বিএনপির নেতাকর্মীদের যেভাবে কর্মসংস্থান হতে পারে

Daily Inqilab কামরুল হাসান দর্পণ

২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম

রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলবাজির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অনেক দিনের। এসব কাজে কোনো দলের নেতাকর্মী কম জড়ায়, কোনো দলের বেশি জড়ায়। কোনো দলের নেতাকর্মী প্রকাশ্যে এবং জোরজবরদস্তি করে, কোনো দলের নেতাকর্মী গোপনে করে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পালাক্রমে বড় দুই দল বিএনপি ও সদ্য পতিত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। ফলে যে দল যখন ক্ষমতায় এসেছে, সে দলের একশ্রেণীর নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে তার নেতাকর্মীর চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলের মহোৎসব চলেছে। সাধারণ মানুষের জীবন অতীষ্ঠ করে তুলেছিল তারা। এর সাথে পুলিশের একটি শ্রেণীও জড়িয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ এর কোনো প্রতিকার করেনি, বরং প্রশ্রয় দিয়েছে। তার ভাবখানা এমন ছিল, দেশ আমাদের, আমরাই লুটেপুটে খাব। কার কী বলার আছে! ফলে দলটির ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী, যারা একসময় ছেড়া স্যান্ডেল ও ময়লা জামাকাপড় পরত, তারা কয়েক বছরের মধ্যে কোটিপতি হয়ে গেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনাও পতনের কয়েক মাস আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তার অফিসের পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। এ থেকে বোঝা যায়, তার শাসনামলে কী হারে লুটপাট, চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলদারিত্ব হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে তার পতন ও পালিয়ে যাওয়ার পর এখন অভিযোগ উঠেছে বিএনপির একশ্রেণীর নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে দলটি কম সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে না। সোস্যাল মিডিয়ায় তুলোধুনো হচ্ছে। দলের হাইকমান্ড থেকে বারবার কড়া বার্তা দেয়া এবং অনেককে বহিষ্কার করেও নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। অবশ্য, বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিএনপির বদনাম করার জন্য প্রতিপক্ষ এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা তো ব্যাংক দখল করে ফেলেছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিজের লোকজন বসিয়ে আধিপত্য বিস্তার করেছে। হাদিয়ার নামে রশিদ দিয়ে চাঁদাবাজি করে। এগুলো নিয়ে কেউ কোনো কথা বলে না। কেবল আমাদের দোষটাই দেখে।

দুই.
বিএনপির একশ্রেণীর নেতাকর্মী যে চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলে যুক্ত, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। অবশ্য, আমাদের দেশের সুদীর্ঘকালের যে রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি চলে আসছে, এটা তারই কন্টিনিউটি বা ধারাবাহিকতা বলা যেতে পারে। এ থেকে বের হওয়ার কোনো উদ্যোগ বা পথ কোনো দলই নেয়নি। তাদের মধ্যে এ প্রবণতা বিদ্যমান, এটা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের কর্মসংস্থান, অধিকার। ফুটপাত, রাস্তা-ঘাট, বাজার, মার্কেট, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল ইত্যাদি স্থানে তারা চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখল করে জীবিকা নির্বাহ করবে। এতে কোনো বিনিয়োগ লাগে না। ক্ষমতার জোর ও অন্যের বিনিয়োগই তাদের পুঁজি। তারা শুধু সারাদিন ঘুরাঘুরি করবে, সন্ধ্যা হলে চাঁদার টাকা নিয়ে বাসায় ফিরবে। বড়লোক হবে। যারা চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে, তাদের কী অবস্থা হচ্ছে, কী দুর্ভোগে দিন কাটে, তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ব্যবসা হোক বা না হোক, চাঁদা দিতেই হবে। তা নাহলে, ব্যবসা বন্ধ। যে চাঁদা দিতে পারবে, সেই ব্যবসা করবে। এই চাঁদাবাজি ফুটপাত থেকে শুরু করে কর্পোরেট শিল্প পর্যন্ত বিস্তৃত। দল থেকেও তাদের প্রশ্রয় দেয়া হয়। বেশি অভিযোগ উঠলে আদরের ধমক দিয়ে বলা হয়, এসব করা যাবে না। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সময় এমন আদরের ধমক অহরহ শোনা গেছে। কত সহজে তিনি বলেছিলেন, তার পিওনও ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। অথচ এত টাকার মালিক সে কীভাবে হলো, তার তদন্তের ব্যবস্থা করেননি। বরং ওই পিওন দেশের বাইরে চলে যেতে সক্ষম হন। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের প্রচ্ছন্ন মনোভাব থাকে, নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের সুযোগ না দিলে দলে তাদের ধরে রাখা যাবে না। তারা চলবে কীভাবে! তাদের এই মানসিকতার কারণেই এসব অপকর্ম যুগের পর যুগ চলে আসছে। অথচ তারা দলের নেতাকর্মীদের কীভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়, বৈধ পথে আয়ের উৎস সৃষ্টি করা যায়, এ চিন্তা করে না। দলের মাঠ পর্যায়ের বা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কথা বাদ দেয়া যাক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আছে, সচ্ছল, তাদেরকেও চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলদারিত্বে যুক্ত হতে দেখা যায়। এটাকে বলে উপরের লেভেলের চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব। কিছুদিন আগে আমার এক আত্মীয় বলছিলেন, ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পরপর একটি রাজনৈতিক দলের নেতা রাতারাতি একটি ভবনের তিনটি ফ্ল্যাট দখল করে নিয়েছেন। ভবনের মালিককে দিয়ে ফ্ল্যাটের মালিকানা লিখিয়ে নিয়েছেন। ভাড়াটিয়াদের বলে দিয়েছেন, এখন থেকে বাসা ভাড়া তাদের দিতে হবে। এমন নীরব এবং সরব চাঁদাবাজি বহাল রয়েছে। সম্প্রতি একটি নতুন রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বদলি বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দলটির গড়ে ওঠার সময় অর্থের সংস্থান করেছে পতিত শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর একটি শিল্প গোষ্ঠী। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, যে কিনা হাসিনার পতনের কয়েক দিন আগেও ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘মরনের পরও আমরা শেখ হাসিনার সাথে আছি’। দেখা যাচ্ছে, নতুন এই দলটি প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই মারাত্মক অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছে। তাহলে, তারা দেশে যে, ‘নতুন বন্দোবস্ত’ চায়, তা কি করে হবে? তারা কি নৈতিকভাবে আর এই দাবি করতে পারে? তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠছে, দেখা যাচ্ছে, তারা সেই পুরনো বন্দোবস্তকেই আঁকড়ে ধরেছে। তাহলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে কিভাবে? বিষয়টি তো জনমনে এ পারসেপশন সৃষ্টি করেছে, ‘যে যায় লঙ্কায়, সে হয় রাবন’।

