অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল সংসদে পাস করতে হবে
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪৫ পিএম | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৫ এএম
বর্তমান আওয়ামী লীগের পতন সন্নিকটে এবং জনগণ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। আতঙ্কে সরকার ও সরকারি দলের নেতারা দিশেহারা। এতে কেউ কেউ পাগলের প্রলাপ বকছেন বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। তারা ক্ষমতাসীন সরকারকে অবিলম্বে জনগণের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল জাতীয় সংসদ পাস করার আহ্বান জানান। অন্যথায় দেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে থেকে ১২ দলীয় জোটের গণমিছিল পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে মিছিলে নেতৃত্ব দেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি বিজয়নগর পানির ট্যাংকি, কাকরাইল মোড় ঘুরে ফের পানির ট্যাংকির সামনে গিয়ে শেষ হয়।
১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটুর পরিচালনায় মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক দলের (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা শওকত আমিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদ খান, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম শিকদার, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীম, বাংলাদেশ এলডিপির সৈয়দ ইবরাহিম রওনক, এম এ বাশার, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাবোনা। এই দাবিতে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আজকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনকে দিয়ে একটা নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি জাতীয় সংসদে আইনের মাধ্যমে পাস করতে হবে।
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এড. সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, এই সরকারের পতন চাই। তিনি বলেন, দেশে চলছে গুন্ডাতন্ত্র। দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকার নেই। যার প্রমাণ সরকারের একজন বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমেরিকার দূতাবাসে গিয়ে আশ্রয় চেয়েছে। তবে জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন ঘটাবে।
জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিংকন বলেন, আজকে দেশের মানুষ এই সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী আপনি পদত্যাগ করে বিদায় নিন এবং জনগণকে মুক্তি দিন।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের অংশগ্রহণমূলক কারচুপি মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের চাপে সরকারের অবস্থা শোচনীয়। নিশ্চিত পরাজয় এবং পতনের পরে জনগণের সামনে তাদের দুঃশাসন ও লুটপাটের জবাবদিহীতার ভয়ে অনির্বাচিত অবৈধভাবে প্রতিনিধিত্বকারী সরকারি দলের নেতৃবৃন্দের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তারা পাগলের মতো প্রলাপ বকছে। কেউ কেউ নিরাপদে দেশ ছাড়ার পথ খুঁজছে। ভারত জুজুর ভয় দেখিয়ে দুইবার বিনা ভোটের নির্বাচন করে পার পেলেও এবারে আটকে গেছে। একদিকে জনগণ অন্যদিকে গণতান্ত্রিক দুনিয়ার চাপে সরকার চোখে সর্ষে ফুল দেখছে।
তারা বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সবগুলি বিরোধী রাজনৈতিক দলের যুগপৎ আন্দোলন অত্যন্ত সফল সুন্দর সার্থক শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলিতভাবে অব্যাহত রয়েছে। সরকারের পক্ষে নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি দলের ক্যাডারদের হামলা মামলা গ্রেফতার অভিযান এবং নানাভাবে হয়রানি উপেক্ষা করে ধৈর্যের সঙ্গে বিরোধী দল নিয়মতান্ত্রিকতা রক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের শৃঙ্খলা দেখে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আন্দোলনকে দুর্বল ও দাবি আদায়ে অক্ষম বলে ব্যাঙ্গ করছে। সরকার লাখ লাখ মানুষের রাজপথের আন্দোলনকে অগ্রাহ্য করে জনগণকে গণ অভ্যুত্থানের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দাবি না মানলে এই মাসের মধ্যে আন্দোলনকে শক্তিশালী ও সর্বব্যাপী করে তোলা হবে। দেশের মানুষ রুখে দাঁড়ালে সরকার পালবার পথ খুঁজে পাবে না। নিজেদের আচরণ ও গণবিদ্বেষী ভূমিকা পালন করে নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তাকে সংকুচিত করে ফেলছে।
অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে দেশে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ অফিসার নিহত অপর এক ঘটনায় নিহত ২
আখাউড়ায় রেলওয়ের জায়গা থাকা ৪০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬
সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন
ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে