বিএনপির ভাবনায় শুধুই সরকারের বিদায়
০৬ জুন ২০২৩, ১১:২৭ পিএম | আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরগরম হয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল অবস্থান করছে বিপরীত মেরুতে। সরকার দল আওয়ামী লীগ বলছে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। কোনভাবেই এই সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে দলটির নেতারা বারংবার সুস্পষ্টভাবে বলছেন। তাদের চলমান আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, বরং মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
দুই দলের দ্বিমুখী অবস্থানের কারণে আগামী নির্বাচন নিয়ে দেখা দিয়েছে একধরণের অনিশ্চয়তা। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু দেখতে চায়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ প্রত্যেকেই তাদের অবস্থানের কথা উল্লেখ করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে জানিয়ে দেয়া হয়েছে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তারা পর্যবেক্ষকই পাঠাবেন না।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের রাজনীতিতে চলছে তোলপাড়, পর্দার অন্তরালেও চলছে নানা আলোচনা। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন না করার বিষয়ে অনড় অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে তাঁরা মনে করেন। দলটির নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুটি নির্বাচন দেশবাসী দেখেছে। একটিতে তারা বিনাভোটে সরকার গঠন করেছে। অন্যটিতে আগের রাতে ভোট ডাকাতি করেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আমাদের সঙ্গে সংলাপে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার কোনটিই রক্ষা করা হয়নি। বরং আরো দ্বিগুণ বেগে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, হামলা করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবর্তে আগের রাতে ভোট হয়ে গেছে।
তাই এবার আর সরকারের কোন আশ্বাস-আলোচনা কোনকিছুতেই আস্থা রাখছেন না বিএনপি নেতারা। তারা সবার আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় দেখতে চায়। দলটির একাধিক নেতা বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতেই হবে বা বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এমন কোন চিন্তা নিয়ে তারা আন্দোলন করছেন না। তাদের এই আন্দোলন বিগত ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে যে ফ্যাসিস্ট শাসক দেশের জনগণের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো জেকে বসেছে তাদের বিদায় করা। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। পরবর্তীতে জনগণই ঠিক করবে আগামীতে কে সরকার হবে, কারা ক্ষমতায় আসবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা এখন ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না। সবার আগে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এরপরে কি হবে তা দেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। আগে আমরা চাই ফ্যাসিবাদ বিদায় নিক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।
তিনি বলেন, আমরা বর্তমান সরকারকে বিশ্বাসই করি না। কারণ ২০১৮ সালে তারা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আলোচনার সময় যেসব আশ্বাস শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন তার কোনটিই তিনি রক্ষা করেননি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা বলে দিতে চাই, আগামীতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামীতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারই বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধক। আমরা (বিএনপি) ঘোষণা করেছি, শেখ হাসিনার অধিনে অতীতে নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তাই বিএনপি এদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় দল এবং আমাদের সাথে আন্দোলনে যারা আছে, তারা শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচনে যাবো না। এই সরকার যত বেশি বলুক না কেনো এদেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন নয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছি না, আন্দোলন করছি মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরিয়ে দিতে। আমরা ময়ূর সিংহাসনে বসতে অভ্যস্ত নয়, আমরা জনগণের কাতারে থেকে জনগণের চেয়ারে বসতে অভ্যস্ত এবং সেটা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে।
তিনি বলেন, এই সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ, কেবল দুর্নীতি ও লুটপাটে দক্ষ। তারা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, দেশকে দেউলিয়াত্বের পথে নিয়ে গেছে। তাই এসরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দাবি পরিষ্কার, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ১০ দফা দাবিতে আমাদের যে আন্দোলন চলছে, তার প্রথমটিই হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ। এরপর কি হবে সেটা সরকারের পদত্যাগের পরই জনগণ নির্ধারণ করবে। ###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গাজায় শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকতে চাইছে না কাতার?
মণিপুরী ছাত্রদের জন্য একটি আলাদা হোস্টেল তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
আবুধাবীতে চালু হলো ইউএস বাংলার ফ্লাইট
বিশ্বকে বাঁচাতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি তরুণদের
ইরানের হামলার বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়েই যাচ্ছেন ব্লিনকেন
রাজশাহী পবায় ট্রাক চাপায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত, আহত ৩
নিউইয়র্কে সোনালী এক্সচেঞ্জের গ্রাহক সমাবেশ ও ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
বিমানবন্দর এলাকায় বাসের ধাক্কায় এক প্রকৌশলী নিহত
ফিলিস্তিন জাতিসংঘের সদস্য না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ আরব দেশগুলোর
সুনামগঞ্জের দেখার হাওরে কৃষকদের নিয়ে ধান কাটলেন কৃষিমন্ত্রী
সিলেটের উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে ৬০ কি:মি বেগে বজ্র বৃষ্টি সহ দমকা হাওয়া !
আনোয়ারায় হিট স্ট্রোকে শাহজাদা ছালেহ আহমদ (৭৪) শাহর মৃত্যু
দুবাই পানিতে তলিয়ে যাবার কারণ ক্লাউড সিডিং?
জার্মানির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ জেলেনস্কির
নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইসিসি, জরুরি বৈঠক তলব
বান্দরবানে অপহৃত সেই ব্যাংক ম্যানাজার কে চট্টগ্রামে বদলী
মূল্যস্ফীতিই অর্থনীতিতে বড় সমস্যা
খাদের কিনারে মধ্যপ্রাচ্য
সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদের প্রশংসনীয় বক্তব্য
রাঙ্গুনিয়ায় বলি খেলায় বিজয়ী রুবেল