চট্টগ্রামে ময়লার ভাগাড়ে ১০ টন চামড়া

এবারো কুরবানি পশুর চামড়ায় ধস

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১১ জুন ২০২৫, ১২:১৪ এএম | আপডেট: ১১ জুন ২০২৫, ১২:১৪ এএম

কোরবানির পশুর চামড়ার সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও তেমন কোনো কাজে আসেনি। সরকার চামড়ার মূল্য বাড়ালেও বাজারে তার প্রতিফলন নেই। এবারো চামড়া নিয়ে চরম বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে বিক্রি হচ্ছে গরু ও ছাগলের চামড়া। খুলনায় ছোট গরুর চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ এবং বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লায় ছোট, বড়, মাঝারি সাইজের চামড়া গড়পরতা ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকার মধ্যে, চাঁদপুরে গরুর চামড়া খুচরা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা এবং বগুড়ায় গরুর চামড়া আকারভেদে ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর গতবারের মতো এবারো ছাগলের চামড়ার চাহিদা নেই বললেই চলে। অনেকেই বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে দিয়েছেন। দাম কম থাকায় লোকসানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
এদিকে চট্টগ্রামে দাম না পেয়ে হাজার হাজার চামড়া রাস্তায় ফেলে গেছেন কয়েকশ’ মৌসুমি ব্যবসায়ী। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ১০ মেট্রিক টনের বেশি চামড়া রাস্তা থেকে তুলে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন। অনেকে বিক্রি করতে না পেরে পচে যাওয়া চামড়া মাটিতে পুতে ফেলেছেন। চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও গফরগাঁও থেকে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদনÑ
রফিকুল ইসলাম সেলিম, চট্টগ্রামে এবারও মিলেনি কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম। পানির দরে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে কোরবানিদাতাদের। আর দাম না পেয়ে হাজার হাজার চামড়া রাস্তায় ফেলে গেছেন কয়েকশ’ মৌসুমি ব্যবসায়ী। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ১০ মেট্রিক টনের বেশি চামড়া রাস্তা থেকে তুলে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন। অনেকে বিক্রি করতে না পেরে পচে যাওয়া চামড়া মাটিতে পুতে ফেলেছেন।
কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির টাকা পেতেন সমাজের অসহায়, এতিম ও হতদরিদ্ররা। ফলে এবারও বঞ্চিত হয়েছেন তারা। আবার মূল্যবান চামড়া বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় চামড়া শিল্পেরও ক্ষতি হয়েছে। চামড়া ব্যবসা ও শিল্পের সাথে জড়িতরা জানান, বিগত ফ্যাসিবাদি সরকারের সময়ে ভারতের মদদে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ধ্বংস অবস্থা থেকে এই শিল্পকে রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য মাদরাসাগুলোতে বিনামূল্যে লবণ সরাবরাহ দেয়া হয়। চামড়ার দামও নির্ধারণ করে দেয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরু ও মহিষের কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অর্থাৎ সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিটি এক হাজার ১৫০ টাকা। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হয়নি।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোরবানির দিন সকালে কিছু এলাকায় ভালো দামে চামড়া বিক্রি করা হয়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া কিনে তা মজুদ করতে শুরু করেন। দুপুরের পরে মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ব্যবসায়ী চামড়া বিক্রি করতে নগরীর নির্ধারিত স্পটগুলোতে নিয়ে আসেন। সেখানে এসে তাদের মাথায় যেন বাজ পড়ে। কেনা দামের অর্ধেকেও চামড়া বিক্রি হচ্ছে না।
কয়েজন মৌসুমি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছু ব্যবসায়ী নামমাত্র দামে চামড়া বিক্রি করতে পেরেছেন। অনেকে কোন চামড়াই বিক্রিই করতে পারেননি। মোহাম্মদ অপু ৩০টি বড় আকারের চামড়া কিনেছিলেন। দাম পড়ে ৫০০ টাকা। একটিও বিক্রি করতে পারেননি তিনি। অপু বলেন, শুরুর দিকে ২৫০ টাকা দাম উঠেছিল। কিন্তু কয়েকজন বিক্রেতা অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন। দাম আরো বাড়ার কথা বলেন। এ কারণে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। শেষে আর কেউ ১০০ টাকা দিয়েও নেয়নি। তাই সড়কে ফেলে চলে এসেছি। এ ব্যবসা আর করব না।
