনুসরণ করে পিআইটি (পাইল ইন্টিগ্রিটি টেস্ট) পদ্ধতি। বিদ্যুৎ সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতিতে গভীরতা নিরূপণের পরীক্ষার ক্ষেত্রে কারসাজি করা সম্ভব (ডিজিটাল চুরি)। নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি পিএসআইটি (প্যারালাল সিসমিক ইনস্ট্রুমেন্টাল টেস্ট) পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে প্রতিটি পাইলিংয়ের প্রকৃত গভীরতা জানা সম্ভব ছিল। এ অবস্থায় পাইলিংয়ে চুরির কারণে টাওয়ার স্থাপনাটিও ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ফোর লেগের (৪-পাবিশিষ্ট) প্রতিটি টাওয়ার স্থাপনে ভূগর্ভে বিভিন্ন গভীরতার পাইল করতে হয়। একেকটি ‘লেগ’ স্থাপনে মাটির অবস্থাভেদে ৪ থেকে ৫টি পাইল করার কথা। স্থাপত্য নকশায় পাইলগুলোর গভীরতা স্থানভেদে ২২ থেকে ২৮ মিটার উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে পাইল করা হয়েছে ১২ থেকে ১৬ মিটার গভীরতায়। অর্থাৎ নকশার চেয়ে অন্তত অর্ধেক গভীর পাইল করা হয়েছে। মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকবে ভেবে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। এতে এমনিতেই সব ধরনের খরচ অর্ধেক কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাইলিংয়ে ১০ মিলি, ১২ মিলি এবং ১৬ মিলি রড ব্যবহৃত হয়। পাইলের গভীরতা কম হওয়ায় রডের খাঁচা (কেস)গুলো তৈরি করা হয়েছে ছোট। সিমেন্ট, বালুও ব্যবহার হয়েছে কম। এতে পাইলিংয়ের খরচ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইনের একেকটি টাওয়ারের ওজন উচ্চতাভেদে ৪০ থেকে ৬০ টন। কিন্তু কম গভীরতার পাইলিংয়ের কারণে এই প্রকল্পে স্থাপিত টাওয়ারগুলোর লোড ক্যাপাসিটি অত্যন্ত কম। তারা মনে করেন, বুয়েট কিংবা আন্তর্জাতিক মানের কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে পরীক্ষা করলেই অভিযোগের সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, টাওয়ারের গোড়ায় পাইলিং কম করা হলেও ঠিকাদার তুলে নিয়েছেন ৯০ ভাগ অর্থ। এ ক্ষেত্রেও আশ্রয় নেয়া হয়েছে ভয়াবহ জালিয়াতির। পাইলিংয়ের পর লোড ক্যাপাসিটি টেস্ট করা হয়। ৭ দিনের মাথায় ‘কিউব টেস্ট’ এবং ২৮ দিনের মাথায় পাইল ইন্টিগ্রিটি টেস্ট (পিআইটি) করা হয়। এ দু’টি টেস্ট সরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরিতে করার কথা। টেস্ট রিপোর্ট যথাযথ হলেই ঠিকাদারের প্রাপ্য বিলের অর্থ ছাড় করা হয়। কিন্তু মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইনের টাওয়ারের স্থাপনের ক্ষেত্রে পাইলিংয়ের বিল তুলে নেয়া হয় ভুয়া টেস্ট রিপোর্টের ভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে কখনও চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কখনও চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের সিল-স্বাক্ষর জাল করা হয়।

মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট প্রকল্পে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)ও করছে এক ধরনের লুকোচুরি। সংস্থাটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের একজন উপ-সহকারী পরিচালক জানান, অভিযোগটির প্রাথমিক অনুসন্ধান করেন তিনি। এ প্রক্রিয়ায় তিনি প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন সেগুনবাগিচাস্থ প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। তবে প্রধান কার্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বিষয়টি অনুসন্ধানের কথা স্বীকার করেননি। সংস্থার সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই।

খেলছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটি অনুসন্ধানের কোনো সুপারিশ না পাঠিয়ে লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছে। বিষয়টির সত্যতা ‘খতিয়ে’ দেখার নামে উল্টো পিজিসিকেই চিঠি দিয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছেÑ জানতে চাওয়া হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে পিজিসিবি বুয়েটকে দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের লোড টেস্টের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে এ বুয়েটের সঙ্গে বৈঠক করতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পিজিসিবি। তবে বিষয়টি ‘নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ’ রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

