অন্তর্বর্তী সরকার কি জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে?
২৩ মে ২০২৫, ১২:১৬ এএম | আপডেট: ২৩ মে ২০২৫, ১২:১৬ এএম

গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ও পালিয়ে যাওয়ার পর জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়। সে সময় ফ্রান্স সফরে থাকা ড. ইউনূসকে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া সম্মুখ সারির সমন্বয়করা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার অনুরোধ করেন। তিনি দায়িত্ব নিতে রাজী হন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখন ৫ আগাস্ট থেকে ৮ আগস্ট তিন দিন কোনো সরকার ছিল না, সে সময় তাঁর মতো বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্বকে সরকারের দায়িত্ব দেয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না। তিনি দায়িত্ব না নিলে পরিস্থিতি কী হতো, তা অনুমান করা কঠিন। তখন কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হতো। সেই তিনি কেমন হতেন, তার গ্রহণযোগ্যতা কতখানি থাকত, এসব নিয়ে পরবর্তীতে হয়ত প্রশ্ন উঠত। প্রশ্ন উঠলেও কাউকে না কাউকে দায়িত্ব দিতেই হতো। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেয়ায় কারো মনে কোনো ধরনের প্রশ্ন বা সংশয় সৃষ্টি হয়নি। তিনি ছিলেন, বেস্ট অপশন। দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের মানুষ এবং প্রায় পুরো বিশ্ব তাকে অকুণ্ঠচিত্তে অভিনন্দিত করেছে। রাতারাতি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দেড় দশকে দেশের যে বদনাম হয়েছে, তা ঘুচে যায়। ইতোমধ্যে তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ৯ মাস পার করে ১০ মাসে পড়েছে। এ সময়ের মধ্যে সরকার কি করেছে, কতটুকু করেছে, তা বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
দুই.
অন্তর্বর্তী সরকার ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত কোনো সরকার নয়। এটি একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পতিত শেখ হাসিনা পরবর্তী ‘ব্রেক ইভেন’ সরকার। এর মেয়াদও নির্দিষ্ট নয়। সাধারণত ধরা হয়, স্বৈরশাসনের পতনের পর পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন পর্যন্ত এর মেয়াদ। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্থির করা হয়। গণঅভ্যুত্থানে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদের ক্ষেত্রে এ কাজটি করা হয়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষেত্রে এটি অনির্দিষ্ট থেকে যায়। হাসিনার পতনের পর জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, এ চিন্তা মানুষের মধ্যে ছিল না। তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে, এ আনন্দে ও শুকরিয়া আদায়ে বিভোর ছিল। তবে ৮ আগস্ট সবচেয়ে বড় দল বিএনপি নয়াপল্টনে তার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিশাল সমাবেশ করে বলেছিল, অন্তর্বর্তী সরকারকে আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। তখন তার এ চাওয়া জনগণের কানে খুব একটা বাজেনি। তবে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে সে সরকারের প্রতি বার্তা দিয়ে তার মেয়াদের ইঙ্গিত দিয়েছিল। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে বিএনপি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি। সরকারের নেয়া সংস্কার কার্যক্রমের সাথে তাল মিলিয়ে দ্রুত জরুরি সংস্কার করে নির্বাচনের তাকিদ দিয়েছে। পরবর্তীতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার দাবি তুলেছে এবং এ দাবিতে এখনও অনড় রয়েছে। বিএনপি কেন নির্বাচন নির্বাচন করছে, এ নিয়ে সমন্বয়ক ও কিছু রাজনৈতিক দল তার সমালোচনা শুরু করে। ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি ও অন্য কিছু ইসলামী রাজনৈতিক দল বলা শুরু করে, যতদিন না সংস্কার শেষ হবে, ততদিন পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। এ নিয়ে একধরনের তর্কবিতর্ক শুরু হয়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সময়ের মতো ‘আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র’ এমন বিতর্কের সূচনা হয়। পরবর্তীতে কিছু অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বলতে শুরু করে, ইউনূস সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকুক। কেউ কেউ অনন্তকাল পর্যন্ত চলার দাবিও তোলে। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টাও অতিউৎসাহী হয়ে বলা শুরু করে, জনগণ তাদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চায়। