গুম হওয়া বিএনপি নেতা সুমনের বাসায় পুলিশ

তারেক রহমানের উদ্ধেগ

গুম হওয়া বিএনপি নেতা সুমনের বাসায় পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার

১০ মে ২০২৫, ১২:২১ এএম | আপডেট: ১০ মে ২০২৫, ১২:২১ এএম

র‌্যাব পরিচয়ে সেই ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মহানগর ৩৮ (বর্তমান ২৫) নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনকে। এরপর আর খোঁজ মেলেনি সুমনের। দীর্ঘ এক যুগ ধরে নিখোঁজ সুমনের বাসায় হঠাৎই গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয় তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরে বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ঘটনায় ওয়ারেন্ট তামিল করতে যাওয়া পুলিশ দলের নেতৃত্ব থাকা এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে সুমনের বাসায় পুলিশের ওয়ারেন্ট নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালিন র‌্যাব সদস্যরা ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনকে গুম করে। আজ পর্যন্ত এ সহকর্মীর হদিস আমরা পাইনি। স্বৈরাচারের শাসনকালে শুধু একজন সুমন নয়, ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে এরকম অসংখ্য সুমনদেরকে খুন-গুম-অপহরণ করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে পলাতক স্বৈরাচারের শাসনামলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে গুম হওয়া সুমনের বোনের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে গঠিত হয়েছিলো সামাজিক একটি সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। অত্যন্ত আর্শ্চয্য ও উদ্ধেগের বিষয় হচ্ছে, গুম হওয়া সুমনকে ধরার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুমনের বোনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। পরে প্রশাসন বলছে, তারা নাকি সুমন সম্পর্কে জানতেন না।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ডিএমপির তেজগাঁও থানার এসআই আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল মুলতুবি ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য রাজধানীর তেজগাঁও থানার শাহিনবাগ এলাকায় যায়। এক পর্যায়ে তারা গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের খোঁজে তার বাসায়ও যান।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ওয়ারেন্ট তামিল করতে যাওয়া দলের সদস্যরা সবাই ঢাকা মহানগর পুলিশে নতুন যোগদান করা বিধায় তাদের কেউ জানতেন না যে, এটা এক যুগের বেশি সময় ধরে গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসা। বিএনপি নেতা সুমন সম্পর্কে তাদের পূর্ব ধারণা না থাকায় অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এসআই আকরামকে তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছে। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার প্রত্যেক ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের প্রতি ডিএমপি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে এবং তাদের নিরাপত্তায় ডিএমপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
উল্লেখ্য, বিএনপির ঢাকা মহানগরের তৎকালীন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার একই দিনে আরো কয়েকজন বিএনপি নেতা-কর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে তাদেরও আর কোন খোঁজ নেই।

বিভাগ : জাতীয়