ট্রান্সজেন্ডার একটি ভয়াবহ ফেতনা
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
(গত দিনের পর) পুরো পৃথিবী আল্লাহর সৃষ্টি। মানুষের জীবন, মরণ, শরীর সবকিছইু আল্লাহ প্রদত্ত। এসব কিছুর একচ্ছত্র মালিক মহান আল্লাহ। কেউ চাইলেই তার শরীরে পরিবর্তন আনতে পারে না। কেউ চাইলেই যেকোনো কিছু খেতে পারে না। কারণ জীবন, মরণ, হায়াত, রিযিক সবকিছুই আল্লাহর হাতে। কার হায়াত কতদিন, কার রিযিক কী হবে এবং কে কী খাবে না খাবে আল্লাহ সবকিছুর জন্য নির্দিষ্ট সীমারেখা দিয়েছেন। এর বাইরে চলার সুযোগ নেই। আল্লাহ যাকে নারী বানাতে চেয়েছেন তাকে নারীর দেহাবয়ব দিয়েছেন। আর যাকে পুরুষ বানাতে চেয়েছেন তাকে পুরুষের দেহাবয়ব দান করেছেন। যার জন্য যাতে কল্যাণ রয়েছে তাকে সেটাই দিয়েছেন। কেউ চাইলেই তার শরীরে অস্ত্রোপাচার করতে পারে না। নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারে না। কারণ এ শরীর তার মালিকানাধীন নয় বরং তার মালিক আল্লাহ। আল্লাহ তাকে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভোগ করার অধিকার দিয়েছেন। এর মাঝে পরিবর্তনের চেষ্টা করা চরম বাড়াবাড়ি এবং ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ। ইসলামের দৃষ্টিতে তা হারাম তো বটেই, মারাত্মক পর্যায়ের গোনাহও।
লিঙ্গ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঈমানেরও পরিবর্তন হয় : ট্রান্সজেন্ডারবাদী তথা লিঙ্গ পরিবর্তনকারীদের লিঙ্গ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঈমানেও পরিবর্তন আসে। মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি। কাকে নারী বানাবেন আর কাকে পুরুষ এটি নিতান্তই আল্লাহর সিদ্ধান্ত। কেউ নারী থেকে পুরুষ হতে চাচ্ছে একথার অর্থ হলে, সে আল্লাহর সিদ্ধান্তের উপর অটল নয়। সে আল্লাহর সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে নিজেই চাইলে কিছু করতে পারে এধরনের কিছু বুঝাতে চাচ্ছে। আল্লাহর কুদরতকে অস্বীকার করছে। এটি আল্লাহর বিধানের সাথে চরম বাড়াবাড়ি ও ভ্রষ্টতা বৈ কিছু না।
মোটকথা আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি অসন্তোষ হওয়া আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করার নামান্তর। যা ঈমান নষ্ট করে। যে জন্মগত পুরুষ, শত চেষ্টা করেও নিজের পেটে বাচ্চা আনার সক্ষমতা রাখে না। তদ্রুপ যে জন্মগত নারী, তার জন্য হাজারো চেষ্টা করেও শুক্রানু তৈরী করা সম্ভব না। এটি নিছক আল্লাহ প্রদত্ত। আল্লাহ যাকে চান নারী আর যাকে চান পুরুষ হিসেবে সৃষ্টি করেন। যোনীপথ আর স্তন কেটে চাইলেই কেউ পুরুষ হয়ে যেতে পারে না। আবার পুরুষাঙ্গ কেটে স্তন বড় করেও কেউ মেয়ে হতে পারে না। এসব আল্লাহর প্রতি অনাস্থার শামিল। মুমিন মাত্রই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে মেনে নিবে। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ঈমান আনবে। ভালো-মন্দ যা হয় সব আল্লাহর পক্ষ থেকে একথার উপর পূর্ণ বিশ^াস রাখবে। এর বিপরীত বিশ^াস স্থাপন করলে তার ঈমানের ব্যাপারে শঙ্কা রয়েছে। যে ছেলে থেকে মেয়েতে রূপান্তরিত হচ্ছে সে একথা বুঝাতে চাচ্ছে যে, মূলত তার মেয়ে হিসেবে জন্ম লাভ করার প্রয়োজন ছিল। আল্লাহ হয়তো ভুলে তাকে ছেলে বানিয়েছেন। এর দ্বারা সে ঈমানচ্যুত হয়ে যাবে।
ট্রান্সজেন্ডারবাদ সমকামিতার স্বাভাকিকীকরণ : ট্রান্সজেন্ডারে বিশ^াসীরা প্রতিনিয়ত সমকামিতাকেই প্রমোট করছে। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি তাদের আসক্তির কারণেই মূলত তারা ট্রান্সজেন্ডারে রূপান্তরিত হয়। একটা ছেলে নিজেকে মেয়ে দাবি করে পরবর্তীতে একটা ছেলের সাথেই সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। তার সাথে রাত্রি যাপনসহ সবধরনের অনৈতিক কাজ করে বেড়াচ্ছে। এটি সমকামিতার একটি থিউরিও বটে। ছেলে হয়ে অন্য ছেলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে। তদ্রুপ মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়ের সাথে স্বামী-স্ত্রী সূলভ আচরণ করছে। এ সমকামিতা একটি জঘন্য অপরাধ।
এ অপরাধের দরুণ আল্লাহ তায়ালা কওমে লূতকে ধ্বংস করেছেন। পবিত্র কোরআনে বহু আয়াতে তাদের বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা এমন ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে সমকামে লিপ্ত। (তিরমিজি: হাদীস-১১৬৫)। সমকামিতা ইসলামে শুধুই অপরাধ নয়, বরং মারাত্মক পর্যায়ের গোনাহের শামিল। এটি কোনো সুস্থ মস্তিস্কের মানুষের দ্বারা কল্পনা করাও অসম্ভব প্রায়। ট্রান্সজেন্ডারবাদীরা লিঙ্গ পরিবর্তনের মাধ্যমে সমকামিতায় লিপ্ত হচ্ছে। একজন পুরুষ অপর পুরুষকে এবং একজন নারী অপর নারীকে নিয়মিত ভোগ করছে। তাদের এ মতবাদ সামাজে বিষবাষ্পের ন্যায় বিস্তার করছে।
ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ রুখতে করণীয় : পশ্চিমা দেশগুলোতে এ মতবাদের উৎপত্তি হয়। তাদের স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের এ মতবাদ শেখানো হচ্ছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এর বিষ ঢুকে পড়ছে। কোনো ছেলে নিজেকে মেয়ে বলে দাবি করলে এবং কোনো মেয়ে নিজেকে ছেলে দাবি করলে সমাজও তাদের সে ব্যাপারে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এ মতবাদ ইদানীং পশ্চিমা বিশ^ ছাড়িয়ে উপমহাদেশেও পৌঁছে গেছে। হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে। উত্তরাধিকার বণ্টনসহ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নানান সমস্যা তৈরী হচ্ছে। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আমাদের দেশেও এ নিকৃষ্ট মতবাদ প্রতিষ্ঠায় রাজপথে আন্দোলন হবে। সংসদে আঈন প্রণয়ন করা হবে। মূর্খ সমাজও তাদের সাদরে গ্রহণ করে নেবে। সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রাখতে এদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য এখন থেকে সকল ইসলাম পন্থিদের এ ব্যাপারে সোচ্চার হওয়া দরকার। সমাজের সাধারণ মানুষসহ সবাইকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা দেয়া উচিৎ। প্রত্যেক লেখক তার কলমের হাতিয়ার ব্যবহার করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে নিরব ভূমিকা না রেখে সকলেই সরব হওয়া সময়ের দাবি।
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ
“রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ”
বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর ঠাঁই হবে না: আমিনুল হক
আলেম সমাজের সাথে ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক রয়েছে বিএনপির: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির
৪ দিনে ভারত থেকে এলো ৭২৫ মেট্রিক টন চাল
পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিবিরের শোক
নিরীহ কোনো মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় : আইজিপি
দেশকে এগিয়ে নিতে মেয়েদের সুশিক্ষা অর্জনের বিকল্প নেই - শেরপুরের পুলিশ সুপার
গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা: জোনায়েদ সাকি
নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার চায় - মাওলানা এবিএম জাকারিয়া
বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে ন্যাটো প্রধানের বৈঠক
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অর্থবহ সংস্কারের আগে নির্বাচন নয় -প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না
অপরিকল্পিত বাধ-রাস্তা নির্মাণে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়েছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
সাটুরিয়ায় তেলের পাম্পে ভয়াবহ আগুন
নির্বাচনব্যবস্থা আমূল পুনর্গঠনের তাগিদ রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের
কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা
ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৬
রাজশাহীর বাঘায় আম বাগানে যুবকের লাশ