বাজারে বাড়ছে অস্বস্তি

মাছ-সবজির দাম চড়া

বাজারে বাড়ছে অস্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার :

২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৮ এএম

সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম কমায় রোজায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে সবজি ও মাছের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আবারও অস্বস্তি দেখা দিচ্ছে। শীতকালীন সবজির মৌসুম শেণ হওয়ার পর গ্রীষ্মকালীন সবজির মৌসুম এখনো পুরো শুরু হয়নি। তাই বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম। আর এ কারণে বাড়ছে দাম। এখন প্রায় অধিকাংশ সবজি কিনতে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আবার দাম বাড়ছে মাছেরও। তবে ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও নানা ধরনের মুদি পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। পেঁয়াজের দামও কয়েক সপ্তাহ বেড়ে এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় স্থির আছে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গ্রীষ্মের মৌসুম পড়ছে। যে কারণে এ মাঝামাঝি সময়ে সবজির সরবরাহ কম। এতে প্রায় প্রতিটি সবজির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। শীত মৌসুমের সবজি নিয়ে গত তিন-চার মাস সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে যে স্বস্তি ছিল, তা আর নেই। বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির দাম ৬০ টাকার ওপরে। কোনো কোনো সবজির দাম একশো পেরিয়ে গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এখন প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এরচেয়ে কমে শুধু পেঁপে পাওয়া যাচ্ছে, তাও ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে করলা, বেগুন, বরবটি, ঝিঙা, চিচিঙা কিনতে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এরচেয়ে বেশি দর দেখা গেছে কাঁকরোলের দাম। গ্রীষ্মকালীন অনেক সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সজিনার দর সবসময় কিছুটা বেশি থাকে। এর কেজি দেখা গেছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।
তবে কারওয়ান বাজারে যেহেতু পাইকারি কেনাবেচা বেশি হয়, ফলে সেখানে সবজির দাম অন্য বাজারগুলোর চেয়ে কিছুটা কম। খিলগাও বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল হাসেম বলেন, গ্রীষ্মের সবজি কেবল উঠতে শুরু করেছে। প্রতিবছর সিজন চেঞ্জের এসময়ে দাম বেশি থেকে। কিছুদিন গেলে আবার দাম কমবে।
এদিকে, মাছের বাজারেও বেশ চড়াভাব। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি জাটকা ধরা বন্ধ থাকায় অনেক নদীতে মাছ আহরণ বন্ধ আছে। যে কারণে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম। প্রতি ৭০০ গ্রামের এক হালি ইলিশ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের মাছের দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই -কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতা নুরু মিয়া বলেন, এখন চাষের মাছের সরবরাহ কম। এ কারণে নদীর মাছের চাহিদা বেড়েছে; দামও বেড়েছে।
অন্যদিকে, ঈদের পর থেকে চড়া পেঁয়াজের বাজার। এসময়ে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে দাম। এখন বাড়তি দামে আটকে আছে। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও ৫-১০ টাকা বেশি।
তবে গোশতের বাজারে এখন অনেকটাই স্বস্তি আছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে বাড়তে থাকে গোশতের দাম। তখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা দরে। একইভাবে সোনালি জাতের মুরগির কেজি ছিল ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা। এখন ব্রয়লার ১৭০-১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর গোশতের দামও কিছুটা কমেছে। ঈদের আগে প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হয়েছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। এখন তা কমে ৭৫০ টাকায় মিলছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ নি¤œমুখী থাকা ডিমের দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। মাসখানেক ধরেই এ দামের আশপাশে রয়েছে ডিম।

বিভাগ : বাংলাদেশ