নির্বাচনের আগে ভার্চুয়াল মিডিয়ার ঝড় কীভাবে মোকাবেলা করবে বিএনপি
১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৮ এএম

আগামী জাতীয় নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ভার্চুয়াল মিডিয়া হবে ভোটারদের অন্যতম নিয়ন্ত্রক। ভোটাররা এ মিডিয়ার ফেবার, ডিসফেবার, মিসইনফরফেশন, ডিসইনফরমেশন, প্রপাগান্ডার ঝড়ের মধ্যে পড়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবে ও পরিবর্তন করবে, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। এতে সম্ভাব্য বিজয়ী দলের ফলাফল উল্টে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কিংবা আপসেট ঘটিয়ে ভিন্ন কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার পথও তৈরি হয়ে যেতে পারে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাব্য দল বিএনপি জনমতকে প্রভাবিত করার এই শক্তিশালী মিডিয়াকে কীভাবে মোকাবেলা করবে? প্রশ্ন উঠেছে এ কারণে, দলটিকে নিয়ে এসব মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা ও বিরোধিতা বেশ প্রবল হয়ে উঠেছে। অনেক ইনফ্লুয়েন্সিয়াল অ্যাক্টিভিস্ট দলটির কর্মকা-ের সমালোচনার পাশাপাশি বিরোধিতাও করছে। তাদের লেখালেখি বা বলাবালিতে সত্য-মিথ্যা, প্রপাগান্ডা, মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন, যাই থাকুক না কেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ থেকে বর্তমান সময়ের প্রভাবশালী জেন-জি প্রজন্মও শুনছে। গ্রামের কমশিক্ষিত মানুষ যেমন তাতে প্রভাবিত হচ্ছে, তেমনি জেন-জি’র অনেকে দলটির ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে যথাযথভাবে অবহিত নয়, তারাও সহজে প্রভাবিত হচ্ছে এবং তাদের মনে বিরূপ ধারণা বা সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে। যেমন দলটি সম্পর্কে কিংবা তার কোনো নেতা-নেত্রীর বক্তব্য, তা তিনি বলেছেন কি বলেননি বা কোন প্রেক্ষাপটে বলেছেন, তার কথার আগে পরের কথা বাদ দিয়ে যেটুকুতে বদনাম হতে পারে, শুধু সেটুকু নিয়ে ছবি দিয়ে ফটোকার্ড করে ছড়িয়ে দিলেই ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। এ বক্তব্য খতিয়ে দেখার সময় সাধারণ মানুষ বা এ প্রজন্মের অত সময় নেই। ফলে তাদের মনে দল ও নেতা-নেত্রী সম্পর্কে বিরূপ ধারণা ও সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ‘সন্দেহ’ এমন এক জিনিস, যা একজনের সুনাম মুহূর্তে নষ্ট করে দেয়। সন্দেহ অমূলক হলেও তা তার পক্ষে কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে। সন্দেহ দূর করতে তাকে অনেক পরীক্ষা দিতে হয়। একটি উদাহরণ দেয়া যাক। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিন্টন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন এবং তারা যখন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত, তখন হিলারি ক্লিন্টন সম্পর্কে একটা কথা ছড়িয়ে দেয়া হয় যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলাকালে তিনি রাষ্ট্রীয় কাজে রাষ্ট্রের ই-মেইল ব্যবহার না করে ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রের গোপনীয় গুরুত্বপূর্ণ ফাইল চালাচালি করেছেন। এ নিয়ে তার প্রতিপক্ষ ব্যাপক প্রচারণা চালান। যদিও এফবিআই তদন্ত করে দেখেছে, হিলারি তা করেননি। তবে ইতোমধ্যে যা হবার হয়ে গেছে। মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকে গেছে। পরবর্তীতে এফবিআই খবরটি অসত্য বললেও ভোটারদের মনে সন্দেহ থেকে যায়। যারা তাকে ভোট দিতেন, তারা ঘুরে যায়। ফলাফল হিলারি ফেল করেন। ভার্চুয়াল মিডিয়া এতটাই শক্তিশালী।
দুই.
ভার্চুয়াল জগতে অসত্য-সত্য তথ্য বা প্রপাগা-া এত দ্রুত ছড়ায় যে, তা ক্ষমতার মসনদ উল্টে দিতে কিংবা রক্ষা করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যেমন ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই বিকেলে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশ প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের বিরুদ্ধে ক্যু করার চেষ্টা করে। তিনি তখন দেশের বাইরে সফরে ছিলেন। এ খবর পেয়ে তিনি ভার্চুয়াল জগতে ক্ষুদে বার্তা বা এসএমএস-এর মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্যু ঠেকিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। এতেই হাজার হাজার সেনাবাহিনীর ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে যায়। প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ক্যু ব্যর্থ হয় এবং এরদোগান ক্ষমতায় থেকে যান। জনমত তৈরি ও সমর্থন জোগাতে ভার্চুয়াল জগত এতটাই শক্তিশালী। কয়েকদিন আগে সবধরনের মিডিয়ায় বিএনপির দুর্বলতার বিষয় নিয়ে একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেলের সাথে কথা হচ্ছিল। তিনি ভার্চুয়াল মিডিয়ার শক্তিমত্তা নিয়ে এবং তা কীভাবে জনমতের ওপর প্রভাব ফেলে এ নিয়ে কথা বলছিলেন। কথায় কথায় আগামী নির্বাচনে ভার্চুয়াল জগতের প্রভাব কতটা ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, তার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন। বিএনপি যে এই জগতে অত্যন্ত দুর্বল, তা তার কথায় উঠে আসে। