শ্রমিকদের শোষণ-বঞ্চনার অবসান হবে কি?

Daily Inqilab সরদার সিরাজ

০১ মে ২০২৫, ১২:৫০ এএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৫, ১২:৫০ এএম

আজ ১ মে, শ্রমিকের বিজয়ের দিন। মহাআনন্দের দিন। অনেক সংগ্রাম, নির্যাতন, জেল-জুলুম ও প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ মহান বিজয়। ১৮৮৬ সালের এ দিনে আমেরিকার হে-মার্কেটের শ্রমিকদের বিজয় অর্জিত হয়। কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টাসহ বহু দাবি মেনে নেয় মালিকরা। তার পর থেকেই ঐতিহাসিক এ দিনটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্বব্যাপী। মালিক, সরকার, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সব পেশার দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকলেই এ দিনটি পালন করে জাঁকজমকপূর্ণভাবে। সরকারিভাবে ছুটি থাকে। ফলে দিনটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়। কিন্তু এ বিজয় লাভের দীর্ঘকাল পরও শ্রমিকদের শোষণ, নির্যাতন, ছাঁটাই বন্ধ হয়নি! প্রতিষ্ঠিত হয়নি শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারগুলো। তাই তারা বংশপরম্পরায় শ্রমিকই থাকছে! অথচ, শ্রমিকের অক্লান্ত শ্রমের বিনিময়ে বিশ্ব আজ অত্যাধুনিক হয়েছে। মানুষ ছুটে চলেছে চাঁদে-মঙ্গলে। সেখানে স্থায়ী বাসের প্রক্রিয়া চলছে। চাঁদে ৪-জি ও ৫-জি স্থাপনের কাজ চলছে। এই কল্পনাতীত উন্নতির পরও শ্রমিকরা সব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আর মালিকরা অতি ধনী হয়েছে। ফলে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রতিফলন ঘটেছে জীবনের সর্বত্রই। তবুও প্রতিকার নেই। প্রতিরোধ নেই। ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও, লড়াই কর’ বলে শ্রমিকের গগনবিদারী শ্লোগানও নেই বিশ্বের কোথাও। অথচ, একদা এই শ্লোগানে সারাবিশ্ব প্রকম্পিত হতো। মালিক ও সরকারের হ্নৎপিন্ড কেঁপে উঠতো। অনেক দেশে শ্রমিক রাজও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এখন শ্রমিকের সেই দিন নেই। পুঁজিতন্ত্র ও বিশ্বায়নের জাঁতাকলে পড়ে শ্রমিকের কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট টাম্প প্রবর্তিত বাণিজ্যযুদ্ধ ও শুল্কযুদ্ধ শ্রমিকের মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ যুদ্ধে প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান চরম হুমকির মুখে পড়েছে!

