বিচ্ছিন্ন সেনটিনেলিদের গণনা কি আদৌ সম্ভব
২৭ জুলাই ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২:০৩ এএম
২০১৮ সালে মার্কিন ধর্মপ্রচারক জন অ্যালেন চাও অবৈধভাবে সেনটিনেল দ্বীপে অবতরণ করলে তাকে তীর মেরে হত্যা করা হয়। তার দেহ উদ্ধারের জন্যও ভারতীয় প্রশাসন দ্বীপে পা রাখেনি। বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেনটিনেলিদের। তারা মূলত ধনুর্বিদ্যায় দক্ষ শিকারি ও সংগ্রাহক। তাদের অস্ত্র এখনো পাথর, তীর, বর্ষা ও হাতে তৈরি যন্ত্র। ৫০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে তাদের আগমন বলে ধারণা করা হয় এবং তারা আজও সেই অনাদিকালের রীতিতেই জীবনযাপন করছেন। এগিয়ে আসছে ভারতের পরবর্তী জাতীয় আদমশুমারি। ২০২৭ সালে হতে যাওয়া এ জনগণনা নিয়ে এক অদ্ভুত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। কীভাবে গণনা করা হবে এমন এক জাতিগোষ্ঠীকে, যারা বহির্বিশ্বের সংস্পর্শ পুরোপুরি এড়িয়ে চলে এবং প্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেয় তীর-ধনুক দিয়ে? এই প্রশ্নের কেন্দ্রে রয়েছে উত্তর সেনটিনেল দ্বীপে বসবাসকারী সেনটিনেলি জনগোষ্ঠী। ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত ৫৯ বর্গকিলোমিটার দ্বীপটি যেন এক জীবন্ত প্রমাণ, আধুনিক সভ্যতার বাইরে বেঁচে থাকা এখনো সম্ভব। আন্দামান-নিকোবর ট্রাইবাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সাবেক উপদেষ্টা মানীশ চান্ডির মতে, সেনটিনেলিদের আদমশুমারির চেষ্টা করা অর্থহীন। হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি বলেন, ‘সংখ্যা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দ্বীপের সামুদ্রিক সম্পদ এবং এই জাতির গোপনীয়তা রক্ষা করা।’ ২০১১ সালের সর্বশেষ আদমশুমারির পর ভারত সরকার উত্তর সেনটিনেল দ্বীপের চারপাশে ৫ কিলোমিটার এলাকা নিষিদ্ধ অঞ্চল ঘোষণা করে। এই ‘চোখ রাখো, হাত লাগিও না’ নীতির উদ্দেশ্য- বাইরের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা এবং উপজাতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখা। বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেনটিনেলিদের। তারা মূলত ধনুর্বিদ্যায় দক্ষ শিকারি ও সংগ্রাহক। তাদের অস্ত্র এখনো পাথর, তীর, বর্ষা ও হাতে তৈরি যন্ত্র। ৫০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে তাদের আগমন বলে ধারণা করা হয় এবং তারা আজও সেই অনাদিকালের রীতিতেই জীবনযাপন করছেন। ১৯২১ সালের আদমশুমারিতে তৎকালীন ব্রিটিশ কর্মকর্তা আর এফ লো লিখেছিলেন, ‘সেনটিনেলিরা বেশ আক্রমণাত্মক। তাই তাদের সরাসরি গণনার চেষ্টা করা হয়নি।’ ২০০১ সালে সৈকতে দেখা গিয়েছিল ৩৯ জনকে, আর ২০১১ সালে সংখ্যাটি নেমে দাঁড়ায় ১৫-তে। যদিও এই দুই সংখ্যাই সমুদ্রতীরবর্তী পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা অনুমান। লন্ডনভিত্তিক আদিবাসী অধিকার সংস্থা সার্ভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তাদের প্রকৃত সংখ্যা ৫০ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হতে পারে। ২০১৮ সালে মার্কিন ধর্মপ্রচারক জন অ্যালেন চাও অবৈধভাবে সেনটিনেল দ্বীপে অবতরণ করলে তাকে তীর মেরে হত্যা করা হয়। তার দেহ উদ্ধারের জন্যও ভারতীয় প্রশাসন দ্বীপে পা রাখেনি। ২০১৪ সাল থেকে কেউ এই দ্বীপে প্রবেশ করেনি। ভারতের নৃবিজ্ঞান জরিপ বিভাগের যুগ্ম পরিচালক এম শশিকুমার বলেন, ‘এক সময় সরকার নারকেল ভর্তি নৌকা দ্বীপে নামাত, তবে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে।’ তবে কিছু দুঃসাহসী অভিযাত্রী এখনো দ্বীপটিতে যেতে চান। গত মার্চে ২৪ বছর বয়সী অ্যারিজোনার ইউটিউবার মিখাইলো পলিয়াকভ সেখানে ডায়েট কোক ও নারকেল নিয়ে উপস্থিত হন। নিজেই হুইসেল বাজিয়ে সেনটিনেলিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০২৭ সালের আদমশুমারির জন্য প্রশাসন ড্রোন বা স্যাটেলাইট ইমেজিং ব্যবহারের কথা ভাবছে। তবে বিশেষজ্ঞরা তাতে উদ্বিগ্ন। সার্ভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা জনাথন ম্যাজোয়্যার বলেন, ‘এত ঘন অরণ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে ড্রোন দিয়ে সঠিকভাবে গণনা করা কঠিন। এতে তারা ভয় পেতে পারে। এটা একধরনের অনধিকার চর্চা।’ গার্ডিয়ান অবলম্বনে।বিচ্ছিন্ন সেনটিনেলিদের গণনা কি আদৌ সম্ভব
ইনকিলাব ডেস্ক : ২০১৮ সালে মার্কিন ধর্মপ্রচারক জন অ্যালেন চাও অবৈধভাবে সেনটিনেল দ্বীপে অবতরণ করলে তাকে তীর মেরে হত্যা করা হয়। তার দেহ উদ্ধারের জন্যও ভারতীয় প্রশাসন দ্বীপে পা রাখেনি। বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেনটিনেলিদের। তারা মূলত ধনুর্বিদ্যায় দক্ষ শিকারি ও সংগ্রাহক। তাদের অস্ত্র এখনো পাথর, তীর, বর্ষা ও হাতে তৈরি যন্ত্র। ৫০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে তাদের আগমন বলে ধারণা করা হয় এবং তারা আজও সেই অনাদিকালের রীতিতেই জীবনযাপন করছেন। এগিয়ে আসছে ভারতের পরবর্তী জাতীয় আদমশুমারি। ২০২৭ সালে হতে যাওয়া এ জনগণনা নিয়ে এক অদ্ভুত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। কীভাবে গণনা করা হবে এমন এক জাতিগোষ্ঠীকে, যারা বহির্বিশ্বের সংস্পর্শ পুরোপুরি এড়িয়ে চলে এবং প্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেয় তীর-ধনুক দিয়ে? এই প্রশ্নের কেন্দ্রে রয়েছে উত্তর সেনটিনেল দ্বীপে বসবাসকারী সেনটিনেলি জনগোষ্ঠী। ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত ৫৯ বর্গকিলোমিটার দ্বীপটি যেন এক জীবন্ত প্রমাণ, আধুনিক সভ্যতার বাইরে বেঁচে থাকা এখনো সম্ভব। আন্দামান-নিকোবর ট্রাইবাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সাবেক উপদেষ্টা মানীশ চান্ডির মতে, সেনটিনেলিদের আদমশুমারির চেষ্টা করা অর্থহীন। হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি বলেন, ‘সংখ্যা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দ্বীপের সামুদ্রিক সম্পদ এবং এই জাতির গোপনীয়তা রক্ষা করা।’ ২০১১ সালের সর্বশেষ আদমশুমারির পর ভারত সরকার উত্তর সেনটিনেল দ্বীপের চারপাশে ৫ কিলোমিটার এলাকা নিষিদ্ধ অঞ্চল ঘোষণা করে। এই ‘চোখ রাখো, হাত লাগিও না’ নীতির উদ্দেশ্য- বাইরের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা এবং উপজাতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখা। বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেনটিনেলিদের। তারা মূলত ধনুর্বিদ্যায় দক্ষ শিকারি ও সংগ্রাহক। তাদের অস্ত্র এখনো পাথর, তীর, বর্ষা ও হাতে তৈরি যন্ত্র। ৫০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে তাদের আগমন বলে ধারণা করা হয় এবং তারা আজও সেই অনাদিকালের রীতিতেই জীবনযাপন করছেন। ১৯২১ সালের আদমশুমারিতে তৎকালীন ব্রিটিশ কর্মকর্তা আর এফ লো লিখেছিলেন, ‘সেনটিনেলিরা বেশ আক্রমণাত্মক। তাই তাদের সরাসরি গণনার চেষ্টা করা হয়নি।’ ২০০১ সালে সৈকতে দেখা গিয়েছিল ৩৯ জনকে, আর ২০১১ সালে সংখ্যাটি নেমে দাঁড়ায় ১৫-তে। যদিও এই দুই সংখ্যাই সমুদ্রতীরবর্তী পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা অনুমান। লন্ডনভিত্তিক আদিবাসী অধিকার সংস্থা সার্ভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তাদের প্রকৃত সংখ্যা ৫০ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হতে পারে। ২০১৮ সালে মার্কিন ধর্মপ্রচারক জন অ্যালেন চাও অবৈধভাবে সেনটিনেল দ্বীপে অবতরণ করলে তাকে তীর মেরে হত্যা করা হয়। তার দেহ উদ্ধারের জন্যও ভারতীয় প্রশাসন দ্বীপে পা রাখেনি। ২০১৪ সাল থেকে কেউ এই দ্বীপে প্রবেশ করেনি। ভারতের নৃবিজ্ঞান জরিপ বিভাগের যুগ্ম পরিচালক এম শশিকুমার বলেন, ‘এক সময় সরকার নারকেল ভর্তি নৌকা দ্বীপে নামাত, তবে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে।’ তবে কিছু দুঃসাহসী অভিযাত্রী এখনো দ্বীপটিতে যেতে চান। গত মার্চে ২৪ বছর বয়সী অ্যারিজোনার ইউটিউবার মিখাইলো পলিয়াকভ সেখানে ডায়েট কোক ও নারকেল নিয়ে উপস্থিত হন। নিজেই হুইসেল বাজিয়ে সেনটিনেলিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০২৭ সালের আদমশুমারির জন্য প্রশাসন ড্রোন বা স্যাটেলাইট ইমেজিং ব্যবহারের কথা ভাবছে। তবে বিশেষজ্ঞরা তাতে উদ্বিগ্ন। সার্ভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা জনাথন ম্যাজোয়্যার বলেন, ‘এত ঘন অরণ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে ড্রোন দিয়ে সঠিকভাবে গণনা করা কঠিন। এতে তারা ভয় পেতে পারে। এটা একধরনের অনধিকার চর্চা।’ গার্ডিয়ান অবলম্বনে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দুই শেয়ারবাজারেই বড় পতন
দিল্লির লকডাউন ঢাকায় দাফন হয়েছে : জাগপা
ইমাম প্রশিক্ষণে সউদী সরকারের সহায়তার আশ্বাস
চোর সন্দেহে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা, নারী গ্রেফতার
পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি
কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে পতিত ফ্যাসিস্টরা উৎসাহিত হচ্ছে : রিজভী
রাজনৈতিক দলগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বার্তা
বিআরটিসি বাসে পাইলটিং ভিত্তিতে ই-টিকেট সেবা কার্যক্রম শুরু
ডিএমপি কমিশনারের ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংকট উত্তরণের প্রচেষ্টা থাকলেও সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে : সাইফুল হক
মতভিন্নতা সত্ত্বেও প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো এবি পার্টি
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে দেশবাসী উজ্জীবিত : লেবার পার্টি
দেশকে দ্রুতবেগে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি : ফরহাদ মজহার
দিল্লি-কাবুলের ষড়যন্ত্রেই বেড়েছে সন্ত্রাসী হামলা: শেহবাজ শরীফ
জীবন্ত ফার্ন গাছে বিরল খনিজের সন্ধান
চীনের গুপ্তচর হিসেবে অভিযুক্ত লিন্ডা সানের বিচার শুরু
তীব্র পানি সংটে ইরানের নাগরিক জীবন ঝুঁকিতে
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে চীনকে পাশে পেল ভেনেজুয়েলা
মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ৩১৪ কোটি টাকা আত্মসাতে ৫ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা
গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল