তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা
২১ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম | আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম

তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী কামাল মাদুরিকে বরখাস্ত করার পর প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সারা জাফারানিকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিউনিসিয়া বর্তমানে অভিবাসী সঙ্কট ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে, যার ফলে এই পরিবর্তনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক বছরেরও কম সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা কামাল মাদুরিকে সরিয়ে প্রেসিডেন্ট সাইদ তার জায়গায় নতুন মুখ আনলেন।
তিউনিসিয়া এমন একটি অবস্থায় রয়েছে যেখানে স্থানীয় অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে এবং অভিবাসনপ্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে অবস্থিত দেশগুলো থেকে আসছে। এর মধ্যে, প্রেসিডেন্ট সাইদ গত কয়েক মাসে মন্ত্রিসভার কাজকর্ম নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে গত মাসে তিনি অর্থমন্ত্রী সিহাম বুগদিরিকেও বরখাস্ত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মাদুরি’র এক বছরের শাসনকালে একাধিক রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়, যার কারণে তিনি অব্যাহতি পেয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী সারা জাফারানির নিয়োগ ঘটে।
সারা জাফারানি, একজন প্রকৌশলী, ২০২১ সাল থেকে তিউনিসিয়ার সরঞ্জাম ও আবাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তাকে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হলো গত দুই বছরে। প্রেসিডেন্ট সাইদ এই পরিবর্তনটি ঘোষণা করার পর তিনি বলেন, “আমরা সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবো এবং নাগরিকদের জন্য ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।” একই সঙ্গে, সরকারের নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তিউনিসিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করার চেষ্টার কথা বলা হয়েছে।
তিউনিসিয়া সম্প্রতি এক গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি, যেখানে ২০২৪ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১.৪% এর বেশি হয়নি। এর পাশাপাশি, তিউনিসিয়ায় খাদ্যপণ্য যেমন চিনি, চাল, এবং কফির মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। এসব কারণে তিউনিসিয়ার সরকারের জন্য সমালোচনা হচ্ছে এবং এর জেরে বিদেশি ঋণের চাপও বাড়ছে।
অভিবাসী সঙ্কটও তিউনিসিয়ার জন্য বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতালির উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করা সাব-সাহারান আফ্রিকার হাজার হাজার নাগরিক তিউনিসিয়ায় পৌঁছেছে। সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাধা দিচ্ছে, ফলে অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী বর্তমানে তিউনিসিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছে। এর সঙ্গে স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষও হচ্ছে। এ পরিস্থিতি তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং একাধিক মানবাধিকার গোষ্ঠী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে যে, তারা এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে।
২০২১ সালে তিউনিসিয়ার পার্লামেন্ট বিলুপ্ত হওয়ার পর, প্রেসিডেন্ট সাইদ অতিরিক্ত ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন এবং এখন তিনি অধ্যাদেশ জারি করে দেশ পরিচালনা করছেন। বিরোধীরা তার পদক্ষেপগুলোকে ‘অভ্যুত্থান’ বলে মনে করছেন, কারণ এভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এককভাবে প্রেসিডেন্টের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এর ফলে, তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক পরিবেশে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
তিউনিসিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি আরও শঙ্কার সৃষ্টি করছে, তবে এই পরিবর্তনগুলোর মাধ্যমে দেশটি নতুন কোনো রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে পারবে কিনা, তা দেখার বিষয়। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

পাবনায় চররে জমি দখল নিয়ে সংর্ঘষে গুলবিদ্ধি ৫

আইএমএফের ঋণের কিস্তি নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ

মার্কিন উচ্চশিক্ষার চরম পতন

পরিশুদ্ধ-পরিবর্তিত বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে হবে-সাহাদাত হোসেন সেলিম

গাজায় ইহুদী হামলায় ৬০ ফিলিস্তিনি শহীদ

জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ

রাজনৈতিক দল গঠন এখন ছেলেখেলা!

সাভারে অজ্ঞাত নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

নর্থ সাউথে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ

কোরআনবিরোধী নারী সংস্কার প্রস্তাবনা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ

পাকিস্তান-ভারতকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে বলল জাতিসংঘ

‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

নারী কমিশনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে

তারেক রহমান ‘নিয়তির সন্তান’

অতিদারিদ্র্য বৃদ্ধির শঙ্কা

২৪ ঘন্টায় গ্রেফতার ১০৭২ আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার

পারভেজ হত্যা মামলায় প্রধান আসামি মেহেরাজ রিমান্ডে

আ.লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সন্তোষ কুমার রিমান্ডে

চট্টগ্রামে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ মহিলার মৃত্যু

রাজধানীর প্রধান সড়কে ব্যাটারি রিকশা বন্ধের দাবি মোটরসাইকেল চালকদের