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল স্পষ্ট করে বলেছেন, যে যাই বলুক, নির্বাচন আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে। তবে সরকারের আচরণ ও কর্মকা-ে নির্বাচন দ্রুত করার মতো আলামত পরিলক্ষিত হয়নি, এখনও হচ্ছে না। সে যে নির্বাচিত নয়, তার আচরণে তা বোঝা যাচ্ছে না। রেগুলোর সরকারের মতো কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদী বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। মিয়ানমারে মানবিক করিডোর দেয়া ও বিদেশিদের চট্টগ্রাম বন্দর দেয়ার মতো জনগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। অবশ্য মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লে, বিবৃতি দিয়ে তা দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে। সরকারের আচরণে মনে হচ্ছে, তাকে যে নির্বাচন দিয়ে বিদায় নিতে হবে এবং এটাই তার অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিৎ, তা যেন একপাশে রেখে চলছে। এর মধ্যে দেশে একটার পর একটা অপ্রীতিকর ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটছে। এক ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। দেশের অর্থনীতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। বিনিয়োগে খরা চলছে। বিনিয়োগকারিরা আস্থা পাচ্ছে না। আমদানি-রফতানি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। শত শত শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। হু হু করে বেকারত্ব বাড়ছে। মানুষের আয় কমে গেছে। দারিদ্র্যসীমা আরও নিচে নেমেছে। সরকারের হাতে টাকা নেই, মানুষের হাতেও টাকা নেই। সাধারণ মানুষ নিদারুণ দুঃখ-কষ্টে জীবনযাপন করছে। তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটার পরিবর্তে অবনমন ঘটছে। সরকার এসব বিষয় আমলে নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। সে তার মতো কাজ করে যাচ্ছে। যে কাজ করছে, তার দৃশ্যমান ফলাফল বলতে কিছু নেই। যেকোনো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধান্বিত। কী থেকে কী করবে, এমন এক অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে রয়েছে। অবশ্য এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের জনভিত্তি ও ম্যান্ডেট লাগে, তা না থাকায় সরকারকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সরকারকে বিগত ৯ মাসে যেমন ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার প্রভু মোদির নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে, তেমনি যতই দিন যাচ্ছে, সরকারের কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অদক্ষতা ও অসক্ষমতার নানা অভিযোগও উঠেছে। এ অভিযোগ উঠেছে, তারা ক্ষমতা উপভোগ করছেন। যতদিন পারা যায়, এভাবেই ক্ষমতা ভোগ করতে চান। তবে তাদের ক্ষমতায় থাকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। শুরু থেকে বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ও তার প্রভু মোদির যৌথ প্রযোজিত নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দলের হাইকমান্ড অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। গোল বাঁধে নির্বাচন দেয়া নিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করা নিয়ে। নির্বাচন হওয়া নিয়ে সরকার একেক সময় একেক কথা বলেছে। অল্প সংস্কার ও বেশি সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের সময় আগ-পিছ করার এক ধরনের থিওরি হাজির করে। শেষ পর্যন্ত আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার মধ্যে স্থির হয়। এতে বিএনপি আশ্বস্থ হতে পারছে না। দলটির হাইকমান্ড মনে করে, সরকার ‘অল্প সংস্কার ও বেশি সংস্কারে’র থিওরি হাজির করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার অভিসন্ধি করছে। এতে বিএনপি যে সরকারের ওপর বিরক্ত, তা তার বক্তব্য-বিবৃতিতে বোঝা যায়। সরকারের প্রতি তার সমর্থনের জ্বলজ্বলে বাতির আলো ধীরে ধীরে কমে আসছে। বলা বাহুল্য, বিএনপিই এখন একমাত্র দল, যার জনসমর্থন সবচেয়ে বেশি। দলটি যদি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাহার করে, তবে সে বিপুল জনসমর্থন হারাবে। অন্যদিকে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ তো রয়েছেই। তখন কৌশল হিসেবে তার সমর্থনও বিএনপির দিকে যাবে।
তিন.
অন্তর্বর্তী সরকার যে ঠিকমতো সরকার পরিচালনা করতে পারছে না, তা একজন সাধারণ মানুষও বোঝে। এর মূল কারণ, এ সরকার এমন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে, যাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তো বটেই, সরকার পরিচালনার মতো কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এদের বেশিরভাগই এনজিও থেকে এসেছেন। ফলে সরকারের গায়ে ‘এনজিও সরকারে’র তকমা লেগে গেছে। এনজিও চালানো আর সরকার চালানোর মতো সুবিশাল কর্ম সম্পাদন করা যে এক জিনিস নয়, তা তাদের সীমাবদ্ধতা ও সক্ষমতার অভাব থেকেই বোঝা যাচ্ছে। তাদের আদর্শগত অমিলও রয়েছে। একেকজন একেক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং নানা মত ও পথ থেকে এসেছেন। একজন ডানে গেলে, আরেকজন বামে যায়। রাষ্ট্র চালানোর জন্য যে সমআদর্শের রাজনৈতিক দল প্রয়োজন, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সরকার, সেটা ডান, বাম বা অটোক্রেটিক হোক, তা একই গোত্র ও আদর্শের হয়ে থাকে। ভালো হোক, মন্দ হোক, সরকার পরিচালনার সিদ্ধান্ত জনগণ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। নির্বাচনে যে রাজনৈতিক দল জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে, সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ প্রশাসন থেকে শুরু করে তার নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে যায়। প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হলে জনগণ সমালোচনা করে। যেমন ফ্যাসিস্ট হাসিনা ঘরে ঘরে চাকরি দেয়া ও দশ টাকায় চাল কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে না পারায়, জনগণ অসন্তুষ্ট হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে উল্টো ফ্যাসিজম কায়েম করে এবং গণঅভ্যুত্থানে তার পতন ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেনি। তবে জনগণ যে আকাক্সক্ষা ও আশা নিয়ে হাসিনার পতন ঘটিয়েছে, সেই প্রত্যাশার উপর ভিত্তি করেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এখানে জনগণকে সুনির্দিষ্ট করে তার প্রতিশ্রুতি দেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। জনগণের এই আকাক্সক্ষার অন্যতম হচ্ছে, দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় প্রতিষ্ঠিত করা। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার ভেঙে দেয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কার করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেয়া। পাশাপাশি, জনগণ দীর্ঘ সময় ধরে নিত্যকার যেসব সমস্যায় ভুগেছে যেমনÑনিত্যপণ্যের দাম সহনীয় করা, মানুষের জীবনযাপন সহজ করা ইত্যাদি পদক্ষেপ নেয়া। দেখা যাচ্ছে, সরকার সংস্কারের দিকে বেশি ফোকাস করেছে ঠিকই, জনগণের নিত্যকার সমস্যার সমাধানের দিকে ফোকাস করেছে কম। এখানেই ডিলেমা’র সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ দেখছে, সরকার তার সমস্যা সমাধানে খুব বেশি মনোযোগী নয়। তার সমস্যা বহালই থেকে গেছে। ফলে সরকারের ওপর তার খুশি হওয়ার কারণ নেই। জনগণ কাগজ-কলমের থিওরিটিক্যাল সংস্কার বোঝে না, বোঝে, সরকার প্র্যাক্টিক্যালি তাকে ভালো রাখতে পারছে কিনা। দেখা যাচ্ছে, সরকার সংস্কারে বেশি মনোযোগী হয়ে স্বল্প নাকি বিস্তর সময়ে তা করবে, এ থিওরি নিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। সরকারের এমন আচরণে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিপুল জনসমর্থিত বিএনপি ও জনগণের মধ্যে এ সন্দেহ সৃষ্টি করেছে যে, সে তার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়। সে রেগুলার সরকারের মতো স্পর্শকাতর ও দেশের জন্য ক্ষতিকর হতো পারে এমন নানা নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। জনগণ তার এসব সিদ্ধান্তের সাথে একমত কিনা, তা বিবেচনায় নিচ্ছে না। এতে জনমনে সরকারের প্রতি বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের স্মরণে থাকার কথা, ওয়ান-ইলেভেন সরকারও বিপুল গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। রাজনৈতিক সংস্কারের নামে তার সুবিধা হয়, এমন সুবিধাবাদী ‘কিংস পার্টি’ গঠন করে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চেয়েছিল। তবে তার ক্ষমতায় থাকার অভিলাষ যখন জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারে, তখন তার বিরোধিতা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিরোধের কারণে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারেনি। তাকে নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক দলের কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিতে হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যেও এমন প্রবণতা রয়েছে বলে সচেতন মহল মনে করে। এতে তার জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমছে।
চার.
রাষ্ট্র পরিচালনা করবে রাজনৈতিক দল, এটাই স্বীকৃত। গণতান্ত্রিক ধারার দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায় নিয়ে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করে। এর ব্যত্যয় ঘটালে ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটে। শেখ হাসিনা নির্বাচনের নামে প্রহসন করে দেড় দশক ক্ষমতায় থাকলেও জনগণের আন্দোলনের মুখে টিকতে পারেনি। এখন তার এবং তার দলের অস্তিত্ব বলে কিছু নেই। এ থেকে বোঝা যায়, গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচন ছাড়া, অন্যকোনো বিকল্প নেই। গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণ কোনো সরকার বসালেও তা রাজনৈতিক দলের বিকল্প নয়। সময়ের প্রয়োজনে সে সরকারকে কিছু সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করতে হয়। তার দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণ যে সম্মতিতে তাকে দায়িত্ব দিয়েছিল, তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিদায় নেয়া। এর বাইরে ভিন্ন চিন্তা করলে, তাকে অসম্মানিত ও অপমানিত হতে হয়। এমনকি, নির্বাচিত সরকারও যদি তা করে, জনগণ তাকেও ছুঁড়ে ফেলে দেয়। মোদ্দা কথা, জনগণ কখনোই ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে আসা বা অনির্বাচিত সরকারকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। শেখ হাসিনা ও ওয়ান-ইলেভেনের সরকার তার বড় প্রমাণ।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

সউদীতে আটকে পড়েছেন ১২৫০০ ইরানি হাজি

রোববার চীন সফর যাচ্ছে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল

৬০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে রাতভর ইরানে বর্বরতা চালিয়েছে ইসরাইল

ইরান একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইসরায়েলের দিকে: আইডিএফ

তারেক রহমানের ৩১ দফার কোন বিকল্প নেই- মোহাম্মদ আইয়ুব খান

ব্যালেস্টিক মিসাইল ছুড়ে যে ভয়ংকর বার্তা দিলেন কিম জং উন!

এনসিপির কটিয়াদী উপজেলা সমন্বয় কমিটি গঠিত

মানিকগঞ্জে বাস ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল

মেসি ম্যাজিকে মায়ামির জয়

মুক্তির আগেই দাপুটে অবস্থানে ‘এমথ্রিগান ২.০’

ইন্দুরকানিতে কয়লা বোঝাই ট্রাকের ভারে বেইলি ব্রিজ ভেঙে যান চলাচল বন্ধ

টেকসই সমাধান না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আজ ঢাকার বাতাসের মান ‘সহনীয়’, বিশ্বে অবস্থান ৪৫

লালপুরে এনসিপির কমিটি ঘোষণা

ইরানের ‘লাল রেখা’ কী কী?

কারাগারে ইডেন ছাত্রীকে বিয়ে করলেন নোবেল

ইমরান খানের নির্দেশে থমকে গেল কেপির বাজেট, চাপে প্রাদেশিক সরকার

ইরানের পর পর হামলা, ইসরায়েলের রেল স্টেশন বন্ধ

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলাকালীন ফিলিস্তিনি নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে বাঁধা