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে বিএনপিবিরোধী প্রপাগান্ডা বেশ প্রকট। এটাই হওয়া স্বাভাবিক। এখন থেকে তার প্রতিপক্ষরা তাকে মানুষের কাছে পচানোর জন্য যা করা দরকার তাই করবে। তাদের এই প্রপাগান্ডা নির্বাচনের আগে থেকে শুরু হয়েছে এবং তা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত চলবে। যদি বিএনপি ক্ষমতায়ও আসে, তাহলেও এই প্রপাগান্ডা চলবে। এতে বিএনপির সামনে দুই বিপদ। এক. নির্বাচনের দিন পর্যন্ত প্রপাগান্ডার শিকার হতে হবে। এতে জনমত তার দিক থেকে ঘুরে যেতে পারে। ফলাফলে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। দুই. নির্বাচনে জিতলেও এই প্রপাগান্ডা চলবে এবং একটি খারাপ সরকার হিসেবে তাকে চিহ্নিত করা হবে। এ চিন্তা বিএনপি করে কিনা জানি না। তবে বিএনপিকে ঠেকাতে যে, তার প্রতিপক্ষরা উঠেপড়ে লেগেছে, তাতে সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, আমি বিস্মিত হই, যখন দেখি, ফ্রান্স প্রবাসী এক ইউটিউবারের সমালোচনা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির এক সদস্যা তীব্র সামালোচনা করছেন। তাদের কেন এই সমালোচনা করতে হবে? বরং তাদের বা বিএনপির উচিৎ, ইউটিউবারের কথা যদি ভালো না লাগে, তার কাউন্টার হিসেবে বিকল্প ইউটিউবার তৈরি করা কিংবা যারা ইনফ্লুয়েন্সিয়াল তাদের প্রমোট করা। তারা তো ঐ ইউটিউবারের সমালোচনা শুনে রেগেমেগে আগুন হয়ে গেছেন। তারা রাগ না করে যদি তার সমালোচনার কাউন্টার দেয়ার জন্য তাদের কাউকে কাজে লাগাতেন, তাহলে সেটাই হতো বুদ্ধিমানের কাজ। যদি তেমন কেউ না থাকে, তাহলে দল থেকে উচিৎ, এ মাধ্যমে তাদের নিজস্ব ইউটিউবার তৈরি করা। ইনফ্লুয়েন্সার তৈরি করা। তা না করে অন্যকে গালাগালি করা নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই নয়। তিনি বলেন, ফ্রান্স প্রবাসী ইউটিউবারের সব কথার সাথে আমি একমত নই, তবে তার কথার মধ্যে বিএনপিকে কী করতে হবে এবং তার সম্পর্কে পজেটিভ কথাও থাকে, যেমন তিনি জিয়াউর রহমানকে তুলে ধরে তার কৃতিত্বের কথা বলেন। তার এ কথার অংশও তো বিএনপির অ্যাক্টিভিস্টরা কাট করে ছোট ক্লিপ আকারে তুলে ধরতে পারে। এটা কৌশল। তা তো করতে দেখছি না। বিএনপির মনে রাখতে হবে, এখন ভার্চুয়াল যুগ। আগামীতে ‘ভার্চুয়াল যুদ্ধ’ হবে। এখানে নিজের অবস্থান যে যত বেশি গড়ে তুলতে পারবে, সে তত এগিয়ে থাকবে এবং যুদ্ধে জিতবে। দুঃখজনকভাবে এ জগতে বিএনপির তেমন কোনো অবস্থান দেখছি না।
তিন.
বিএনপির মিডিয়া সেল, প্রেস উইং রয়েছে। এখানে যারা রয়েছেন, তাদের অধিকাংশ সাংবাদিকতরা সাথে জড়িত নন বলে অনেকে বলে থাকেন। তাদের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে অন্য পেশায় যুক্ত। প্রশ্ন হচ্ছে, বিএনপির মতো এত বড় দল, যার ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, তার মিডিয়া সেল এবং প্রেস উইংয়ের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অভিজ্ঞ ও পেশাদার সাংবাদিক থাকার কথা। তা না করে, কেন অন্যপেশার লোকজন থাকবে? তারা অন্যপেশায় যতই অভিজ্ঞ হোন না কেন, সাংবাদিকতা ও মিডিয়ার পালস্ বোঝা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যদি বুঝত, তাহলে এক ইউটিউবারের সমালোচনার জবাব দলের মহাসচিব বা স্থায়ী কমিটির সদস্যকে দিতে হতো না। এর জবাব কীভাবে দেয়া যায়, তার চিন্তা ও পরিকল্পনা মিডিয়া সেল বা প্রেস উইং দিত। এ থেকে বোঝা যায়, দলটির মিডিয়া সেল ও প্রেস উইং কতটা দুর্বল এবং অকার্যকর। কয়েক দিন আগে প্রেস ক্লাবে এক সিনিয়র সাংবাদিকের সাথে কথা হচ্ছিল। তিনি বললেন, বিএনপির মিডিয়া সেল ও প্রেস উইং দলের নেতাকর্মী বা দলীয় মনোভাবাপন্নদের জায়গা করে দেয়ার সেলে পরিণত হয়েছে। কাউকে দলের সাথে যুক্ত রাখতে হবে, তাই অন্য কোথাও জায়গা না দিয়ে এই দুই জায়গায় ঠাঁই দিচ্ছে। এগুলো যেন নেতাকর্মী ও দলীয় লোকদের পুনর্বাসনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। তারা না মিডিয়ায় নিজেদের কর্মকা- তুলে ধরতে পারছে, না ভার্চুয়াল জগতে জায়গা করে নিতে পারছে। এখানে দলটির মেধার সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। অথচ এ যুগে মেধার কোনো বিকল্প নেই। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ভার্চুয়াল জগতে বসবাস করে। সেখানের ভাষা ও কথাই তাদের কাছে গুরুত্ব পায়, সেটা ইতি-নেতি যাই হোক, যে ঘটনাই ঘটুক, তাই তারা দেখে এবং গ্রহণ ও বর্জন করে চলে। এ জগতে বিএনপির উপস্থিতি কোথায়? নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের দিন এ জগতের কথাবার্তা, ঘটনা-দুর্ঘটনা দেখেশুনে ও বুঝেই তারা ভোট দিতে যাবে। এর বাইরে তারা যাবে না। ভোটের দিন ঘুম থেকে উঠেই আগে মোবাইল হাতে নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ করে কোন দলের কী অবস্থা, তা দেখেই ভোট দিতে যাবে। যদি দেখে বিএনপিকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার ঝড় বইছে, তাহলে তাদের ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত মুহূর্তে বদলে যেতে পারে। বিএনপি যদি এই ঝড় মোকাবেলায় পিছিয়ে থাকে, তাহলে তার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন মুহূর্তে চুরমার হয়ে যাবে। মাঠের নির্বাচনী প্রচারের গুরুত্ব রয়েছে। প্রার্থীরা পথে-ঘাটে, মাঠে, সভা-সমাবেশ, মিছিল করবে, ভোট চেয়ে ব্যানার-ফেস্টুন-পোস্টার সাঁটাবে, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাবে, জনমত গঠন করবে, এটা নির্বাচনের প্রথাগত ও স্থানীয় প্রচার-প্রচারণা। তবে এই প্রচারণার চেয়েও এখন প্রযুক্তির যুগে ভার্চুয়াল জগত অনেক গুরুত্বপূর্ণ শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে স্থানীয় তো বটেই, আন্তর্জাতিক প্রচার-প্রচারণাও হয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারি দলগুলোর কর্মকা- মুহূর্তেই সকলে জানতে পারছে। উদাহরণ হিসেবে, একজন প্রার্থী সারাদিন জনসংযোগ করে ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে ঘরে ফিরল, ভোটাররাও তার কথায় সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ভোট দেয়ার মনস্থির করেছে। দেখা গেল, তার এমন একটি ঘটনা তার প্রতিপক্ষ নেতিবাচকভাবে ভিডিও বা ছবির মাধ্যমে উপস্থাপন করে ভার্চুয়াল জগতে ছড়িয়ে দিল, তাতে মাঠে তার সব প্রচারণা মুহূর্তে বিনষ্ট হয়ে যাবে। যদি ভার্চুয়াল জগতে তার শক্ত অবস্থান থাকে, তাহলে তার এই নেতিবাচক প্রচারণাকে সে কাউন্টার দিতে পারবে। তবে তিনি যদি সচেতন না হন, কিংবা ভার্চুয়াল জগতে অবস্থান গড়ে তুলতে না পারেন, তাহলে তাকে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। এটা দলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
চার.
ভার্চুয়াল জগতে যে বিএনপি খুবই দুর্বল এবং এ ব্যাপারে যে সচেতন নয়, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। যদি এ জগতে তার শক্তিশালী অবস্থান থাকত, তাহলে তাকে তার অভিযোগ মতে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হতে হতো না। এমনকি, তার মিডিয়া সেল ও প্রেস উইং যদি শক্তিশালী হতো, তাহলেও এ ট্রায়াল থেকে রক্ষা পেত। বাস্তবতা হচ্ছে, ভার্চুয়াল জগতের ঝড়ে বিএনপি যেন অসহায় আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। এ ঝড় সামাল দিতে বা পাল্টা ঝড় তোলার তার কোনো উদ্যোগ আছে বলে মনে হয় না। ভার্চুয়াল জগতে তার হয়ে কথা বলার মতো কোনো ইনফ্লুয়েন্সিয়াল ব্যক্তি গড়ে তুলতে পারেনি। এমনকি, এ জগতে দলের শীর্ষ সারির নেতাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অথচ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সরকার প্রধান ও ব্যক্তিরা তাদের এক্স-হ্যান্ডেলে বা ফেসবুকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে স্বল্প পরিসরে কথা বলেই ঝড় তুলে দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তারা টুইট করছে। এতে সারা দুনিয়ার মানুষ তা জেনে যাচ্ছে। তাদের টুইট বা পোস্ট নিয়ে বিশ্বমিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করছে। বিএনপির কোনো নেতা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে টুইট বা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, এমন নজির দেখা যায় না। তাদের পোস্ট বা টুইট নিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে। বিএনপির সমমনা বা দলীয় পদধারী যেসব শিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রী রয়েছেন, তাদেরও ভার্চুয়াল জগতে কোনো উপস্থিতি নেই। টুইট বা পোস্ট করতেও দেখা যায় না। অথচ তারা যদি দলের কর্মকা- তুলে ধরেন, তাহলে তা বিপুল মানুষের কাছে মুহূর্তে পৌঁছে যাবে। এ কাজটি তারা করছেন না। অর্থাৎ ভার্চুয়াল জগতে বিএনপির উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ফলে তার প্রতিপক্ষরা তাকে জেঁকে ধরেছে। এ জগতে একতরফা আধিপত্য বিস্তার করছে। আর বিএনপি তার কাউন্টার ব্যবস্থা না করে কেবল অভিযোগ-অনুযোগ করে যাচ্ছে। অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। বিএনপিকে বুঝতে হবে, ভার্চুয়াল জগতে এখন তার উপর দিয়ে মাঝারি ঝড় বইছে, যতই নির্বাচন ঘনিয়ে আসবে এ ঝড় তীব্র বেগে বইতে শুরু করবে। এটা যদি বুঝতে না পারে, তাহলে তার ফলাফল কী হবে অনুমান করতে কষ্ট হয় না। বিএনপি হয়ত ক্ষমতায় যাবে, তবে যত বেশি আসনে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা, তা কমে যেতে পারে। বিএনপি হয়ত জিততে পারে, তবে ক্ষমতায় গিয়ে ভার্চুয়াল জগতের ঝড়ে কতটা টিকতে পারবে, তা যদি বুঝতে না পারে, তাহলে কপালে দুর্গতি রয়েছে।
darpan.journalist@gmail,com
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

