রাজপথে ঐক্য গড়ে উঠেছে যেকোন সময় গণবিস্ফোরণ ঘটতে পারে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে ঐক্য গড়ে উঠেছে, যেকোন সময় মানুষের বিস্ফোরণ ছড়িয়ে পড়বে বলে ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেছেন, বাম-ডান বিভক্ত না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই ঐক্যবদ্ধের মধ্যে দিয়ে সরকারকে বিদায় করতে হবে। পাশাপাশি নেতারা আগামী ৭ তারিখের নির্বাচন ঠেকানোর জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) উদ্যোগে ‘দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন: বর্জন, অংশগ্রহণ ও ডামি ভোটাভুটি’ শীর্ষক নির্দেশনামূলক এক আলোচনায় নেতারা এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
নেতারা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামার জন্য মানুষ তৈরি আছে। কিন্তু আস্থা পাচ্ছে না। এজন্য তারা রাজপথে নামছে না। তাদেরকে সে আস্থা দিতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। জনগণ এরই মধ্যে ৭ তারিখের নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে। কারণ এটা তামাশার নির্বাচন, আমি আর ডামির নির্বাচন। তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকার বিদায় করতে পারলে দেশের মঙ্গল হবে। কিন্তু এই সরকার ২০২৪ সালে প্রতারণা করতে চাচ্ছে। এই প্রতারণার সুযোগ দেয়া যাবে না। সবাইকে এক হয়ে রাজপথে নামতে হবে।
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এবার তারা নতুন একটা কৌশল নিয়েছে। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনার বলছেন যে, ভোট কেমন হচ্ছে তা দেখতে বিদেশিরা গুপ্তচর লাগিয়েছে। ভয় পাচ্ছে। কারণ এবার যদি আগের মতো চুরি করতে যায় তাহলে ধরা পড়তে পারে। এজন্য বহু চেষ্টা করছে যাতে কিছু ভোটার ভোটকেন্দ্রে আনা যায়।
তিনি বলেন, নির্বাচনী ইতিহাসে আমরা প্রথম শুনলাম ডামি প্রার্থী। এই ডামি প্রার্থীদের যাতে কেউ বিরক্ত না করে এ ব্যাপারে দেখি ক্ষমতাসীন দলের প্রধান নেতারা বক্তৃতাও করেন। যে কেনোভাবে হোক কিছু ভোটার নিয়ে আসা যায় কি না। কারণ ক্ষমতাসীন দল ছাড়া যারা নির্বাচন করতে যাচ্ছে, এরমধ্যে একটাও বিরোধী দল নাই। জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করছে, তারা ২৬টি আসনে আপস করেছে। জাসদ ৩টা, ওয়ার্কার্স পার্টি ২ এবং মঞ্জু ১টাসহ আরো কয়েকটা আছে। তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে খাতির হয়েছে। আরো যারা দল আছে তাদের কাকে কি বণ্টন করার যায় তার একটা চেষ্টা চলছে। হলো এটা নির্বাচন? আমি আর ডামির নির্বাচন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই ডামির নির্বাচনে আপনার, আমার এবং সাধারণ মানুষের জড়িত হওয়ার তো কোন প্রয়োজন নাই। কারণ কোন চয়েস নাই। আপনি যাকেই ভোট দেন হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবে, না হয় আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী হবে এবং না হয় আওয়ামী লীগের অনুগত দলের কোন প্রার্থী হবে। এখানে ভোট দিয়ে কি লাভ? এই অর্থহীন নির্বাচনে জনগণকে ভোট না দেয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আওয়ামী লীগের মতো দলের অধীনে কোন নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আর এটা কোন ভোট নয়। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সঙ্গে এবারের পার্থক্য হচ্ছে, এতো নিষ্ঠুরতা এবং মিথ্যাচার! নির্বাচনকে ধ্বংস করার মতো কোন কাজ রাজনৈতিক দল করতে পারে? আর এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের দলের রাজনৈতিক নির্বাসন। তাদের পক্ষে কথা বলার মতো কেউ নেই। আবার আমাদের অনেকেই বলছেন, ৭ তারিখের মধ্যে কি সরকারকে ফেলা যাবে? ৭ তারিখের মধ্যে ফেলতে না পারলে এমন নয় যে, ৮ এবং ৯ তারিখ কিংবা এই মাসের মধ্যে ফেলতে পারবো না। তাই সরকারকে যতদিন ফেলে দিতে না পারছি ততদিন লড়াই করবো।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে এই রকম তামাশা আর কখনো দেখা যায়নি। আর আগামী ৭ই জানুয়ারি তারা যে আরেকটা নির্বাচন করতে যাচ্ছে, সেখানে কে বিরোধী দল হবে তাও সরকার প্রধান ঠিক করে দিচ্ছেন। আর যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে তা দেশের ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ লোক জানেন। তাই আমরা এই নির্বাচন প্রত্যাখান করেছি। আওয়ামী লীগ ৭ তারিখে নির্বাচন করে রাজনৈতিক আত্ম হত্যার মধ্যে দিয়ে দেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে বানাতে চাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রাজপথে ঐক্য গড়ে উঠেছে। যেকোন সময় মানুষের বিস্ফোরণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এটা নির্বাচন নয়, এটা একটা নাটক। যে দালালরা এই নির্বাচন দাঁড়িয়েছেন তাদেরকে দেশের মানুষ ঘৃণা করবে। যারা আজকে মঞ্চ বসে আসেন তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন লোভনীয় অফার পেয়েছেন। কেউ নেননি। সুতরাং ৭ তারিখের পরে জনগণের রাগ দেখতে পাবেন।
আলোচনায় ১৪ ও ১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি সংসদ নির্বাচনে উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ-সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের একাউন্টিং ও ফিনান্সের অধ্যাপক একেএম ওয়ারেসুল করিম। এবি পার্টির আহ্বায়ক সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু›র সঞ্চালনায় আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখবেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, খ্যাতিমান আলোকচিত্র ড. শহীদুল আলম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত আব্দুল কাইয়ূম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সচিবালয়ের গেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া-পুলিশের ফাঁকা গুলি
ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদ মারি লা পেনের মৃত্যু
দুদক কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া কর্মকর্তা রিমান্ডে, হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ রিমান্ডে,
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
কুরস্কে ২৪ ঘন্টায় ইউক্রেনের ৪৮৫ সেনা নিহত
পশ্চিম তীরে বন্দুক হামলায় ৩ ইসরাইলি নিহত
ঢাবিতে হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ প্রদর্শনী
জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি
ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে
মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে
গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র
মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা
ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ
পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের
অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল