গণহত্যার দায় স্বীকার করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে : ছাত্র ফেডারেশন
২৯ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম
রাস্তাঘাটে মোবাইল ফোন চেক করে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, এসকল ঘটনা কেবল একটি দিকেরই নির্দেশ করে। আর তা হচ্ছে সরকার প্রচ- রকমের নার্ভাস। এসব করে প্রধানমন্ত্রীর গদি রক্ষা হবেনা। শিক্ষার্থীদের রক্তের হিসেব তাদের ক্ষমতা দিয়েই দিতে হবে। এরপর গণহত্যার দায়ে তাদের বিচার হবে। সাথেসাথে যে সকল রাষ্ট্রীয় বাহিনী সাধারণ জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের সহায়তা করলো, তাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।
তারা বলেন, অনতিবিলম্বে আন্দোলনকারী সহ বিরোধী দলের উপর চলমান সকল গ্রেফতার, হেনস্থা, মিথ্যা মামলা দেয়া বন্ধ করতে হবে। যাদেরকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সঠিক মৃতের সংখ্যা ও তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। গণহত্যার দায় স্বীকার করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। গতকাল রোববার ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃদ্বয় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ তার ইতিহাসের অন্যতম এক ক্রান্তিকাল অতিক্রান্ত করছে। একটি অনির্বাচিত সরকার জোরপূর্বক ভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে সাধারণ জনগণকে শত্রুতে পরিণত করেছে। যার ফলে কোন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামও সহ্য করা তাদের পক্ষে সম্ভবপর হচ্ছে না। আন্দোলন দানা বাঁধলেই তাদের গদি নড়ে উঠার ভয় কাজ করছে। ফলে আন্দোলনকে দমন করতে মানুষ খুন করতেও তারা দ্বিতীয়বার ভাবছে না।
মশিউর রহমান খান ও সৈকত আরিফ বলেন, গত কোরবানি ঈদের আগ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে কোটা সংস্কারের আন্দোলন করে আসছিলো। বিশেষত ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদেরকে ইনিয়ে বিনিয়ে রাজাকারের সাথে তুলনা করার পর থেকে পরিস্থিতি আরও পাল্টাতে থাকে। তবু শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ পথেই আন্দোলন পরিচালিত করছিলো। এমন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনোপ্রকার উস্কানি ছাড়াই প্রথমে পুলিশ-ছাত্রলীগ যৌথভাবে নারকীয় তা-ব চালায় এবং শতশত শিক্ষার্থীদেরকে রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনা পুরো বিশ্ব দেখেছে। যেখানে পরবর্তীতে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী। এই হত্যাযজ্ঞের শিকার কেবল ছাত্র-জনতাই নয়, কোমলমতি শিশুরাও। কিভাবে নিজ ঘরের মধ্যে থেকে হত্যাকা-ের শিকার হতে হলো আমরা তা প্রত্যাক্ষ করলাম। এই সহিংসতা কোন কোন ক্ষেত্রে একাত্তরের নির্মমতাকেও ছাড়িয়ে যায়। ইতিহাস মনে রাখবে এই হত্যাযজ্ঞের নেতৃত্ব দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চ্যাম্পিয়ন শক্তি হিসেবে দাবিদার আওয়ামী সরকার। ন্যায্য দাবির আন্দোলন করায় কিভাবে তারা হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে মাটিতে শুইয়ে দিয়েছে তার ইতিহাসও লিখা থাকবে।
তারা বলেন, একটা নদী রক্ত ঝড়িয়ে কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিয়ে, ইন্টারনেট সরবরাহ বন্ধ করে, কারফিউ দিয়ে সরকার ভাবছে তারা আন্দোলনকে প্রশমিত করতে পেরেছে। কিন্তু এই আন্দোলন এখন আর কোটা সংস্কারে অবশিষ্ট নেই। যেদিন থেকে সরকার মানুষ হত্যা করা শুরু করেছে, সেদিন থেকেই এই আন্দোলন আপামর জনসাধারণের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। আগেরদিন বুলেটে বিক্ষত হয়ে যে শিক্ষার্থীর প্রাণ গিয়েছে। পরেরদিন তার মা এসে সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে মিছিল করেছে। মানুষ প্রাণ দিতে শিখে গেছে। ভয়কে জয় করেছে। সুতরাং, মায়াকান্না দেখানো কিংবা সড়ক মন্ত্রীর চোখ রাঙানি কোনকিছুকেই মানুষ এখন আর বাধা বলে মনে করছে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় বাহিনী/সাদা পোষাকের তুলে নেয়া হচ্ছে। অনেককে গ্রেফতারও দেখানো হচ্ছে না। ভয় এবং ত্রাস সৃষ্টি কররে দমনের পুরোনো কৌশল অবলম্বন করছে এই খুনি-ফ্যাসিস্ট সরকার। একইসাথে বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে গিয়ে পুলিশি অভিযানের নামে হেনস্থা করা হচ্ছে। জেলায় জেলায় অজ্ঞাতনামা মামলার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে যুক্ত করে হেনস্থা করা হচ্ছে। এতে করে তারা যাদেরকেই সমস্যা বলে মনে করছে, তাদেরই তুলে নিয়ে যাচ্ছে।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা এই প্রত্যয়কে সাধুবাদ জানাই। এই খুনি সরকার যতোদিন না পর্যন্ত ক্ষমতা থেকে সরে না দাঁড়াচ্ছে, আমরা ততোদিন লড়াইয়ে থাকবো। এই লড়াইয়ে শামিল হবার জন্য দেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আ'লীগের নৈরাজ্য ও সাট ডাউন ঘোষণার প্রতিবাদে - মতলব দক্ষিণে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
অক্টোবরের সেরা দুই দ.আফ্রিকান
ইয়ামালের চোট নিয়ে বার্সেলোনার সমালোচনায় স্পেন কোচ
তদন্ত কমিটিতে যুক্ত হলেন দু’জন
আধিপত্য বিস্তারে সিলেটে বিরোধ, কিশোর গ্যাং সদস্য ফাহিম নিহত
আড়াইহাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার
কারো নাম ‘ওয়াকিয়া জাহান আলিশা’ রাখা প্রসঙ্গে?
ভারতীয় দূতকে তলব, হাসিনার কথা বলা বন্ধ রাখার আহ্বান
মার্কিন-ইসরায়েলি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক গুঁড়িয়ে দিলো ইরান
মামুন হত্যাকাণ্ডে ২ শ্যুটারসহ ৫ আসামী রিমান্ডে
আওয়ামী লীগের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে উত্তরার ২১টি পয়েন্টে যুবদল স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অবস্থান
সদরপুরে জমিদার বাড়িতে চুরি ২ যুবকের জেল
স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে
চকরিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত নিশানও চলে গেলেন না ফেরার দেশে
কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে বিক্ষোভ সমাবেশে পীর সাহেব মধুপুর
১৩ নভেম্বর ঘিরে কঠোর নজরদারিতে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ
কাউখালীতে নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের বিশেষ মহড়া অনুষ্ঠিত
মোদি সংকটে পড়লেই কেন কথিত ‘জঙ্গি’ হামলা হয় ভারতে?
নিষিদ্ধ আ‘ লীগের নাশকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে সিলেটে শিবিরের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ
এনসিপির ঢাকা অফিসে ব্রিটিশ হাইকমিশনার, নির্বাচন ইস্যুতে নাহিদের সঙ্গে বৈঠক