Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.

| প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান
১৯৬৮-এর শেষের দিকে কোন একদিনের মধ্যাহ্নে ঐতিহ্যবাহী জামেয়া কুরআনিয়ায় দাওরায়ে হাদীছে ভর্তি হলাম। দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছিলাম, আল্লাহর ওলি হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর কথা। তাই কখন কোথায় দেখা হবে অপেক্ষায় ছিলাম। অবশেষে দেখলাম যে, আছরের নামাজ শেষে শাহী মসজিদ থেকে অতি শান্তভাবে ধীরগতিতে বেরিয়ে যাচ্ছেন এক বৃদ্ধ। বৃদ্ধের নতদৃষ্টি ও চলনভঙ্গি দেখেই আন্দাজ করলাম যে, তিনিই হয়ত আমার কাক্সিক্ষত মুরব্বী হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.। কিন্তু তবু তার পশ্চাদানুসারী এক ভক্তকে জিজ্ঞাসা করে নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে, হ্যাঁ তিনিই হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.। আমি পিছু ছুটলাম। ঐতিহাসিক শাহী মসজিদের পুরানো মিনারের ছোট কামরায় গিয়ে তিনি ঢুকলেন। কামরাটির আয়তন, তার বিছানা-পত্র ও তৈজষপত্র দেখে ভাবলাম, পীর সাহেবের এই দশা? কী শুনেছি আর কী দেখছি। ছোবহানাল্লাহ! নাই কোন খাট-পালঙ্ক, নাই দর্শনীয় কোন বেশ-ভূষা, নাই সারি সারি প্লেট-গøাসের সমাহার। আছে শুধু একটি চাটাই, দুঁটি বালিশ, একটি মাটির কলস, দুটি পেয়ালা, একটি গøাস এবং রশিতে ঝুলানো এক জোড়া পাজামা-পাঞ্জাবি। দৃশ্যটা দেখে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম, আলহামদুলিল্লাহ। জীবনের শুরু থেকে শুনে আসছিলাম ওলী-দরবেশদের কথা, তাদের অলৌকিক কীর্তির কথা। কিন্তু কখনো দেখিনি। আজ বুঝি দেখছি এবং দেখবো। তাই মনে সংকল্প বেঁধে নিলাম যে, কমছে কম একটি বছর তো হাদীসের অধ্যায়ে আছি। এ সুবাদে কাছে থেকে দেখতে পাব।
দু’একদিন যেতে না যেতেই হাদীসের ক্লাস শুরু হয়ে গেল, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের ভাগ্যে পড়লো তার ৩টি ক্লাস। প্রথমেই চললো নাসায়ী শরীফ। প্রতিদিন বাদ ফরজ তিনি ক্লাসে আসেন এবং দুরূদ শুরু করেন। হাদীসের বিধি অনুযায়ী ছাত্ররা পড়তে থাকে আর তিনি শুনতে থাকেন, কিন্তু আশ্চর্য্য যে, তিনি চোখ বন্ধ করে শুনতেন, ছাত্রের ভুল হলেই ঠক করে ধরে ফেলতেন। এতে স্বাভাবিকভাবেই তার এলমের গভীরতা আমার মনে রেখাপাত করে। আমার মনের অজান্তেই আমি তার খাদেম হয়ে যাই এবং দীর্ঘ একটি বছর তার খেদমতে অতিবাহিত করি। এতে তার বহু কারামত দেখার ও শোনার সৌভাগ্য লাভ করি। দেখেছি, তিনি যার মাথায় হাত বুলাতেন, সে প্রতিকুল পরিবেশে থেকেও দ্বীনের হেদায়েত পেয়ে যেত। যার চিবুকে হাত রাখতেন, সে মুসলমানের মনোগ্রাম দাঁড়ি ধারণ করে ফেলত। যার জন্যে দোয়া করতেন, সে দোয়া আজ হোক, কাল হোক কবুল হয়েই যেত। এমনকি ফাঁসির কাষ্ঠে প্রায় ঝুলন্ত নিরাপরাধ ব্যক্তিও মুক্তি পেয়ে গেছে। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত মুমূর্ষ রোগীও সুস্থ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, বরং তার দোয়ার বরকতে নদী পর্যন্ত ভাঙ্গন ছেড়ে দিয়েছে।
এজন্যই শত্রæ মিত্র নির্বিশেষে সবাই তার কাছে দোয়ার দরখাস্ত করত। একটু ফুঁক, একটু পানি পড়ার জন্যে লাইন ধরত তার দরবারে। স্মরণ পড়ে, সায়্যেদুল মুরসালীন হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা। তার নীতিতে অনেকেই বিশ্বাসী ছিল না, কিন্তু তার চরিত্র মাধুর্যে মুগ্ধ ছিল সবাই। ফলে আল আমীন উপাধি দিয়েছিল তারা। নিজেদের মাল তার কাছে আমানত রাখতো, সুষ্ঠু বিচারের প্রত্যাশায় তার কাছে দৌড়ে যেত। অনুরূপ সেই নবীর এক উম্মত সুন্নাতের মূর্ত প্রতীক হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)কে দেখেছি যে, তার নীতি গ্রহণে অনেকেই অপারগ বা অনেকেই বা সমালোচক বা অনেকেই তার থেকে পলাতক, কিন্তু তিনি যে আল্লাহর ওলী এতে সবাই একমত।
