ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
বিএপিএলসি সভাপতি

ব্যবসায়ীদের চাপ বাড়াবে বন্দরের চার্জ বৃদ্ধি

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার :

২৪ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ এএম | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ এএম

আমদানি পণ্যের কনটেইনারে বন্দরের ভাড়া বা স্টোর রেন্ট বাড়ানোর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুপালী হক চৌধুরী। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা এটা নিতে পারছি না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বন্দরের চার্জসহ কোনো ধরনের শুল্ক বাড়ানো ঠিক হবে না। এখন এই মুহূর্তে ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো ধরনের মূল্যস্ফীতি নিতে পারবে না। গতকাল রোববার পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’-এ তিনি এসব কথা বলেন। সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া। গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করে বন্দরে কনটেইনার জটলা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে কনটেইনারের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। জটলা কমাতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে থাকা আমদানি করা এফসিএল কনটেইনারে চারগুণ হারে মাশুল আরোপ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ১০ মার্চ থেকে স্টোর রেন্ট বা বন্দরের ভাড়া চারগুণ হারে আদায় শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বিএপিএলসি সভাপতি বলেন, বন্দরের ভাড়া যে হারে বাড়ানো হয়েছে, তা সাংঘাতিক। আমরা এটা নিতে পারছি না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এক্সচেঞ্জ রেটের কারণে আমরা বড় ধরনের লস করেছি ২০২৩-২৪ সালে। এখন একটু স্থিতিশীল হয়েছে। ডলারের মান ১২২ টাকায় (১ ডলার সমান ১২২ টাকা) থেমেছে এখন। ৮৫ টাকা থেকে ১২২ টাকা হওয়ায় আমরা সবাই ভুক্তভোগী। কারণ আমরা তো অত পরিমাণ দাম বাড়াতে পারিনি। সুতরাং এই মুহূর্তে ব্যবসা কানো ধরনের ইনফ্লেশন আর নিতে পারবে না। বন্দরের চার্জ বাড়ানো, ভ্যাট, এসডি বাড়ানোর এটা সঠিক সময় না। পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি কম তালিকাভুক্ত হওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বিএপিএলসি সভাপতি বলেন, অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তো এখনো লিস্টেড নয়। তাদের কাছে আমাদের প্রস্তাব দিতে হবে। বাজারে আসার পথ বা বিনিয়োগ করার পথটা আকর্ষণীয় হতে হবে। আমাদের কোম্পানি আইনে তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য সুবিধা বেশি। তিনি বলেন, আমার কোম্পানি (বার্জার পেইন্ট) যখন তালিকাভুক্ত হয়, তখন তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহারের ব্যবধান ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত উভয়ের ক্ষেত্রে কোম্পানি আইনটা পর্যালোচনা করা উচিত। আমি শুধু করের বিষয়টা বলছি না। আমাদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। তাহলে তালিকাভুক্তির পর লাভবান হওয়া ও সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকলেই কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে।
বিনিয়োগে কেন কম হচ্ছে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম আঘাত আসে কোভিডে। কোভিড বিশাল বড় একটা ধাক্কা ছিল। আমরা বেশি পিছনে পড়ে গেছি এসএমইতে। যারা বড়, তারা মোটামুটি ভালো করছে। কিন্তু এসএমইতে মাত্র ৩০ শতাংশ ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত। তার মানে তার ফান্ডের যথেষ্ট প্রয়োজন। সে কিন্তু বিগ আইডিয়া নিয়ে বসে আছে। কিন্তু আমরা দেখতে পারছি এসএমই সেক্টরের প্রতি ব্যাংকখাতের অত আগ্রহ নেই। এরপর এলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তারপর আসে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আমাদের যেটা দরকার, সেটা হলো ফিসক্যাল পলিসি (রাজস্ব নীতি)। একই সঙ্গে অবকাঠামো উন্নয়ন দরকার। ভিয়েতনাম থেকে সাংহাইয়ে পণ্য নিয়ে যেতে সর্বোচ্চ তিনদিন লাগে। কিন্তু আমার এখানে রাস্তাঘাটের অবস্থা তো ভালো নয়। এই যে কাঁচপুর ব্রিজের পরে আপনি একটা সিচুয়েশন দেখবেন, সব ট্রাক ওখানে যাচ্ছে। আমাদের ওভারঅল অবকাঠামো ভালো, কিন্তু জায়গায় জায়গায় কতগুলো জটিলতা আছে। রুপালী হক বলেন, ভারতে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্দিষ্ট পরিমাণে রাস্তা বাড়ানো হয়। আমাদের সেটা হচ্ছে না। আমার যত পরিমাণ গাড়ি বাড়ছে, রাস্তা তত বাড়ছে না। ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আমাদের ফিসক্যাল পলিসি এবং সাপ্লাই চেনের অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন করতে হবে। এটা আমরা অনেকদিন ধরে বলে আসছি। তিনি বলেন, চলতি বছরের শুরুতেই বলছে সম্পূক শুল্ক আর ভ্যাট আরোপের বিষয়ে। এসব অনেক ব্যবসার বটমলাইনে হিট করছে। তারা সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছে রঙের ওপর। তারা বলেছে, সেটা নাকি বিলাসী পণ্য। কিন্তু রং তো এখন বিলাসী পণ্য নয়। এটা পণ্যকে নিরাপদ করে। ফলে এটা হলো অত্যাবশ্যকীয়। সুতরাং, পলিসিগুলো সমঝোতামূলক হতে হবে। এইচএস কোড নিয়ে অনেক গন্ডগোল। যার কারণে প্রতিটা কোম্পানি ভুগছে। এসব কারণে দেখা যাবে আগামীতে আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেও প্রতিযোগিতায় টিকতে পারব না। ফলে বেঞ্চমার্কে নক গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক নীতি, অবকাঠামো ও ক্রেতা সূচক গুরুত্বপূর্ণ। আমার মাথাপিছু আয় কত সেটাও দেখতে হবে। বিএসইসি মন্ত্রণালয়ের কাছে জনবল চেয়েছে এটা কীভাবে দেখছেন- এমন এক প্রশ্নের জবাবে রূপালী হক চৌধুরী বলেন, বিএসইসি আমাদের সবার অভিভাবক। তারা যেহেতু সংস্কার করছেন, ওনারা যদি কোনো কিছু করতে চান, আমার মনে হয় ওনাদের বক্তব্যটাই নেওয়া উচিত। আমাদের পুঁজিবাজারে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা অনভিপ্রেত। এখন ওনারা যদি এটাকে ঢেলে সাজাতে চান, সংস্কার করে ওনারা যদি ভালো কিছু আনতে পারেন, আমরা তাকে স্বাগত জানাই।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

কিশোর গ্যাং, মাদক ও ড্রেজার বন্ধে ব্রাহ্মণপাড়ায় কঠোর থাকবে প্রশাসন
কুমিল্লায় দুই প্রতিষ্ঠান গুনলো লক্ষাধিক টাকা জরিমানা
মোহাম্মদপুরের সেই ব্যবসায়ীর অফিসে আবারো গুলি
প্রেমিকাকে দল বেঁধে ধর্ষণ
কেরানীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদ্ঘাটন : মূল ঘাতক গ্রেফতার
আরও
X

আরও পড়ুন

১৪ বছর বয়সেই রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি সূর্যবংশীর

১৪ বছর বয়সেই রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি সূর্যবংশীর

আগের সরকার চিফ জাস্টিসকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে, আমরা তেমন সরকার নই

আগের সরকার চিফ জাস্টিসকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে, আমরা তেমন সরকার নই

চ্যালেঞ্জ নিয়ে মুখোমুখি

চ্যালেঞ্জ নিয়ে মুখোমুখি

আনিসুল হককে গণধোলাই

আনিসুল হককে গণধোলাই

প্রসঙ্গ : রাষ্ট্রীয় সফর!

প্রসঙ্গ : রাষ্ট্রীয় সফর!

স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

হজ অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

হজ অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

তারেক রহমানের নজরদারিতে নেতারা

তারেক রহমানের নজরদারিতে নেতারা

কিশোর গ্যাং, মাদক ও ড্রেজার বন্ধে ব্রাহ্মণপাড়ায় কঠোর থাকবে প্রশাসন

কিশোর গ্যাং, মাদক ও ড্রেজার বন্ধে ব্রাহ্মণপাড়ায় কঠোর থাকবে প্রশাসন

কুমিল্লায় দুই প্রতিষ্ঠান গুনলো লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

কুমিল্লায় দুই প্রতিষ্ঠান গুনলো লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

মোহাম্মদপুরের সেই ব্যবসায়ীর অফিসে আবারো গুলি

মোহাম্মদপুরের সেই ব্যবসায়ীর অফিসে আবারো গুলি

প্রেমিকাকে দল বেঁধে ধর্ষণ

প্রেমিকাকে দল বেঁধে ধর্ষণ

কেরানীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদ্ঘাটন : মূল ঘাতক গ্রেফতার

কেরানীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদ্ঘাটন : মূল ঘাতক গ্রেফতার

বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ রিট পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি

বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ রিট পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি

শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ইশরাক

শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ইশরাক

মূল ধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার Ñশিক্ষা উপদেষ্টা

মূল ধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার Ñশিক্ষা উপদেষ্টা

সীমান্তে বিএসএফের হত্যা বন্ধে জোরালো প্রতিবাদ করতে হবে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ

সীমান্তে বিএসএফের হত্যা বন্ধে জোরালো প্রতিবাদ করতে হবে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ

স্ত্রীসহ বাগেরহাটের বন বিভাগের ৩ কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাব ও সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধ

স্ত্রীসহ বাগেরহাটের বন বিভাগের ৩ কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাব ও সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধ

তুরিন-মুরাদ-মশিউর-নজরুল নতুন করে গ্রেফতার

তুরিন-মুরাদ-মশিউর-নজরুল নতুন করে গ্রেফতার

‘পাকিস্তানের পাশে ২ কোটি শিখ’, ভারতকে হুমকি পান্নুনের

‘পাকিস্তানের পাশে ২ কোটি শিখ’, ভারতকে হুমকি পান্নুনের