ইতোপূর্বে করোনা মহামারিতেও শ্রমিকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই মরণব্যাধী মোকাবেলায় বহু দেশে দীর্ঘদিন লক ডাউনের কারণে মানুষের জীবন ও জীবিকার ব্যাপক ক্ষতি ও বৈশ্বিক মহামন্দা সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রভাব রয়েছে এখনো। এতে শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসংখ্য শ্রমিক কর্ম হারিয়ে দরিদ্র হয়েছে। ফলে বৈশ্বিক দারিদ্র্য বেড়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণেও পণ্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে ও বৈশ্বিক মহামন্দা বেড়েছে। ফলে শ্রমিকদের দুর্দশাও বেড়েছে! এনজিওগুলোর তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতি চার সেকেন্ডে একজন মানুষ ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে! বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ চরম খাদ্য সংকটে রয়েছে, যাদের অধিকাংশই শ্রমিক। তবুও তাদের মজুরি হ্রাস ও ছাঁটাই অব্যাহত রয়েছে! বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বছরে বিশ্বে গড়ে পায় ২৩ হাজার কোটি শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এর প্রভাব পড়ছে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের উপর। ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল প্রকাশিত আইএলও’র রিপোর্ট মতে, বৈশ্বিক ৩৪০ কোটি শ্রমশক্তির মধ্যে ২৪০ কোটির বেশি কর্মক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে রয়েছে। তন্মধ্যে বছরে প্রায় ১৯ হাজার জনের মৃত্যু হচ্ছে! এছাড়া, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বোরচিত আক্রমণ চলছে অনেক দিন থেকে। গাজা তো পুরাপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। অপরদিকে, বৈশ্বিক পণ্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে। এসবের সর্বাধিক শিকার হয়েছে শ্রমিকরা। অন্যদিকে, শ্রমিকের প্রধান ক্ষতিকারক হয়ে উঠেছে প্রযুক্তি। কারণ, প্রযুক্তির ব্যবহার যতই বাড়ছে শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা ততই কমছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, ‘২০২৫ সালের মধ্যে যন্ত্রের কাছে চাকরি হারাবে প্রতি ১০ জনের ৬ জন। তখন কর্মস্থলে মানুষ ও মেশিন প্রায় সমান কাজ করবে’। উপরন্তু ‘৫০% কর্মীকে ২০২৫ সালের মধ্যে নতুন দক্ষতা শিখতে হবে। একসময় যা মূল দক্ষতা হিসেবে বিবেচিত হতো তাও পরিবর্তিত হবে’। অন্য এক তথ্য মতে, ‘২০৩০ সাল নাগাদ ৮০ কোটি শ্রমিক কর্ম হারাবে প্রযুক্তির কারণে’। আইএমএফের মতে, ‘এআই সব কর্মক্ষেত্রের ৪০% দখল করবে। উন্নত অর্থনীতিতে তা ৬০% হতে পারে’। সর্বোপরি এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘এজিআই ও উন্নত এআইয়ের উত্থান পারমাণবিক অস্ত্র প্রবর্তনের মতো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে দুর্বল করে দিতে পারে’। তবুও প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও ব্যবহার বেড়েই চলেছে, যার অন্যতম এআই ও এআইচালিত চ্যাট জিপিটি। এসব তৈরি ও ব্যবহারে প্রচ- প্রতিযোগিতা চলছে বিশ্বব্যাপী। প-িতদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে এআই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবে। তাতে শ্রমিকরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওপেনএআই এর মতে, এআই ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ৮০% কর্মসংস্থান দখল করবে। গোল্ডম্যান স্যাকস বলেছে, এআই ৩০ কোটি চাকরির জায়গা নেবে। প্রযুক্তিউদ্ভাবক বর্তমান বিশ্বের প্রধান ধনী ইলন মাস্ক বলেছেন, মানব সভ্যতা ধ্বংস করার মতো ক্ষমতা রয়েছে এআইয়ের। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, প্রযুক্তি ও কৃত্রিম মেধার দ্রুত উন্নতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের ভাঙন ত্বরান্বিত হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ‘প্রবল’ ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও এআইয়ের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। মিডিয়াতেও এআইয়ের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে সাংবাদিকদেরও চাকরি চরম হুমকির মুখে পড়েছে!

বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৮ কোটি, যার অধিকাংশের অবস্থা করুণ! কারণ, দেশের ভারী শিল্পের বেশিরভাগই বন্ধ হয়ে শ্রমিকরা বেকার হয়ে রয়েছে দীর্ঘকাল। এখন শিল্প বলতে প্রধানত: টিকে আছে গার্মেন্ট। কিন্তু তারও অনেকগুলো বন্ধ হয়েছে পরিবেশ ও নিরাপত্তা রক্ষার যাচাইয়ের কারণে। এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে শ্রমিকের উপর। অন্যদিকে, সানেমের মতে, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দেশের ৬০% গার্মেন্ট শ্রমিক ছাঁটাই হবে শুধু অটোমেশনের কারণে’। তাই গার্মেন্ট খাতের শ্রমিকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে, যাদের অধিকাংশই প্রান্তিক নারী। এক গবেষণা প্রতিবেদন মতে, সন্তান ও পারিবারিক দায়িত্ব পালনের কারণে চাকরি থেকে ঝরে পড়ছে ৭৯% নারী পোশাক শ্রমিক। এছাড়া, অন্য যেসব শিল্প ও প্রতিষ্ঠান টিকে আছে, তারও শ্রমিকের অবস্থা খারাপ! সর্বোপরি দেশের বেসরকারি খাতের বেশিরভাগ শ্রমিক নিয়োগপত্র পায় না। ফলে চাকরি শেষে কোনো সুবিধাদি পায় না। মাসিক বেতনও নিয়মিত পায় না। তাই বেতনের জন্য তাদের প্রায়-ই আন্দোলন করতে হয়। তাতে অনেককেই পুলিশ ও মালিকের গু-া বাহিনীর হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। বিশ্বব্যাংকের মতে, ‘বিশ্বে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমবাজারের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ক্ষেত্রে চতুর্থ, পেনশনের ক্ষেত্রে ষষ্ঠ ও বেতন কাঠামোর ক্ষেত্রে নবম’। তবুও বাংলাদেশে নতুন পে-স্কেল ও মজুরি ঘোষণা করা হচ্ছে না। অথচ, এসবের সময়কাল ১০ বছর চলছে। ৫ বছর পরপর এসব প্রদানের নিয়ম রয়েছে। অবশ্য, সরকারি কর্মচারীদের জন্য মূল বেতনের ৫% বৃদ্ধি এবং গার্মেন্ট শ্রমিকের জন্য নতুন মজুরি দেওয়া হয়েছে, যা শ্রমিকরা প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে, কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হলেও শ্রমিকরা উপযুক্ত চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও বিচার পায় না। যেমন: রানা প্লাজা ধসের ১২ বছর পার হয়েছে, এখনো অনেকেই ক্ষতিপূরণ পায়নি, কর্ম হারানোরা বেকার রয়েছে, মামলার বিচার সম্পন্ন হয়নি! সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি বলেছে, দেশে গত ১০ বছরে কর্মক্ষেত্রে প্রাণহানির শিকার হয়েছে ৫,৬১২ জন শ্রমিক। কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা প্রত্যেক শ্রমিকের আইনগত অধিকারÑ বলা হলেও তার বাস্তবায়ন নেই! নারী শ্রমিকরা পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় মজুরি কম পায়। নারী শ্রমিকদের জন্য পৃথক টয়লেট ও ডে কেয়ার সেন্টারও নেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে! গৃহকর্মীরা এখনো শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, যার অধিকাংশ নারী। দেশে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ। তবুও এখনো ৪০ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে। তন্মধ্যে ৩০ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। দেশের শ্রমিকদের বিরাট অংশ কৃষিশ্রমিক। কিন্তু তারা অসংগঠিত। প্রবাসী শ্রমিকরাও মূল্যায়িত হয় না। বিভিন্ন দেশে নানা হয়রানি ও নির্যাতনেরও শিকার হয়। এমনকি বিএমইটিতে অভিযোগ করেও বেশিরভাগ প্রবাসী কোনো প্রতিকার পায় না। অথচ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎস প্রবাসীরাই।

দেশের বেসরকারি খাতের বেশিরভাগ শ্রমিক অসংগঠিত। তাদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকারও নেই। সম্প্রতি বিবিসির খবরে প্রকাশ, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩,৮০০ গামেন্ট কারখানা আছে, তন্মধ্যে মাত্র ৬৪৪টিতে ট্রেড ইউনিয়ন আছে। যেখানে যৎসামান্য ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার আছে, তারও অধিকাংশ মালিকের পকেটস্থ। বেশিরভাগ নেতা অশ্রমিক। ব্যতিক্রম কিছু হলেই চাকরিচ্যুতি, হামলা, মামলা নির্ঘাত। কিছুদিন আগে ঢাকাস্থ আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেছেন, ‘বাংলাদেশে গত এক দশকে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বেশ উন্নতি হয়েছে। কিন্তু শ্রম অধিকারের বিষয়টি এখনও পিছিয়েই আছে। আইএলও যেভাবে পরামর্শ দেয় সে অনুযায়ী শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ’। দেশে সরকারি খাতে শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা খুব কল্যাণকর নয়। কারণ, সব প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে অনেক সংগঠন, যার বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফলে তারা শ্রমিকের কল্যাণের চেয়ে দলের কাজেই ব্যস্ত থাকে বেশি। আন্তঃইউনিয়ন কোন্দল, হয়রানি, হানাহানি, মামলা, চাকরিচ্যুতি ইত্যাদিও ব্যাপক। দুর্নীতি, অনিয়ম ও কাজ না করার অভিযোগও রয়েছে অনেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের শ্রমিকের অবস্থা নাজুক! অক্সফামের ‘দ্য কমিটমেন্ট টু রিডিউসিং ইনইক্যুয়ালিটি ইনডেক্স-২০২৪ মতে, ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শ্রমনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ১৬১তম ও শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় ১৫৫তম। আর আইএলও’র ২০২২ সালের তথ্য মতে, আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে সবচেয়ে বিশ্বে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ সপ্তম। আর অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকের অবস্থা সর্বাধিক করুণ! এসব দূর করা জরুরি। বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২ মতে, দেশের শ্রমশক্তির ৮৪.৯% অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। অন্যদিকে, বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সর্বাধিক। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধে।তাই বিশ্ব ব্যাংক খাদ্য নিরাপত্তা-বিষয়ে বাংলাদেশকে লাল তালিকায় রেখেছে তিন বছর যাবত! এতে শ্রমিকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে!

শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে শ্রমিকদেরকেই। অন্য কেউ তা করে দেবে না। তাই দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব শ্রমিককে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি ছিন্ন করে অরাজনৈতিক এক মঞ্চে সমবেত হতে হবে। এছাড়া, সব অসংগঠিত শ্রমিককে সংগঠিত করা, সব শ্রমিককে প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করা এবং উৎপাদনশীলতার হার বৃদ্ধি করা দরকার। ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপোসহীন নেতৃত্ব সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের মৌলিক দাবির ভিত্তিতে নিয়মতান্ত্রিক ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যার অন্যতম হচ্ছ: সব শ্রমিককে নিয়োগ পত্র ও পেনশন প্রদান, আইএলও’র শোভন মজুরি অনুযায়ী জাতীয় নি¤œতম মজুরি ঘোষণা, সর্বত্রই বাস্তবায়ন ও তা নিয়মিতভাবে প্রদান, যখন তখন চাকরিচ্যুতি বন্ধ, নিরাপত্তা ও কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা, সব বন্ধ কল-কারখানা চালু, শিশু শ্রম বন্ধ, সব শ্রমিকের আবাসনের ব্যবস্থা করা, ফ্রি মেডিক্যাল, নিত্য পণ্যের স্থায়ী রেশনিং চালু করা। এছাড়া শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, এটা শ্রমিকদের জন্য খুবই কল্যাণকর।শ্রম উপদেষ্টা বলেছেন, এই প্রতিবেদনের যেসব বিষয় বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে তা করা হবে।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

প্রবাসী শ্রমিকরা এত অবহেলিত কেন?
মে দিবসের গোড়ার কথা
বৈশাখের কালো ঘোড়া
কালবৈশাখী
বৈশাখ
আরও
X
  

আরও পড়ুন

সাভারে ছাত্র জনতা হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

সাভারে ছাত্র জনতা হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সচিত্র দলিল

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সচিত্র দলিল

এনসিপির ‘জাতীয় যুবশক্তি’র ১৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

এনসিপির ‘জাতীয় যুবশক্তি’র ১৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

ওড়ার পর খুলে পড়ল বিমানের চাকা, ঢাকায় জরুরি অবতরণ

ওড়ার পর খুলে পড়ল বিমানের চাকা, ঢাকায় জরুরি অবতরণ

ফারাক্কা বাঁধ এদেশে কারবালা তৈরি করেছে -উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

ফারাক্কা বাঁধ এদেশে কারবালা তৈরি করেছে -উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

মু’মিন হওয়ার জন্য শরিয়তের শিক্ষাকে আঁকড়ে ধরতে হবে : জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

মু’মিন হওয়ার জন্য শরিয়তের শিক্ষাকে আঁকড়ে ধরতে হবে : জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলো সরকার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলো সরকার

বিপ্লবের পরে বাংলাদেশ : সংস্কারের পথে আশা, আন্দোলন ও আলোচনা

বিপ্লবের পরে বাংলাদেশ : সংস্কারের পথে আশা, আন্দোলন ও আলোচনা

ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ -প্রধান উপদেষ্টা

ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ -প্রধান উপদেষ্টা

আদালতকে অবজ্ঞা

আদালতকে অবজ্ঞা

দিল্লি থেকে ৪০ রোহিঙ্গাকে ধরে সাগরে ‘ফেলে দিলো’ ভারত

দিল্লি থেকে ৪০ রোহিঙ্গাকে ধরে সাগরে ‘ফেলে দিলো’ ভারত

ওয়াকফ সংশোধনী আইনের শুনানি ফের পেছাল

ওয়াকফ সংশোধনী আইনের শুনানি ফের পেছাল

ট্রাম্পের শুল্কনীতির জন্য পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে ওয়ালমার্ট

ট্রাম্পের শুল্কনীতির জন্য পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে ওয়ালমার্ট

ফরিদগঞ্জে পুলিশের বাসা থেকে চুরি অস্ত্র ঢাকা থেকে উদ্ধার : আটক ২

ফরিদগঞ্জে পুলিশের বাসা থেকে চুরি অস্ত্র ঢাকা থেকে উদ্ধার : আটক ২

শিশু কিশোরদেরকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে : ডা: আবদুল্লাহ খান

শিশু কিশোরদেরকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে : ডা: আবদুল্লাহ খান

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

সাভারে বন বিভাগের জমি দখলে বাধা বিট কর্মকর্তাসহ আহত ৫

সাভারে বন বিভাগের জমি দখলে বাধা বিট কর্মকর্তাসহ আহত ৫

মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না ইসলামী ঐক্যজোট

মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না ইসলামী ঐক্যজোট

কোন ফ্যাসিস্ট অপশক্তি দ্বিতীয়বার ফিরে আসেনি : ড. হেলাল উদ্দিন

কোন ফ্যাসিস্ট অপশক্তি দ্বিতীয়বার ফিরে আসেনি : ড. হেলাল উদ্দিন

বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে শোকজ

বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে শোকজ