তিন.
চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলদারিত্ব, মানুষের সাথে ক্ষমতার দাপট দেখানোর বিষয়গুলো রাজনীতি থেকে চিরতরে বন্ধ করা এখন সময়ের দাবী। বর্তমান হাইটেক প্রজন্ম এগুলো পছন্দ করে না। তাদের জগৎ একেবারে আলাদা। তারা উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখে। এ স্বপ্নের মাঝে যদি তাদের সামনে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অপকর্ম ভেসে আসে, তাহলে তাদের হতাশ হওয়া ও নিরাপত্তাহীন ভাবা স্বাভাবিক। বলা বাহুল্য, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দেড় দশকে পুরো দেশ পরিণত হয়েছিল এক অনিরাপদ জনপদে। সে সময় দেখেছি, অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাড়ি দিতে। মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক বাবা-মা অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কষ্ট করে সন্তানকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এর মূল কারণই ছিল, দেশের শিক্ষাঙ্গণকে সদ্য নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ হাসিনার প্রশ্রয়ে সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত করেছিল। যেখানে শিক্ষার পরিবেশ বলতে কিছু ছিল না। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তখন অনেক বাবা-মা তাদের বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যেসব মেধাবী সন্তানের পরিবারের সামর্থ্য ছিল না, তারা এক ভয়ের পরিবেশে ভীত-ত্রস্ত হয়ে কোনো রকমে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। হাসিনার পতন ও পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষ যেমন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে, তেমনি তারা আশাবাদী হয়েছে যে, দেশ পুরনো রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি, দুঃশাসন, অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন থেকে বের হয়ে আসবে। তবে যতই দিন যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকা-, কথাবার্তা, আচার-আচরণে কেবল সেই পুরণো সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা প্রকাশিত হচ্ছে। কোনো পরিবর্তন নেই। তারা দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করছে না, দেশ এক নতুন প্রেক্ষাপট ও ইতিবাচক ধারায় পরিবর্তিত হবে। বলছে না, হাসিনার শাসনামলে ভেঙে দেয়া পারিবারিক, সমাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, রীতি-নীতি, অনুশাসন প্রতিষ্ঠিত করে দেশকে একটি আধুনিক ও উন্নত দেশে পরিণত করা হবে। বিশ্বে দেশকে একটি মূল্যবান জায়গায় পরিণত করা হবে। বলছে না, সিঙ্গাপুরের মতো ছোট্ট একটি দেশ, যেখানে তার নিজস্ব সম্পদ ও জমি খুবই সীমিত, এ দিয়েই তারা যেভাবে বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছে, সেখানে আমরা বিপুল জনশক্তি, মেধাবী প্রজন্ম ও প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে তার চেয়ে বেশি উন্নত দেশে পরিণত হব। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান তো এ পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দেশের মেধাবী তরুণ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশের সম্পদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাদের দেশের কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ভিন্নমত ও পথের হলেও দেশের অভিভাবক হিসেবে তাদেরকে দেশ গঠনের কাজে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দেশকে আধুনিক ও উন্নত করার জন্য রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে তিনি মেধাবীদের টেনে এনেছিলেন। কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে ‘সবুজ বিপ্লব’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন। খালকাটা কর্মসূচিতে দেশের তরুণ সমাজকে কাজে লাগিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি তরুণদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার দিক নির্দেশ করেছিলেন। সে সময় তো চাঁদাবাজি, দখলবাজি ছিল না। তিনি কর্মসংস্থানের জন্য গার্মেন্ট খাত সৃষ্টি করেছেন। তরুণদের বিদেশে পাঠিয়ে তাদের জীবন বদল ও দেশের অর্থনীতিকে সবল করার জন্য জনশক্তি রফতানি শুরু করেছিলেন। আজ গার্মেন্ট ও জনশক্তি রফতানি দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের অন্যতম দুই স্তম্ভ। বেকার তরুণদের বিপথে যাওয়ার পথ বন্ধ করতে তিনি কর্মসংস্থানের খাত সৃষ্টি করে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তখন তরুণদের মধ্যে এই রব সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন, ‘বিদেশ যামু টাকা দেন’, ‘দুবাই যামু টাকা দেন’। দেশের তরুণদের কীভাবে কর্মসংস্থান করা যায়, তার খাত জিয়াউর রহমান সৃষ্টি করে দেখিয়েছেন, তাদের অবৈধ পথে চাঁদাবাজি, দখলবাজি করার প্রয়োজন নেই।

