পাট নিয়ে বিপাকে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
বৈরী আবহাওয়া মোকাবেলা আর অনেক খরচ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক পাট আবাদ করলেও এখন পাটের বাজারেও সিন্ডিকেটের থাবা। আবাদ খরচ বেশী হওয়ায় পাটের দাম গত বছরের চেয়ে মণ প্রতি হাজার টাকা কম। কৃষক হাটের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ায় বেসরকারী পাটকল এখন পাট নিয়ে তামাশা শুরু করেছে।
এবার বরেন্দ্র অঞ্চলে পাটের আবাদ হয় ৫৯ হাজার হেক্টর জমিতে। নওগায় ৪৫৩০ হেক্টর, নাটোরে ৩১৭৪৫ হেক্টর, রাজশাহীতে ১৯৬০০ হেক্টর, নবাবগঞ্জে ৩২৮৫ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। পাট আবাদে সময় প্রকৃতি কিছুটা সহায় থাকলেও পরে অনাবৃষ্টির কবলে পড়ে। বর্ষাকালীন ফসল পাট। বর্ষণের পানিতে আবাদ হয়। কিন্তু অনাবৃষ্টি টানা খরার কারণে গভীরনলকূপ সেচের পানিতে দিয়ে আবাদ হয়। সেচের জন্য বাড়ে উৎপাদন খরচ। পাটগাছ বড় হলেও কাটতে বিপাকে পড়ে কৃষক। আষাঢ় শ্রাবণ ভাদ্র পুরো বর্ষা মওসুম জুড়েই বৃষ্টি নেই। নদী খাল বিল ডোবা পুকুরে পানি নেই। জাগ দেবার জন্য পাট কাটতে অপেক্ষার প্রহর। অবশেষে ডোবা পুকুর ভাড়া নিয়ে শুরু হয় পাট জাগ দেয়া। এসব ডোবা পুকুরের মালিকরা নীচ থেকে পানি তুলে পুকুর ডোবা ভরে। আর সেই পানিতে পাট জাগ দিতে গিয়ে গুনতে হয় বিঘাপ্রতি দু’হাজার টাকা। দু’বিঘা জমির পাট জাগ দিতে খরচ হয় চার হাজার টাকা। এতে করেও বাড়ে উৎপাদন খরচ। এত কিছু করার পর স্বপ্ন ছিল পাটের ভাল দামের। কারণ গত মওসুমে পাটের দাম মোটামুটি ভাল পেয়েছে। এবার তেমনটি হলে খুব বেশী লাভ না হলেও লোকসান হবেনা। কিন্তু স্বপ্নের সোনালী আঁশ নিয়ে কৃষকের গলায় ফাঁস দিতে চাচ্ছে ফড়িয়া আর মিলাররা। ওরা এবার সিন্ডিকেট করে পাটের দাম নির্ধারণ করেছে। গত বছর রাজশাহীর দূর্গাপুরহাটে যে পাট বিক্রি হয়েছে প্রকার ভেদে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা মণ। এবার সেই পাট মণ প্রতি দু’হাজারের বেশী উঠছেনা। হাটে প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় হতাশ। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন জানান, গতবার ভালো দাম পাওয়ায় এবার আবাদ বেশী করেছিল। বাজারের মুনাফাখোররা কৃষকের সে আশাকে নিরাশ করেছে। আমরা কৃষকদের পাট বিক্রিতে তাড়াহুড়ো না করার পরামর্শ দিচ্ছি। কেননা পাট পচনশীল নয়।
রাজশাহী অঞ্চলের পাটের বড় মোকাম নওহাটা, কেশরহাট, দূর্গাপুর, বানেশ্বর, তাহেরপুর। এসবস্থানের আড়তদাররা বলছেন পাটের চাহিদা নেই। মোহনপুরের পাটচাষী সুফল মন্ডল বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে ফড়িয়ারা। গত কয়েক বছর ধরে দেখেছি পাটের অনেক চাহিদা আর এখন বলছে চাহিদা নেই। সরকারি জুটমিল রাজশাহী পাটকল বন্ধ। গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি পাটকল। এছাড়া ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, খুলনাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা পাট ক্রয় করে নেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।
নাটোরে পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন পাটকল মালিকরা এবার বেশী দাম দিচ্ছেনা পাটকলে পাট নিয়ে আমরা কাঙ্খিত দাম না পেয়ে পাট ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি। বেশী দামে পাট বিক্রি করতে না পারলে আমরা কিভাবে বেশী দামে পাট কিনবো। বানেশ্বর বাজারের পাইকারী পাট ব্যবসায়ী জানান, আমরা পাট কেনার পর তা নিয়ে মিলে যায়। এজন্য গাট্টিপ্রতি খরচ পড়ে ১৫০ টাকা। পাটকলে পাট সরবরাহকারীদের বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে। কারণ পাটকল মালিকরা পাট নিলেও দাম দিতে দেরী করে। অনেক ব্যাপারী মিলগুলোর কাছে কোটি কোটি টাকা বাকী। তারা নানাভাবে ঘোরাচ্ছে। এবার মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে পাটের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে পাটের দাম বাড়ছেনা। সবকিছুর বোঝা চেপেছে পাট আবাদকারীদের উপর।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ
ঈশ্বরদীতে দূর্বৃত্তের হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আহত
থিনেস্ট স্বাস্থ্যের