মধ্যস্বত্বভোগীর দখলে সবজি বাজার

কমেছে চালের দাম, ডিম-মুরগির দাম স্থিতিশীল, সবজির দাম বাড়ছেই

মধ্যস্বত্বভোগীর দখলে সবজি বাজার

স্টাফ রিপোর্টার

১০ মে ২০২৫, ১২:২০ এএম | আপডেট: ১০ মে ২০২৫, ১২:২০ এএম

কয়েক দিন আগেও পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। বগুড়ার বাজারে আলুর কেজি ১২ টাকা হলেও ঢাকায় এখন ২৫ থেকে ৩০ টাকা। গত কয়েক দিনে অন্যান্য সবজির দামও হু হু করে বাড়ছে। কেন বাড়ছে তার কোনো সদুত্তর কেউ দিতে পারে না। তার মানেÑ আগের মতোই মধ্যস্বত্বভোগীদের দখলে সবজির বাজার। ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জ অথবা দোহারে ঢেঁড়সের কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি। ঢাকায় সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। প্রশ্ন হলোÑ নবাবগঞ্জ বা দোহার থেকে ঢাকায় সবজি আনতে কেজিপ্রতি কত টাকা খরচ হয়?
বিক্রেতাদের ভাষ্য, শীত মৌসুম শেষে বর্ষাকালীন সবজি এখনো পুরোপুরি বাজারে আসা শুরু করেনি। সে কারণেই বাড়ছে সবজির দাম। অথচ বাজার ঘুরে দেখা গেছে সবজির কোনো ঘটিতি নেই। গেল রোজায় সবজির দাম তুলনামূলক কম ছিল। বিশেষ করে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলের তুলনায় অনেক কম ছিল। ঈদের পর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে সবজির দাম। এটি এখনো অব্যাহত রয়েছে। সবচেয়ে কম দামি সবজি হিসেবে পরিচিত পেঁপে এখন প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে এখনো বর্ষা মৌসুমের সবজি খুব বেশি আসছে না। বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজির দাম বাড়ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মালিবাগ বাজার, শান্তিনগর, খিলগাঁও কাঁচাবাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে বেশির ভাগ সবজির দামই ৮০ টাকা। তবে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।
খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজেরর শাক-সবজি দোকানদার ফিরোজ। তার দোকানে ক্রেতার বেশ ভিড়। একজন পেঁপের দাম কত জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা বলেন, মাত্র ৮০ টাকা। এখন পেঁপের সরবরাহ খুব কম। পাইকারি বাজারেও দাম বেশি। বর্ষা শুরু হলে দাম কিছুটা কমে যাবে। ক্রেতা জানতে না চাইলেও তিনি নিজেই এ রকম ব্যাখ্যা দিলেন। বিক্রেতার সহকারী বলেন, দাম বাড়ায় পেঁপের ক্রেতাও কমে গেছে। এখন পেঁপের মৌসুম না। ঢাকায় পেঁপে আসছে কম।
বাজার দেখা যায়, ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। প্রতি কেজি পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাকরোল ৯০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৯০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুরমুখি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, সজনে ডাটা কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। প্রতি কেজি চিচিঙা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, দেশি পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ২৫ টাকা, দেশি নতুন রসুন ১২০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, দেশি চিকন মসুর ডাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ফার্মের মুরগির দাম গত সপ্তাহের মতোই ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি এবং ফার্মের মুরগির ডিমের প্রতি ডজন আগের মতোই ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে আসছে নতুন চাল। ফলে দাম কমেছে সরু তথা মিনিকেট চালের। গত দুই সপ্তাহে ধরনভেদে এই চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা কমেছে। এছাড়া মোটা চালের দামও মানভেদে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডায়মন্ড, মঞ্জুর, রশিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও এই চালের কেজি ৮৮ থেকে ৯০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে অন্যান্য চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিভাগ : জাতীয়