হত্যা চেষ্টায় মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি টিপু কারাগারে
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা ও বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলায় গ্রেপ্তার বরিশাল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল শুক্রবার মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক ফোয়াদ আহমেদ তাকে আদালত হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হামিদ ভাসানীসহ আরও অনেকেই তার জামিন চেয়ে আবেদন করে, রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এর বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শরীফুর রহমানের আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
টিপুর পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হামিদ ভাসানী শুনানিতে বলেন, ঘটনা আট বছর আগের। বাদীকে আঘাত করা হয়েছে, কতদিন তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেই বিষয়ে আদালতে কোন ডকুমেন্ট জমা দেননি৷ খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে গাড়ি ভাঙচুরের কথা মামলায় উল্লেখ করা হলেও গাড়ি নম্বর দেননি। কোন আসামি তাকে আঘাত করেছে, তার নামও সরাসরি উল্লেখ করেননি। আসামি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। তার ওপেন হার্ট সার্জারী করা হয়েছে। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আসামি একজন সনামধন্য লঞ্চ ব্যবসায়ী। আসামি জামিন পেলে পলাতক হবেন না। যে কোন শর্তে, প্রয়োজন আমি জিম্মাদার হতে রাজি আছি। যে কোন শর্তে মানবিক দিক বিবেচনা করেন তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানিতে এ আইনজীবী আরও বলেন, মামলার বাদী একজন সুযোগ সন্ধানী। বিএনপির আক্রোশ থেকে বাঁচার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়েছে। মামলার বাদী হিরো হওয়ার চেষ্টা করেছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য তাদের পক্ষ নেই।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুক জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতল বলেন, আসামি দক্ষিণাঞ্চলের একজন লঞ্চ ব্যবসায়ী। তার অনুমতি ছাড়া ওই অঞ্চলে অন্য কেউ লঞ্চ চলতে পারে না। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট রেজিমকে রক্ষা করেছে জাতীয় পার্টি ভূমিকা কম নয়। জাতীয় পার্টি যদি এদের রক্ষা না করতো, তাহলে এতো ক্ষতি হতো না। আওয়ামীলীগ যত অন্যায় করেছে এর উচ্ছিষ্ট ভোগ করেছে জাতীয় পার্টি। তার বাড়ির কেন্দ্রসহ আশেপাশের সব কেন্দ্রে সে ভোট চুরি করেছে। মগবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সম্মিলিতভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার গাড়ী বহরে হামলা করেছে। ওই সময় অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা টিপুর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে। ফ্যাসিস্ট চলে গেছে, কিন্তু ফ্যাসিস্টের সহযোগীরা এখনো আছে।এছাড়া পেলে সমাজে আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।
মামলার বাদীর ব্যাপারে বিচারক জানতে চাইলে ফারুকী বলেন, স্বৈরাচারের সঙ্গে বাদীর সংশ্লিষ্টতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে কিনা? ঘটনা সত্য কি না? আদালতে তাদের দেয়া ছবিগুলো সত্য কিনা আমরা কীভাবে বুঝবো। এসব ছবি এডিট করা যায়৷ তবে কোন পত্রিকার রিপোর্ট আনতে পারলে সত্যতা বোঝা যেতো। তার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক আবেদন করছি।
গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের বীর বাঘৈর এলাকায় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আটক রাখার আবেদনে বলা হয়,
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসা থেকে বকসীবাজার আদালতে রওয়ানা হয়। ঐ সময় মামলার বাদী খালেদা জিয়ার গাড়ী বহরের সাথে ছিলেন। বকসীবাজার যাওয়ার পথে ঐ সময় বেলা ১ টা ৫০ মিনিটে হাতিরঝিল থানাধীন মগবাজার টঙ্গী ড্রাইভারশন রোড পিয়াসি বারের সামনে পাকা রাস্তার উপর আসামিদের পূর্ব পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র মূলক ও হুকুমে এজাহার নামীয় আসামিরা ঘটনাস্থলে থেকে ত্রাস সৃষ্টি করে এবং বাদীসহ খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে।
আরও বলা হয়, অজ্ঞাতনামা আসামি গাড়ী ভাঙচুর করে এলাকায় আতংক ও ত্রাস সৃষ্টি করে ও রাস্তায় চলমান ৩/৪ টি সিএনজি, ৬টি মটর সাইকেল, ১টি প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয়। আসামিদের কাছে থাকা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে বাদীকে সহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়া কোপায় ও লোহার রড দিয়া মারধর করে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। তখন বাদী নিজেও জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে বাদীর দলের নেতাকর্মীরা বাদীকে সহ আরও জখমীদেরকে নিকটস্থ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। এ মর্মে বাদী তাহার দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ্য করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেল হাজতে আটক রাখার আবেদন করেন এ তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টা ৫০ এর দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গুলশান থেকে বকশিবাজার আদালতে যাওয়ার পথে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় আসামিদের আক্রমণের মুখে পড়েন। এসময় খালেদা জিয়ার গাড়ী বহর, দেহরক্ষী ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়। এতে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন বাবুল সরদার চাখারী। এ মামলায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ ৬৫জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। মামলার ৫১ নাম্বার এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে টিপুকে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার চায় - মাওলানা এবিএম জাকারিয়া
বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে ন্যাটো প্রধানের বৈঠক
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অর্থবহ সংস্কারের আগে নির্বাচন নয় -প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না
অপরিকল্পিত বাধ-রাস্তা নির্মাণে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়েছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
সাটুরিয়ায় তেলের পাম্পে ভয়াবহ আগুন
নির্বাচনব্যবস্থা আমূল পুনর্গঠনের তাগিদ রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের
কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা
ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৬
রাজশাহীর বাঘায় আম বাগানে যুবকের লাশ
মতামত গ্রহণে ওয়েবসাইট চালু করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন
ওরেশনিক সমগ্র ইউরোপে হামলা করতে পারে: রুশ কমান্ডার
দানে পাওয়া কাপড়ের মনোরম ডিজাইনে ভাইরাল ভারতীয় একদল ডিজাইনার
কেমন হল ভিভো ভি৪০ লাইটের অভিজ্ঞতা!
তাদের রাজনীতি করতে দেবে কি-না তা দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে: জামায়াতে সেক্রেটারি
উত্তরায় হাসপাতালে সন্ত্রাসী হামলাও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা
পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ৩২
আল্লাহকে পেতে হলে রাসুলের পথ অনুসরণ অপরিহার্য: মাওলানা রুহুল আমিন খান
ঢাকাবাসীকে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার