করিডোর ও বন্দর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয় : আমীর খসরু

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২০ মে ২০২৫, ০১:৩৯ এএম | আপডেট: ২০ মে ২০২৫, ০১:৩৯ এএম

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডোর’ এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কোনো অরাজনৈতিক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যপরিধির প্রতি ইঙ্গিত করে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন মানবিক করিডোরের কথা বলছেন। এটি সেনসেটিভ ইস্যু, বাংলাদেশের সিকিউরিটির প্রশ্ন। জিও স্ট্যাটিজিক ডিসিশন। আপনারা তো এই ডিসিশনের দিকে যেতে পারেন না। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ডিসিশনে যাচ্ছেন। একটা নন-পলিটিক্যাল গভর্নমেন্ট, একটা ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের কি এসব সিদ্ধান্তে যাওয়ার দরকার আছে?
গতকাল সোমবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বাজেট সংক্রান্ত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিডি ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এ বৈঠক আয়োজন করে।
আমীর খসরু বলেন, একটা ডেমোক্রেটিভ সিদ্ধান্তের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। দেশের মালিকানা ফেরানোর জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেই আলোচনা বাদ দিয়ে বাকি সবকিছু আমরা করছি। এসবের মাধ্যমে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কী প্রমাণ করতে চাচ্ছেন?
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইন্টেরিম সরকারের ওপর খুব বেশি প্রত্যাশাও নেই। কারণ, এ ধরনের সরকারের কিছু লিমিটেশন আছে। তারা জনগণের মেন্ডেট নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে না। তারা পাবলিক ফিডব্যাক, জনগণ ও বিজনেস কমিউনিটির নার্ভ ফিল করতে পারে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এই সরকারের ওপর মানুষের যেটুকু এক্সপেকটেশন সেটা একটু ভিন্ন। ডেমোক্রেটিভ অর্ডারে ফিরে যাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার সেটাই হচ্ছে এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেখানে কতটুকু এগোচ্ছি?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকারের পুরোনো মডেলেই নতুন অর্থবছরের বাজেট দিচ্ছে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাজেটে দেশের অর্থনীতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট কতটুকু মাথায় রাখা হয়েছে? আমরা কি পুরোনো ইকোনমিক মডেল ফলো করবো এখন? যদি পুরোনো মডেলের ওপর বাজেট করা হয় তবে আমাদের পরিবর্তনের যে আকাক্সক্ষা তা বাস্তবায়ন হবে না। ভুল তথ্যের ওপর বাজেট ও পলিসি প্রণীত হলে জনআকাক্সক্ষারও কোনো প্রতিফলন হবে না।
তিনি বলেন, এই সরকারের ওপর মানুষের যেটুকু এক্সপেকটেশন সেটা একটু ভিন্ন। ডেমোক্রেটিভ অর্ডারে ফিরে যাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার সেটাই হচ্ছে এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেখানে কতটুকু এগোচ্ছি? আনসারটেনিটির মাধ্যমে যেখানে স্থিতিশীলতা থাকবে না, সেখানে মানুষ ইনভেস্টমেন্টেও ভরসা পাবে না। আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে, এ সরকার কতদিন থাকবে, নির্বাচন কবে হবে, আগামী নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাবে, এ বিষয়গুলো সবার মনে কাজ করছে। কিন্তু আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, এই যে একটা ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম হলো, আমরা স্বাগত জানাই। তবে আমরা মনে করি ইনভেসমেন্ট ফোরাম কোনো সরকারের দায়িত্ব না, বরং আমাদের সবার দায়িত্ব। এখানে ইনভেসমেন্টের অবশ্যই দরকার আছে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া তো সেভাবে ইনভেস্টমেন্ট আসবে না। ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া কোনো দেশই চলতে পারবে না। কারণ, ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো দেশই উন্নতি করতে পারে না। এমপ্লয়মেন্ট ক্রিয়েট করতে হলে আপনাকে প্রথমেই আমাদের প্রাইভেট সেক্টরে ইনভেস্ট করতে হবে। সেটা দেশে হোক বা বিদেশে। সেই জায়গাটিতে যে কনফিডেন্স দরকার, যে রোডম্যাপ দরকার, যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দরকার, শর্টটার্ম, মিডটার্ম বা লংটার্ম সেটা তো কেউ করতে পারছে না। সবাই অপেক্ষা করছে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী কেউ বুঝতে পারছে না। কারণ, দেশে এখন না কোনো ইলেকটেড সরকার আছে, না কোনো রোডম্যাপ আছে, যার ওপর ভরসা করে মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।###


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে দেশটির আইন মেনে চলুন : বাংলাদেশিদের প্রতি কনসাল জেনারেল

স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে দেশটির আইন মেনে চলুন : বাংলাদেশিদের প্রতি কনসাল জেনারেল

সুন্দরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা, প্রধান আসামি সুমন গ্রেফতার

সুন্দরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা, প্রধান আসামি সুমন গ্রেফতার

আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বেকার যুবকদের ভাতা প্রদান করা হবে - ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি

আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বেকার যুবকদের ভাতা প্রদান করা হবে - ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি

মারা গেছেন খ্যাতিমান আলোকচিত্র শিল্পী চঞ্চল মাহমুদ

মারা গেছেন খ্যাতিমান আলোকচিত্র শিল্পী চঞ্চল মাহমুদ

ইরানে নিরীহ নাগরিকদের হত্যার মূল্য দিতে হবে নেতানিয়াহুকে

ইরানে নিরীহ নাগরিকদের হত্যার মূল্য দিতে হবে নেতানিয়াহুকে

কিশোরকে নির্যাতন ঘটনায় আসামি সাইফুল গ্রেফতার

কিশোরকে নির্যাতন ঘটনায় আসামি সাইফুল গ্রেফতার

বেপরোয়া গতিতে দুর্ঘটনা, পরিচয় মিলেছে ময়মনসিংহে নিহত ১১ জনের

বেপরোয়া গতিতে দুর্ঘটনা, পরিচয় মিলেছে ময়মনসিংহে নিহত ১১ জনের

দাউদকান্দিতে ড.খন্দকার মোশাররফ ফাউন্ডেশন ডিগ্রি কলেজে দোয়া মাহফিল

দাউদকান্দিতে ড.খন্দকার মোশাররফ ফাউন্ডেশন ডিগ্রি কলেজে দোয়া মাহফিল

বেনাপোলে ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার জাল নোটসহ আটক ১

বেনাপোলে ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার জাল নোটসহ আটক ১

স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ সময়ের দাবী

স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ সময়ের দাবী

আউটসোর্সিং শিল্প বিকাশে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে: শিল্প উপদেষ্টা

আউটসোর্সিং শিল্প বিকাশে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে: শিল্প উপদেষ্টা

রাতে চীন যাচ্ছেন মির্জা ফখরুলসহ ৯ সদস্যদের প্রতিনিধি

রাতে চীন যাচ্ছেন মির্জা ফখরুলসহ ৯ সদস্যদের প্রতিনিধি

দাকোপে ভয়াবহ নদী ভাঙন: হরিয়ে যাচ্ছে ভিটেমাটি, ভেসে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ

দাকোপে ভয়াবহ নদী ভাঙন: হরিয়ে যাচ্ছে ভিটেমাটি, ভেসে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ

খুলনার সাংবাদিক মামুন রেজার দাফন সম্পন্ন

খুলনার সাংবাদিক মামুন রেজার দাফন সম্পন্ন

নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আটক ৪

নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আটক ৪

হরিনাকুন্ডু উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

হরিনাকুন্ডু উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

তেহরানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে, রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা

তেহরানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে, রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা

নানা আয়োজনে কবি রুদ্রকে স্মরণ

নানা আয়োজনে কবি রুদ্রকে স্মরণ

আরেক সেঞ্চুরিতে শান্তর বিরল কীর্তির পর বল হাতেও বাংলাদেশের দুর্দান্ত শুরু

আরেক সেঞ্চুরিতে শান্তর বিরল কীর্তির পর বল হাতেও বাংলাদেশের দুর্দান্ত শুরু

যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হবে: ইরানের হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হবে: ইরানের হুঁশিয়ারি