চার.
ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ যে পথ পরিগ্রহ করছে, এটা তো রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ যে, দেশকে সকল প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃসাশন, রাহাজানি থেকে মুক্ত করে সভ্য ও উন্নত দেশে পরিণত করার। এ দায়িত্ব এখন সবচেয়ে বেশি বৃহৎ দল বিএনপির উপর। কারণ, দেশের তরুণ ও মেধাবীদের কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, তা দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দুই-তিনটি খাত সৃষ্টি করে দেখিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি তার প্রতিষ্ঠাতার দেখিয়ে দেয়া এ পথ অনুসরণ করলেই দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। যেমন দলটি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে পর্যটন খাতকে কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির একটি অন্যতম শক্তিশালী খাত হিসেবে নিতে পারে। দেশে এমন সব প্রাকৃতিক স্থান রয়েছে, যা বিশ্বের অন্যকোনো দেশে নেই। সেখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য পর্যটন স্পট করে বিপুল অর্থ যেমন উপার্জন করা যায়, তেমনি বিপুল সংখ্যক তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ও একই স্থানে সূর্য উঠা ও ডুবার স্থান কুয়াকাটা দিয়েই তো লাখ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান হয়ে যায়। এছাড়া, সুন্দরবন, সেন্টমার্টিন, হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ, পার্বত্য অঞ্চল, সিলেট, নেত্রকোনা, রাজশাহী, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক অপরূপ প্রাকৃতিক স্পট রয়েছে। এসব স্পটে বিএনপি যদি তার নেতাকর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে, তাহলে চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলবাজি অনেকটাই কমে যাবে। দল থেকে যদি নির্দেশ দেয়া হয়, কাজ করে খাও, চাঁদাবাজি-দখলবাজি করে নয়। পর্যটনের দিকে দলটি নজর দিলে অনেক উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। সিলেটের চা-বাগান দিয়ে ‘টি ট্যুরিজম’, দেশের নদ-নদীর মাধ্যমে রিভার ক্রুজ বা রিভার ট্যুরিজমের যে অপার সুযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। রাজধানী ঢাকার চারপাশে যে নদী রয়েছে, সেগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও নাব্য ফিরিয়ে এনে ‘ক্যাপিটাল ট্যুরিজমের ব্যবস্থা করতে পারে। বিশ্বে এমন রাজধানী আর একটিও নেই, যার চারপাশে নদী রয়েছে। দেশের পর্যটনের এই অমিত সুযোগ কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করলে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা হুমড়ি খেয়ে পড়বে। গার্মেন্ট, জনশক্তি রফতানির মতো পর্যটনও হয়ে উঠবে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের অন্যতম বৃহৎ খাত। বিএনপির উচিৎ, তার নেতাকর্মী ও জনগণের সামনে এমন ভিশন তুলে ধরা। নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া, তোমরা চাঁদাবাজি, দখলবাজির মাধ্যমে অন্যের উপার্জন কেড়ে নেয়ার অপসংস্কৃতি পরিহার করে নিজেরা পর্যটন খাতে যাও। সেখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করো। বিএনপিতে অনেক ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ রয়েছেন, তাদের উচিৎ, দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য যোগ্যতা অনুযায়ী নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে সুযোগ দেয়া এবং নতুন খাত সৃষ্টি করা। তারা পর্যটনে বিনিয়োগ করে দলের নেতাকর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে তাদেরকে ফুটপাত থেকে তোলা তুলে কিংবা চাঁদাবাজি করে যেমন খেতে হবে না, তেমনি দলকেও বদনামের ভাগিদার হতে হবে না।

