সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ফের নীলক্ষেত অবরোধ পরীক্ষা স্থগিত
২৭ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৫ পিএম | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম
নির্ধারিত সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়ে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণের (প্রমোশন) সুযোগ চেয়ে আবারও রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে বারোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে জড়ো হয়ে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে আশেপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটে মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে।
গতকাল রোববার বেলা ১২ টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে জড়ো হয় আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে বারোটায় গিয়ে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন তারা। এসময় দাবি আদায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানান স্লোগান দিতে থাকে এসব শিক্ষার্থী। আশপাশের সকল যানচলাচল বন্ধ করে আন্দোলন করতে থাকে তারা। এসময় পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গাড়িকে পিছু হটতে বাধ্য করে শিক্ষার্থীরা।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে একটি নোটিশের মাধ্যমে আগামী সাত সেপ্টেম্বর থেকে অনুষ্ঠিতব্য সাত কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দিলে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ায় শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল ২৯ আগস্ট সাত কলেজের সমন্বয়কের সাথে বিষয়টি নিয়ে বসবেন ঢাবি কতৃপক্ষ।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে দুপুর ২ টা দ মিনিট থেকে গণ-আত্মহত্যার হুশিয়ারী দেয় শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখপাত্র মোখলেছুর রহমান রবিন ইনকিলাবকে জানান, দাবি না মানা হলে দুপুর ঠিক ২টা ১ মিনিটে আমাদের গণ-আত্মহত্যার কথা রয়েছে। আমাদের জীবন বৃথা। এ জীবন রেখে কোনো লাভও নেই। তবে শেষ পর্যন্ত এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিছু শিক্ষার্থীকে কাপনের কাপড় পরিয়ে সড়কে শুয়ে ঘাকতে দেখা যায়। এছাড়া তীব্র গরমে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এর আগে দুপুর ১টায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থী মোখলেছুর রহমান রবিন বলেন, আমাদের দীর্ঘ নয় মাস পর রেজাল্ট হয়েছে যা পৃথিবীর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে নজির নেই। আমরা বিগত তিন মাস ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সাত কলেজের সমন্বয়ক ইডেন মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদেরকে বারবার আশ্বাস দিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সুপ্রিয়া ম্যাম আমাদেরকে তিন মাস ধরে ঘুরাচ্ছেন। তিনি আমাদের কোনো সমাধান দিতে পারেননি। আজকের এই বৃহৎ আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার একমাত্র দায় সুপ্রিয়া ম্যামের।
ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, আমাদের একাডেমিক লাইফ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা পড়ার টেবিল ছেড়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। ১৯ বার মিটিং টেবিলে বসতে হয়েছে। আমাদের জীবনের যেন কোনো মূল্য নেই।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, আমাদের সাত কলেজে নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম চালু। আমি বলব, সাত কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটাই সিস্টেম চালু, তা হলো টাকা নেয়ার সিস্টেম। ঢাবির অন্য কোনো নিয়ম আমাদের সাত কলেজে প্রয়োগ হয় না। আমাদের টিচার নেই, তিন থেকে চারজন স্যার-ম্যাডাম সারাদিন ধরে ক্লাস নিতে হয়। আর ওদিকে ঢাবিতে ক্লাস নেয় পিএইচডি গবেষকরা। এই সবকিছুর সমাধানে আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর বিশাল আন্দোলনের ডাক দিব ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষার্থীদের দাবি -সিজিপিএ সিস্টেম শিথিল করতে হবে। প্রথম বর্ষে যারা একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে তাদেরকে পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে উঠার সুযোগ করে দিতে হবে। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বারবার আশ্বাস দিলেও তাদের দাবি মানা হচ্ছে না। যে কারণেই বাধ্য হয়ে তারা দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছে। শিক্ষার্থীরা জানান মানোন্নয়নের মাধ্যমে প্রমোশনের সুযোগ দিতে আমরা তিন মাস ধরে আন্দোলন করছি। আমাদের বারবার কেবল আশ্বাসই দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বিলম্বে ফল প্রকাশ করেছে। আমরা ইতিমধ্যে পরবর্তী বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি এবং ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। এমন পরিস্থিতিতে এসে আমরা আমাদের পূর্বের ইয়ারের রেজাল্ট শুনতে পাই! এতে অনেকের ফল খারাপ হয়েছে (অর্থাৎ প্রমোশনের জন্য নির্ধারিত সিজিপিএ–২ পাননি)। তাই পরবর্তী বর্ষের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসার সুযোগ হচ্ছে না।
এদিকে রাস্তা অবরোধের কারণে চলাচল বিঘœ ঘটায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ থেকে নানা পেশাজীবি মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, নীলক্ষেতের ওপাশে ঢাবির শাহনেওয়াজসহ ৩ টা হল,১ টি ইনস্টিটিউশন আছে। অনেকের ক্লাস শেষ হয়েছে হলে যাচ্ছে, আবার অনেকের ক্লাস থাকায় ক্লাসে যাচ্ছে, কিছু ডিপার্টমেন্টের সেমিস্টার ফাইনাল, মিড আছে, তাই পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে। এইসএসসি পরীক্ষা চলে তাই রাস্তায় এমনিতেও জনসমাগম বেশি। এর মধ্যে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা এমনভাবে রাস্তা ব্লক করে দাড়িয়ে আছে যে হেঁটে যাওয়ারও জায়গা নেই। হলের মেয়েরা বাস থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ার জায়গা চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আমাদের সাথে বেয়াদবি করে এবং আরো শক্ত হয়ে ঐ জায়গায়ই জড়ো হয়। পরে বাধ্য হয়ে ৩০ সেকেন্ডের রাস্তা ১০ মিনিটে ১০০ জন মানুষের সাথে ধাক্কা খেয়ে পার হতে হয়েছে। আমাদের এই দূর্ভোগের কি কোনো সমাধান নেই!
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেট্রোরেল লাইনের আশপাশে ফানুস না ওড়ানোর অনুরোধ
চলতি বছর দেশে স্বর্ণের দাম পরিবর্তন হয়েছে ৬২ বার
সচিবালয়ের পুড়ে যাওয়া ভবন ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব : ইডেন গণপূর্ত বিভাগ
বড় রানে শুরু বিপিএল
ফেনীতে বিএনপি নেতা মজনুর ১০ হাজার কম্বল বিতরণ
পরিস্থিতি শান্ত হলে করিডোর খুলে দেয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তালতলীতে ওসির বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে ট্রাক ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ
দৌলতপুরে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
মির্জাপুরে শীতার্তদের ঘুম থেকে জেগে তুলে ইউএনও’র কম্বল বিতরণ
গাজীপুরে কারখানার ওয়েস্টেজ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ গুলি আহত ৫
এবার ১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করলো বিএফআইইউ
মিথ্যা সাজা খেটেও দেশ থেকে পালায়নি বেগম জিয়া: এবিএম মোশাররফ হোসেন
জুলাই বিপ্লবের ‘ঘোষণাপত্র’ ঘিরে আড়াই লাখ মানুষ জমায়েতের পরিকল্পনা
ফরিদপুর সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু
৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি
৪৩তম বিসিএসের নতুন প্রজ্ঞাপন, বাদ পড়লেন আরও ১৬৮ জন
বাগেরহাট টেলিভিশন জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারন সভা অনুষ্ঠিত
বর্ষসেরার লড়াইয়ে হেডের সঙ্গে রুট-ব্রুক ও বুমরাহ
নরসিংদী আদালত প্রাঙ্গনে হত্যা মামলার আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা, এস.আই আহত
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা