ঝাড়খণ্ডে জয়ী ইন্ডিয়া মহারাষ্ট্রে বিজেপি
২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
ভারতের দুই রাজ্য মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে কিছুদিন আগেই। সেই নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, মহারাষ্ট্রে বিজেপির জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সই (এনডিএ) ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তবে ঝাড়খণ্ডে বিজেপির জোট এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস ও স্থানী ঝাড়খণ্ড জনমুক্তি মোর্চার জোট ইন্ডিয়াই জয়ী হয়েছে।
মহারাষ্ট্র: ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার সকালে এই দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শেষ হয়। গণনা শেষে দেখা গেছে, মহারাষ্ট্রের ২৮৮ আসনের বিধানসভায় বিজেপির এনডিএ জোট ২২৮টি আসন পেয়েছে। বিপরীতে বিরোধী জোট এমভিএ বা মহা বিকাশ আঘাড়ি পেয়েছে মাত্র ৪৯টি আসন। মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি আসনের বিধানসভায় অন্যান্য দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছে মাত্র ১৩টি আসন। এই নির্বাচনে মহা বিকাশ আঘাড়ি জোট বিগত নির্বাচনের চেয়েও খারাপ ফল করেছে। ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন এই জোট পেয়েছিল ৭২টি আসন। অর্থাৎ, এবারে ২৩টি আসন কম পেয়েছে।
এর আগে, ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস যেখানে ৪৪টি আসন পেয়েছিল, এবার পেয়েছে মাত্র ১৬টি আসন। এমভিএ জোটের অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে শিব সেনা (উদ্ধভ ঠাকরে) পেয়েছে ২১টি আসন। শারদ পাওয়ারের নেতৃত্বে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি পেয়েছে ১০টি আসন। এদিকে, মহারাষ্ট্রে এনডিএ জোটের মধ্যে বিজেপি একাই পেয়েছে ১৩২টি আসন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপি মহারাষ্ট্র বিধানসভায় পেয়েছিল ১০৫টি আসন। এনডিএ জোটে বিজেপির অন্যতম সঙ্গী শিব সেনা (একনাথ সিন্ধে) পেয়েছে মাত্র ৫৫টি আসন এবং শারদ পাওয়ারের ভাতিজা অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি ৪১টি আসন পেয়েছে।
ঝাড়খণ্ড : অপরদিকে, ঝাড়খণ্ড বিধাসভা নির্বাচনের ভোট গণনার প্রথম দিকে বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জোট এগিয়ে থাকলেও পরে চূড়ান্ত গণনা শেষে ক্ষমতাসীন জনমুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেসের জোট ইন্ডিয়ায় জয়লাভ করে। এর মধ্য দিয়ে, বিজেপি রাজ্যটিতে বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও মুসলিম বিরোধী যে প্রচারণা চালিয়েছে তার প্রত্যাখ্যানের অনুষ্ঠিত ঘোষণা দিয়েছে ভোটারেরা।
ঝাড়খন্ডের ৮১ আসনের বিধানসভায় জনমুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেসের জোট মোট ৪৮টি আসন পেয়েছে। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এই জোট পেয়েছিল ৪৮টি আসন। অর্থাৎ, এবারে জোটটি সমান আসন পেয়েছে। এই নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড জনমুক্তি মোর্চা পেয়েছে ৩৫টি আসন, কংগ্রেস পেয়েছে ১৬টি আসন এবং বিহারকেন্দ্রিক দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল পেয়েছে ৭টি আসন।
বিপরীতে, বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জোট পেয়েছে ২৭টি আসন। এর আগে, ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এই জোট পেয়েছিল ২৭টি আসন। অর্থাৎ, বিজেপিও একই আসন পেয়েছে। এই ২৭ আসনের মধ্যে বিজেপি একাই পেয়েছে ২০টি আসন। বাকি ৭টি আসন পেয়েছেন জোটের অন্যান্য দলগুলো। এ ছাড়া, অন্যান্য দলগুলো বা স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা পেয়েছে মাত্র ১টি আসন।
মমতাতেই ভরসা বাংলার : এক মাস আগেও বিদ্রোহের আগুন জ্বলেছে পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। আর জি কর কাণ্ডকে কেন্দ্র করে স্লোগান উঠেছে শাসক দল বিরোধী। দলে-দলে পথে নেমেছে আমজনতা। যা দেখে বিরোধীরা রীতিমতো উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছিল। দাবি করেছিল, মমতার বিদায় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা! কিন্তু সকলের আড়ালে মুচকি হেসেছিল জনতা। উপনির্বাচনের ফলে তারা বুঝিয়ে দিল, আর জি কর আন্দোলন স্রেফ বিরোধীদের ফোলানো বেলুন! মমতাতেই ভরসা রাখছে বঙ্গবাসী।
৯ আগস্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকরের ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল সাধারণ মানুষ। ১৪ আগস্ট ‘রাতদখল’ কর্মসূচিতে অভিনব ছবি দেখেছিল গোটা ভারত। শুধু ‘রাতদখল’ নয়, একের পর এক আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ যোগ দিয়েছেন। রাস্তায় আমজনতার ঢল দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছিল, এবার বোধহয় শাসকের গদি টলমল। কিন্তু তৃণমূল প্রথম থেকে দাবি করে এসেছে, আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছে বাম-বিজেপির চক্রান্ত। সাধারণ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছে। এমন আবহে ছিল ৬ কেন্দ্রের উপনির্বাচন। কেউ কেউ বলছিলেন, ছাব্বিশের ভোটের আগে এটা সেমি ফাইনাল। আরও এক ধাপ এগিয়ে কারও দাবি ছিল, এটা তৃণমূলের অ্যাসিড টেস্ট। ভোট হয় মাদারিহাট, সিতাই, তালড্যাংরা, মেদিনীপুর, নৈহাটি, হাড়োয়া কেন্দ্রে। সব কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। ভোটের ব্যবধান কোথাও ৫০ হাজারের বেশি তো কোথাও আবার তা লাখ পেরিয়েছে। যা দেখে চওড়া হাসি ঘাসফুল শিবিরে।
উত্তরপ্রদেশ : উত্তরপ্রদেশে ৯টি আসনের উপনির্বাচনে এগিয়ে গেল বিজেপি। সেই রাজ্যে ৭টি আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। এদিকে সমাজবাদী পার্টি এগিয়ে মাত্র ২টি আসনে। কয়েক মাস আগেই লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির থেকে পিছিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। এই আবহে উপনির্বাচনের এই লড়াই বিজেপির জন্যে প্রেস্টিজ ফাইট হিসেবে ধরা হচ্ছিল।
ছত্তিশগড়ে বিজেপির দাপট : ছত্তিশগড়ের রায়পুর দক্ষিণ আসন থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী সুনীল সোনি। বছর খানেক আগে এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়। তাতে কংগ্রেসের হাত থেকে রাজ্য ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। এবার এই রায়পুর দক্ষিণ কেন্দ্র থেকেও জিতলেন বিজেপি প্রার্থী।
রাজস্থানে বড় জয় বিজেপির : রাজস্থানে সাতটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে পাঁচটি আসনে জিতেছে বিজেপি। কংগ্রেস এবং ভারত আদিবাসী পার্টি জিতেছে একটি করে আসনে।
সংসদে আরও এক গান্ধী, ৪ লক্ষ ভোটে জয়ী প্রিয়াঙ্কা : প্রথমবার ভোটের ময়দানে পা রেখেই জয় জয়কার। কেরলের ওয়েনাড থেকে বিপুল ভোটে জয়ী প্রিয়াঙ্কার গান্ধি। প্রায় ৪ লাখ ভোটে লোকসভা উপনির্বাচনে জয়ী হলেন প্রিয়াঙ্কা। এর আগে এই ওয়েনাড থেকেই ৩.৬৫ লাখ ভোটে জিতেছিলেন রাহুল গান্ধি। সেইসংখ্যাকেও টপকে গেলেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রায় ৬ মাস আগে এই কেন্দ্রেই লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন রাহুল গান্ধি। সেইসঙ্গে তিনি উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলিতেও জয়লাভ করেছিলেন। রায়বরেলি রেখে ওয়েনাড় বোন প্রিয়ঙ্কাকে ছেড়ে দেন তিনি। সেখানেই এবার উপনির্বাচনের ফলাফলে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এই প্রথমবার ভোটে প্রার্থী হলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। অভিষেকেই জয়ের হাসি হাসলেন রাহুল গান্ধির বোন প্রিয়াঙ্কা। প্রিয়াঙ্কার জয়ের ফলে সংসদে একসঙ্গে প্রবেশ করছেন কংগ্রেসের ৩ গান্ধী। রাহুল গান্ধী রায়বরেলি থেকে এমপি হিসাবে লোকসভায় রয়েছেন। প্রিয়াঙ্কাও ওয়ানড় থেকে জিতে সংসদে যাচ্ছেন। প্রথমবার ভাই-বোন একসঙ্গে লোকসভায় বিজেপিকে আক্রমণ করবেন। সোনিয়া গান্ধী আগেই রাজ্যসভায় গিয়েছেন। সূত্র : এনডিটিভি, টিওআই, এবিপি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক
পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা
দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত
জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে
আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি
ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা
বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা
সিলেটে মাজিদের ফিফটি
অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন
মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে
সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স
ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না
দৌলতখানে শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক
সুন্দরগঞ্জে ছয় পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম
বৈষম্যের শিকার কুমিল্লার ১৫ হাজার এতিম শিশু
দালালচক্রে জিম্মি রোগীরা
ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই সাটুরিয়ার শিশু শিক্ষার্থীদের ভরসা
পঞ্চগড়ে চিকিৎসক পদায়নের দাবিতে সড়ক অবরোধ