ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১১ আশ্বিন ১৪৩০

মার্কিন ভিসানীতি দুরভিসন্ধিমূলক : আমির হোসেন আমু

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৪ জুন ২০২৩, ০৭:৪৫ পিএম | আপডেট: ০৫ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন ভিসানীতিকে দুরভিসন্ধিমূলক। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট মনে করে এ ভিসানীতি অনাকাঙ্ক্ষিত, যা কারও পক্ষে ব্যবহার করা হচ্ছে।

রোববার (৪ জুন) সকালে ইস্কাটনের নিজ বাসভবনে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘মার্কিন ভিসানীতি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনাহূতভাবে আসায় তা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক মনে হচ্ছে। এটা কারও কারও পক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা মনে করি জাতি সংবিধানের প্রত্যেকটি প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকবে। আমরা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো হস্তক্ষেপ আমরা কামনা করি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভিসানীতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করি। আরেকটা কথা হলো এটাতো ১৪ দল। আওয়ামী লীগের মিটিং না। মনে রাখবেন। আমরা তো রাবার স্ট্যাম্প না। এখানে আরও ১৩টা দল আছে, সবাইতো আওয়ামী লীগ না, এটা আপনাকে মনে রাখতে হবে। এখানে কথা হচ্ছে ১৪ দল যেটা ফিল করে সেটাই বলবে। অন্য দল কে কি বলবে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের আলোচনায় যেটা আসবে সেটা আমরা প্রকাশ করব।’

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা মনে করি যারা নির্বাচনকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে বানচাল করতে চায়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাদের জন্য এটা (ভিসানীতি) সহায়ক হতে পারে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কথাগুলো বলতে চাই। এখানে যদি অন্য কোনো দেশের সন্দেহ থাকে, তাহলে তারা বসে এটা ঠিক করতে পারে যে, সংবিধানের ভেতরে কোথায় কোনো ফাঁকফোকর আছে, সেটা তারা বিবেচনা করুক। সেগুলো দেখুক, আলোচনা করুক। কিন্তু সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হতে হবে।’

সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের জন্য ১৪ দলীয় জোট কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে জোটের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা মনে করি এ জাতি সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কোনো দলই জাতির বাইরে না, জনগণের বাইরে না, দেশের বাইরে না। জনগণের ওপর আস্থা থাকে, সংবিধানভিত্তিক নির্বাচনে আস্থা থাকে সবারই অংশগ্রহণ করা উচিত। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাই। কোনো দলের পক্ষে জনস্রোত থাকলে, এই স্রোতের বাইরে প্রশাসনও যেতে পারে না। সেই দিকেই নির্বাচন ধাবিত হয়।’ বৈঠকে দ্রব্যমূল্য বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ১৪ দল। জোটের পক্ষ থেকে দ্রুত বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান আমির হোসেন আমু।

বাজেট নিয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনা হবে জানিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা যেহেতু পড়াশোনার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা পয়সায় বই বিতরণ করছেন, সবকিছু ঠিক আছে। সেক্ষেত্রে কলম ও কাগজের দাম বৃদ্ধি পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। সংবাদপত্রের ওপর ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমরা মনে করি কাগজ-কলমের দাম কমানো উচিত। আরোপিত কর প্রত্যাহার করা উচিত।’

বিদ্যুৎ সমস্যা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার জন্য ১৪ দলীয় জোট সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। আমির হোসেন আমু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব রকম চেষ্টা করছেন। আমাদের দেখতে হবে সরকার সচেতন কি না, প্রচেষ্টা আছে কি না। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে থাকলে কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।’ তিনি জানান, ‘আগামী ৬ জুন দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ১৪ দল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে বিকেলে একটি জনসভা করবে।’

এসময় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি (একাংশ)-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, গণ আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুক, জাতীয় পার্টি জেপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক রুবেল, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরীসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বিলাসবহুল ৪৯৮ গাড়ি নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে জাহাজ

বিলাসবহুল ৪৯৮ গাড়ি নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে জাহাজ

গাজীপুরে জঙ্গলে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ গ্রেফতার ২

গাজীপুরে জঙ্গলে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ গ্রেফতার ২

র‌্যাব অভিযানে খাটের নিচে থেকে ১ লক্ষ পিস ইয়াবা উদ্ধার, আটক-১

র‌্যাব অভিযানে খাটের নিচে থেকে ১ লক্ষ পিস ইয়াবা উদ্ধার, আটক-১

চার স্বামীসহ ১২ জনকে খুন করেছেন যে নারী সিরিয়াল কিলার

চার স্বামীসহ ১২ জনকে খুন করেছেন যে নারী সিরিয়াল কিলার

ভিসা-মুক্ত নীতির অধীনে প্রথমবার চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানাল থাইল্যান্ড

ভিসা-মুক্ত নীতির অধীনে প্রথমবার চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানাল থাইল্যান্ড

বিজিএমইএ : যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কমেছে এক তৃতীয়াংশ, ইউরোপে ১৪.৫ শতাংশ

বিজিএমইএ : যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কমেছে এক তৃতীয়াংশ, ইউরোপে ১৪.৫ শতাংশ

নভেম্বরের শুরুতে তফসিল, জানুয়ারিতে ভোট : ইসি

নভেম্বরের শুরুতে তফসিল, জানুয়ারিতে ভোট : ইসি

৬ ওভারেই নেই ৩ উইকেট

৬ ওভারেই নেই ৩ উইকেট

বিএনপির খুলনার রোডমার্চ উপলক্ষে মাগুরায় সমাবেশ রোডমার্চ এখন যশোরের পথে

বিএনপির খুলনার রোডমার্চ উপলক্ষে মাগুরায় সমাবেশ রোডমার্চ এখন যশোরের পথে

জাকিরের বিবর্ণ অভিষেক, ফিরলেন তানজিদও

জাকিরের বিবর্ণ অভিষেক, ফিরলেন তানজিদও

যে দোকানে ১০ টাকায় পাবেন গরুর মাংস, ৪৫ টাকায় ইলিশ!

যে দোকানে ১০ টাকায় পাবেন গরুর মাংস, ৪৫ টাকায় ইলিশ!

পদোন্নতি ও বৈষম্য সমাধানের দাবি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি কুমিল্লা ইউনিটের

পদোন্নতি ও বৈষম্য সমাধানের দাবি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি কুমিল্লা ইউনিটের

নোয়াখালীতে ডিটারজেন্ট-কলমের মেশিনসহ বিপুল পরিমাণ নকল পণ্য জব্দ, মালিক পলাতক

নোয়াখালীতে ডিটারজেন্ট-কলমের মেশিনসহ বিপুল পরিমাণ নকল পণ্য জব্দ, মালিক পলাতক

কোরআন শরীফ পোড়ানোয় বন্দীকে মারধর, ছেলের জন্য গর্বিত কাদিরভ

কোরআন শরীফ পোড়ানোয় বন্দীকে মারধর, ছেলের জন্য গর্বিত কাদিরভ

কারাবাখে অভিযান চালাতে আজারবাইজান ‘বাধ্য’ হয়েছে: এরদোগান

কারাবাখে অভিযান চালাতে আজারবাইজান ‘বাধ্য’ হয়েছে: এরদোগান

লন্ডন পুলিশে ‘বিদ্রোহ’, সংঘাতের আশঙ্কায় তৈরি সেনাবাহিনী

লন্ডন পুলিশে ‘বিদ্রোহ’, সংঘাতের আশঙ্কায় তৈরি সেনাবাহিনী

২ শিক্ষার্থী খুন! ভাইরাল ছবি ঘিরে ফের উত্তপ্ত মণিপুরে

২ শিক্ষার্থী খুন! ভাইরাল ছবি ঘিরে ফের উত্তপ্ত মণিপুরে

কুখ্যাত নাৎসিকে পার্লামেন্টে সম্মান! এবার রাশিয়ার রোষের মুখে কানাডা

কুখ্যাত নাৎসিকে পার্লামেন্টে সম্মান! এবার রাশিয়ার রোষের মুখে কানাডা

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর হৃদয় হত্যা মামলার রায়: ১২ জনের ১০ বছর, ৪ জনের ৭ বছর সাজা: ৩ জনের বেকসুর খালাস

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর হৃদয় হত্যা মামলার রায়: ১২ জনের ১০ বছর, ৪ জনের ৭ বছর সাজা: ৩ জনের বেকসুর খালাস

পোল্যান্ডের সেনা আধুনিকীকরণে ঋণ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

পোল্যান্ডের সেনা আধুনিকীকরণে ঋণ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র