তার মতো শত শত ব্যবসায়ী রাস্তায় চামড়া ফেলে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যান। চামড়া বিক্রির স্পট হিসাবে পরিচিত নগরীর আগ্রাবাদ চৌমুহনী, সিইপিজেড, পতেঙ্গা, বহদ্দারহাট, আতুরার ডিপো, আন্দরকিল্লা, জামালখান, বাকলিয়া, চকবাজার, অক্সিজেনসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের ওপরই চামড়া ফেলে চলে যান মৌসুমি বিক্রেতারা। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অপেক্ষার পরও বিক্রি করতে না পারায় এসব চামড়ায় পচন ধরে। পরে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা গিয়ে এসব চামড়া অপসারণ করেছেন। আবার অনেক বিক্রেতা নিজেরাই মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন কেনা চামড়া। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্তারা জানান, ওইসব স্পট থেকে ঈদের দিন রাত থেকে পরদিন বিকেল পর্যন্ত ১০ টনের বেশি চামড়া তুলে নিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হয়েছে। বিগত ২০২৩-২৪ সালেও কোরবানি ঈদেও দাম না পেয়ে এভাবে শত শত চামড়া রাস্তায় ফেলে যান ব্যবসায়ীরা।
চামড়ার দাম না পাওয়া বড় বিক্রেতা ও আড়তদারদের ওপর দায় চাপালেন মৌসুমি বিক্রেতারা। তারা বলছেন, আড়তদার ও বড় চামড়া ব্যবসায়ীরা যোগসাজশে দামে ধস নামিয়ে দিয়েছে। এ কারণে পথে বসেছেন শতাধিক বিক্রেতা।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে এক হাজার ১৫০ টাকা। একটি ২০ ফুটের চামড়ায় প্রায় ৫০০ টাকা খরচ পড়ে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন খরচ, আড়তের খরচ সবই অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া ট্যানারি মালিকেরা প্রতিটি চামড়ায় ২০ শতাংশ বাদ দিয়ে দেন। লবণ ছাড়া চামড়া বেশি দামে কেনার সুযোগ নেই। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের এ বিষয়টি আগেই বলা হয়েছে। তাদের অনেকেই বেশি দামে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। তাই ক্রেতা পাননি। আবার অনেকে দেরিতে চামড়া এনেছিলেন। এতে চামড়া পচে গেছে। চামড়া পচে যাওয়ায় কেউ কেনেননি।
আড়তদারদের দাবি, মৌসুমি ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ লবণযুক্ত চামড়ার দামের সঙ্গে কাঁচা চামড়ার দাম গুলিয়ে ফেলেন। এতে অনেক সময় তারা বেশি দামে চামড়া কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবারও সেটা হয়েছে।
এদিকে অনেক মাদরাসা সরকারের দেয়া লবণ মাখিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেছে। আড়তদার সমিতির তরফে বলা হয়েছে তারা প্রায় চার লাখের মতো চামড়া সংগ্রহ করেছেন। তাতে চামড়া সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের হিসাবে এবার চট্টগ্রাম জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল আট লাখ ৯৬ হাজার ২৬৭টি। তবে কত সংখ্যক পশু কোরবানি হয়েছে তার প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার মাদরাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এ বছর কোরবানির সাত লাখ ৭৪ হাজার ৭৫৬টি গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া লবন দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। জেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামের সংগৃহীত চামড়া দুই লাখ ৭২ হাজার ১০০টি, কক্সবাজারে ৩৭ হাজার ৮৮৯টি, নোয়াখালীতে এক লাখ ১৩ হাজার ৮৩১টি, চাঁদপুরে ২৩ হাজার ৬৫টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯৯ হাজার ৭৮১টি, খাগড়াছড়িতে পাঁচ হাজার ৮৪৯টি, ল²ীপুরে ১১ হাজার ৮৩৭টি, ফেনীতে ১৩ হাজার ৫০৯টি, রাঙ্গামাটিতে দুই হাজার ৮৪৮টি, বান্দরবানে দুই হাজার ২৯২টি, কুমিল্লায় এক লাখ ৯১ হাজার ৭৮৫টি।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে এসকল চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে সরকার সরবরাহকৃত বিনামূল্যের লবণ দিয়ে। এ বছর কোরবানির চামড়ার মূল্য বৃদ্ধি এবং এতিমদের হক আদায়ের উদ্দেশ্যে সরকারের পক্ষ থেকে দেশের এতিমখানা, মসজিদ ও মাদরাসাসমূহে বিনামূল্যে ৩০ হাজার মেট্রিকটন লবণ সরবরাহ করা হয়। যাতে করে স্থানীয়ভাবে দুই থেকে তিন মাস চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।
খুলনা ব্যুরো জানায়, কোরবানির ঈদে পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় খুলনার সাধারণ মানুষ, চামড়া ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন। সরকার ঘোষিত বাড়তি দাম বাস্তবে বাজারে প্রতিফলিত হয়নি। বিশেষ করে গরুর কাঁচা চামড়া আগের মতোই কম দামে বিক্রি হয়েছে, আর ছাগলের চামড়া কিনতেই আগ্রহ দেখাননি অধিকাংশ আড়তদার।
নগরীর শেখপাড়া চামড়া পট্টির ব্যবসায়ীরা জানান, খুলনার প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ী এবার চামড়া কেনেননি। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা, লবণের উচ্চমূল্য এবং ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে টাকা না পাওয়াকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা। গরুর কিছু চামড়া কেনা হলেও ছাগলের চামড়া প্রায় অবিক্রিত রয়ে গেছে।
লবণচরা এলাকার মাদানীনগর মাদরাসার শিক্ষক হাসান ইমাম বলেন, সরকার চামড়ার মূল্য বাড়ালেও বাজারে তার প্রতিফলন নেই। পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। হাফেজ শফিকুল ইসলাম জানান, ছোট গরুর চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ এবং বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
চামড়া ব্যবসায়ী ভুট্টু সরকার বলেন, সরকারি দামে কোনো লেনদেন হয়নি। চাহিদা ও বিক্রির লাভ বিবেচনায় ব্যবসায়ীরা নিজেরাই দাম নির্ধারণ করেছেন।
খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম ঢালী জানান, চামড়া সংরক্ষণের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় এবং লবণের দাম বেশি হওয়ায় এবার অধিকাংশ ব্যবসায়ী চামড়া কেনেননি। সরকার কোরবানির আগে দাম বাড়ালেও কোরবানির পর ট্যানারিরা দাম কমিয়ে দেয়, ফলে চামড়া লসে পড়ে। চামড়া বাজারে এই অস্থিরতা ও সঙ্কট নিরসনে সরকারি তদারকি ও কার্যকর নীতিমালা দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বগুড়া ব্যুরো : বগুড়ায় বিগত বছররের মতো এবারো কুরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চামড়া বিক্রি হলেও দাম ছিল খুব কম। আবার গ্রামাঞ্চলে চামড়ার ক্রেতাই ছিল না। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার। এসব চামড়া প্রতিটি পাঁচ টাকাতে বিক্রি হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে চামড়া রাস্তার পাশে ফেলে দিয়েছেন। কেউ মাটিতে পুঁতে রেখেছে। আবার কেউ কেউ অবিক্রিত চামড়া আশপাশের মসজিদে ও মাদরাসায় দান করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, ঈদের দিনে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বগুড়া শহরের বাদুড়তলা, চকসুত্রাপুর, ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গরুর চামড়া আকারভেদে ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বেশি বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। ছাগলের চামড়া সর্বোচ্চ ৩০ টাকা থেকে সর্বনিম্ন প্রতিটি পাঁচ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম কম হলেও ছাগল-ভেড়ার চামড়া কেউ কিনতে চাইনি।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেন, পরিবহন ব্যয়, লবণ, মজুদ সুবিধার ঘাটতি এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্মে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারা আরো জানান, প্রতি বছর খরচ বাড়ছে। কিন্তু দাম কমছে। বছরের এই মৌসুমে ব্যবসা সবাই ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু এবার লাভ তো দূরের কথা উল্টো ক্ষতি হয়েছে।
মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী মিলন জানান, শাজাহানপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম থেকে চামড়া কিনে শহরে নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। বিকেল গড়লেও একটা চামড়াও বিক্রি করতে পারিনি। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে বসে থাকলেও কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে পারেননি। শাজাহানপুর উপজেলার ডোমন পুকুর গ্রামের সামছুল আলম বলেন, এক লাখ ১০ হাজার টাকার গরুর চামড়া ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। কারণ চামড়ার ক্রেতার সংখ্যা কম।
বগুড়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো আসাদুজ্জামান জানান, রাজধানী ঢাকার বাহিরে লবণযুক্ত চামড়া ১১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। লেবার ও লবণ খরচ দিয়ে একটি চামড়ায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা খরচ পরে। লবনের দাম বাদ দিলে একটি চামড়া ৭ থেকে ৮শ টাকার বেশি দামে কেনা যাবে না। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে দেড় দশক আগে সৃষ্ট চামড়া সিন্ডিকেটের ডিজাইনেই এবারও পরিকল্পিতভাবে চামড়ার দাম কমিয়ে ফেলা হয়েছে। বর্তমান সরকার উদ্যোগী হয়েও ভাঙতে পারেনি সিন্ডিকেট ।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে জানান, কুমিল্লায় এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে সিন্ডিকেটের থাবা পড়েছে। প্রচÐ গরমে কোরবানিদাতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এবং পুঁজি লাগিয়ে মুজরি দিয়ে লোকজন রেখে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে কাউন্টার বসিয়ে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে পাইকারি ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করতে এসে কাক্সিক্ষত দাম পাননি মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। চামড়া দায়সারা দরে কিনতে সেই পুরানো সিন্ডিকেটের প্রেতাত্মারা এবারও থাবা ফেলেছে চামড়া কেনাবেচার মৌসুমী ব্যবসায়ীদের ওপর।
গত শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিন দুপুরে সরেজমিনে কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন স্থানে চামড়া কেনাবেচার স্থানগুলোতে গিয়ে চামড়ার মৌসুমী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ঈদের দিন সকাল থেকে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে কোরবানিদাতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিভিন্ন আকারের গরুর চামড়া সংগ্রহ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে আনেন। কিন্তু বেলা ১২টা পর্যন্ত চামড়ার মোটামুটি ভাল দর থাকলেও দুপুর ১টা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে চামড়া বেচাকেনার পরিবেশ সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এসময়ে সিন্ডিকেটের ইশারায় চামড়ার ক্রয়মূল্যে ব্যাপক পতন ঘটে। দুপুর থেকে ছোট, বড়, মাঝারি সাইজের চামড়া গড়পরতা ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকার মধ্যে কিনতে অনড় থাকেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের পুরানো মুখগুলো এবারে নতুনভাবে আবিষ্কৃত হয়েছে। সিন্ডিকেটের এ বলয় এবারেও ভাঙা যায়নি। ঈদের দিন দুপুর থেকে হঠাৎ অদৃশ্য ইঙ্গিতে চামড়ার দর পতন ঘটে। কোরবানিদাতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এবং এলাকার বিভিন্ন মোড়ে কাউন্টার বসিয়ে সঠিক দামে চামড়া কিনে শহরের ঋষিপট্টিসহ আরো কয়েক স্থানে যারা পাইকারি ব্যবসায়ী তাদের কাছে চামড়া নিয়ে ন্যার্য দাম পাননি। চামড়া কম দামে কিনতে হবে এমন অজুহাতের গল্প শুনিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে এবারে ভাল লাভের আশায় পুঁজি খাটিয়ে চামড়া ব্যবসায় নেমে কাক্সিক্ষত লাভের মুখ দেখেননি মৌসমী ব্যবসায়ীরা।
কুমিল্লা শহরে চামড়া কেনাবেচার সবচেয়ে বড় এলাকা ঋষিপট্টিতে দেখা গেছে, মৌসুমী ব্যবসায়ী ও কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে কমদামে চামড়া কিনে বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন পট্টির পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা। চামড়ার কম দাম নিয়ে সিন্ডিকেট ও কারসাজি রয়েছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ঋষিপট্টির পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা টাকা তুলতে না পারা, পুঁজি সঙ্কটসহ লবণের দাম, মজুরি খরচ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন কারণে সরকার নির্ধারিত দামে তারা চামড়া কিনতে পারেননি।
এবারে কোরবানির মৌসুমে ঢাকার বাইরে চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। চামড়ার আকার বড় হলে দাম আরো বেশি পাওয়া যাবে। তবে কোরবানির পরপর সাধারণত লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়। এধরনের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় না। ক্রেতা-বিক্রেতারা দর-কষাকষির মাধ্যমে দাম চ‚ড়ান্ত করেন। আর এখানেই সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মৌসুমী ব্যবসায়িরা চামড়ার প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন।
এদিকে ঋষিপট্টির পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা ইনকিলাবকে জানান, ঈদের দিন থেকে পরদিন রোববার বেলা বারোটা পর্যন্ত শুধুমাত্র ঋষিপট্টিতেই প্রায় ২০ হাজার গরুর চামড়া ও হাজার খানেক ছাগলের চামড়া কিনে তা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ঋষিপট্টি ছাড়াও শহরের কাঁসারীপট্টি, শহরতলীর দৌলতপুর, লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার, চান্দিনা ও দাউদকান্দিতে চামড়ার পাইকারি বৗবসায়ীরা প্রায় ৬০-৭০ হাজার কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ করেছেন। পরে এসব চামড়া ঢাকায় ট্যানারিতে পাঠাবেন।
স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুরে চামড়ার সরকারি মূল্য উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের পক্ষ থেকে চামড়ার নির্ধারিত দাম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে এ অবস্থা বিরাজ করছে বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বড় আকারের কোরবানির পশুর চামড়া সর্বোচ্চ মূল্য ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে ফরিয়ারা অভিযোগ করে জানান।
চাঁদপুর জেলার মধ্যে গরুর চামড়ার সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত শহরের পালবাজারে। এ বাজারে দু’জন ব্যবসায়ী গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে আসছেন। তাদের সংগ্রহের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার। এ বছর কোরবানির একেকটি গরুর চামড়া খুচরা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দরে। ঈদের দিন বেশি চামড়া সংগ্রহ করেছেন এ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এরপর সংগ্রহ কমে এসেছে। তবে গরুর চামড়া বিক্রি হলেও ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছেনা।
ঈদের দ্বিতীয় দিন সোমবার বিকেলে শহরের পালবাজারের দুটি আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। ওই সময় আড়তগুলোতে শ্রমিকদের চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ দিয়ে প্রস্তুত করতে দেখা যায়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের লালপুর থেকে চামড়া নিয়ে এসেছেন জিয়া রহমান। তিনি বলেন, আমাদের গতকাল কোরবানি হয়নি। রোববার কোরবানি শেষে চামড়া নিয়ে এসেছি। মাঝারি সাইজের গরুর চামড়া বিক্রি করেছি ৩০০ টাকা দরে। এ ধরনের চামড়া সাত-আট বছর আগে কমপক্ষে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের পালবাজারের সবচেয়ে বড় পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ী ছিলেন, মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন পাটওয়ারী। তিনি কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। তার চামড়ার ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে এ বাজারে চামড়ার ব্যবসা করেন বাচ্চু সরদার এবং মো. মাসুদ গাজী। এছাড়া সদর উপজেলার ঢালীরঘাট এলাকার মিরাজ এবং বিপনীবাগ বাজার এলাকার মো. আনোয়ার এ বছর খুচরা চামড়া কিনেছেন।
পালবাজারের চামড়া ব্যবসায়ী মাসুদ গাজী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে চামড়ার দাম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ওই দামে কেনা সম্ভব হচ্ছেনা। সরকারিভাবে চামড়া কেনা হয় না। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রিমূল্য নির্ধারিত হয়। তবে এ বছর আমরা চামড়া আকার অনুসারে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে কিনেছি। এরপর সাত থেকে ১৫ দিন এসব চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করে রাখতে হবে। তিনি জানান, তার কেনা চামড়ার পরিমাণ প্রায় তিন হাজার।
একই বাজারের অপর ব্যবসায়ী বাচ্চু সরদার বলেন, আমি বিগত ৩০ বছর যাবত চামড়ার ব্যবসার সাথে জড়িত। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে চামড়ার ব্যবসা নষ্ট হয়ে গেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখন আর ব্যবসায় আগ্রহী না কেউ। পুরো জেলাজুড়ে একই চিত্র। আমরাও একই দামে চামড়া কিনেছি।
তিনি আরো বলেন, এবার তিন হাজারের বেশি চামড়া কিনেছি। লবণ কিনেছি দেড় লাখ টাকার। শুধু ঈদের দিনেই শ্রমিকদের খরচ দিয়েছি এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। শহরের পুরানবাজার ও পালবাজারের একাধিক ঘরে আমার চামড়াগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব চামড়া ঢাকায় বিক্রি করব। আশা করছি, সব চামড়া বিক্রি করে খরচ শেষে কিছুটা হলেও লাভ থাকবে।
স্টাফ রিপোর্টার, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) থেকে জানান, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কোরবানী ঈদের গরু ও ছাগলের চামড়া নাম মাত্র দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কোরবানি দেওয়া মালিকগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এক লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকা আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়নি। কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হয়নি। মৌসুমী খুচরা চামড়া ক্রেতা মো. শামীম জানান, গরুর চামড়া ক্রয় করে আমরা লোকসানে পড়েছি। এখনো চামড়ার বড় ধরনের সিন্ডিকেট রয়ে গেছে।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নীলফামারী সরকারী কলেজের জায়গা হস্তান্তর না করার দাবীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নীলফামারী সরকারী কলেজের জায়গা হস্তান্তর না করার দাবীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নাসিরনগর সড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ে সেনাবাহিনী নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান

নাসিরনগর সড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ে সেনাবাহিনী নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গণপিটুনিতে নিহত ডাকাত , দোকান মালিক সহ আটক-২

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গণপিটুনিতে নিহত ডাকাত , দোকান মালিক সহ আটক-২

ইরানের পুনর্গঠন সক্ষমতায় বিস্মিত ইসরায়েল : মার্কিন বিশ্লেষক

ইরানের পুনর্গঠন সক্ষমতায় বিস্মিত ইসরায়েল : মার্কিন বিশ্লেষক

ধামরাই থানায় ৫ মাস যাবৎ পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত নেই

ধামরাই থানায় ৫ মাস যাবৎ পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত নেই

লন্ডন থেকে দেশে ফিরে যে বার্তা দিলেন আমীর খসরু

লন্ডন থেকে দেশে ফিরে যে বার্তা দিলেন আমীর খসরু

দুই উপদেষ্টার বক্তব্যে আমরা আশাহত" - এক আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় সিলেটে বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ

দুই উপদেষ্টার বক্তব্যে আমরা আশাহত" - এক আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় সিলেটে বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ

সাংবাদিকদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করলেন সমু চৌধুরী

সাংবাদিকদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করলেন সমু চৌধুরী

স্টেম ইনোভেশন লিগ ২০২৫ -এ প্রথম স্থান অর্জন করল গ্লেনরিচ সাতারকুল

স্টেম ইনোভেশন লিগ ২০২৫ -এ প্রথম স্থান অর্জন করল গ্লেনরিচ সাতারকুল

হামজার পর এবার দেশে আসলেন যুক্তরাজ্যের পিপি রেঞ্জার্স ক্লাবের ফুটবলার সিলেটের তানভীর

হামজার পর এবার দেশে আসলেন যুক্তরাজ্যের পিপি রেঞ্জার্স ক্লাবের ফুটবলার সিলেটের তানভীর

সিলেটে করোনার আক্রান্ত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক : চিকিৎসায় প্রস্তুত শামসুদ্দিন হাসপতাল

সিলেটে করোনার আক্রান্ত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক : চিকিৎসায় প্রস্তুত শামসুদ্দিন হাসপতাল

ভ্যাপসা গরমে হাসপাতালে রোগীর ভিড়, সংকট স্যালাইনের

ভ্যাপসা গরমে হাসপাতালে রোগীর ভিড়, সংকট স্যালাইনের

গুমবিষয়ক স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে: আসিফ নজরুল

গুমবিষয়ক স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে: আসিফ নজরুল

নালিতাবাড়ীতে বিএনপি নেতার উপর আওয়ামী নেতার সন্ত্রাসী হামলা: গ্রেপ্তার দাবি

নালিতাবাড়ীতে বিএনপি নেতার উপর আওয়ামী নেতার সন্ত্রাসী হামলা: গ্রেপ্তার দাবি

চিন্ময় কৃষ্ণকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

চিন্ময় কৃষ্ণকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

কুলাউড়ায় স্কুলছাত্রী আনজুম হত্যার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারী যুবক আটক

কুলাউড়ায় স্কুলছাত্রী আনজুম হত্যার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারী যুবক আটক

ইবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে ছাত্রদলের শোক

ইবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে ছাত্রদলের শোক

ঢাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের জুলাই সনদ ও গণহত্যার বিচার দাবি সংবাদ সম্মেলন

ঢাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের জুলাই সনদ ও গণহত্যার বিচার দাবি সংবাদ সম্মেলন

তেল আবিবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন দূতাবাস

তেল আবিবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন দূতাবাস

ঢাবিতে ককটেল বিস্ফোরণ-ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে উত্তেজনা

ঢাবিতে ককটেল বিস্ফোরণ-ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে উত্তেজনা