পিজিসিবির মহাব্যবস্থাপক (পিএন্ডএ) অতিরিক্ত দায়িত্ব রূপক মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ জায়েদী স্বাক্ষরিত চিঠির তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ আগস্ট ৭ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলাধীন মাতারবাড়ী থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইনের পাইলিং কম গভীরতায় ও নিম্নমানের ম্যাটেরিয়ালস ব্যবহার করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিরপেক্ষ প্রকৌশলী কর্তৃক তদন্তের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বরাবর প্রেরিত কার্যাদেশের প্রেক্ষিতে উক্ত প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত প্রস্তাব সুস্পষ্টকরণের নিমিত্ত একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করা হলো।

পিজিসিবি’র প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মোনায়েম চৌধুরীকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেনÑ প্রধান প্রকৌশলী (প্রকল্প মনিটরিং) এ কে এম গাউছ মহীউদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল ডিজাইন) মো. দেলোয়ার হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (জিটুজি প্রকল্প) মো. এনামুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প, অর্থ) তানভীর আহমেদ এবং টেপসকো লি: এবং এনকে লি:-এর একজন প্রতিনিধি। কমিটির কার্যক্রম বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী মো: আব্দুল মোনায়েম চৌধুরী এ প্রতিবেদকে বলেন, আমরা বুয়েটের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা বিষয়টি নিযে কি করছি তা ইতোমধ্যেই দুদককে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বুয়েট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাপূর্বক সুস্পষ্ট প্রস্তাব গ্রহণ করাই হচ্ছে এ কমিটির দায়িত্ব। কমিটি ৭ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন পেশ করবে।

এদিকে, ৭ সদস্যের এই কমিটির অন্তত ৩ জনই সঞ্চালন লাইন স্থাপন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত মর্মে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খান স্বল্প গভীরতায় পাইলিংয়ের বিষয়টি অবগত। লাইন স্থাপনকালে সাইটের দায়িত্বে ছিলেন পিজিসিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা। ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট গ্রহণ করার মাধ্যমে সাব-কন্ট্রাক্টরদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভুয়া টেস্ট রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকৌশলী পলাশ এবং ইসমাইল গাজীও হাতিয়ে নেন বিপুল অর্থ।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল রানা বলেন, আমি ওই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলাম মাত্র দেড় বছর। ওখানে জাইকার কনসালট্যান্টরা সার্বক্ষণিক সুপারভিশনে ছিলেন। আর্থিক ক্ষমতাও ছিল তাদের হাতে। টাওয়ার স্থাপনে পাইল কম হওয়া এবং লোড ক্যাপাসিটি কম হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। টাওয়ার ভেঙে পড়লে সেটি সঙ্গে সঙ্গেই ঘটতো। লোড কম হলে টাওয়ার হেলে পড়ত। ক্যাবলগুলোই কানেকশন দেয়া যেত না। আগামী ৫০ বছরের বিষয় মাথায় রেখেই টাওয়ার বসানো হয়েছে। এগুলোর কিছুই হবে না!

সঞ্চালন লাইন স্থাপন দুর্নীতির সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এনামুল হকের সংশ্লিষ্টতারও অভিযোগ রয়েছে। সাব-কন্ট্রাক্টরদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেয়া ছাড়া কাজ করতে দিতেন না বলে জানা যায়। পিজিসিবি’র একাধিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী এখন নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক।
তবে অভিযোগের বিষয়ে এনামুল হক বলেন, সাংবাদিকরা তো কত রকম অভিযোগই করেন! তাদের কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দিই। এসব অভিযোগের কোনো গুরুত্ব দিই না। ‘প্রকৃত তথ্য’ জানতে তিনি প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খানের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

এদিকে কেইসি’র পুকুর চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গত ২৯ সেপ্টেম্বর) মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে জাইকার অর্থে। এখানে জাইকার সুপারভিশন ছিল। এখানে এমন কিছু ঘটার কোনো সুযোগ নেই। দুর্নীতির সঙ্গে পিজিসিবির প্রকৌশলী-কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রশ্নে তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের দেয়া চিঠির ভিত্তিতে আমরা বুয়েটকে পাইল পরীক্ষার অনুরোধ জানিয়েছি। অভিযোগটি প্রমাণ সাপেক্ষ। সত্যতা কতখানি আছে সেটি বলা যাবে টেস্ট রিপোর্ট পাওয়ার পর।



 

Show all comments
  • মোঃ লুতফে জামাল ২৮ অক্টোবর, ২০২২, ৭:০০ এএম says : 0
    বিষয়টা জটিল। আমার মতো অল্প শিক্ষিত লোকের পক্ষে বোঝা কষ্ট কর।তবুও মনে করি যে দেশে কর্মক্ষেত্রে ভালো মানুষের বড়ই অভাব সে ক্ষেত্রে কথা যখন উঠেছে একটু পুনঃ পরীক্ষা করে দেখলে দোষ কোথায়? ভবিষ্যতে সমস্যা হলে ভালো মন্দ সবাইকে ইতো কষ্ট পেতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎ

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩
১৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->