দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে নিহত ১৮, বিপর্যস্ত ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য
২৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৩ এএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৭ এএম

দক্ষিণ কোরিয়ায় দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনের তীব্রতায় বহু মানুষের নিহতের ঘটনা ঘটেছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য ধ্বংস হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু একে "অভূতপূর্ব সংকট" হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে, এটি দক্ষিণ কোরিয়ার দাবানলের ইতিহাস নতুনভাবে লিখছে।
গত শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার সানচিয়ং কাউন্টিতে দাবানল শুরু হয়, যা দ্রুত পার্শ্ববর্তী উইসিয়ং, আন্দং, চেওংসং, ইয়ংইয়াং ও ইয়ংডক শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৯ জন আহত হয়েছেন। দাবানলের কারণে ২৩,০০০-এরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটি বর্তমানে ভয়াবহ খরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে দাবানলের মাত্রা আরও বেড়েছে।
দাবানল ইতোমধ্যে ১৭,০০০ হেক্টর বনভূমি পুড়িয়ে ফেলেছে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম দাবানল হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। বিশেষভাবে উইসিয়ং শহরে দাবানল গৌনসা বৌদ্ধ মন্দির সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। ৬১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মন্দির ছিল প্রদেশের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় স্থাপনা। এছাড়া, জোসন রাজবংশের (১৩৯২-১৯১০) একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য, যা জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত ছিল, দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হাজার হাজার দমকলকর্মী এবং ৫,০০০-এরও বেশি সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করা মার্কিন সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছে। বুধবার দুপুরে উইসিয়ং অঞ্চলের পাহাড়ে একটি দমকল হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়, যার কারণ এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জাতীয় দমকল সংস্থা মঙ্গলবার সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করেছে, যা এই বছরের জন্য প্রথমবারের মতো ঘোষণা করা হলো।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু জানিয়েছেন, দাবানল নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ জনবল ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু প্রবল বাতাস দমকলকর্মীদের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, "আমরা আজ বা আগামীকাল বৃষ্টির জন্য আশায় আছি, যা আগুন নেভাতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার কোনো বৃষ্টি নেই এবং বৃহস্পতিবার মাত্র ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।"
দেশটির সরকার দাবানল প্রতিরোধে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দাবানলের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে অবৈধভাবে আগুন লাগানোর ঘটনা ও ব্যক্তিগত অসতর্কতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে এসব কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং নতুন দমননীতি বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া, দাবানল পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানিয়েছেন সরকার প্রধান। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ জানালো ফুলকুঁড়ি আসর তারার মেলা

শেরপুরে আড়াই শ’ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ- “মাইসাহেবা মসজিদ”

নারী চিকিৎসক দিয়ে নারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত কেন নয়: হাইকোর্ট

লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে মরলো ৩ গরু

মাগুরায় মা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষার্থী ফাইয়াজের মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার আহ্বান আইন উপদেষ্টার

মার্কিন শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এক হাজার পোশাক কারখানা, মালিকদের শঙ্কা

ঢাকায় তৎপর ‘র’! জুলকারনাইন এর চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস!

ভবেশের মৃত্যুতে ভারতের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

শার্শায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক ২

সার্বজনীন না করে সেকুলার নারীদের দিয়ে কমিশন গঠন করায় একটা ক্যাচাল তৈরি হয়েছে : রাশেদ খান

আশুলিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া দেওয়ান পিস্তলসহ গ্রেফতার

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বিএনপি

বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ভারতে মুসলিমদের ব্যাপক বিক্ষোভ

আশুলিয়ায় নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর ঘরে আগুন, স্বামী পলাতক

রাজধানীতে যুবদল নেতাকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পেশ

লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার

বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আসিফ নজরুল

‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরও রুশ হামলা চলছে: জেলেনস্কি