সুুস্থ মানুষ আওয়ামী লীগ করে কি?

Daily Inqilab ড. মো. আবুল কালাম আজাদ

১৩ মে ২০২৫, ১২:২৬ এএম | আপডেট: ১৩ মে ২০২৫, ১২:২৬ এএম

গণতন্ত্রহীন দেশে জনগণের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, স্বাধীনভাবে লেখা ও মত প্রকাশের অধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, সামাজিক সংহতি ও রাজনৈতিকসহ অন্যান্য অধিকারের বালাই থাকে না। ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরাচার শেখ মুজিব ও তার প্রটোটাইপ ফ্যাসিস্ট প্যারানয়েড ডাইনী হাসিনা মিলে ১৬ বছর বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন রেখে দেশে আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিল। স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদ আরও ৯ বছর গণতন্ত্রকে উঠতে দেয়নি। তাই ভারতের সেবাদাস শেখ পরিবার ও এরশাদের যৌথ প্রযোজনায় এদেশে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়। টিউমার নয় ক্যান্সার ধরা পড়ে রাষ্ট্রের সকল ভাইটাল অর্গানে যেমন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাহী প্রতিষ্ঠান, বিচারঙ্গন, পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদি। মৃত বাপজানের স্বপ্ন বাকশালকে পুনরুজ্জীবিত করতে ‘বাকশাল-২’ ফ্যাসিস্ট কাঠামো গড়ে তোলে। তাই সব জায়গায় তার নিজস্ব লোক যেমন পেশাজীবী সংগঠন থেকে বিচারালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন, গণপরিবহন হতে সরকারি সম্পদ সবকিছুই দখলে রেখেছিল। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছিল, হাসিনা পুরো রাষ্ট্রের কেবলা বানিয়ে ফেলে গণভবনকে। তার নির্দেশ ছাড়া সে সময় গাছের একটি পাতাও নড়ত না। এরকম ‘জী হুজুর’ টাইপের রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় আপনি অন্য দলে সুশীল লোকজন পেতে পারেন, আওয়ামী লীগার নয়। তাছাড়া সমাজের সৎ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তিসম্পন্ন মানুষেরা তো আজকাল রাজনীতি এড়িয়ে চলেন?

১.
আওয়ামী লীগ একটানা গত ১৬ বছর নতুন প্রজন্মের কাছে কিছু নিজস্ব বয়ান প্রচার করে, যা ছিল নিতান্তই অসত্য, অতিরঞ্জিত, অতিকথন- অনেকটাই তাদের দলীয় ও পারিবারিক কোম্পানির মতো করে মনগড়া ও বানানো স্ক্রিপ্ট। সেটি হচ্ছে এ রকম- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাই তিনি ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ গঠন করে। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৬২ সালে তার নির্দেশে ছাত্ররা শিক্ষা সংকোচন বিরোধী আন্দোলন করে। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দেন। পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসক আইয়ুব খান তাকে বন্দি করে। ১৯৬৯ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তরে যখন গড়িমসি করে, তখন ৭ মার্চ তিনি ঘোষণা করেন- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তিনি নির্দেশ দেন- ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো...যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। ২৫ মার্চ গ্রেফতারের আগে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর আহ¦ানে ছাত্র-জনতা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে (তথ্যসূত্র: সমকাল ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪)।’ এসব ন্যারেটিভ রাষ্ট্র ও সমাজ কাঠামোয় প্রতিষ্ঠিত করার অনেক আয়োজন ছিল। স্কুল ও কলেজগুলোর পাঠ্যসূচি, প্যারেড ও জাতীয় দিবসগুলোতে ঢাকঢোল পিটিয়ে এসব বয়ান ছড়িয়ে দেয়া হতো। এমনকি ওয়ার্ড-ইউনিয়ন-পৌরসভা-উপজেলা-মহানগর-জেলা-বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির করানো হতো এই ন্যারেটিভ। তাই ন্যারেটিভের ধারক ও বাহকের দল স্বৈরতান্ত্রিক দেশ উত্তর কোরিয়াকে ছাড়িয়ে গেছে গত ১৬ বছর। উত্তর কোরিয়াতে রাষ্ট্রটির জনক কিম জং ইলের মৃত্যুবার্ষিকীতে জোর করে যেমন সকল জনগণকে কাঁদতে হয়, ঠিক তেমনি এদেশে গত দেড় দশক জনগণের কান নষ্ট করেছে বয়ান প্রচার করে।

২.
স্বাধীনতা উত্তর ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রের মূল অর্গান ‘নির্বাহী’ বিভাগে আওয়ামী দানব তৈরির প্রধান কারিগর হলেন শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক সচিব ও রক্ষীবাহিনীর সিইও তোফায়েল আহমেদ। তিনি সরাসরি কোনো ধরনের পরীক্ষা বা বাছ-বিচার অর্থাৎ প্রিলি-রিটেন-ভাইবা ছাড়াই বিসিএস কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন আওয়ামী লীগের কর্মীদের। সেই একই কাজ ৪০ বছর পর শুরু করেন শেখ মুজিবের মন্ত্রী পরিষদের সচিব এবং শেখ হাসিনার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক সচিব এইচ টি ইমাম। তিনি ২০১৩ সালের নভেম্বরে টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে অত্যন্ত খোলামেলা ও নির্লজ্জভাবে বলেন ‘তোমরা যারা প্রশাসনে যেতে চাও, আমি প্রয়োজনে তাদের জন্যে কোচিং ক্লাস নিতে রাজি আছি। তোমাদের লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, তারপর আমরা দেখবো। নেত্রী বলেছেন যেভাবেই পারো আমার ছেলেদের একটা ব্যবস্থা করে দাও ইমাম।’ এভাবেই আওয়ামী পিরিয়ডে প্রশাসনে দৈত্যের বীজ বপন করা হয়েছে এবং তাদের শিকড় বট গাছের মতো অনেক গভীরে। বিগত ১৬ বছর বিচার বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ হয়েছে ছাত্রলীগের ক্যাডার, ছাত্র হত্যার আসামী, গৃহশিক্ষক, আওয়ামী পোস্টধারী নেতা-কর্মী, আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্মীয়স্বজন ও আশীর্বাদপুষ্ট লোকজন। তাই জাতি পেয়েছে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মো. আখতারুজ্জামানদের মতো মেরুদ-হীন ‘দলবাজ’ ও ‘দুর্নীতিবাজ’ এবং ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ টাইপের বিচারপতি। এসবের সবশেষ ভার্সন ছিল বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম যিনি নিজেকে একজন ‘শপথবদ্ধ’ রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরেন। বিগত তিনটি নির্বাচন কমিশন ছিল হাসিনার আজ্ঞাবহ, দলদাস এবং ঠুঁটো জগন্নাথ মার্কা। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রধান কারিগর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের ‘নিশিরাতের’ ভোটের প্রধান সিপাহশালার ছিলেন কেএম নূরুল হুদা এবং সর্বশেষ ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনের মীরজাফর ছিলেন কাজী হাবিবুল আওয়াল। কাজী ও হুদা কমিশন মিলে নির্বাচনের শবযাত্রা নিশ্চিত করেন এবং একজন আরেকজনকে হারিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা দেখিয়েছেন। গত ১৭ বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে ভিসি হিসেবে পেয়েছে ‘যুবলীগ মিজান’ টাইপের নিয়োগ, যারা কাজ করেছে সরকারের এক্সটেনশন হিসেবে। এভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে যেখান থেকে সুশীল সংবিধান রক্ষাকারী কাউকে পাওয়া দুষ্কর।

৩.
আওয়ামী লীগ সরকার অগণতান্ত্রিক হলেও দল পরিচালনায় বা দলের নেতা নির্বাচনে সম্পূর্ণ অন্যরকম। বিগত দেড় দশক আওয়ামী লীগ ছেড়ে অন্য দলে গেছে রেকর্ড নেই। কারণ, এ দলের চেইন অব কমান্ড টেকসই এবং আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই দলের সদস্য তারাই হতে পারে যারা প্রধানত আওয়ামী পরিবার এবং ছাত্রলীগ হতে উঠে আসা। ভূইফোড়, হাইব্রিড, দালাল বা চামচারা কেউই ওপরে উঠতে পারে না। অন্য দল হতে কেউ এই দলে জয়েন করলে, হানিমুনে পিরিয়ড শেষ হওয়ার সাথে সাথে কিক নিশ্চিত। যত অনৈতিক কামাইপাতি আছে তা একেবারে তৃণমূল হতে কেন্দ্র পর্যন্ত সিন্ডিকেটেড। ফলে এখানে ধানের ‘চুচা’ টাইপের কর্মী সংখ্যা নগন্য। তাহলে সাংগঠনিক কাঠামোতে সুশীল আওয়ামী লীগার কই?

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বর্তমান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছিলেন ‘আওয়ামী লীগাররা দু’ধরনের। প্রথম ধরনের যারা, তারা মূলত: ১৯৭৫ পূর্ব মনমানসিকতার। এরা আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে, কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ^াস করে। দ্বিতীয় ধরনের যারা, তারা ১৯৭৫ সালের বাকশালী চেতনার। এরা বহুদলীয় গণতন্ত্র বা মানুষের ভোটাধিকারে বিশ^াস করে না। এরা মনে করে যত খারাপ কাজই করুক দেশ শাসনের একমাত্র অধিকার আওয়ামী লীগের।’

তার সুরেই বলতে চাই, ‘আওয়ামী লীগে ক্লিন ইমেজ বা আলোকিত আওয়ামী লীগার খুঁজে লাভ নেই। কারণ, যারাই আওয়ামী লীগে ঢুকুক, শেষ পর্যন্ত তারা আওয়ামী লীগার হয়ে বের হবে।’

লেখক: গবেষক ও অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্য সফরে পাচারের অর্থ পুনরুদ্ধার বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে : প্রেস সচিব শফিকুল আলম

যুক্তরাজ্য সফরে পাচারের অর্থ পুনরুদ্ধার বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে : প্রেস সচিব শফিকুল আলম

ইরানের পাল্টা হামলা হতে পারে ভয়াবহ-ব্যাপক

ইরানের পাল্টা হামলা হতে পারে ভয়াবহ-ব্যাপক

প্রধান উপদেষ্টার সাথে হাউস অব কমন্সের স্পিকারের বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টার সাথে হাউস অব কমন্সের স্পিকারের বৈঠক

ইরানে ইসরাইলি হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নেই : দাবি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ইরানে ইসরাইলি হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নেই : দাবি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

চকরিয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু

চকরিয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু

এবার ইরানের রাডার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হামলা ইসরাইলের

এবার ইরানের রাডার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হামলা ইসরাইলের

মাগুরার গ্রামে সংঘর্ষে হাতবোমা বিস্ফোরণ বোমাবাজসহ তিনজন গ্রেফতার, আহত ১০ জন

মাগুরার গ্রামে সংঘর্ষে হাতবোমা বিস্ফোরণ বোমাবাজসহ তিনজন গ্রেফতার, আহত ১০ জন

সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মোদিকে মমতার চিঠি

সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মোদিকে মমতার চিঠি

পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা

পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা

মারা গেছেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর

মারা গেছেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর

ভারতের বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করলেন ট্রাম্প

ভারতের বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করলেন ট্রাম্প

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ২ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ২ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত

বিদেশী জিহাদী কাফেলা আখ্যা দিয়ে ‘কাফেলাতুস সুমুদকে’ প্রতিরোধের ঘোষণা ইসরাইলের

বিদেশী জিহাদী কাফেলা আখ্যা দিয়ে ‘কাফেলাতুস সুমুদকে’ প্রতিরোধের ঘোষণা ইসরাইলের

ঈদের ছুটি শেষ : সরকারি-বেসরকারি কলেজ খুলবে রোববার

ঈদের ছুটি শেষ : সরকারি-বেসরকারি কলেজ খুলবে রোববার

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান নিহত

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান নিহত

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা, পাল্টা জবাবের আশঙ্কায় ইসরাইলজুড়ে সতর্কতা

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা, পাল্টা জবাবের আশঙ্কায় ইসরাইলজুড়ে সতর্কতা

অবাধে চলছে রেনু পোনা শিকার, ধ্বংস হচ্ছে নদীর জীব বৈচিত্র্য

অবাধে চলছে রেনু পোনা শিকার, ধ্বংস হচ্ছে নদীর জীব বৈচিত্র্য

তেহরানের আবাসিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

তেহরানের আবাসিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

ইরানে হামলা: ট্রাম্পের সহযোগী বলল ‘খেলা শুরু’

ইরানে হামলা: ট্রাম্পের সহযোগী বলল ‘খেলা শুরু’

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, বিএনপি অফিস ভাংচুর

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, বিএনপি অফিস ভাংচুর