জুলাই-২৪ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ মুগ্ধ, তানভীন ও উত্তরায় গণহত্যাসহ ১০০ খুনের কমান্ডার এসআই আনোয়ারকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিমানবন্দর মহাসড়ক বিক্ষোভ মিছিল করেন বৃহত্তর উত্তরার ছাত্র-জনতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে বিমানবন্দর মহাসড়ক।
সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় সড়কে সৃষ্টি হওয়া তীব্র যানজট। যানজটে আটকা পড়ে ঢাকা থেকে বের হওয়া উত্তরাঞ্চলের নামীদামি গণপরিবহনসহ শত শত যানবাহন। এ সময় গণপরিবহনের যাত্রীদের মধ্যে অসুস্থ রোগী ও বয়স্ক নারী পুরুষসহ ছোট ছোট শিশুরা গড়মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে।
আজ বৃহস্পতিবার এস আই আনোয়ারকে গ্রেফতারের দাবিতে ঘোষণা দিয়ে বিকেল পাঁচটায় উত্তরায় বিএনএস সেন্টারের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। পরবর্তীতে এটি সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটের সময় হাউজ বিল্ডিং মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।বিমানবন্দর মহাসড়ক অবরোধ ও মিছিলে অংশ নেন শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। তাঁদের প্রধান দাবি—জুলাই হত্যা মামলার অভিযুক্ত এসআই খালেদ আনোয়ারকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
আন্দোলনকারী কয়েকজন অভিবাবক অভিযোগ করেন, এসআই খালেদ আনোয়ার গুলি চালিয়ে ছাত্রদের হত্যা করেছে। এরপরও তাকে রহস্যজনক ভাবে ‘ছাড়’ দেওয়া হয়েছে।বক্তব্যে একজন বলেন, আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে? আমরা বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, খালেদের অবস্থান সম্পর্কে তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে, যা সন্ধ্যার পর প্রকাশ করা হবে। তাঁরা আরও বলেন, আমরা দেখেছি, অনেক রাজনৈতিক দল আজ আমাদের পাশে নেই। তবে আমরা রাজপথ ছাড়ছি না, কারণ এ লড়াই ন্যায়ের পক্ষে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ মিছিলের কারণে বিমানবন্দর মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় ঘটনাস্থলে ছুটে জান উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান।তিনি আন্দোলন কারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, “খালেদ আনোয়ারকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। যাঁরা তাকে সাহায্য করছে, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিসি মহোদয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। উনি জানিয়েছেন, খালেদকে আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জুলাই রেভ্যুলেশন অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র ফান্তাসীর মাহমুদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তুরাগ থানার আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ, সর্দার রিয়াদসহ আরো অনেকে। এ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা-১৮ আসনের এমপি পদপ্রার্থী আশরাফুল হক।
আন্দোলনকারীদের স্লোগানে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল:
“খুনি খালেদ বাইরে কেন? প্রশাসন জবাব দে।”
“খুনি লীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও।”
“আমার সোনার বাংলায় হতে দিব না অন্যায়।”
পুলিশ লীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও।
খুনি লীগের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয় নাই যুদ্ধ।
বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের কারণে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। আন্দোলনকারীরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত প্রতিশ্রুতি পেয়ে সন্ধ্যার পর শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক থেকে সরে যান।