ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
অনৈতিক রিং বাণিজ্য ও অপচিকিৎসার অভিযোগে

৩ চিকিৎসকের চিকিৎসা সনদ বাতিল দাবি

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার

০৬ জুন ২০২৩, ০৭:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় জাকির হোসেন নামে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং অনৈতিক রিং বাণিজ্য ও অপচিকিৎসার দায়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. গোলাম আজম, ডা. শেখর কুমার মন্ডল ও ডা. রাশেদুল হাসান কনকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।

মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় ওই তিনজন চিকিৎসকের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীর স্ত্রী নুরুন নাহার বলেন, গত ১২ মার্চ বুকে ব্যথা নিয়ে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি হন জাকির হোসেন। ভর্তির পর তার ইসিজি করা হয়। সকালে ইসিজি রিপোর্টে তার স্বামীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান কনক সেটি ধরতে পারেননি। বিকেল ৩টা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে দেন তিনি। এমনকি একজন কার্ডিওলজিস্টও দেখানোর পরামর্শ দেননি।

তিনি বলেন, একই দিন সন্ধ্যায় বিআরবি হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজির চিকিৎসক মো. মাহবুবুল আলম প্রিন্সকে দেখালে তিনি রোগীর ডায়াবেটিক ও বুকের ব্যথার বিষয়টি জেনে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানোর পরামর্শ দেন। পরে একই হাসপাতালের ডা. শেখর কুমার মন্ডলকে (ক্লিনিক্যাল ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট) দেখালে তিনি রোগীর ইসিজি ও ইকো করান। এসব পরীক্ষার ফল দেখে রোগী ঘণ্টা দেড়েক এর বেশি বাঁচবে না জানান। একই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব রোগীর এনজিওগ্রাম করে হার্টে রিং পরাতে বলেন।

গ্রীন লাইফে ভর্তি প্রসঙ্গে স্ত্রী নুরুন নাহার বলেন, আমরা অন্য হাসপাতালে যেতে চাইলেও আমাদের এক প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। লিখিতভাবে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কথা বলা হলেও তিনি আমাদের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে আসতে বাধ্য করেন। এমনকি রোগী ভর্তি হওয়ার আগেই আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ না করে বা আমাদের মতামত না নিয়ে রোগীকে রিং পরানো হয়।

 

নুরুন নাহার বলেন, রোগীকে রিং পরানোর পরে হাসপাতালে পোস্ট অপেরেটিভ ম্যানেজমেন্ট করতে চরম অবহেলা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ডায়াবেটিস রোগী জানার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে সারারাত ইনসুলিন না দিয়ে ফেলে রাখে। রাতে রোগীর সুগার কন্ট্রোল না করাতে রোগীর কিটোন বডি পজিটিভ চলে আসে।

তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার যন্ত্রপাতি না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে সময়মতো ডায়ালাইসিস সেবা দিতে পারেনি। ফলে মাল্টিপল অর্গান বিকল হয়ে গত ১৬ মার্চ রোগী মারা যান। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিএমডিসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। দায়ীদের শাস্তির দাবিতে কলাবাগান থানায় জিডি করা হয়েছে।

দুই মাস পর গণমাধ্যমের সামনে অভিযোগ করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিবারের সদস্যরা বলেন, রোগীর মৃত্যুর পর আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিক অভিযোগ করি। তারা আমাদের মৌখিক অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সাড়ে ছয় লাখের অধিক হাসপাতালের বিল ছাড়াই ১৬ মার্চ লাশ হস্তান্তর করেন। একই সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়। তারা তাৎক্ষণিকভাবে মৌখিক আদেশ ডা. শেখর ও কনককে বহিষ্কার করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কোথাও জানায়। কিন্তু তারা তাদের কথা না রাখায় আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। তারা বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়েছে। তবে তারাও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

এ বিষয়ে প্রফেসর ডা. গোলাম আজম বলেন, জাকির হোসেনের হার্ট অ্যাটাক নিশ্চিত হওয়ার পর আমার সহকর্মী ডা. শেখর কুমার মন্ডলের অনুরোধে দ্রুততম সময় হাসপাতালে মধ্যে পৌঁছে রোগীকে ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করি। পরে ইসিজি এবং ব্লাড সুগার পর্যালোচনা করে প্রাইমারি পিসিআই এর পক্ষে মতামত দেই।

 

 


বিভাগ : অর্থনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো খুলনার তরুণরা
কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
সরকার কোনো ব্যাংক বন্ধ করবে না : অর্থ উপদেষ্টা
প্রাইম ব্যাংক’র সাথে চুক্তি করলো কাশপিয়া গ্রুপ
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের সাথে হজ এজেন্সি প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
আরও

আরও পড়ুন

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না

ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না

দৌলতখানে শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

দৌলতখানে শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

সুন্দরগঞ্জে ছয় পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম

সুন্দরগঞ্জে ছয় পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম

বৈষম্যের শিকার কুমিল্লার ১৫ হাজার এতিম শিশু

বৈষম্যের শিকার কুমিল্লার ১৫ হাজার এতিম শিশু

দালালচক্রে জিম্মি রোগীরা

দালালচক্রে জিম্মি রোগীরা

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই সাটুরিয়ার শিশু শিক্ষার্থীদের ভরসা

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই সাটুরিয়ার শিশু শিক্ষার্থীদের ভরসা

পঞ্চগড়ে চিকিৎসক পদায়নের দাবিতে সড়ক অবরোধ

পঞ্চগড়ে চিকিৎসক পদায়নের দাবিতে সড়ক অবরোধ