ঢাকা   শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নীলফামারীতে পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

Daily Inqilab নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা

১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম

১৩ ডিসেম্বর নীলফামারী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নীলফামারী সদর উপজেলাকে পাক-হানাদার মুক্ত করে বীরমুক্তিযোদ্ধারা।

 

শুক্রবার সকাল থেকে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে নীলফামারী হানাদার মুক্ত দিবস। সকাল ১০ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শোভাযাত্রায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

 

শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।

 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা মোঃ আশরাফুল হকের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফারুক আল মাসুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যাম চরন রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক জবা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা বংকু বিহারী রায়, জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তিস্তার জেগে ওঠা চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন

 

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতাঃ চলতি বছর বন্যার প্রকোপ কম থাকায় তিস্তার বুকে জেগে ওঠা শতাধিক চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে দারুণ খুশি চরাঞ্চলের হাজারো কৃষক পরিবার।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, চরের কৃষকরা ক্ষেত থেকে আমন ধান কেটে ঘরে তুলছে। অনেকে ধান কাটছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চরের আমন ধান কাটা শেষ হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

 

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছাতুনামা চরের কৃষক হাসানুর রহমান (৫০) বলেন, এ বছর ১৩ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। ১০ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমির ধান কাটবো।

 

তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৬ থেকে ১৭ মণ ধানের ফলন পেয়েছেন। গত বছরও ১২ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। বন্যার কারণে বেশিরভাগ জমির ধান নষ্ট হয়েছিল। এ বছর বন্যার প্রকোপ কম থাকায় চরের জমি থেকে আমন ধানের আশানুরূপ ফলন পেয়েছি। এদিকে বন্যার প্রকোপ কম হলেও ভাঙন থেমে নেই নদী পাড়ের এলাকাগুলোতে। চর কিসামতের কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ১০ বিঘায় আমন চাষ করেছিলাম। নদীর তলদেশ উঁচু হওয়ায় সামান্য বন্যায় তার ১০ বিঘার মধ্যে ৪ বিঘা জমি ধানসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকার অন্য কৃষকরাও বলেন ঠিক একই কথা। কৃষকরা বলছেন, চরে এখন ধান, ভূট্টা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া, শশা, মরিচ, বাদামসহ অন্তত ১৫ রকমের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। মাটির উর্বর শক্তি, ভালো বীজ নির্বাচন আর সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগে মূল ভূখন্ডের তুলনায় এখন চরে অনেক ভালো ফসল ফলছে। তাদের দাবি, তিস্তা নদী শাসন করা গেলে অনেক বেশি চরকে উৎপাদনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। যার মধ্য দিয়ে মজবুত হবে দেশের কৃষি ও অর্থনীতি।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় ১১৫ কিলোমিটার তিস্তার বুকে ২৩৬টি চর আছে। এর প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি আবাদি।

 

লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার চর ধুবনির কৃষক বাহাদুর ইসলাম (৪০) বলেন, এ বছর বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়নি। ৬ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। ৯৫ মণ ফলন হয়েছে। গত বছর একই পরিমাণ জমি থেকে মাত্র ৫০ মণ ধান পেয়েছিলাম।

 

তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আমন চাষে তার খরচ হয়েছে ৫-৬ হাজার টাকা। আর বাজারে প্রতিমন ধান ১২০০-১৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তিস্তার চরাঞ্চলে আমন ধানসহ নানা ধরনের ফসল ও সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। চরাঞ্চলে আমনের বাম্পার ফলন খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কৃষি বিভাগ চরাঞ্চলে কৃষকদের ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে দিকনির্দেশনাসহ সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করে থাকে, বলেন তিনি।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

‘শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে’ - দুলু
ফরিদপুরে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল
পতিত হাসিনা ও তার দোসররা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে- এম নাসের রহমান
হাসিনার জন্য দরদ হলে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বানিয়ে দেন : অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস
‘শ্রমিকদের আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না’ -অধ্যাপক রমজান আলী
আরও

আরও পড়ুন

প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে যুবদের দক্ষতা উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার তাগিদ বিশিষ্টজনদের

প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে যুবদের দক্ষতা উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার তাগিদ বিশিষ্টজনদের

সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা

সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা

ক্রিসমাসকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সজ্জিত স্পেন

ক্রিসমাসকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সজ্জিত স্পেন

রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ না বানাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান মির্জা ফখরুলের

রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ না বানাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান মির্জা ফখরুলের

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

ইরানের দুর্বল হওয়া কি ভারতের স্বার্থে প্রভাব ফেলবে?

ইরানের দুর্বল হওয়া কি ভারতের স্বার্থে প্রভাব ফেলবে?

‘শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে’ - দুলু

‘শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে’ - দুলু

ফরিদপুরে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল

ফরিদপুরে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল

পতিত হাসিনা ও তার দোসররা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে- এম নাসের রহমান

পতিত হাসিনা ও তার দোসররা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে- এম নাসের রহমান

কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

গাজায় পোস্ট অফিসে ইসরায়েলি হামলায় ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় পোস্ট অফিসে ইসরায়েলি হামলায় ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত

ফের ক্ষমতায় ট্রাম্প, মিলে গেছে নস্ট্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণী

ফের ক্ষমতায় ট্রাম্প, মিলে গেছে নস্ট্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণী

জর্দানে বয়স্ক পরিচর্যা কেন্দ্রে আগুন, নিহত ৬

জর্দানে বয়স্ক পরিচর্যা কেন্দ্রে আগুন, নিহত ৬

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৪ , হাসপাতালে ভর্তি ২৪১ জন

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৪ , হাসপাতালে ভর্তি ২৪১ জন

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা রাশিয়ার

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা রাশিয়ার

হাসিনার জন্য দরদ হলে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বানিয়ে দেন : অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস

হাসিনার জন্য দরদ হলে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বানিয়ে দেন : অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস

‘শ্রমিকদের আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না’ -অধ্যাপক রমজান আলী

‘শ্রমিকদের আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না’ -অধ্যাপক রমজান আলী

এখনো কেউ কোনো খোঁজ খবর নেয় নাই", শহীদ নাঈমের বাবা

এখনো কেউ কোনো খোঁজ খবর নেয় নাই", শহীদ নাঈমের বাবা

বিদায় বেলায় ১৫০০ জনের সাজা কমালেন বাইডেন

বিদায় বেলায় ১৫০০ জনের সাজা কমালেন বাইডেন

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৮৫ বাংলাদেশি

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৮৫ বাংলাদেশি