পাকিস্তান সীমান্তে আক্রমণের আগেই ধ্বংস ভারতীয় ড্রোন, উত্তেজনা বৃদ্ধি

ইনকিলাব ডেস্ক

০৯ মে ২০২৫, ১১:০৪ এএম | আপডেট: ০৯ মে ২০২৫, ১১:০৭ এএম

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভারতীয় ড্রোনের পাকিস্তানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে। পাকিস্তান বলছে, এসব ড্রোন সামরিক স্থাপনায় হামলার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল এবং তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এই ঘটনার ফলে এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজন পাকিস্তানি সেনা সদস্যও রয়েছেন। এই অনুপ্রবেশকে পাকিস্তান ‘গুরুতর উস্কানি’ বলে অভিহিত করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও ঘনীভূত করেছে।

এই ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে—লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, আটক, গুজরানওয়ালা, গুজরাট, করাচি, উমেরকোট, বাহাওয়ালপুর, সুক্কুর ও চাকওয়াল সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহরে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দাবি, ভারতীয় সেনারা ইসরায়েলের তৈরি 'হারপ' ড্রোন ব্যবহার করে আক্রমণ চালায়, যেগুলো মূলত পাকিস্তানের সেনা স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করেই পাঠানো হয়েছিল।

ভারতীয় সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে তারা এই সামরিক অভিযান চালিয়েছে, তবে পাকিস্তানের মতে, বেশিরভাগ হামলাই ঘটেছে জনবহুল এলাকায়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এ ঘটনাকে ভারতের ‘আতঙ্ক’ ও ‘কাপুরুষোচিত’ কৌশল বলে আখ্যায়িত করেছে এবং পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।

এই হামলার ফলে রাওয়ালপিন্ডির পিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে একটি ড্রোন পড়ে একজন নিহত এবং দুজন আহত হন। এক কৃষকের মৃত্যু হয়, গোটকি ও গুজরানওয়ালায়ও একজন করে নিহত হন। করাচির মালির এলাকায় দুটি ড্রোন পড়ে একটি বাড়ির ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যদিও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গুজরাটে একটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে একটি বাড়ির ছাদে, এবং উমেরকোটে একটি ড্রোন পড়লেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

বাহাওয়ালপুরের চোলিস্তান মরুভূমিতে ধ্বংস হওয়া ড্রোনটি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা তুলে ধরেছে বলে দাবি করেন সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুত।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক আরও শীতল হয়ে উঠেছে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা এখন হুমকির মুখে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর পড়েছে দুই দেশের এই সামরিক উত্তেজনার দিকে। সীমান্তের এই স্পর্শকাতর পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনলে তা দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে নষ্ট করতে পারে। তথ্যসূত্র : ডন

বিভাগ : আন্তর্জাতিক