শেষ বিকেলে ব্যাটিং ধস, ৬৪ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার

৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১১ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১১ এএম

সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় লিডের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু স্বাগতিকদের জন্য ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের শেষটা ঠিক কাক্ষিত হয়নি। সবশেষ ২০ রান তুলতেই টাইগাররা হারায় ৪ উইকেট। ফলে গতকাল দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ২৯১ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তারা ৬৪ রানে এগিয়ে রইল। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন সোমবার এবং কাল দ্বিতীয় দিনের প্রায় পুরোটা জুড়ে দাপট ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত’র দলের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এদিন সেঞ্চুরির খরা কাটালেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। তার পাশাপাশি মুশফিকুরর রহিম ও এনামুল হক বিজয়দের মাঝারি মানের ইনিংসে তৃতীয় সেশনের শুরুতেই লিড পায় বাংলাদেশ। যদিও সাদমান বাদে আর কেউই ব্যক্তিগত ফিফটিও পায়নি। দিনশেষে মেহেদি হাসান মিরাজ ১৬ এবং তাইজুল ইসলাম ৫ রানে অপরাজিত আছেন।
কাল দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই নিজেদের প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ২২৭ রানে অলআউট হয়। ৯ উইকেটে এই সংগ্রহ নিয়েই সোমবার তারা প্রথম দিন শেষ করেছিল। দ্বিতীয় তাতে আর বাড়তি রান যোগ হয়নি। তাইজুল ইসলামের ৬ উইকেট শিকারের সুবাদে স্বস্তি নিয়েই ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। নিজেদের ইনিংসের শুরুটাও ভালো করেছিলেন দুই ওপেনার। চলমান সিরিজের মাঝপথে দলে ডাকা হয়েছিল অভিজ্ঞ এনামুল হক বিজয়কে। সাদমানের সঙ্গে তিনি উদ্বোধনী জুটি গড়েন ১১৮ রানের। ২০২২ সালের পর এই প্রথম উদ্বোধনী জুটিতে ১০০ রান পেরোয় বাংলাদেশ। প্রায় তিন বছর পর টেস্ট দলে ফিরে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিলেও ব্যক্তিগত পঞ্চাশের আগেই ফিরেন বিজয়। মুজারাবানির অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বল তিনি ঠিকঠাক খেলতে পারেননি। বল গিয়ে তার পেছনের পায়ে লাগে। এলবিডব্লিউ আউট হওয়ার পর রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। বিজয় আউট হন ৩৯ রান করে। খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ না পাওয়া বিজয়ের ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস এটিই। এমনকি এক ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়েও এর আগে কখনও ৩০ রান করতে পারেননি বিজয়। শুরু থেকেই বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে খুব একটা ভুগতে হয়নি জিম্বাবুয়ের বোলিং আক্রমণের সামনে। সাদমান ইসলাম ফিফটি পেয়েছিলেন লাঞ্চের আগেই। শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। নিয়মিত বিরতিতে আসছিল বাউন্ডারি। শেষ পর্যন্ত ১৪২ বলে পান সেঞ্চুরির দেখা। যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। প্রথম সেঞ্চুরিটাও ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। সেটা ২০২১ সালের জুলাইয়ে হারারেতে। সাদমানের সঙ্গে মোমিনুল হকের জুটিটাও জমে যাচ্ছিল। দু’জনে মিলে গড়েছিলেন ৭৬ রানের জুটি। তবে পরপর দুই ওভারে দুই ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। চা বিরতির আগমুহূর্তে মাসাকাদজার বলে অপ্রয়োজনীয় সøগ সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোমিনুল। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ রান। পরের ওভারের প্রথম বলেই রায়ান বেনেট এলবিডব্লিউ করেন সেঞ্চুরিয়ান সাদমানকে। আউট হওয়ার আগে ১৮১ বলে ১৬ চার ও এক ছক্কায় ১২০ রান করেন সাদমান। টেস্টে যা তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এরপর ৬৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক শান্ত এবং অভিজ্ঞ মুশফিক। দলীয় ২৫৯ রানে শান্ত’র (২৩) বিদায়ে সেই জুটি ভাঙে। তখনই শুরু হয় স্বাগতিকদের ব্যাটিং ধস। ২৫৯/৩ থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানেই স্কোরবোর্ড রূপ নেয় ২৭৯/৭ এ। রানখরার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে সমালোচিত মুশফিক ব্যক্তিগত ফিফটি পাওয়ার কাছাকাছি থেকেই ফিরলেন দুর্ভাগ্যের রানআউটে। ভিনসেন্ট মাসেকেসার ওভারের শেষ বলে ১ রান নিয়ে পরের ওভারে স্ট্রাইক নিতে চেয়েছিলেন মুশফিক। ফলে ৪০ রানেই থামে অভিজ্ঞ এই তারকার ইনিংস। এ ছাড়া জাকের আলি ৫ এবং নাঈম হাসান ৩ রান করে ফিরলে বড় শঙ্কায় পড়ে টাইগাররা। তবে মিরাজ-তাইজুল দিনের বাকি কয়েক ওভার নিশ্চিন্তে পার করেছেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন মাসেসেকা।

বিভাগ : খেলাধুলা