ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ | ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

ক্ষণিক ভুলের অনুতাপ

Daily Inqilab আব্দুস সালাম

৩০ মে ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ৩০ মে ২০২৫, ১২:০৩ এএম

রেশমা আর জীবনের দাম্পত্য দশটি বছর পেরিয়ে এসে কোথায় যেন ক্লান্তির এক বিবর্ণ রেখা এঁকে দিয়েছিল। দুই কন্যা ফৌজিয়া আর রাইকা যেন ছিল তাদের জীবনের একমাত্র আশ্রয়, একমাত্র আলো। তবু সে আলোও যেন অভাবের অন্ধকারে প্রতিনিয়ত ম্লান হয়ে যেত। জীবন ঢাকার এক সরকারি অফিসে একান্ত ছোট পদে চাকরি করে। মাস শেষে হাতে আসে সামান্য কিছু টাকা—যা দিয়ে একমুঠো জীবনের খরচ মেটানো যেন পাহাড় টেনে নেওয়ার মতো কঠিন। রাজধানীর ভাড়াবাসা, প্রতিদিনের অনাহূত বাজারের থলে, আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ সব মিলে হিসাব যেন কোনোদিনই মেলে না। প্রতিটি দিন কাটে না কাটার মতো টাকার অঙ্কে নয়, কাটে স্বপ্নের সাথে আপস করে, প্রয়োজনের সাথে যুদ্ধ করে।

রেশমা শিক্ষিতা, রূপবতী, সাবলীল স্বভাবের নারী। একসময় তার হাসিতে প্রাণ ফুটত ঘরে। কিন্তু সংসারের অভাব-অভিযোগ, টানাপোড়েন আর গ্লানির ভারে তার সে সৌন্দর্যও যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে জীবনের চাপা যন্ত্রণার মাঝে রূপ আর বিদ্যার আলো ম্লান হয়ে আসে।

আত্মীয়রা ঘরে ঢুকতেই রেশমার মুখটা কেমন গম্ভীর হয়ে যায়, যেন এক অজানা দ্বিধা তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ভালো কিছু খাওয়াতে পারে না, তাদের জন্য আলাদা একটি ঘর পর্যন্ত দিতে পারে না এই অসহায়ত্ব তার বুকের গভীরে আগুনের মতো জ্বলে। অপমান নয়, কিন্তু আত্মসম্মানের গায়ে যেন কেউ বারবার আঘাত করছে। একদিন হঠাৎ রেশমা জানায়—সে একটি শোরুমে সেলসগার্ল হিসেবে চাকরি করতে চায়। জীবন প্রথমে খানিকটা অবাক হয়ে যায়। কিন্তু তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপচাপ মাথা নাড়ে। সে জানে—সংসারের শরীরে জলের মতো গড়িয়ে পড়া এই অর্থকষ্ট এখন অসহ্য হয়ে উঠেছে। আর নীরব থাকা মানেই ভাঙনের ডাক।

প্রথম ছয় মাস যেন ছিল এক টুকরো শান্তি। সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা আসে। ফৌজিয়া ভালো স্কুলে পড়তে শুরু করে, রাইকার জন্যও একজন বুয়া রাখা হয়। রেশমা সকাল আটটায় বেরোয়, ফেরে রাত দশটায়। জীবন নিজেই অফিসের পর দুই মেয়েকে সামলায়।

কিন্তু শান্তির পরেই শুরু হয় সৃষ্টির ভাঙন। রেশমার চোখে যেন জীবনের গুরুত্ব কমতে শুরু করে। সে আর আগের মতো কথা বলে না, আগের মতো শ্রদ্ধা করে না। জীবন বোঝে, কোথাও যেন কিছু একটা বদলে গেছে। তবে সে কিছু বলে না—সে ভয় পায় আবার সব হারাতে হবে কিনা! একদিন জীবন নিজেই রেশমার খোঁজ নেয়। সে দেখে—শোরুমের আরেক পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে রেশমার সম্পর্ক অস্বাভাবিক রকম ঘনিষ্ঠ। তাদের হাসাহাসি, কথা বলার ভঙ্গি, দৃষ্টি—সবই বলে দেয় এখানে কেবল সহকর্মিতার বন্ধন নেই। জীবন বোবা হয়ে যায়। কিছু বলে না, শুধু রাতে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে রেশমার মুখে। আর ভাবে যে নারী একদিন তার স্বপ্ন ছিল, আজ সে স্বপ্ন কেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়াল?

একদিন সন্ধেবেলায়, যখন আকাশে রঙ মাখা মেঘেরা ভেসে বেড়াচ্ছে, জীবন অফিস শেষে ক্লান্ত পায়ে ঘরে ফিরল। ঘরের ভেতর এক অজানা শীতলতা। রেশমা চুপচাপ বসে আছে জানালার ধারে, চোখে এক অচেনা দীপ্তি, এক অদ্ভুত নীরবতা। জীবন কিছু বলার আগেই রেশমা হঠাৎ বলল, “আমি আর তোমাকে ভালোবাসি না জীবন। আমার জীবনের নতুন স্বপ্নে...তুমি নেই, আছে অন্য কেউ।”

বুকের মধ্যে যেন একটা কিছু ধ্বসে পড়ল জীবনের। যেন হৃদয়টা কেমন থমকে গেল মুহূর্তে। সে বিশ্বাসই করতে পারল না এই সেই রেশমা, যার জন্য সে সমস্ত লাঞ্ছনা, অভাব, অপমান সয়ে গেছে? যে রেশমার হাসি দেখার জন্য জীবনের প্রতিদিনের ক্লান্তিকে সে অগ্রাহ্য করেছে?

শব্দগুলো যেন আগুন হয়ে বিঁধল শরীরের প্রতিটি রন্ধে। চারপাশের সবকিছু হঠাৎ যেন ঝাপসা হয়ে গেল, দেয়ালগুলো যেন এগিয়ে এসে চাপ দিতে লাগল বুকের উপর। তাকে বলা সেই “ভালোবাসি”, সেই “তোমার পাশে আছি”...সব মিথ্যে হয়ে গেল এক নিমিষে।

জীবনের চোখের সামনে সংসারটা যেন একের পর এক ইট খুলে ধ্বসে পড়ছে। তার মেয়েদের হাসিমুখ, ঘরের সিঁড়ি, খাটের মাথার পাশে রাখা ছোট্ট ঘড়ির টিকটিক সব যেন অসাড় হয়ে উঠল। সে কিছু বলল না। শুধু চোখে বিস্ময় নিয়ে বসে রইল।

তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। দুই কন্যাকে জীবন নিজের কাছে রেখে দেয়। শুরু হয় আরও কঠিন সংগ্রাম। মা-বাবাকে শহরে এনে দুই মেয়ের দেখাশোনা করায়। কিন্তু তারাও বেশিদিন থাকতে পারেন না। আশেপাশে কেউ নেই, শুধু রাইকা আর ফৌজিয়ার অবাক দৃষ্টি। জীবন বিবাহ করে না সে প্রতিজ্ঞা করে, তার হৃদয়ে রেশমার স্থানে কাউকে বসাবে না। অন্য কেউ তার স্থান নিতে পারবে না।

অন্যদিকে রেশমার নতুন জীবন ছিল না সুখময়। কাওসার নামে এক প্রতারক তাকে বিয়ে করে, শুরু হয় মারধর, অপমান, তিরস্কার। দুই মেয়ের কোনো স্থান নেই তার সংসারে। শ্বশুরবাড়িতে সে যেন এক অবাঞ্ছিত অতিথি। রেশমা বুঝতে পারে সে ভুল করেছে। জীবন তাকে ভালোবাসত, সম্মান করত। কাওসার শুধু ভোগের মানুষ।

অবশেষে একদিন... অনেক পেরিয়ে যাওয়া ঋতুর পরে, এক বিষণ্ন বিকেলে, রেশমা ফিরে আসে সেই দরজায় যেখানে একদিন ভালোবাসা ছিল, ছিল নিশ্চিন্ত আশ্রয়, ছিল জীবন। একহাত দিয়ে কপালের আঁচল সামলে সে দাঁড়ায় জীবনের সামনে কাঁপা কণ্ঠে বলে, “আমি ভুল করেছিলাম জীবন... অনেক বড় ভুল। ক্ষমা করে দাও। চল, আবার নতুন করে সব শুরু করি। আবার আমি তোমার হবো, আমাদের মেয়েদের মা হবো... আর কাঁদতে হবে না তোমাকে একা।”

জীবন কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকে। তারপর ধীরে ধীরে তার চোখ রেশমার চোখে স্থির হয়—তবে সেই চেনা উষ্ণতা আর নেই সেখানে, নেই আগের আশ্রয়। কেবল আছে পাথরের মতো জমাট এক যন্ত্রণা। সে নরম অথচ কঠিন কণ্ঠে বলে, “না রেশমা, আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। আমি এখন অন্য এক সম্পর্কে আছি। আর তোমাকে নিয়ে কোনো স্বপ্ন দেখতে পারি না। আমার হৃদয়টা অনেক আগেই পুরোনো হয়ে গেছে... সেখানে নতুন কিছু আর জন্ম নেয় না। তুমি ফিরে এলে কি সব আগের মতো হয়ে যাবে? যে ক্ষত তুমি রেখে গেছো, তা এখনও রক্তঝরায়...” রেশমা কিছু বলে না। তার চোখে জল নেই তবু বুক ভাঙার শব্দ যেন শোনা যায় চারপাশে। সে জানে, এ ফিরতে না পারার দুঃখ—এই পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন শাস্তি। সে ঘুরে দাঁড়ায়। পেছনে ফেলে যায় জীবনের নতুন সংসার, মেয়েদের হাসি, সেই একফালি আশ্রয়। রেখে যায় শুধু এক দীর্ঘশ্বাস... আর এক পশলা বিষণ্নতা। ফিরে আসে কাওসারের গৃহে যেখানে কোনো ভালোবাসা নেই, নেই আশ্রয়। কাওসারের হাতে সে অপমানিত হয়, মার খায়। যে স্বপ্নের আশায় সব হারিয়ে ছিল, সে স্বপ্নটা এখন এক বিভীষিকা। কাওসার তার শরীরে হাত তোলে, তার চোখে ঘৃণা, মুখে বিষ। একদিন সব সইতে না পেরে সে চাকরিটাও ছেড়ে দেয়। দমবন্ধ এক ক্লান্ত হৃদয় নিয়ে ফিরে আসে পিতার বাড়িতে। কিন্তু সেখানেও শান্তি নেই। বাবা-মা মুখ ফিরিয়ে নেয়। মা বলে, “তুই কি সত্যিই মানুষ? যে নিজের সংসার ভেঙে আজ এই দুর্দশায় পড়েছিস? যাদের তুই ফেলে এলি, আজ তোর মুখও তারা দেখতে চায় না।”

রেশমা কোনো প্রতিবাদ করে না। মাথা নিচু করে বসে থাকে। বাইরে তখন অন্ধকার নেমেছে। তার জীবনের আলোটা যেন একেবারেই নিভে গেছে। আর এক কোণে, নিঃশব্দে কাঁপতে কাঁপতে রেশমার আত্মা ফিসফিসিয়ে ওঠে—‘ভুল তো সবাই করে... কিন্তু জীবন তো কাউকে কাউকে আর ফিরিয়ে আনে না। সংসার হলো বোঝাপড়া আর ভালোবাসার এক নীরব স্থাপত্য। আর সেই স্থাপত্যে যদি স্বার্থপরতা, লোভ আর ভ্রান্ত বিশ্বাসের আগুন লাগে সব কিছুই ছাই হয়ে যায়। একটি ভুল সিদ্ধান্ত কেবল এক জনের নয়, একটি পুরো প্রজন্মের হৃদয়ে দাগ ফেলে দিতে পারে—আর রেশমা তারই এক জ্বলন্ত উদাহরণ।

একদিন রেশমা আত্মহত্যার কথাও ভাবে। কিন্তু ঠিক তখনই ছোটবেলার একটি ছবি মনে পড়ে ফৌজিয়া আর রাইকা তার কোলে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। সেদিনের রেশমা কি আজকের রেশমাকে চিনতে পারবে? শেষরাতে আকাশে একফালি চাঁদ ছিল। সে তাকিয়ে থাকে, আর ভাবে জীবন তো আমাকে ছেড়ে যায়নি, আমি-ই গিয়েছিলাম। সেই ভুলের জন্য আজ আমাকে এত বড় মূল্য দিতে হচ্ছে। আর আজ, রেশমা কেবল প্রতীক্ষায় থাকে এই জগৎ ছেড়ে কখন পরপারের ডাক আসবে।


বিভাগ : সাহিত্য


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

জুলাই-আগস্টে গণহত্যা: হাসিনা-কামালের বিচার শুরুর আদেশ

জুলাই-আগস্টে গণহত্যা: হাসিনা-কামালের বিচার শুরুর আদেশ

আবারও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বেজে উঠল সাইরেন

আবারও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বেজে উঠল সাইরেন

অর্থকষ্টে ফর্ম ফিলাপ করতে না পারা শিক্ষার্থীর পাশে ইবি ছাত্রদল নেতা

অর্থকষ্টে ফর্ম ফিলাপ করতে না পারা শিক্ষার্থীর পাশে ইবি ছাত্রদল নেতা

১০০ বছর পূরণ করলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির

১০০ বছর পূরণ করলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির

শ্রমিক কল্যাণে বেক্সিমকো ফার্মার ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা অনুদান

শ্রমিক কল্যাণে বেক্সিমকো ফার্মার ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা অনুদান

দুমকীতে জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত নের্তৃবৃন্দের সৌজন্যে সাক্ষাৎ

দুমকীতে জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত নের্তৃবৃন্দের সৌজন্যে সাক্ষাৎ

বাবার চিকিৎসার জন্য গিয়ে ভারতীয়দের রোষানলে বাংলাদেশি যুবক! ভিডিও ভাইরাল

বাবার চিকিৎসার জন্য গিয়ে ভারতীয়দের রোষানলে বাংলাদেশি যুবক! ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুরে ডেঙ্গুসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগী হাসপাতাল ঠাঁসা , রোগী সুস্থের ফল আপেল- মাল্টা - আঙুর বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

ফরিদপুরে ডেঙ্গুসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগী হাসপাতাল ঠাঁসা , রোগী সুস্থের ফল আপেল- মাল্টা - আঙুর বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

আরও সাতটি দেশের পণ্যে নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

আরও সাতটি দেশের পণ্যে নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

ইয়েমেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হতচকিত ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

ইয়েমেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হতচকিত ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

চিরিরবন্দরে ডাম্পট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ইপিজেড কর্মী নিহত

চিরিরবন্দরে ডাম্পট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ইপিজেড কর্মী নিহত

এবার সউদী আরবে সম্পত্তি কিনতে পারবে প্রবাসীরা

এবার সউদী আরবে সম্পত্তি কিনতে পারবে প্রবাসীরা

অবশেষে ২০ দিন পর খুলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ

অবশেষে ২০ দিন পর খুলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ

‘হাসিনাকে রক্ষা করা অনৈতিক’—ভারতের প্রতি প্রেস সচিবের কড়া বার্তা

‘হাসিনাকে রক্ষা করা অনৈতিক’—ভারতের প্রতি প্রেস সচিবের কড়া বার্তা

বকশীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নারীসহ সাত জনকে পুশইন

বকশীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নারীসহ সাত জনকে পুশইন

হাসিনার গুলির নির্দেশ: ফাঁস হওয়া অডিও যাচাইয়ের পদ্ধতি প্রকাশ করল বিবিসি

হাসিনার গুলির নির্দেশ: ফাঁস হওয়া অডিও যাচাইয়ের পদ্ধতি প্রকাশ করল বিবিসি

হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের তিন দিনের শুল্ক আলোচনা শুরু

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের তিন দিনের শুল্ক আলোচনা শুরু

হাবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের মধ্য হতে রেজিস্ট্রার, পরিচালক নির্ধারিত পদে নিয়োগের দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি

হাবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের মধ্য হতে রেজিস্ট্রার, পরিচালক নির্ধারিত পদে নিয়োগের দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি

জুনিয়রদের সমকামিতায় বাধ্য করায় সাত ইসরায়েলি সেনা আটক

জুনিয়রদের সমকামিতায় বাধ্য করায় সাত ইসরায়েলি সেনা আটক