ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
রাজনৈতিক সঙ্কট ও অর্থনৈতিক দুরবস্থা

অনিশ্চয়তা-অস্থিরতা

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৯ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৯ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বললেন ‘এখন টের পাচ্ছি হাওরে সড়ক নির্মাণ করে নিজেদের পায়ে কুড়াল মেরেছি’ :: তালুদকার আব্দুল খালেকের বক্তব্য ভাইরাল ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারেন্টের যা দশা, নৌকায় ভোট একটাও জুটবে না’ :: এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিনের মন্তব্য ‘দেশের ব্যবসায়ীরা গত ৪০ বছরে এমন ভয়াবহ সংকটে পড়েনি’ :: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে খরচ করার মতো ডলারও সরকারের হাতে নেই’ :: মাজাভাঙ্গা বিএনপির আন্দোলনের মুরোদ নেই, ‘যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর ‘এখন যত ভয় সেই মাজা ভাঙ্গা বিএনপি’
স্টালিন সরকার
‘বেশি উন্নয়ন, কম গণতন্ত্র’ ‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’ ‘উন্নয়ন অগ্রাধিকার সীমিত গণতন্ত্র’ এই শব্দগুলো গত ১০ বছর ধরে দেশের মানুষ শুনে আসছে। উন্নয়নের নামে সীমিত গণতন্ত্রের চর্চার এই ‘মুখ ভরা বুলি’ কার্যত একদিকে দেশের গণতন্ত্রকে খাদের কিনারে নিয়ে গেছে; অন্যদিকে অর্থনীতিকেও বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি তথা ব্যাংকিং সেক্টর, শিল্প প্রতিষ্ঠান এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে কার্যত ‘অর্থনীতির ভীত’ খ্যাত এই সেক্টরগুলো কার্যত আইসিইউতে। মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশে ডলার সংকট নজীরবিহীন পর্যায়ে চলে গেছে। দীর্ঘ এক বছরেও ডলার সংকটের সুরাহা করা যায়নি। ব্যবসায়ীদের সবচেযে বড় সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা মহাসংকটে পড়ে গেছেন। গত ৪০ বছরে এমন সংকটে পড়েনি ব্যবসায়ীরা। এমনকি করোনার সময় সবকিছু বন্ধ থাকলেও এমন ভয়ঙ্কর সমস্যা হয়নি।’ প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘ডলার সংকট পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে খরচ করার মতো ডলারও সরকারের হাতে নেই।’ এমন পরিস্থিতিতে ‘যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর ‘সব সমস্যার সুরাহা করবেন একজন’ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের এমন নির্ভরতার বিশ্বাসে ফাটল ধরে গেছে।

দেশের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের যারা দীর্ঘদিন থেকে জনগণের ভোটের অধিকারের কথা বলছেন; তারা সব সময় একটি বক্তব্য দিচ্ছেন ‘জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া উন্নয়ন টেকসই হয় না। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে তাদের উন্নয়নে অংশিদারিত্ব দিলে উন্নয়ন টেকসই হবে।’ কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সুবিধাভোগী বুদ্ধিজীবী, মন্ত্রী-এমপি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করতেন উন্নয়ন হলে জনগণ খুশি। গ্রামগঞ্জের বেশিই ভাগ মানুষ ভোট চায় না, তারা উন্নয়ন চায়, পেটে ভাত চায়। গ্রামেগঞ্জে থাকা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ‘বেশি উন্নয়ন, কম গণতন্ত্র’ শ্লোগান দিতে যারা অভ্যস্ত তাদের মধ্যে এখন চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা পদ্মা সেতু, ঢাকা শহরে একাধিক উড়াল সেতু, মেট্রোরেল ইত্যাদি উন্নয়নের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে সাহস করেন না। মানুষের কাছে গেলের তারা ‘বিদ্যুৎ নাই কেন’ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়, কথায় নাস্তানাবুদ করেন।

আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের তার স্ত্রী বর্তমান সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের উদ্দেশ্যে করা বক্তব্য ভাইরাল হয়ে গেছে। তালুকদার খালেক স্ত্রী উপমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, ওকে বলো, কারেন্টের যা দশা, খুলনা সিটি নির্বাচনে নৌকায় ভোট একটাও জুটবে না।’ স্বামীর এই বক্তব্য সম্প্রতি এক গোলটেবিল আলোচনায় তুলে ধরে উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, আমাকে বলেছে, ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, ওকে বলো, কারেন্টের যা দশা, নৌকায় ভোট একটাও জুটবে না’। আমি বিপু ভাইরে (বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ) সঙ্গে সঙ্গে কল দিলাম, ভাই কী দশা? আপনার জ্বালায় কিন্তু খুলনার সিট যাচ্ছে। (নসরুল হামিদ) বলেন, ‘কী করব? আরো ২৫ দিন এই রকম দশাই থাকবে।’ খুলনার তালুকদার আব্দুল খালেকের মতোই অবস্থা সারাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাদের। তারা ডলার সংকট, বিদ্যুৎ সংকট, লাগামহীন পণ্যমূল্য ইত্যাদির কারণে সরকারের ‘বেশি উন্নয়ন, কম গণতন্ত্র’ শ্লোগান ভুক্তোভোগী মানুষকে শোনাতে পারছেন না। তৃর্ণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিদ্যুৎ সংকট, ডলার সংকট এবং পণ্যমূল্য নিয়ে তারা বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। আগে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ইত্যাদি উন্নয়নের গান শোনালেও এখন মানুষ সেসব শুনলে বিক্ষব্ধ হয়ে উঠেন। তাছাড়াও এতোদিন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের নেতারা মনে করতেন যে কোনো সমস্যা হলে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তার সুরাহা করে ফেলবেন। সব স্তরের নেতাকর্মীই শেখ হাসিনার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং তিনিই সংকটের সুরাহা করবেন এমন ধারণা পোষণ করতেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর মন্ত্রী-এমপি ও নেতাকর্মীদের মধ্যে এই আস্থা কমে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নেতা জানান, তাদের ধারণা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর করে অতীতের মতো বর্তমান সংকটের সুরাহা করে ফেলবেন। তা না হলে ভারতের মোদী সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পরে যে ভুমিকা পালন করেছেন তেমনি ভিসা নীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেনদরবার করবেন। কিন্তু কোনোটিই হচ্ছে না। তিন দেশ সফর করে যেমন সমস্যার সুরাহা হয়নি; তেমিন ভারত সরকারও এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তদবির করার অবস্থায় নেই।

গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এন্থনি বিøঙ্কেন নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার সময় জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ সরকারকে ৩ মে নতুন ভিসা নীতির কাগজপত্র দেয়া হয়েছে।’ অথচ সরকার তা প্রকাশ করেনি। এ নিয়ে সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে প্রশ্ন করলে তিনি স্বভাবসুলভ দায়সারা জবাব দেন ‘যুক্তরাষ্ট্রের খবর আমরা প্রকাশ করবো কেন; তাদেরটা তারাই করুক’। অথচ এই ভিসা নীতি ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা ছুটে গেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসায়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, ‘এই ভিসা নীতি বিএনপির ক্ষতি করবে’। আবার বিএনপি বলছেন ‘এই ভিসা নীতি সরকারের পাতানো নির্বাচনের বড় বাঁধা হবে’। আবার পরবর্তীতে আমির হোসেন আমু ঘোষণা দিলেন, ‘জাতিসংঘের সহায়তায় বিএনপির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ রাজি’। এ ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন দলটির নেতা ও মন্ত্রীরা নানান ভাষায় স্ববিরোধী কথাবার্তা বলতে শুরু করেন। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আমির হোসেন আমু ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গিয়ে বলেন, ‘বিএনপিকে কিসের দাওয়া দিব, সংলাপ হবে না’।

ক্ষমতাসীন দলটির নেতাদের এই স্ববিরোধী কথাবার্তা এবং আবোলতাবোল বক্তব্যের মূলে রয়েছে দেশের সার্বিক অর্থনীতির দূরবস্থা। এতোদিন ‘উন্নয়ন উন্নয়ন’ চিৎকার করলেও অর্থনৈতিক দূরবস্থা সরকারকে নাজুক অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। এক বছর ধরে ডলার সংকট চলছে। আমদানি-রফতানির উপর বিধি নিষেধ আরোপ করেও সমস্যার সমাধান হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এতোদিন প্রচার করা হয়েছে। ডলারের বদলে চীনের ইয়েন এবং ভারতের রুপি দিয়ে আমদানি রফতানির খরচ মেটানোর চেষ্টা করেও সফলতা আসেনি। এমনকি আইএমএফ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তি পেয়েও ডলার সংকটের সুরাহা হয়নি। বরং আইএমএফের প্রতিনিধিরা ঢাকা সফরে এসে সরকারের রিজার্ভের ভুল তথ্য ধরে ফেলেন। ডলার সংকটের কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করা যায়নি; ফলে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ। ডলার সংকটের কারণে কয়লার বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় কয়েকটি দেশ কয়লা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বেশ কিছুদিন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ ছিল; এখন পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।

‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’ শ্লোগানে উন্নয়ন কর্মকাÐ পরিচালিত হলেও বিভিন্ন সংগঠনের জরীপে ধরা দিয়েছে ভয়াবহ চিত্র। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) জরিপের উঠে এসেছে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকায় খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলেছেন নিম্নআয়ের মানুষ। তারা কম খাচ্ছেন। গত ছয়মাসে (সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৩) ৯৬ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার গোশত খাওয়া কমিয়েছেন। ৮৮ দশমিক ২২ শতাংশ পরিবার মাছ কম খাচ্ছে। নিম্নআয়ের পরিবারে খরচ বেড়েছে গড়ে ১৩ শতাংশ। এ সময় তাদের আয় বাড়েনি। বাধ্য হয়ে অনেক পরিবার খাবারের গুণগত মানেও ছাড় দিচ্ছে। আগের চেয়ে কম দামের খাবার কিনে খাচ্ছে। সারাদিন না খেয়ে থাকছেন- এমন দরিদ্র মানুষের হার ১৮ শতাংশ। জরিপ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মাছ-গোশত ছাড়াও অন্যান্য খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রেও লাগাম টেনেছে দরিদ্র মানুষ। এর মধ্যে ৭৭ শতাংশ পরিবার ডিম ও ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ পরিবার ভোজ্যতেল খাওয়া কমিয়েছে। প্রায় ৪৬ শতাংশ পরিবার ডাল, ৫৭ শতাংশ পরিবার আটা ও ৩৭ শতাংশ পরিবার ভাত কম খাচ্ছে। সংস্থটির নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে যে, বেশিরভাগ নিম্নআয়ের পরিবার ঋণ করে চলছে। বাড়তি আয় তাদের না থাকায়, তারাও সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছেন। যাদের নেই এমন মানুষ মনে করে তাদের ঋণ করা ছাড়া বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদে সমস্যায় পড়ছেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি হিসাবের চেয়েও বর্তমানে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি।

ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কথায় কথায় বিদেশে পণ্যের দাম বৃদ্ধির অজুহাত তুলতেন। কিন্তু ভারতের কোলকাতায় যে চিনি ৫০ টাকা কেজি সে চিনি ঢাকায় ১৪০ টাকা। গত ৭ জুন গবেষণা সংস্থা র‌্যাপিড আয়োজিত এক সেমিনারে পরিকল্পনা মন্ত্রী এ মা মান্নান বলেছেন, ঢাকা থেকে কলকাতা, আগরতলা খুব বেশি দূরে নয়। ওই বাজার আর বাংলাদেশের বাজারের মধ্যে পণ্যমূল্যে এত তফাৎ হওয়া উচিত নয়। কিন্তু হচ্ছে। কাজেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাণিজ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীকে সবসময় বন্দুকের ট্রিগারে হাত রাখতে হবে। মন্ত্রীর এই বক্তব্যে পরিস্কার সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে গত ১৯ মে এক সেমিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘এখন টের পাচ্ছি, হাওরে সড়ক নির্মাণ করে নিজেদের পায়ে কুড়াল মেরেছি। হাওরে সড়ক বানিয়ে উপকারের চেয়ে অপকারই হয়েছে। সরকারের কাজের মধ্যে দ্বৈতকরণ হচ্ছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কাজে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে। গভীরভাবে অনেক কিছু দেখা হয় না। কিশোরগঞ্জে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ইটনা-মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম সড়কের কারণে বর্ষার সময়ে পানি উপচে বাড়িঘরে উঠছে। হাওরের জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে। হাওরের নিজস্ব প্রজাতির মাছ, গাছ হিজল, পানকৌড়িসহ বিভিন্ন প্রাণী-বৃক্ষ ধ্বংস হচ্ছে।’

‘বেশি উন্নয়ন কম গণতন্ত্র’ শ্লোগান দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে উন্নয়নের ফিরিস্তি জনগনের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। অন্যদিকে যারা জনগণের ভোটের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলটির দায়িত্বশীল নেতারা কয়েকমাস আগেও বলতেন, বিএনপির মাজা ভাঙ্গা, তাদের আন্দোলনের মুরোদ নেই। কিন্তু সরকারের জনগণের সম্পৃক্তহীন অপরিকল্পিত উন্নয়নের ধারার মধ্যেই বিএনপি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে যে সব সমাবেশ করেছে তাতে বাধা উপেক্ষা করেও লাখ লাখ লোকের সমাগম হয়েছে। গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ইস্যুতে সরকার ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতা চালিয়েছে। একদিকে বিএনপিকে ঠেকাতে ‘শান্তি সমাবেশ’ করে কর্মীদের লাঠি হাতে ঢাকার মোড়ে মোড়ে পাহাড়ায় বসিয়েছিল। আইন শৃংখলা বাহিনীকে খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করেছে বিএনপির বিরুদ্ধে। এমনকি সমাবেশ করার অনুমতি দিতে তালবাহানা করেছে। তারপর সমাবেশের অনুমতি দেয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে ১০ লাখ লোক রাজধানী ঢাকায় হাজির হয়েছে। অথচ সরকারি সবকিছু ব্যবহার করেও গত এক বছরে কোনো সমাবেশে এক লাখ লোক হাজির করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দল।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আগেই সীমান্তে হত্যা বন্ধে অনুরোধ করা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এখন ভালো আছেন খালেদা জিয়া
বাংলাদেশে গণতন্ত্র বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে : ম্যাথিউ মিলার
এপ্রিলে ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির
অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার নিয়ে নতুন নির্দেশনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
আরও

আরও পড়ুন

আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে বাংলাদেশের প্রথম শরফুদ্দৌলা

আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে বাংলাদেশের প্রথম শরফুদ্দৌলা

আগেই সীমান্তে হত্যা বন্ধে অনুরোধ করা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আগেই সীমান্তে হত্যা বন্ধে অনুরোধ করা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কেন ফিরলেও নয়্যারকে নিয়ে শঙ্কা কাটেনি

কেন ফিরলেও নয়্যারকে নিয়ে শঙ্কা কাটেনি

মৌসুম শেষ চেলসি মিডফিল্ডার লাভিয়ার

মৌসুম শেষ চেলসি মিডফিল্ডার লাভিয়ার

আলনসোর জন্য লিভারপুল সঠিক ক্লাব না: লোথার ম্যাথিউস

আলনসোর জন্য লিভারপুল সঠিক ক্লাব না: লোথার ম্যাথিউস

এখন ভালো আছেন খালেদা জিয়া

এখন ভালো আছেন খালেদা জিয়া

সরকার ক্ষমতায় থাকতে মানুষের ভোটের ওপর নির্ভর করে না : সাকি

সরকার ক্ষমতায় থাকতে মানুষের ভোটের ওপর নির্ভর করে না : সাকি

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রীপুরে মহাসড়ক দখলে নিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রীপুরে মহাসড়ক দখলে নিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

অনুষ্ঠিত হলো সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক

অনুষ্ঠিত হলো সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক

টাঙ্গাইলে ৯৬৬ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক ৪

টাঙ্গাইলে ৯৬৬ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক ৪

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

প্রফেসর জিয়া রহমানের স্মরণে আগামীকাল ঢাবিতে দোয়া মাহফিল

প্রফেসর জিয়া রহমানের স্মরণে আগামীকাল ঢাবিতে দোয়া মাহফিল

রাজাপুরে নিখোজের দুই দিন পর নদী থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

রাজাপুরে নিখোজের দুই দিন পর নদী থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

কাঁঠালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ১ ডাকাত গ্রেপ্তার

কাঁঠালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ১ ডাকাত গ্রেপ্তার

সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশন পর্তুগালের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশন পর্তুগালের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

চুয়াডাঙ্গা দর্শনা ইমিগ্রশন চেকপোস্ট হতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এক ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর

চুয়াডাঙ্গা দর্শনা ইমিগ্রশন চেকপোস্ট হতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এক ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর

বাইডেনের গাজা নীতির প্রতিবাদে আরও এক মার্কিন কর্মকর্তার পদত্যাগ

বাইডেনের গাজা নীতির প্রতিবাদে আরও এক মার্কিন কর্মকর্তার পদত্যাগ

১১ মামলায় আগাম জামিন পেলেন বিএনপি নেতা বকুল

১১ মামলায় আগাম জামিন পেলেন বিএনপি নেতা বকুল

তীব্র হচ্ছে ইসরাইল-হেজবোল্লাহ সংঘাত, নিহত ১৭

তীব্র হচ্ছে ইসরাইল-হেজবোল্লাহ সংঘাত, নিহত ১৭

রাজবাড়ীতে শাশুড়ীকে জবাই করে হত্যার দায়ে পুত্রবধুসহ ২জনের যাবজ্জীবন কারাদ-

রাজবাড়ীতে শাশুড়ীকে জবাই করে হত্যার দায়ে পুত্রবধুসহ ২জনের যাবজ্জীবন কারাদ-