জাতীয় স্বার্থে দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য সবার প্রতি জামায়াত আমিরের আহবান

বেলগোরোড, কুরস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সেনা

সুনাম হারাচ্ছে এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো

চীনের মধ্যস্থতায় ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান

বিশাল বহর নিয়ে ৩১ মে ঢাকায় আসছেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী

কাতারের কাছ থেকে বিলাসবহুল জেট গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প

মাওবাদী নেতাসহ ৩০ জনকে হত্যা করেছে ভারত : বিরোধী দলগুলোর নিন্দা

গণ-অভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা দিল সেনাবাহিনী

অধ্যাপক ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ : নাহিদ ইসলাম

ঈদের আগেই বাজারে মিলবে যেসব নতুন নোট

প্রধান উপদেষ্টার কাছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের স্মারকলিপি

জানতে দেয়া হয়নি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সিদ্ধান্ত

পুঁজিবাজারে লেনদেন সূচক বেড়েছে

কালোবাজারি রোধে কঠোর রেল

বিদেশে খেলনার বাজার ৪০ হাজার কোটি টাকা

অবৈধ রেলিক সিটিতে রাজউকের অভিযান, কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ ৫ দফা দাবি গণ অধিকার পরিষদের

দেশের সংকটময় যেকোনো পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব দেন জিয়া পরিবার -ব্যারিস্টার অমি

বন্দরে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

চালককে হাতুড়িপেটা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই