এক হাজার বন্দি বিনিময়ে সম্মত রাশিয়া-ইউক্রেন, শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি

ইনকিলাব ডেস্ক

১৭ মে ২০২৫, ০৯:০৬ এএম | আপডেট: ১৭ মে ২০২৫, ০৯:০৬ এএম

তিন বছরেরও বেশি সময় পর মুখোমুখি আলোচনায় বসে যুদ্ধবিধ্বস্ত রাশিয়া ও ইউক্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। এই ঐতিহাসিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। বৈঠকে দুই পক্ষই এক হাজার করে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে রাজি হয়েছে এবং একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির রূপরেখা নিয়ে লিখিত প্রস্তাব আদান-প্রদানে সম্মত হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি একে ‘আলোচনার অগ্রগতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই বন্দি বিনিময় কার্যক্রম শুরু হবে। ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর এটি হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময়।

শুক্রবার (১৬ মে) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি মূলত হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার, তবে সময়সূচি পরিবর্তনে তা একদিন পরে অনুষ্ঠিত হয়। মেদিনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাব এসেছে, তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজে না গিয়ে অভিজ্ঞ প্রতিনিধি দল পাঠান।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে তুরস্কে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। বৈঠকে আরও আলোচিত হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়টি, যেখানে ইউক্রেন রাজি হলেও রাশিয়া কিছু শর্ত স্পষ্ট করতে চায়। মস্কোর আশঙ্কা, যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইউক্রেন সেনা ও অস্ত্র পুনর্গঠন করতে পারে, তাই তারা আগে চায় সব শর্ত স্পষ্টভাবে নির্ধারিত হোক।

বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েই লিখিত আকারে যুদ্ধবিরতির রূপরেখা প্রস্তুত করবে এবং এরপর শুরু হবে পরবর্তী ধাপের আলোচনা। মেদিনস্কি পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইতিহাস প্রমাণ করে যুদ্ধ চলাকালেই শান্তি আলোচনা এগোয়—যেমন কোরিয়া বা ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় হয়েছিল। তিনি নেপোলিয়নের একটি বক্তব্যও উদ্ধৃত করেন—"যুদ্ধ ও আলোচনা সবসময় একসাথে চলে।"

এই বৈঠকের ছায়া পড়ে রুশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কেও, কারণ ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতির জন্য রুশ ও মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সরাসরি বৈঠক জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে সেই বৈঠক হওয়ার আগে প্রস্তুতি ও ফলপ্রসূতার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। সব মিলিয়ে, বন্দি বিনিময়ের এই উদ্যোগ শুধু মানবিক নয়, বরং দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসানে একটি সম্ভাব্য কূটনৈতিক সূচনা হিসেবেও দেখা যাচ্ছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স

বিভাগ : আন্তর্জাতিক