যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আগের চেয়ে বাড়বে : অর্থমন্ত্রী
৩১ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৮ পিএম | আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আগে যা ছিল তার চেয়ে এ বছর আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভেন কোবোস, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত অতুল কেশব, যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন রপ্তানি কাউন্সিল ও ইউএসবিবিসির রোর্ড সদস্য কেভিন রিওপক, মেটার দক্ষিণ এশিয়ার জননীতিবিষয়ক পরিচালক সারিম আজিজসহ প্রায় ৩০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা এসেছেন তারা সবাই চাচ্ছেন, বাংলাদেশে কী করে তাদের ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত করবেন। তাদের আমরা সেই সুযোগের কথা বলেছি। আমি বারবার বলেছি, বাংলাদেশ নজিরবিহীন সুযোগের দেশ। এখানে বিনিয়োগ করলে লোকসানের কোনো আশঙ্কা নেই। যুক্তরাষ্ট্র মূলত কৃষি ও সার্ভিস খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কোন ব্যবসাটা ব্যর্থ হয়েছে, আপনারা বলেন? এ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ, যে কোনো খাতেই আসুক না কেন, কোনটা ব্যর্থ হয়েছে যে খালি পকেটে তারা চলে গেছেন? আমি বারবার বলেছি, বাংলাদেশ নজিরবিহীন সুযোগের দেশ। এখানে বিনিয়োগ করলে লোকসানের আশঙ্কা নেই। এটা ব্যবসার জায়গা। মার্কিন ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা কোন কোন খাতে বিনিয়োগ করতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারা সবক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে চানকৃষি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও মোটরগাড়ি। যারা এখানে দেখা করতে এসেছেন, তারা বিভিন্ন শিল্প ও বিনিয়োগ খাত থেকে এসেছেন। তাদের কেউ ইলেকট্রনিক্স, কেউ বিদ্যুৎ খাত এবং কেউ বিমা খাতে কাজ করেন। তারা সবাই চাচ্ছেন, বাংলাদেশে কী করে তাদের ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত করবেন। তাদেরকে আমরা সেই সুযোগের কথা বলেছি। এখানে অনেক সুযোগ আছে। তারা নাকি ১২ বছর ট্যাক্স হলিডে চেয়েছে প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা এভাবে আইন না করে দিয়ে একেক খাতের জন্য একেক রকম ট্যাক্স হলিডে, যেটা যেটা প্রয়োজন, চাহিদাটা আগে তুলে ধরেছি। মেড ইন বাংলাদেশ এই ধারণাটা তারা যদি সম্প্রসারিত করেন, তাহলে বাংলাদেশের উন্নতি হবে, যারা বিনিয়োগ করবেন, তাদেরও ভালো হবে। এখন এই ধারণাটার মধ্য দিয়ে আমরা চাই, এ দেশে দ্রুততার সঙ্গে কর্মসংস্থান খাতে উন্নয়ন করতে। আমাদের শ্রমশক্তি কোথায় যাবে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, এই শ্রমশক্তিকে কাজে লাগাতে আমরা সুযোগটা তৈরি করেছি। সেখানে এই পরিভাষাটি ব্যবহার করলে আপনারা জবাবও পেয়ে যাবেন। সেখানে কোন খাত থেকে আপনারা ট্যাক্স হলিডে পাবেন, কোন খাতে ট্যাক্স কমানো ও নমনীয় করা হবে। এখন এগুলো আমরা করে ফেলেছি।
মন্ত্রী বলেন, তারা বলেছেন যে আমাদের সুযোগ করে দেবেন, আমরা বিনিয়োগ করব, এ দেশকে আরও উন্নতির শিখরে নিতে চাই। সেজন্য তারা যে সুযোগ সুবিধা আছে সেগুলো চাচ্ছে। কী কী সুযোগ সুবিধা চাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে ইনকাম ট্যাক্সের সুযোগ সুবিধা। তবে তারা এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারে নাই কোনটা তাদের প্রয়োজন। আমরা বলেছি আমাদের এখানে অনেক সুযোগ আছে। এগুলো যদি আরো সুনির্দিষ্ট করতে হয় তাহলে তাদেরকে আরো সময় দিতে হবে বসতে হবে। এনবিআরের সঙ্গে বসে নেগোসিয়েট করলে আগে যেমন হাঙ্গামা ছিল ওয়ার টু জেড, এখন এরকম নাই। এখন প্রতিযোগিতায় চলে আসছে। কিছু কিছু জায়গায় আপত্তি আছে সেগুলো দেখতে হবে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে ‘অর্থমন্ত্রীকে পাওয়া যায় না, আমাদের অর্থনীতি ভালো না’ এমন প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, যিনি বলেছেন আমাদের অর্থনীতি ভালো না তিনি অর্থনীতি পড়েন না। সারা পৃথিবীর স্বীকার করে বাংলাদেশ রোল মডেল। এখন বাংলাদেশের আর কত অর্থনীতি ভালো হবে সেটা বলেন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা সহজ নয়, এ বিষয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কি না অপর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমরা বলেছি, আপনারা বিনিয়োগ নিয়ে আসেন। কোনো চিন্তা করবেন না। যে সমস্যা আছে সেগুলো ঠিক করে নেব।
আমাদের এখানে আমেরিকার বিনিয়োগ কী ছিল! আমাদের যে-সকল পলিসি আছে সেখানে তারা আরো সুনির্দিষ্ট সহায়তা চায়। তারা সব সময় সহায়তা চাইবেই, আমরাও দিতে চাই। আমি আশা করছি, আমেরিকার বিনিয়োগ আগে যা ছিল তার চেয়ে এ বছর বাড়বে। আমেরিকা এ পর্যন্ত কেমন বিনিয়োগ করেছে এবং কোন কোন খাতে আগ্রহ দেখিয়েছে, জানতে চাইলে অর্থনীতি সম্পর্ক বিভাগের সচিব সরিফা খান বলেন, আজকের আলোচনায় বিনিয়োগ বিষয় বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। বিশেষ করে তারা বাংলাদেশে সয়াবিন রপ্তানি করে। বাংলাদেশের কৃষিখাতে অগ্রগতিতে তারা কৃষিখাত নিয়ে আগ্রহী। সয়াবিনের উৎপাদন ও রপ্তানিতে আগ্রহী। এক্ষেত্রে আমাদের কৃষিখাতে কর অব্যাহতি আছে। সেজন্য তারা এটাকে স্বাগত জানিয়েছে। আরেকটা হলো ভিসা কোম্পানি এসেছিল, তারা বাংলাদেশে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস লেনদেন বিষয় ডিল করে থাকে। এক্ষেত্রে ক্যাশলেস লেনদেনে প্রণোদনা চেয়েছে যাতে করে আমাদের এ খাত আরও উন্নতি করে। তিনি বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করার জন্য আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে। তারা বাংলাদেশকে অ্যানালাইসিস করে বলেছে, বাংলাদেশ ৯ম কনজুমার মার্কেট। ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বে নবম কনজুমার মার্কেটের গ্রোদের শেয়ার হতে চায়। তারা এজন্য বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের মেটলাইফ কোম্পানি বাংলাদেশে ১৯৫২ সাল থেকে ব্যবসা করছে, তারা জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো ক্ষেত্র। তারা আমাদের রাজস্ব বোর্ডের পলিসিতে সন্তুষ্ট। মূলত তারা কৃষি ও সার্ভিস খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ভবিষ্যতে আরো বড় বিনিয়োগকারী প্রতিনিধিদল আনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে আগে : হাসনাত আব্দুল্লাহ
বাংলাদেশের নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কথা বলতে চায় না জাতিসংঘ
বেগমগঞ্জে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ আলোচনা সভা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত
মডেল তিন্নি হত্যা মামলা: খালাস পেলেন সাবেক সংসদ সদস্য অভি
ফতুল্লায় শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ
টানা ৪০ রাতের পর সূর্যোদয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর গ্রেফতার
বগুড়ার নন্দীগ্রামে তারুণ্যের ফুটবল প্রতিযোগিতার উৎসব
দেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করল সরকার
কালীগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী
বাউফলে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়কের বহিষ্কার দাবি
স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানালেন জয়
খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন : মির্জা ফখরুল
সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবেনা- কমিশন প্রধান
সিংগাইরে স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
মালি আছে, বাগান নেই
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
নতুন খেলোয়াড় চান গুয়ার্দিওলা
এস আলমের ৬৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, জব্দ ১৬ সম্পদ
সিলেটসহ দেশের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত