ঢাকা   বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১০ আশ্বিন ১৪৩১
‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ : ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক আলোচনা মূল্যস্ফীতি এবং জ্বালানির ওপর বরাদ্দ বাড়াতে হবে- এফবিসিসিআই সভাপতি

আইএমএফ চাপ দেয়নি : পরিকল্পনামন্ত্রী

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার :

১১ জুন ২০২৩, ১০:১৬ পিএম | আপডেট: ১২ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বাজেটের অনেক ভালো দিক আছে। লাস্ট যেটা ভালো দিক, সেটা রিফর্ম। আরও অনেক ভালো দিক আছে, আমি আনছি না। আইএমএফের অনুরোধে, চাপে নয়। আইএমএফ চাপ দেয়নি, তাদের দায়িত্ব মাঝে-মাঝে আমাদের কনসালটেশন করা। উপদেশ বলুন বা শলাপরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের একটা ভূমিকা আছে, ম্যান্ডেট আছে। যেহেতু আমরা তার সদস্য। সে আলোকে সরকার কিছু কিছু রিফর্মে হাত দিয়েছে এবং বাজেটে সেটার প্রতিফলন আছে। আপনারাও বলেছেন সেটা জরুরি।
গতকাল রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪: ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অনেকে ভালো বলে না, তবে আমি মনে করি এটা একটা অনিশ্চিত জায়গা, কিন্তু সম্ভাবনাময়। কর সংগ্রহ করে কমিশন রাখবে, আবার দেবে। কয়েকটা এজেন্ট থাকবে তারা আবার সাব এজেন্ট দিবে। অনেকটা ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম যেমন আগে ছিল, কালেক্টররা নিতো। কিন্তু, এটা আরও অ্যাডভান্স হবে। করলে পাবে, না করলে পাবে না। যদিও, কেউ-কেউ বলেছেন ভয়-ভীতি সৃষ্টি হবে। আমার মনে হয় না। তিনি বলেন, করপোরেট কর বাড়ানো হয়নি এটাও বাজেটের একটা ভালো দিক। যদিও আমি মনে করি এটা আরেকটু বাড়ানো যেত। আরেকটা ভালো দিক হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিজেরও একটা কমিটমেন্ট আছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আছে। দারিদ্যের মূল জায়গা এখনো গ্রাম, যদিও শহরে দারিদ্র বেড়েছে ইদানীং, আবার কমছেও।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাজেট যখন হয় তখন এনবিআরের সঙ্গে মোটামুটি মার্চ থেকে আলোচনা শুরু হয়। আজকে যে বাজেট, যে রাজস্ব হার বা অন্যান্য ফিগার, আমি মনে করি বাংলাদেশের যে অবস্থা, এগুলো আমাদের টার্গেটের সঙ্গে সমন্বয় করেই রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি মোটাদাগে কিছু জিনিস ঠিক করা দরকার। যে আইটেমগুলো আমাদের রেগুলার দরকার, এগুলো নিয়ে যদি আমরা কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারি তাহলে কিন্তু সমস্যা হয় না। মাইক্রোম্যানেজমেন্ট আমার কাছে মনে হচ্ছে ঠিক হয়নি। আমরা অনেক কিছুই করি, কিন্তু ইম্পলিমেন্ট বা বাস্তবায়ন হয় না। শিল্প মন্ত্রণালয় একটা আইন করে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটা আইন করে, কিন্তু এনবিআরের কাছে গেলে সেটি নিহত হয়। সব কিছুর দায়িত্ব এনবিআরকে দিতে হবে কেন? আমরা কখনোই বলি না, রাজস্ব কালেকশন কম হোক। এবার ৫ লাখ কোটি টাকা ধরা হয়েছে, আমরা সেটার বিপক্ষে না কিন্তু আমাদের ওপর যদি চাপায় দেয়া হয়, সে ভয় আমাদের।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, কর আদায়ে যে আইন আমরা আমাদের ১৭টি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মিটিং করেছি, যাতে আমাদের আইনটা যুগোপযোগী হয়। কিন্তু, সেটা ইতোমধ্যেই সংসদে চলে গেছে। যেখানে এনবিআরকে ঘরের দরজা ভাঙার, জানালা ভাঙার অনুমতি দিয়েছে। সর্বোপরি আমি মনে করি আমাদের এবারের বাজেটে বরাদ্দ পুনর্বিবেচনা করা উচিত। আরও সুনির্দিষ্ট করে বললে আমাদের মূল্যস্ফীতি এবং জ্বালানির ওপর বরাদ্দ বাড়াতে হবে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে, এখানে যদি আমরা নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি দিতে পারি, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
ডি-৮ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বাংলাদেশ মৌলিকভাবেই আমদানি নির্ভর দেশ। জন্মের পর যে টিকা দিতে হয়, কৃষিতে বীজ, সার আমদানি করতে হয়। এর কারণে দেশে টাকার ডি-ভ্যালুয়েশন হচ্ছে। বাজেটটা সামাজিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ফোকাস করে দেওয়া হয়েছে ১১ শতাংশ প্রায়। যে মেগা প্রকল্পগুলো আছে-কক্সবাজার বন্দর, পদ্মা সেতু, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল আসছে, সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে হয়তো প্রাইভেট সেক্টরে ২৭ শতাংশ বিনিয়োগ প্রত্যাশা করা হয়েছে। ওমান এবং কাতারের ক্ষেত্রে জ্বালানি এবং খাদ্য খাতে আরও বেশি কাজ করতে হবে। এছাড়া আমি অনুরোধ করব মন্ত্রী যেন খাদ্য ও জ্বালানি খাত ব্যবসায়ীদের বিবেকের কাছে ছেড়ে না দিয়ে রেগুলেশন করা হয়। আমাদের যা রিসোর্স আছে এবং আগামী কয়েক বছর আমরা টিকে থাকতে পারলে আশা করি অর্থনৈতিকভাবে আমরা ভালো করতে পারব।
বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন, অর্থনীতিবিদ প্রফেসর এম এ রাজ্জাক, বাংলাদেশ প্লাস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ, বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস হোসেন প্রমুখ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ৪ জনকে পালাতে সহায়তা করছিলেন আ. লীগ নেতা!

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ৪ জনকে পালাতে সহায়তা করছিলেন আ. লীগ নেতা!

শান্ত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল, কাজে ফিরেছে শ্রমিকরা

শান্ত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল, কাজে ফিরেছে শ্রমিকরা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ (ভিডিওসহ)

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ (ভিডিওসহ)

শিক্ষার্থী হত্যা মামলা, ‘রূপান্তর’র নির্মাতা রিংকু কারাগারে

শিক্ষার্থী হত্যা মামলা, ‘রূপান্তর’র নির্মাতা রিংকু কারাগারে

শ্রীলঙ্কার সংসদ ভেঙে প্রেসিডেন্ট : চিন্তার ভাজ ভারতীয়দের কপালে

শ্রীলঙ্কার সংসদ ভেঙে প্রেসিডেন্ট : চিন্তার ভাজ ভারতীয়দের কপালে

বসতঘরে মাদকের দোকান, যৌথবাহিনী মাদকসহ আটক করলো যুবককে

বসতঘরে মাদকের দোকান, যৌথবাহিনী মাদকসহ আটক করলো যুবককে

শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিব গ্রেপ্তার

শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিব গ্রেপ্তার

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ৬৮ জনকে আসামী করে আজকের প্রভাতের জেলা প্রতিনিধির মামলা

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ৬৮ জনকে আসামী করে আজকের প্রভাতের জেলা প্রতিনিধির মামলা

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, পায়রা বন্দরে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, পায়রা বন্দরে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

বন্দরে ব্যাটারী কারখানার দূষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে হামলায় আহত ৪০

বন্দরে ব্যাটারী কারখানার দূষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে হামলায় আহত ৪০

জার্মানিতে উত্থান হচ্ছে রাশিয়াপন্থি শক্তির

জার্মানিতে উত্থান হচ্ছে রাশিয়াপন্থি শক্তির

কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগে ১০একর জায়গা উদ্ধার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগে ১০একর জায়গা উদ্ধার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

যুক্তরাষ্ট্র আরও ১৯৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে রোহিঙ্গাদের জন্য

যুক্তরাষ্ট্র আরও ১৯৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে রোহিঙ্গাদের জন্য

বিল ক্লিনটনকে ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার দিলেন ড. ইউনূস

বিল ক্লিনটনকে ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার দিলেন ড. ইউনূস

দ্রুত রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

দ্রুত রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের ৫০তম বার্ষিকীর সংবর্ধনায় প্রধান উপদেষ্টা

জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের ৫০তম বার্ষিকীর সংবর্ধনায় প্রধান উপদেষ্টা

কোয়াড থেকে চীনকে কড়া বার্তা মোদির, মুক্তির আশায় তিব্বত?

কোয়াড থেকে চীনকে কড়া বার্তা মোদির, মুক্তির আশায় তিব্বত?

রোহিঙ্গা সংকট : জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক

রোহিঙ্গা সংকট : জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক

ইউনূস-বাইডেন বৈঠক নিয়ে হোয়াইট হাউস যা বললো

ইউনূস-বাইডেন বৈঠক নিয়ে হোয়াইট হাউস যা বললো

শেরপুর জেল পলাতক ধর্ষণ মামলার ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আহাম্মদ আলী আটক

শেরপুর জেল পলাতক ধর্ষণ মামলার ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আহাম্মদ আলী আটক