শক্তিশালী প্রতিরক্ষা শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি
১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩১ এএম | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩১ এএম

বিশেষজ্ঞদের মতে, সেদেশই প্রকৃত অর্থে স্বাধীন, যে দেশ জাতীয় স্বার্থে আপোসহীন পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে সক্ষম। বর্তমান বিশ^ ব্যবস্থায় এটাই বাস্তবতা। প্রতিরক্ষায় শক্তিশালী দেশ তার পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে সামান্যতমও ছাড় দেয় না। প্রতিরক্ষায় দুর্বল দেশ ছাড় দিয়েও শক্তিশালী দেশের আস্থাভাজন হতে চায়। প্রতিরক্ষায় দুর্বল দেশের পররাষ্টনীতি কার্যত আপোসকামী পররাষ্ট্রনীতি।
আমেরিকা, রাশিয়া, চীনকে পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে কাউকে ন্যূনতম তোয়াক্কা করতে দেখা যায় না। এর নেপথ্যে দেশগুলোর শক্তি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ক্ষুদ্রদেশ ইসরাইল। এ দেশটিও তাদের পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আপোসহীন। এর নেপথ্যেও তাদের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যার বিচারে ছোট দেশ বলার অবকাশ নেই। জনসংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শক্তি যথেষ্ট বলার অবকাশ নেই। প্রতিরক্ষা শক্তি যথেষ্ট না হওয়াতে বাংলাদেশ বহুক্ষেত্রেই আপোসকামী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণে বাধ্য হয়। শক্তিশালী প্রতিরক্ষার গুরুত্ব বলে শেষ করার মতো নয়। দেশের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার গুরুত্ব প্রথম উপলদ্ধি করেছেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় আসেন তখন মাত্র ৫টি ব্রিগ্রেড ছিল সেনাবাহিনীর সম্বল। জিয়াউর রহমান ৫টি ব্রিগ্রেডকে ৫টি ডিভিশনে উন্নীত করেন, সেনাবাহিনীর জন্য উন্নত অস্ত্র-সরঞ্জাম সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। নৌ ও বিমানবাহিনীর আকৃতি-শক্তিও কোনটাই কাক্সিক্ষত পর্যায়ের ছিল না জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতা আসেন। তিনি নৌ ও বিমান বাহিনীর শক্তিও বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিডিআর এবং আনসার বাহিনীর শক্তির বৃদ্ধি করেন।
আনসার বাহিনীকে দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা বুহ্য করার ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এরজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। পাকিস্তান আমলে শিক্ষার্থীদের প্রতিরক্ষার সহযোগী ফোর্স হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ে ইউওটিসি (ইউনিভার্সিটি অফিসার্স ট্রেনিং কোর) গঠন করা হয়েছিল। ইউওটিসির অধীনে কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অস্ত্র পরিচালনাসহ সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শিক্ষার্থীদের সময়োপযোগী সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার চিন্তা থেকে ইউওটিসির সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেন। এ উদ্যোগ থেকে ইউওটিসির স্থলে অধিকতর শক্তিশালী ব্যবস্থাপনায় ‘বিএনসিসি’ (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর) গঠন করেন। সামরিক বাহিনীর দক্ষ প্রশিক্ষকরা ‘বিএনসিসি’তে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ব্যস্ততার মধ্যেও বিএনসিসি’র অনুষ্ঠান/কর্মসূচিগুলোতে উপস্থিত হতেন ক্যাডেটদের দেশরক্ষার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য।
সার্বভৌম কোনো দেশই শক্তিশালী প্রতিরক্ষার গুরুত্ব এড়াতে পারে না। বাংলাদেশকেও প্রতিরক্ষায় শক্তিশালী হতে হবে প্রয়োজনেই। পাকিস্তানের জনসংখ্যা আমাদের চেয়ে এক/দেড়কোটি বেশি। প্রায় কাছাকাছি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ। শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে কোনো দেশের পক্ষে পাকিস্তানকে হুমকি দেওয়া, লালচোখ দেখানোর সাহস/হিম্মত হচ্ছে না। সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো বিশ^বাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, পাকিস্তানিরা প্রয়োজনে ঘাস খেয়ে হলেও পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হবে। পাকিস্তানিদের ঘাস খেতে হয়নি, পাকিস্তান ঠিকই পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হয়েছে। পারমাণবিক শক্তির অধিকারী পাকিস্তানকে সব দেশই সমীহ করতে বাধ্য হচ্ছে। শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেশের মর্যাদা বাড়ায়। বাংলাদেশকে অবশ্যই প্রতিরক্ষায় শক্তিশালী হতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিরক্ষায় শক্তিশালী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সুস্থ-সবল যুবক-যুবতীদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে শক্তিশালী পিপলস আর্মি গড়ে তোলার সুযোগ আছে বাংলাদেশের, যা বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শক্তিকে অজেয় করবে।
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শক্তিশালীকরণে কিছু অভ্যন্তরীণ বাধা লক্ষ করা যায়। প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা হলে স্থানীয় কিছু মহল থেকে বলা হয় বাংলাদেশ গরিব দেশ, সামরিক খাতে ব্যয় বিলাসিতা, অপচয়। এ অভিমত সঠিক নয়। দেশের প্রতিরক্ষা শক্তিশালীকরণের উপলদ্ধি দেশদরদ দৃঢ় করে, দেশসমৃদ্ধের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করায়। এতে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়। দেশের প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির জন্য যে বা যারা বাধা হবে তাদের মোকাবেলা করতে হবে। দেশের মানুষের মধ্যে প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির গুরুত্ব অনুভূত হলে দেশের অজেয় প্রতিরক্ষা শক্তির অধিকারী হওয়া সম্ভব হয়। এ জাতি বীরের জাতি। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মহাবীর আলেকজেন্ডারের ভারতবর্ষ আক্রমণ প্রতিহত করেছেন গঙ্গারিডাই (আজকের বাংলাদেশ) জাতি। শক্তিশালী প্রতিরক্ষা দেশরক্ষাকবচ।
লেখক: কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

অভয়নগরে সিগনাল পিলারে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল চলক নিহত-১জন আহত

একটি শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে- আমীর খসরু

নতুন সঙ্কটে রাজনীতি!

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হাত থেকে আমাদের দলকে বাঁচাতে হবে- ব্যারিস্টার নওশাদ জমির

পটুয়াখালীতে শহীদ কন্যা ধর্ষনের আসামীদের দ্রুত বিচার করার দাবিতে জেলা বিএনপির মানববন্ধন

ইবিতে প্রক্টরিয়াল বডির উদ্যোগে ইফতার আয়োজন

নীল পাখির বাসা বদল, নিলামে উঠল টুইটারের লোগো

পিজি হাসপাতালের নাম পরিবর্তন হলেও লীগের দোসররা এখনও বহাল তবিয়তে"- ডা. আউয়াল

আওয়ামী লীগকে পূর্নবাসন করার কোন সুযোগ নেই : আমিনুল হক

গফরগাঁওয়ে চৈত্র মাসে শীতের আমেজ ঃ ঈদ বাজারে স্বস্তি

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরামের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

গফরগাঁওয়ে আস্কর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

আশুলিয়ায় দাওয়াত না পেয়ে যুবদলের ইফতার মাহফিলে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ

কটিয়াদীতে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত-১,আহত-১০

সাংবাদিক ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সম্মানে মনোহরগঞ্জ প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল

নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত অন্তত ৪৪

তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হয়েছে-কামরুল হুদা

ওসমানীনগরে ধানক্ষেত থেকে যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

বিকাশ পে লেটার’ এর মাধ্যমে স্মার্টফোন কেনার সুবিধা আনলো সিটি ব্যাংক ও সেলেক্সট্রা