৩৬ সমীক্ষায় ২১ কোটি ব্যয়
২২ জুন ২০২৩, ১১:০৭ পিএম | আপডেট: ২২ জুন ২০২৩, ১১:৫৩ পিএম
প্রকল্পে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে ছাড় দেয়া হবে না : তাজুল ইসলাম
তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রামবাংলা আসলেই বদলে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রামে এখন মানুষ অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। শহরের সাথে গ্রামের সর ধরনের সংযোগ বাড়তে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা- গ্রামীণ যোগাযোগ, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, ডিজিটাল সেবা, আর্থিক সেবা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-পুষ্টি সেবা এবং স্থানীয় পর্যায়ে সুশাসন ফিরে আসবে। শহরে কাজ হারিয়ে অনেকেই গ্রামে ফিরে যাবে। সমৃদ্ধ অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে গত নির্বাচনী ইশতেহারে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর সফল বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, দপ্তরগুলোকে ইশতেহারের আলোকে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশও দিয়েছে সরকার। আগামী নির্বাচনের পরে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কতটুকু হবে তা বলতে পারছে না এলজিইডির কর্মকর্তারা। তবে সরকারে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে অনিহা বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চলমান ২৩৭ প্রকল্পও ‘আমার গ্রাম আমার শহরে’র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় ওই প্রকল্পগুলোকে এ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শহরে সুবিধা গ্রামে স¤প্রসারণে তার জন্য ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৭ হাজার ২৩০টি গ্রামে ৮টি ক্ষেত্রে ৩৬টি সমীক্ষা গবষেণা করছে এলজিইডি। এতে ২১ কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। তবে গত ৫ বছরে সমীক্ষা গবেষণা ছাড়া প্রকল্পের আলোর মুখদেখাতে পারেনি। এ কারণে প্রকল্প নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দ্রæত এ প্রকল্প বাস্তবায়নের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শহরের সব নাগরিক সুবিধা গ্রামে পৌছে দিতে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরুর পরিকল্পনা করছে সরকার। দেশজুড়ে প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র গড়ে তোলার এ প্রকল্প পরিকল্পনাধীন পর্যায়ে রয়েছে।
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, শহরের সব আধুনিক সুবিধা গ্রামে স¤প্রসারণ করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমীক্ষার কাজ করছে। সমীক্ষার মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে নতুন নতুন প্রকল্প। এ সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদরকি করছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। ‹আমার গ্রাম আমার শহর› বাস্তবায়নে একটি মহাপরিকল্পনাও প্রণয়নের কাজ চলছে। এ প্রকল্পে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে ছাড় দেয়া হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিডি) প্রণীত কর্ম-পরিকল্পনার খসরা অনুসারে, ‹আমার গ্রাম আমার শহর› শীর্ষক এ মেগা প্রকল্পের অধীনে সড়ক যোগাযোগ, ইন্টারনেট সংযোগসহ টেলি যোগাযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, নিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার মতো অনেকগুলি লক্ষ্য নিধারণ করা হয়েছে। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের এ প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী শহরের সুবিধা গ্রামে স¤প্রসারণ করা হলে এবং গ্রামীণ যুবক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা গেলে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি গ্রামে হালকা শিল্পের সম্ভাবনাও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে গ্রামের মানুষের শহরমুখীতা কমবে- বলে আশা করছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মডেল গ্রাম স্থাপনে কাজ করবে। তবে মডেল গ্রাম স্থাপনে নেতৃত্ব দেবে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনস্থ সংস্থা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
প্রকল্পের প্রস্তবনায় বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর দর্শন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং দেশব্যাপী সুষম বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা স¤প্রসারণ- শীর্ষক বিশেষ অঙ্গীকার ঘোষণা করেন। এ অঙ্গীকারের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষম ও সবার জন্য উন্নয়ন নিশ্চিত করার দৃঢ়প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
গত ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের রুপান্তরের রুপকল্পও ঘোষণা করা হয়েছে। এ রুপকল্প অনুযায়ী ধারাবাহিক টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আমার গ্রাম-আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে নাগরিক সুবিধা স¤প্রসারণ- বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সঞ্চারের অন্যতম কর্মকৌশল। এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন এবং মানব উন্নয়ন সূচক উন্নয়নেরও অন্যতম কৌশল। ২০১৮ নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়,সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এর ৩.১০ অনুচ্ছেদের অঙ্গীকারে বলা হয়েছে “উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত পয়: নিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রæত গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সহ মানসম্মত ভোগ্যপণ্যের বাজার স¤প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক নগরের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ইশতেহারের অঙ্গীকারে দেশের গ্রামগুলোকে শহরে রুপান্তরের কথা বলা হয়নি, প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা স¤প্রসারণের কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারের বিশেষ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২০২০ একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এই কর্মপরিকল্পনার মূল ভিত্তি প্রবৃদ্ধি সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রামীণ বৈচিত্র ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণায় গুরুত্ব এবং সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে মূল্যযোগ সৃজন। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন দর্শন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, বাংলাদেশ ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গঠনের ভিশন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এই কর্মপরিকল্পনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ বাস্তবায়নে সরকারের ২১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্পসমূহকে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ ধারণার সাথে সাজুয্যকরণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ২০৪১ সালে দেশের জনসংখ্যা ২২ কোটিতে পৌঁছাতে পারে। দেশের বর্তমানে ০.৫-১ শতাংশ হারে কৃষি জমি কমছে। এর বড় একটি অংশ বসতভিটায় রূপান্তরিত হচ্ছে। কৃষি জমি হ্রাসের কারণে এ হার অব্যাহত থাকলে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘিœত এবং গ্রামের জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
তাই জনবহুল গ্রামগুলোতে সব নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে বহুতল ভবনের সমন্বয়ে একটি কম্প্যাক্ট টাউনশিপ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হবে। এর ফলে সড়ক বিদ্যুৎ, অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য ভাবে কমবে। গ্রামগুলো সহজে বন্যা মুক্ত হবে। এ ধরনের আদর্শ গ্রামে বিদ্যালয়, হাসপাতাল ক্লিনিক থাকলে সহজে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যাবে। কৃষি জমি বাঁচবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশ বাসযোগ্য থাকবে। এ কারণে গ্রামীণ গৃহায়ন বা কম্প্যাক্ট হাউজিংয়ের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সহাওরাঞ্চলে এলজিইডির মডেল গ্রাম: হাওর অঞ্চলের অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠান করতে চায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। চলমান এই প্রকল্পের আওতায় শুরুতে পাইলট পাঁচটি মডেল গ্রাম করার পরিকল্পনা। পরে বাস্তবায়ন জটিলতায় ২টি মডেল গ্রাম স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ
ঈশ্বরদীতে দূর্বৃত্তের হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আহত
থিনেস্ট স্বাস্থ্যের