ট্রাম্পের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম কমাতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তি
১১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৪ পিএম | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম কমানো এবং জনগণের চিকিৎসা খরচ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন, যার মাধ্যমে অ্যাস্ট্রাজেনেকা মার্কিন সরকারের মেডিকেড স্বাস্থ্য কর্মসূচির জন্য কিছু ওষুধ ছাড়মূল্যে সরবরাহ করবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে হোয়াইট হাউস এমন একটি কাঠামো তৈরি করছে, যা ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে।
চুক্তিটি গত শুক্রবার ঘোষিত হয়। এর মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাপ দিচ্ছে যাতে তারা মার্কিন নাগরিকদের জন্য ওষুধের দাম কমায়। আগের মাসে ট্রাম্প ১৭টি শীর্ষ ওষুধ কোম্পানিকে চিঠি পাঠিয়ে দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রথম দুই প্রতিষ্ঠান যারা সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চুক্তিতে পৌঁছেছে। এ চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো মেডিকেডের আওতাভুক্ত রোগীদের জন্য ওষুধের খরচ কমানো এবং কোম্পানিগুলোর ওপর শুল্ক চাপের ব্যবস্থাপনা করা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী প্যাসকেল সোরিয়ট ওভাল অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানান, আগামী বছর চালু হতে যাওয়া ‘ট্রাম্পআরএক্স’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি তাদের কিছু ওষুধ সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কম দামে বিক্রি করবে। এছাড়া, কোম্পানিটি তাদের বাকি পণ্যগুলো স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করার জন্য তিন বছরের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। ট্রাম্প প্রশাসন গত মাসে ওষুধ কোম্পানিগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিল। সরকারের লক্ষ্য ছিল, ওষুধের দাম কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কেন্দ্র স্থানান্তর নিশ্চিত করা।
মেডিকেড হলো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রাষ্ট্র এবং ফেডারেল সরকারের স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি। এতে সাত কোটির বেশি মানুষ সেবা গ্রহণ করেন। যদিও এই চুক্তি মেডিকেডের রোগীদের জন্য সুবিধা আনে, তবে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী এবং মেডিকেয়ার কর্মসূচির আওতাভুক্ত রোগীরা এতে অন্তর্ভুক্ত নন। ২০২১ সালে মেডিকেয়ারের খরচ ছিল ২১,৬০০ কোটি ডলার, আর মেডিকেডের মোট খরচ প্রায় ৮,০০০ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, মেডিকেড ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে কম দামে ওষুধ পায়। নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রেইগ গারথওয়াইট বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ওষুধের তালিকা দেখে মনে হয়, মেডিকেডকে বড় ধরনের ছাড় দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পণ্য নেই। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রেনা কন্টি বলেন, ফাইজারের মতো চুক্তি হলেও এটি যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যবিমার খরচ বা ব্যক্তিগত ওষুধের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে না।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের প্রতিষ্ঠানকে ওয়াশিংটনের কাছাকাছি রাখতে কাজ করছে এবং সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন, গবেষণা ও উন্নয়নে পাঁচ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। ভার্জিনিয়ায় তৈরি হবে তাদের বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎপাদন কেন্দ্র। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের আরও পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে কারখানা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পর থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কিছু ওষুধ রোগীদের জন্য ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কম দামে সরবরাহ করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে হোয়াইট হাউস যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
উইগ্রো’র নারিশ ৫৫: মাঠে নেমেই কৃষকের আশাবাদের গল্পে শামিল হচ্ছে যেই ভুট্টা বীজ
ভাঙ্গায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিদর্শনে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম
জুলাই গণহত্যার দায়ে রাজসাক্ষী মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড
জুলাই গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট কামালের ফাঁসির রায়
মামলার রায়ে দেশবাসীর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে : শামসুজ্জামান দুদু
খুলনায় শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ
জুলাই গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ফাঁসির রায়
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে : ট্রাইব্যুনাল
কুড়িগ্রামে আইডিইবির ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ালো, ডান-বামের তীব্র লড়াই
ন্যায়বিচারই জাতিকে ট্রমা থেকে মুক্তি দিতে পারে: ফারুকী
ঝিনাইদহের মাহাবুব হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রীর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ভাইরাল
নির্বাচন ভণ্ডুল করতে কিছু মহল উঠে পড়ে লেগেছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
রাজধানীতে আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২৫ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
৩২ নম্বরে বুলডোজার নিয়ে যাওয়া দলকে ‘রাজাকার’ আখ্যা ফ্যাসিস্ট দোসর শাওনের
ট্রাম্পের চাপের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় এলপিজি চুক্তি করল ভারত
শহর জনবহুল, কিন্তু পাবলিক টয়লেট অপ্রতুল
ট্রাম্পের নীতিতে নিরাপদ নয় বৈধভাবে স্থায়ী অভিবাসীরাও
জকসু নির্বাচন: ছাত্রদল ও ছাত্রঅধিকার মিলে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল ঘোষণা