কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করার দাবিতে মানববন্ধন

Daily Inqilab কক্সবাজার ব্যুরো :

১৪ মার্চ ২০২৫, ০১:০২ এএম | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০১:০২ এএম

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজকে ৫০০ শয্যায় উন্নিত করণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৮ সালে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী নিয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ। খুব স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু হলেও অচিরেই স্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তন করে এই প্রতিষ্ঠানটি। একে একে ১৭টি ব্যাচের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে এই ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থী সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক। এমনকি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে। তবুও কাটেনি নানা সঙ্কট ও অনিশ্চয়তা। দীর্ঘ ১৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি একটি স্থায়ী ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল। এখনও দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নিয়মিত ক্লিনিক্যাল ক্লাসে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। যা অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ একটি ব্যাপার।

সলবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, প্রায় ২৮ লাখ জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র ২৫০ শয্যার এই হাসপাতাল। অথচ প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। অন্তত ১ হাজার রোগী ভর্তি হয়ে ফ্লোরে কিংবা সিঁড়ির পাশে, করিডোরে অবস্থান নেয়। সেই সাথে ২০ লক্ষাধিক বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপ তো রয়েছেই।

এছাড়াও রয়েছে হেমাটোলজি, হেপাটোলজি, আপখ্যালমলজি, সাইকিয়াট্রি, নিউরোমেসিসিন, নিউরোসার্জারি, ঘওঈট-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের সঙ্কট। নেই কোনো বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটও। বিশেষ এই বিভাগগুলোর সঙ্কটের কারণে প্রায়ই রোগীকে রেফার করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। কিন্তু দূরত্বের বিবেচনায় এটি প্রায় ১৫০ কি. মি দূরবর্তী এবং সময় সাপেক্ষ। রোগীদের জন্যও অনেক সময় সম্ভব হয় না এই ব্যয় বহন করার। অথচ একটি উন্নতমানের ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালই এই সঙ্কট সহজেই নিরসন করা যেতে পারে।

বর্তমান সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন কিংবা গবেষণা চর্চা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক এবং নার্সদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও পর্যটনকেন্দ্রিক উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে। কক্সবাজারে প্রচুর দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন, কিন্তু উন্নত চিকিৎসা সেবার অভাব রয়েছে। আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন হলে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য উন্নত চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হবে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন কেবল শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করবে না, বরং বৃহৎ জনগোষ্ঠী ও পর্যটকদের জন্য উন্নত চিকিৎসা সেবার দ্বার উন্মোচন করবে। দ্রুত বাস্তবায়ন হলে স্বাস্থ্যসেবা ও জনকল্যাণে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজার সফরকালে শিক্ষার্থীরা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্রুত অনুমোদন ও নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য তার দৃষ্টি আকর্ষণ ও জোর দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আসিফুল হক (৫ম বর্ষ), মো. আল হিশাম সভাপতি ইন্ট্রান ডাক্তার এসোসিয়েশন, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও ফাহিম হাসান (৫ম বর্ষ)।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আলুর বাম্পার ফলনে ও হিমাগার সংকটে বিপাকে শেরপুরের কৃষকরা!
গোদাগাড়ীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে কুমড়োর ও পেঁয়াজোর বড়ি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে, বিদেশেও যাচ্ছে
আনোয়ারায় আগুনে পুড়ে গেছে ৩ বসতঘর
লক্ষ্মীপুরে ঘুমন্ত স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে দিলেন স্বামী
৯০ দিন ধ‌রে বন্ধ চিলমারী-‌রৌমারী নৌ রু‌টের ফে‌রি
আরও
X

আরও পড়ুন

আলুর বাম্পার ফলনে ও হিমাগার সংকটে বিপাকে শেরপুরের কৃষকরা!

আলুর বাম্পার ফলনে ও হিমাগার সংকটে বিপাকে শেরপুরের কৃষকরা!

গোদাগাড়ীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে কুমড়োর ও পেঁয়াজোর বড়ি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে, বিদেশেও যাচ্ছে

গোদাগাড়ীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে কুমড়োর ও পেঁয়াজোর বড়ি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে, বিদেশেও যাচ্ছে

নির্বাচন কমিশনকে যে ৩ বার্তা দিলো ইইউ

নির্বাচন কমিশনকে যে ৩ বার্তা দিলো ইইউ

সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম  ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’

সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’

কোনো ঘোষণা দিচ্ছি না: অবসর নিয়ে কোহলি

কোনো ঘোষণা দিচ্ছি না: অবসর নিয়ে কোহলি

আনোয়ারায় আগুনে পুড়ে গেছে ৩ বসতঘর

আনোয়ারায় আগুনে পুড়ে গেছে ৩ বসতঘর

ফিলিস্তিনিদের আফ্রিকায় ‘পুনর্বাসন’ পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক

ফিলিস্তিনিদের আফ্রিকায় ‘পুনর্বাসন’ পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক

লক্ষ্মীপুরে ঘুমন্ত স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে দিলেন স্বামী

লক্ষ্মীপুরে ঘুমন্ত স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে দিলেন স্বামী

৯০ দিন ধ‌রে বন্ধ চিলমারী-‌রৌমারী নৌ রু‌টের ফে‌রি

৯০ দিন ধ‌রে বন্ধ চিলমারী-‌রৌমারী নৌ রু‌টের ফে‌রি

শিবগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে গণধর্ষণ-নির্যাতনের বিচারের দাবি

শিবগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে গণধর্ষণ-নির্যাতনের বিচারের দাবি

জিম্মি মুক্তি নিয়ে নেতানিয়াহুর বৈঠক, আলোচনা বাড়ানোর নির্দেশ

জিম্মি মুক্তি নিয়ে নেতানিয়াহুর বৈঠক, আলোচনা বাড়ানোর নির্দেশ

ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত বেড়ে ৩১, বেশিরভাগই নারী-শিশু

ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত বেড়ে ৩১, বেশিরভাগই নারী-শিশু

শিবগঞ্জে প্রেমিক যুগল জনতার হাতে আটক

শিবগঞ্জে প্রেমিক যুগল জনতার হাতে আটক

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরছেন হাসিনা, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ট্রাম্পের! যা জানা গেলো

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরছেন হাসিনা, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ট্রাম্পের! যা জানা গেলো

আমদানি কমলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় বেনাপোল কাস্টমসে

আমদানি কমলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় বেনাপোল কাস্টমসে

নাটোরে টিসিবির পণ্য ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

নাটোরে টিসিবির পণ্য ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

টেসলার বাজারমূল্য হঠাৎ কমলো, বিশ্লেষকরা বলছেন নজিরবিহীন পতন

টেসলার বাজারমূল্য হঠাৎ কমলো, বিশ্লেষকরা বলছেন নজিরবিহীন পতন

ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের উৎপাত বাংলাদেশের দূতাবাস গুলোতে, এ দায় কার?

ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের উৎপাত বাংলাদেশের দূতাবাস গুলোতে, এ দায় কার?

কলাপাড়ায় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

কলাপাড়ায় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

যে কারণে ম্যাচ বয়কটের হুমকি রিয়াল কোচের

যে কারণে ম্যাচ বয়কটের হুমকি রিয়াল কোচের