[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ছাত্র রাজনীতি কেন প্রয়োজন
বজ্রপাত : প্রয়োজন পর্যাপ্ত সতর্কতা
অন্তর্বর্তী সরকার কি জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে?
করিডোর ও বন্দর নিয়ে সরকারের দ্বিচারিতা
রাষ্ট্রে জননিরাপত্তা জোরদার করতে হবে
আরও
X

আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া যা চায়, 'র' বাংলাদেশে সেটাই বাস্তবায়ন করতে চায় : সৈয়দ ফয়জুল করীম

ইন্ডিয়া যা চায়, 'র' বাংলাদেশে সেটাই বাস্তবায়ন করতে চায় : সৈয়দ ফয়জুল করীম

ঈশ্বরগঞ্জে মগটুলা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ঈশ্বরগঞ্জে মগটুলা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইউএনও'র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল বাউফল

ইউএনও'র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল বাউফল

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে মোরেলগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির নিন্দা

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে মোরেলগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির নিন্দা

জকিগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এসএসসি ফলপ্রার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

জকিগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এসএসসি ফলপ্রার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশকে ঘিরে কিশোরগঞ্জে যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনু‌ষ্ঠিত

ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশকে ঘিরে কিশোরগঞ্জে যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনু‌ষ্ঠিত

দেশ অত্যন্ত সংকটের মধ্যে রয়েছে, কখন কি হয়ে যায় সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে: ড. আসাদুজ্জামান রিপন

দেশ অত্যন্ত সংকটের মধ্যে রয়েছে, কখন কি হয়ে যায় সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে: ড. আসাদুজ্জামান রিপন

চা শ্রমিকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান উপযোগী মজুরি ঘোষণার দাবী জানালো বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন

চা শ্রমিকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান উপযোগী মজুরি ঘোষণার দাবী জানালো বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন

কুবি শিক্ষক আনিছের বিরুদ্ধে ফের পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ

কুবি শিক্ষক আনিছের বিরুদ্ধে ফের পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ

মানুষের স্বপ্ন ফিকে হতে দেবেন না: হেফাজত

মানুষের স্বপ্ন ফিকে হতে দেবেন না: হেফাজত

শেরপুরে মেধা ও যোগ্যতায় কনস্টেবল পদে চাকুরি পেল ১৯ জন

শেরপুরে মেধা ও যোগ্যতায় কনস্টেবল পদে চাকুরি পেল ১৯ জন

জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখার আহ্বান শিবিরের

জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখার আহ্বান শিবিরের

আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের স্ট্যাটাস ভাইরাল, কার নাম আছে?

আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের স্ট্যাটাস ভাইরাল, কার নাম আছে?

গোপনে বিয়ে করা স্ত্রীকে জোরপূর্বক অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার পর তাকে আবার ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে।

গোপনে বিয়ে করা স্ত্রীকে জোরপূর্বক অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার পর তাকে আবার ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে।

বিভাজনের উর্ধে উঠে  দায়িত্বশীল  ও সতর্ক আচরণ করতে হবে  ঃ  পীর সাহেব চরমোনাই

বিভাজনের উর্ধে উঠে দায়িত্বশীল ও সতর্ক আচরণ করতে হবে ঃ পীর সাহেব চরমোনাই

কাল সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে

কাল সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে

উখিয়ায় বনবিভাগের অভিযানে মাটি ভর্তি অবৈধ ট্রাক জব্ধ করে উদ্ধার

উখিয়ায় বনবিভাগের অভিযানে মাটি ভর্তি অবৈধ ট্রাক জব্ধ করে উদ্ধার

জটিলতা সৃষ্টি করে সরকারের মান-অভিমান গ্রহণযোগ্য না: আনু মুহাম্মদ

জটিলতা সৃষ্টি করে সরকারের মান-অভিমান গ্রহণযোগ্য না: আনু মুহাম্মদ

ড. ইউনূসের পদত্যাগ চায় না বিএনপি, তবে করলে বিকল্প বেছে নেবে জাতি : সালাহউদ্দিন আহমেদ

ড. ইউনূসের পদত্যাগ চায় না বিএনপি, তবে করলে বিকল্প বেছে নেবে জাতি : সালাহউদ্দিন আহমেদ

আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে

আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে