বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ছাগলনাইয়া মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ
১৩ জুন ২০২৫, ০২:০৬ এএম | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০২:০৬ এএম

১২৫ বছরের পুরনো ছাগলনাইয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটি দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাতশতাধিক শিশু-কিশোর কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার মাঠটি বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানাগেছে, ১৯০০ সালে ছাগলনাইয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তারের গোড়াপর্তন হয় বলে জানাগেছে। এর পর ১৯১৫ সালে একই ক্যাম্পাসের পূর্ব প্রান্তে ছাগলনাইয়া সরকারি পাইলট হাই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দক্ষিণমুখী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমমুখী পাইলট হাই স্কুল ও উত্তরমুখী ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা শতবছর আগ থেকে একই মাঠে খেলাখুলা, প্রাত্যহিক সমাবেশ করে আসছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েকদিন আগে সরকারি বরাদ্ধে কলেজ ও হাই স্কুলের মধ্যখানে সীমান্ত দেয়াল দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসকে আলাদা করার কাজ শুরু হয়েছিল। ওই সময় এলাকাবাসী, খেলোয়াড়, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় রাজনীতিক ব্যক্তিবর্গের বিরোধীতার মুখে প্রশাসন পিছু হঠতে বাধ্য হয়। ওই সময়ে এলাকাবাসীর বক্তব্য ছিল, তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতবছর আগ থেকে একই ক্যাম্পাস একই মায়ের মতো পাশাপাশি জড়িয়ে শিক্ষার আলো বিলিয়ে যাচ্ছে।
তাদের একটি থেকে আরেকটি বিচ্ছিন্ন করতে গেলে মায়ের শরীর থেকে হাত বিচ্ছিন্ন করার শামিল। কিন্তু একটি পকেট দরজা রেখে একই ক্যাম্পাস থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আলাদা করার পরও যথারীতি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুল সময়ে খেলাধুলাসহ আনন্দ আর কলকাকলিতে মুখরিত করে তুলতো একমাত্র খেলার মাঠটি। বর্তমানে রহস্যজনক কারণে পকেট দরজাটিও বন্ধ করে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধের শেষ পেরেকটি মারা হয়েছে বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা স্কুল খোলার আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ অবারিত দেখতে চান বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। দেয়ালের ভিতরে মাঠের পশ্চিম পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরো একটি ভবন ও জায়গা রয়েছে। কয়েক একক জায়গার বিশাল আকৃতির খেলার মাঠটি উত্তর পাশে পুরাতন জরাজীর্ণ সীমানা দেয়াল ভেঙে সরকারি বরাদ্দে গতকয়েক দিন আগ থেকে নতুন করে আবারো শুরু হয়েছে সীমান্ত দেয়াল নির্মাণের কাজ। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের বাহিরে শতবছরের পুরনো মাঠটি ছাড়া কোনো জায়গা নেই। ছাগলনাইয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পূর্বের ন্যায় একটি পকেট দরজা রাখার জন্য আবেদন করলেও পকেট দরজা বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। গতকয়েক দিন ধরে তুফান গতিতে সীমান্ত দেয়ালের কাজ শেষ করার পথে রয়েছে ঠিকাদার।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোনো প্রদক্ষেপ নাই বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। গত সোমবার থেকে বর্তমানে পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও খোলার পর সাত শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর খেলাধুলা ও প্রাত্যহিত সমাবেশের পথ অবরুদ্ধই হয়ে গেছে। স্কুলের আগে পরে মাঠটি হাই স্কুল ও প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর কলকাকলিতে মুখরিত থাকতো। খেলার মাঠটি বন্ধ হয়ে গেলে চার দেয়ালের মধ্যে বন্ধি হয়ে যাবে শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থী। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত বছরের পুরনো খেলার মাঠটি বন্ধ করায় কার্যতঃ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে কয়েকশ শিশু শিক্ষার্থী এমন আলোচনা-সমালোচনা ছাগলনাইয়া কলেজ রোডসহ পৌরশহরের সর্বত্র।
এ বিষয়ে ছাগলনাইয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন সোহাগ জানান, আগে থেকে ওই মাঠে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, পিটি, সমাবেশ ও সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পাদন হতো। এছাড়াও দেয়ালের ভিতরে মাঠের উত্তর পশ্চিমাংশে মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন ও জায়গা রয়েছে। পূর্বের প্রবেশ পথটি বন্ধ করে দেয়ায় বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, পিটি ও সমাবেশ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ছাগলনাইয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. আলমগীর জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের ঘরবন্ধি থেকে খেলাখুলা ও পিটি প্যারেটের জন্য মাঠে প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করার এলাকাবাসীর দাবি যৌক্তিক।
ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবল চাকমা শিশু শিক্ষার্থীদের মাঠ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা যৌক্তিক বলে মন্তব্য করে গেইট রাখার জন্য চুক্তিবন্ধ ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

এনআরবিসি ব্যাংকে ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ ও ফরেন ট্রেড’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির বিস্তার বন্ধ না হলে দেশের ভবিষ্যৎ চরম হুমকির মুখে

বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন আলোচিত অ্যাক্টিভিস্ট ড. ফয়জুল

মেয়েদের শিক্ষার বার্তা নিয়ে তানজানিয়ায় মালালার জন্মদিন উদযাপন

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত

এখনও ধাক্কা সামলে উঠতে পারিনি, তবে হাল ছাড়ছি না

কিশোরগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষায় সাংবাদিক দম্পতির জিপিএ ৪.১১ প্রাপ্তি

মিডফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় দুই আসামি গ্রেফতার: র্যাবের একের পর এক অভিযান

কেউ সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি করলে তাদের বিএনপি করার অধিকার নেই: ব্যারিস্টার খোকন

আজ বিশেষ সেমিনার 'ভবিষ্যতের চলচ্চিত্র : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট’

এডাস্টে ‘ইংলিশ ফর ওয়ার্ক’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বললেন—বিমানে বোমা আছে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন প্রেস সচিব

মিটফোর্ডের সামনে হত্যার ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে

বলিউডে আবেগের ঘাটতি রয়েছে— সঞ্জয় দত্ত

সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফ'র গুলিতে নিহত এক বাংলাদেশী

গাজার যুদ্ধবিরতির আলোচনা অনিশ্চয়তার মুখে, ইসরায়েলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

ক্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ৭ দিন পর মালয়েশিয়া থেকে বাড়ি ফিরল রনির মরদেহ

সোহাগ হত্যার দায়ে টিটন গাজী নামে আরও একজনসহ মোট গ্রেপ্তার ৫

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলায় মার্কিন তরুণ নিহত