গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৪০

ইনকিলাব ডেস্ক

১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৮ এএম | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০২ এএম

গাজার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ নতুন করে আরও ভয়াবহ মোড় নিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় চালিয়েছে ব্যাপক বিমান হামলা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৩ জন। একদিনেই এত প্রাণহানি আবারও প্রমাণ করছে, মানবিক সংকট কতটা চরমে পৌঁছেছে এই উপত্যকায়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান শুরু করেছিল, তা এখনও চলছে। ওই দিন হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে ঢুকে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এরপরই ইসরায়েল গাজায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, মাত্র দুই মাসের মধ্যে গত ১৮ মার্চ আবার শুরু হয় দ্বিতীয় দফার অভিযান। এই নতুন অভিযানে ইতিমধ্যেই দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মোট নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৬৫ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন। যাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

এই মৃত্যু ও ধ্বংসের মিছিলে এখনও ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৫ জন জীবিত বলে ধারণা করছে ইসরায়েল। আইডিএফ জানিয়েছে, তাদের সামরিক অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো এই জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চালানো। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো বারবার আহ্বান জানাচ্ছে যেন ইসরায়েল মানবিক বিবেচনায় অন্তত যুদ্ধবিরতির পথে ফেরে। গাজা শহরের হাসপাতালগুলোতে জ্বালানি, ওষুধ ও খাবার সংকটে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

জাতিসংঘের আদালত, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে), ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা গ্রহণ করেছে। শুধু আন্তর্জাতিক মঞ্চেই নয়, ইসরায়েলের ভেতরেও বাড়ছে যুদ্ধবিরতির দাবি। বহু নাগরিক, রাজনীতিক, এমনকি সাবেক সেনা কর্মকর্তারাও সরব হয়েছেন—তারা বলছেন, জিম্মিদের মুক্তি চাই, যুদ্ধ নয়। জনরোষের মুখে পড়েও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখনো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করা না পর্যন্ত এই অভিযান থামবে না।”তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

বিভাগ : আন্তর্জাতিক