রংপুরকে কাঁদিয়ে টিকে থাকলো খুলনা
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম

ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) উড়তে থাকা রংপুর রাইডার্সকে কাঁদিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিলো খুলনা টাইগার্স। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এলিমিনেটর ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়লো রংপুর। আগে ব্যাট করে প্রতিপক্ষের স্পিন জালে ফেঁসে ১৬.৫ ওভারে মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় রংপুরের ইনিংস। জবাবে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও অস্ট্রেলিয়ান মিডল অর্ডার ব্যাটার অ্যালেক্স রসের মারকুটে ব্যাটিংয়ে ১০.২ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রান তুলে বড় জয় নিশ্চিত করে খুলনা।
এবারের বিপিএলে শুরুটা স্বপ্নের মতোই ছিল রংপুর রাইডার্সের। লিগ পর্বে টানা ৮ ম্যাচ জিতে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছিল তারা। এমন শুরুর পর উড়তে থাকা রংপুরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সবারই ধারণা ছিল এবার অন্তত ফাইনাল পর্যন্ত ঠেকানো যাবেনা রংপুরের ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। তবে ক্রিকেটপ্রেমীদের হতাশ করে লিগ পর্বের শেষ চার ম্যাচে টানা হারে এলিমিনেটরে জায়গা হয় তাদের। এলিমিনেটরে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ হওয়ায় মাঠে নামার আগে স্কোয়াডের শক্তি বাড়ায় রংপুর। নতুন করে তিন বিদেশি তারকাকে উড়িয়ে আনে তারা। আন্দ্রে রাসেল-টিম ডেভিডদের অন্তর্ভুক্তিতে ফেভারিট তকমা নিয়েই কাল খুলনার বিপক্ষে মাঠে নামে রংপুর। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে ফেভারিটের কোনো ছাপই রাখতে পারেনি না তারা। খুলনা টাইগার্সের স্পিন জাদুতে চোখে যেন সর্ষে ফুল দেখেন রংপুরের ব্যাটাররা। খুলনার বোলার নাসুম আহমেদ-মেহেদি হাসান মিরাজদের ঘূর্ণিতে রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেন জেমস ভিন্স, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসানরা। ব্যাট হাতে রংপুরের প্রথম সারির পাঁচজনের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। এমনকি পুরো ইনিংসে তাদের মাত্র দুই ব্যাটার দুই অঙ্কের নিজেদের সংগ্রহ নিতে পেরেছেন। ফলে ব্যাটিং ব্যর্থতায় এলিমিনেটরেই থামতে হলো উড়তে থাকা রংপুরকে।
কাল টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে রংপুর রাইডার্স। ব্যাট করতে নেমে মহাবিপদে পড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে জেমস ভিন্সের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন সৌম্য সরকার (০)। পরের ওভারে নাসুমের শিকার হয়ে ফেরেন ভিন্স। ৭ বলে মাত্র ১ রান করতে পারেন তিনি। দুই ওভারের মধ্যে দলীয় মাত্র ৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে রংপুর যে ব্যাটিং বিপর্যয়ের অভাস দেয় তা শেষ পর্যন্ত আর কাটেনি। দলীয় মাত্র ৫০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে একেবারে খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় তারা। যেখান থেকে ফিরে আসা আর সম্ভব হয়নি। শুরুতে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর হাল ধরতে পারেননি সাইফ হাসান ও শেখ মেহেদীরা। ৩.২ ওভারে নাসুম আহমেদের দারুণ এক ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প উপড়ে যায় মেহেদীর (৫ বলে ১ রান)। পরের ওভারে খুলনার অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মোহাম্মদ নেওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইফও। ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ৪ রান। এ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে কিছুটা ওপরের দিকে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনিও। ৫.২ ওভারে হাসান মাহমুদের বলে এলবিডব্লিউ হন এই ব্যাটার। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। এক চারের মারে ৮ বলে ৮ রানে থামে সাইফউদ্দিনের লড়াই। মাত্র ১৫ রানে টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটারকে হারিয়ে যেন ধুঁকতে থাকে রংপুর। প্লে-অফের জন্য উড়িয়ে আনা হয়েছিল ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব আন্দ্রে রাসেলকে। সেই সঙ্গে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে ব্যাটার টিম ডেভিড। দু’জনই ব্যর্থ হয়েছেন। ডেভিড করেন ৯ বলে ৭ রান আর রাসেল ৯ বলে ৪ রান করে থামেন। তবে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান দলকে টেনে তোলার চেষ্টায় ছিলেন। মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ২ চারের মারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রান। শেষ দিকে লড়াই চালিয়েছেন আকিফ জাভেদ। ১৮ বলে সর্বোচ্চ ৩২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে দলের সংগ্রহকে ৮৫ পর্যন্ত টেনে নেন আকিফ।
খুলনার হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ ১০ ও নাসুম আহমেদ ১৬ রানে পান ৩টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ নওয়াজ এবং মুশফিক হাসান।
জয়ের জন্য ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই অধিনায়ক মিরাজকে হারায় খুলনা টাইগার্স। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ১ রানে আকিফ জাভেদের শিকার হয়ে ফেরার আগে রানের খাতাই খুলতে পারেননি মিরাজ। তবে ইনফর্ম এই ব্যাটারের ব্যর্থতার পরও জয় পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি খুলনাকে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অ্যালেক্স রসকে সঙ্গে নিয়ে বাকি পথটা দাপটের সঙ্গেই পাড়ি দেন নাঈম শেখ। ৫৮ বল হাতে রেখেই তুলে নেন বড় জয়। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন নাঈম। অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটিতে নাঈমের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৩ চাার ও ৪ ছক্কার মারে অপরাজিত ৪৮ রান। আর রস অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ২৯ রান করে। তার ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারির মার। রংপুরের আকিফ জাভেদ ২০ রানে পান একমাত্র উইকেটটি। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন খুলনার স্পিনার নাসুম আহমেদ।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

আলেমসমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রই বাংলাদেশকে ঠেকাতে পারবেনা: এ এম এম বাহাউদ্দীন

অযথা কালক্ষেপণ করে ক্ষমতায় থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা সরকারের নেই: আইন উপদেষ্টা

শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশের খুব কাছে অস্ট্রেলিয়া

ডিআইজিসহ পুলিশের ৪ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা আটক

ভারতে বসে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে হাসিনা: মির্জা ফখরুল

ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে দুবাই যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

বাবার মতোই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হবেন কেজরিকে হারানো পরভেশ?

বগুড়ায় ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল চালু করল রিভো

সৌদি আরব ও আমিরাত সফরে গেলেন বিমান বাহিনী প্রধান

কতটা নির্লজ্জ হলে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয় - আতাউর রহমান

মুসলমানদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা

সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সিঙ্গাপুরের, বাংলাদেশ কত নম্বরে?

ময়মনসিংহে ‘মাইক্লো বাংলাদেশ’র যাত্রা শুরু

টিএমএসএস পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

আমরা ক্ষমতায় গেলে বাদলেসের দাবি পূরণ করবো-খায়রুল কবির খোকন

তিন রাকাত বিশিষ্ট নামাজের প্রথম বৈঠক না করে ইমাম সাহেবের দাঁড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।

মনোহরগঞ্জে অবৈধভাবে পরিচালিত দুটি ইটভাটা বন্ধ ঘোষণা

লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলায় দুই আসামি গ্রেপ্তার

বই পড়ায় অনাগ্রহ বাড়ছে

চাটমোহরে ১৭ আসামি গ্রেফতার