সংবাদ প্রকাশের জেরে কুবিতে সাংবাদিক বহিষ্কার
০৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৫ পিএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১১:১৯ পিএম
সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক রুদ্র ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানায়। কুবি সাংবাদিক ইকবালকে বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তথ্য প্রকাশের কারণে একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা ‘শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার’ বা বার্তাবাহককে স্তব্ধ করার চর্চার উদাহরণ। একই সাথে এটি ক্ষমতার অপব্যবহারের পরিচায়ক। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনাকাঙ্খিত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এই প্রতিশোধমূলক ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নিঃশর্ত প্রত্যাহার করা। এদিকে রুদ্র ইকবালকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বহিষ্কারাদেশের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। গতকাল বৃহস্পতিবার ডুজা সভাপতি মামুন তুষার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি।
ডুজা নেতৃবৃন্দ ভিসির দুর্নীতি পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় তাকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়। এছাড়া, দুর্নীতির পক্ষে বক্তব্য এবং সাংবাদিককে বহিষ্কার করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আবদুল মঈনকে জাতির সামনে দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়ার আহ্বানসহ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক রুদ্র ইকবালের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান সংগঠনটি।
কুবি সংবাদদাতা জানান, দুর্নীতি বিষয়ে গত ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মার্কেটিং বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে ভিসি অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দুর্নীতির পক্ষে মন্তব্য করেন। বিষয়টি দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় প্রকাশ করায় এই আদেশ দিয়েছে প্রশাসন।
অফিস আদেশে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই ২০২৩ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান এ ভিসি প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এর বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশে ২ তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।
এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে আমরা কোনো সাংবাদিককে বহিষ্কারাদেশের জন্য সুপারিশ করিনি। আমরা শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন আইনে বা নিয়মে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। এ বিষয়ে প্রতিবেদককে উচ্চপর্যায়ের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে তিনি কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে ইকবাল মনোয়ার বলেন, ‘আমাকে রেজিস্ট্রার দফতর থেকে কল দেয়া হলে আমি গিয়ে আমার বহিষ্কারাদেশ নিয়ে আসি, এর আগে আমার কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন থেকে কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয়নি। আমি সম্পূর্ণ তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করেছি।’
এদিকে ভিসি অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে একাধিক সংবাদকর্মী মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাবি সাংবাদিক সমিতির উদ্বেগ প্রকাশ : সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রুদ্র ইকবালকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বহিষ্কারাদেশের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। ভিসির দুর্নীতি পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি করেন সংগঠনটি। গতকাল বৃহস্পতিবার ডুজা সভাপতি মামুন তুষার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেল সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি।
সংবাদ মাধ্যমের বরাতে বিবৃতিতে বলা হয়, ২ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস আদেশে দেখা যায়, উপাচার্যের বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগের সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মী রুদ্র ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু বহিষ্কারের আগে রুদ্র ইকবালের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি মনে করেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দুর্নীতির পক্ষে বক্তব্য দেওয়া মানে তিনি দুর্নীতি করাকে উৎসাহিত করেছেন। যেটি দেশের আইনে দ-ণীয় অপরাধ। সেই বক্তব্যের জন্য তার জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এটি না করে বরং তিনি একজন সাংবাদিককে কোন ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন। তিনি ওই সংবাদকর্মীর পেশা জীবনে সংঘটিত ঘটনার প্রতিক্রিয়া তার শিক্ষা জীবনের উপর দেখিয়েছে, যা কোন বিচারেই যুক্তিযুক্ত নয়।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রাহাত ফতেহ আলী খানের সম্মানে পাকিস্তান হাইকমিশনারের নৈশভোজ আয়োজন
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে কাপ্তাই ভূমিকা রেখেছিলো, আগামীতেও রাখবে : ঢাবি শিবির সেক্রেটারি
সুন্দরবনকেন্দ্রিক দস্যুতা বন্ধে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হচ্ছে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
মায়োতে সাইক্লোন চিডোর ধ্বংসযজ্ঞে ফ্রান্সে জাতীয় শোক
সাড়ে ৪মাস পর হিলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নাঈমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন
কলাপাড়ায় অগ্নিকান্ডে দু'টি দোকান পুড়ে ছাই
গাছ আর জিও ব্যাগ পেয়ে খুশি খুলনার ছাদবাগানীরা
খুলনায় একাধিক মামলার আসামী সন্ত্রাসী রকি গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলে সুবিধা বঞ্চিত গরীব অসহায়দের শীতবস্ত্র বিতরণ
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর এক বোয়াল ৫২ হাজারে বিক্রি
অচিরেই বিলুপ্ত হবে নেতানিয়াহু শাসন, হুমকি হুতি প্রধানের
এলন মাস্ক কি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন? ট্রাম্প বললেন ‘অসম্ভব’
নাটোরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চালকসহ এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নিহত
এবার সাদপন্থিদের ১০ দফা দাবি
সা'দ পন্থীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও আশুলিয়া থানায় স্মারক লিপি প্রদান
লক্ষ্মীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
পার্লামেন্টে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে জুতোপেটা
সিকদার গ্রুপের ১৫ প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
শীতের তীব্রতায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ,বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা
চিরিরবন্দরে আগাম জাতের আলুর ভালো ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকেরা খুশি