দেখেছি, সে ওলীর সংস্পর্শে এসে অনেক তুচ্ছ মানুষ লোকসমাজে সম্মানিত ও বরণীয় হয়েছেন। অপর দিকে যারা তাঁর আড়ষ্টতা কুঁড়িয়েছেন, তারা বহু বড় ক্ষমতাবান বা ব্যক্তিত্ববান হয়েও নিগৃহীত, অপমানিত, অসম্মানিত হয়ে গেছেন। যেন মনে হয়, হযরত বেলালে হাবশী রাযিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ও জনৈক কাতেবে ওহীর মহড়া এখানে দৃশ্যশান। এটার কারণ একটাই যে, তিনি যে আল্লাহর ওলী, তাই ওলীর পক্ষে খোদ আল্লাহই পুরস্কার দেন এবং প্রতিশোধ নেন। যেমন আল্লাহর কোরআন কাউকে উপরে উঠায় আর কাউকে নীচে নামায়।
হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. নিজেও কোরআনের দ্বারাই উপরে উঠে নেতৃত্বে আসীন হয়েছিলেন। দেখেছি, তিনিই একমাত্র নেতা যিনি কোন দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় না থেকেও মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে দু’দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা চালিয়েছিলেন এবং কথায় উভয়পক্ষকে জব্দও করে ফেলেছিলেন। এর কারণও এটাই যে, তিনি ছিলেন হযরত সাহাবায়ে কেরামের (রাযিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) চরিত্রে চরিত্রবান। সাহাবায়ে কেরাম যেমনিভাবে দিনের বেলায় অশ্বারোহী এবং রাত্রিভাগে বৈরাগী ছিলেন, ফলে তাদের প্রভাবে সারা বিশ্বই তখন প্রকম্পিত হতো, তদ্রƒপ হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. দিবসে মুজহিদ বেশে দেশের আনাচে-কানাচে, মাঠে-ময়দানে, গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, শহরে-বন্দরে চষে বেড়াতেন। আর রজনীতে আল্লাহর দুয়ারে কান্নাকাটিতে নিমজ্জিত হয়ে যেতেন। আশ্চর্য হয়ে দেখেছি, এতসব মেহনতের পরেও কোনদিন তার কোন আমল বাদ পড়েনি, না নামাজ, না রোজা, না তেলাওয়াত, না যিকির আর না নফল এবাদত বন্দেগী। এভাবে তার কথা ও কাজের সামঞ্জস্য, সকল কাজে নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ানুবর্তীতা তাকে প্রতিভাবান করে তুলেছিল। এ প্রতিভার ফলে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তাকে তখন মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়েছিল।
যুগ যুগ ধরে রাজনীতি করে আসছেন অনেক রাজনীতিবিদ, কিন্তু ৮১’র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে খানকাহ থেকে খানকাহসহ রাজনীতি ময়দানে এসে ৬০ জন প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিকে হারিয়ে একেবারে তৃতীয় স্থানে আরোহণ করলেন। নির্বাচনোত্তর সকলকে অপরাধী হিসেবে দায়ী করে তওবার রাজনীতি প্রবর্তন করলেন, গঠন করলেন মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য সফল করার এক প্লাটফর্ম খেলাফত আন্দোলন। অতীতের ঘুণে ধরা সমাজ ভেঙ্গে দুর্নীতি, দুরাচার, জুলুম, শোষণ, উচ্ছেদ করে অনাবিল শান্তির দেশ গড়ার আহŸান জানালেন। মানবরচিত তন্ত্র, মন্ত্র এবং অবৈধ ও অনৈসলামিক শাসন পদ্ধতি পরিহার করে খেলাফত পদ্ধতির সরকার গঠনের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম তিনিই কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সামরিক প্রশাসনকে চাপ দিলেন। সামরিক প্রশাসক বেদিশা হয়ে তাকে করলো গৃহবন্দী। তার সন্তানদের করলো জেলবন্দী। কিন্তু তাকে গৃহবন্দী করে রাখতে পারেনি সামরিক জান্তা। লালবাগ মাদরাসায় তিনি অবরুদ্ধ, চতুর্দিকে লাল-সাদা পুলিশে গিজ গিজ করছে, মনে হচ্ছিল যেন একটা সুঁইও বের হতে পারবে না, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো খাদেম ও আমাকে সাথে নিয়ে লাঠি হাতে চললেন তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাব উদ্দেশ্যে। সকলের নাকের ডগায় সদর দরজা পেরিয়ে বের হয়ে গেলেন, কেউ টের পেল না। কারণ তিনি যে ছিলেন নবী মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাঁটি অনুসারী। কুতুব ও মুজাদ্দিদের পথ উন্মুক্ত। তাই হিজরতের রাতে যেমন হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেরদের বেষ্টনী ভেদ করে মদীনা অভিমুখে রওয়ানা হয়ে গিয়েছিলেন, সেই সুন্নাতেরই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন তিনি মুজাদ্দিদ হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. আমাদের চোখের সামনে। দেখলাম আমাদের চোখে সেই সামরিক জান্তাকে, যিনি ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্যে এতকিছু করলেন কিন্তু শেষ অবধি তার তখত তাউস নড়বড়ে হয়ে গেল। পরিশেষে তাকে অত্যন্ত শোচনীয়ভাবে বিদায়ই নিয়ে যেতে হলো।
কিন্তু হুজুর নিজে তার সম্পর্কে কোনদিন কোন অশালীন মন্তব্য বা বক্তব্য রাখেননি। অবশেষে তিনি তার ছেলের মত ভক্ত হয়ে গেলেন। অনুরূপভাবে তার এ আদর্শ রাজনীতির ধারা দেখে অনেক রাজনীতিক, কূটনীতিক ও বিশ্লেষক বিমোহিত হয়েছিলেন। দলপতিরা শ্রদ্ধায় নুয়ে পড়েছিলেন। কারণ, তিনি সকলেরই কল্যাণ চাইতেন, কারো অমঙ্গল দেখলে যেন তিনি বরদাস্তই করতে পারতেন না, তাই তিনি রাষ্ট্রপ্রধানদের পত্র দিয়ে নছিহত ও সতর্ক করতেন।
দেখেছি, এ কথার কেউ প্রতিবাদ করেননি। কারণ তারা জানতেন যে, হাফেজ্জী হুজুর যা বলেছেন তা তাদের মঙ্গলের জন্যই বলেছেন। হাফেজ্জী হুজুর নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু বলেননি। বস্তুত তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য নয়; বরং নিজেকে কুরবান করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন তৈরি করে গেছেন। আধুনিক জগতের মতো নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য দল, আন্দোলন বা ইসলাম চর্চা করেননি।
তাই তিনি মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে জ্বালাও, পোড়াও ভাংচুর, লংমার্চ, হরতাল, মানববন্ধন ইত্যাদির কোনটাই করেননি। বরঞ্চ একটা মানুষের খবর পেলে তিনি ব্যাকুল হয়ে যেতেন। একবার জগন্নাথ হলে কিছু হিন্দু ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যুতে কেঁদে বিভোর হয়ে গিয়েছিলেন, মানুষের মায়া মমতা ভালবাসা তার মধ্যে ছিল অকৃত্রিম, অকপট। এমন নেতা খুঁজে পাওয়া যাবে কি আর? ১৯৬৮ সন থেকে দেখা আমার হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. কত কিছু দেখা, কত কি মনে গাঁথা, কিন্তু এ ক্ষুদ্র কলেবরে কী করে লেখা যাবে। তিনি যে ছিলেন এক বিশাল ইতিহাস। তার ঈমান, তার নামাজ, তার রোযা, তার হজ্জ, তার বদান্যতা, তার জিহাদ, তার শিক্ষা বিস্তার, তার জনসেবা, তার নিয়ম-নীতি, তার আচার-আচরণ, তার অভ্যাস ও আমল, তার আধ্যাত্মিক সাধনা এবং তার রাজনীতি প্রতিটির জন্য প্রয়োজন এক একটি ভলিয়ম। তাই আর লেখা গেল না। তিনি ১৪০৭ হিজরির ৮ রমযান ইহকাল ত্যাগ করেন। পরের দিন ৯ রমযান শুক্রবার তার জানায়ায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পঙ্গপালের মত মানুষ ছুটে এসেছে। এসেছে সাধারণ, অসাধারণ, ছাত্র, শিক্ষক, রাজনীতিক, সাহিত্যক, সাংবাদিক, দেশি-বিদেশি, সরকারি, বেসরকারি জাতীয় নেতৃবৃন্দ। জাতীয় ইদগাহ থেকে বাইতুল মোকাররম পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য, খড়খড়ে রৌদ্রে সব মানুষ অতিষ্ঠ, কিন্তু যেই মাত্র হাফেজ্জী হুজুরের কফিন এসে পৌঁছল, সমস্ত মাঠ ছায়াবৃত্ত হয়ে গেল, সুশীতল বাতাস বয়ে যেতে লাগল। আরো অনেকে দেখেছেন আকাশ থেকে যেন ফুলের মত কিছু পড়ছে। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহু আকবার।
সবাই সেদিন একই কথা বলেছিলেন, হাফেজ্জী হুজুরের রাজনৈতিক দর্শনই সঠিক এবং এটাই মুক্তির পথ। বলতে গেলে সেদিন সাবেক প্রেসিডেন্ট আবু সাঈদ চৌধুরী ও প্রেসিডেন্ট এরশাদ এবং ধর্মমন্ত্রী মাওলানা আব্দুল মান্নান রহ. সহ সবাই যেন হাফেজ্জী হুজুরের লাশকে সামনে রেখে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়েছিলেন।
লেখক : আমীরে শরীয়ত, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হযরত

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->