কক্সবাজারের পেকুয়াতে উদ্বোধন হল দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা
২০ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম

- উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- দেশের নৌবাহীনিতে যুক্ত হল দুইটি শক্তিশালী সাবমেরিন
দেশের নৌবাহীনিতে যুক্ত হল দুইটি শক্তিশালী সাবমেরিন। আর এনিয়ে কক্সবাজারের পেকুয়াতে উদ্বোধন হল দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা। সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে গণভবন থেকে কক্সবাজারের পেকুয়াতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় পেকুয়ার সাবমেরিন ঘাঁটি থেকে যুক্ত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল।
এ উপলক্ষে কক্সবাজারার পেকুয়ার সাবমেরিন ঘাঁটি এলাকাটি সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। দেশের ইতিহাসে প্রথম এই সাবমেরিন ঘাঁটিতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে সাবমেরিনাদের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রও।
২০১৭ সালের ১২ মার্চ চীন থেকে আনা বানৌজা ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামের সাবমেরিন দুটির কমিশনিং করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় সাবমেরিনের এই ঘাঁটি নির্মাণের ঘোষণা দেন সরকার প্রধান।
সাবমেরিনের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থেই বিশেষায়িত ঘাঁটির প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে প্রায় ৭শ’ একর জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা।
যুক্ত হওয়া সাবমেরিন দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবো জাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।
আইএসপিআর থেকে জানানো হয়, ‘‘চীন থেকে কেনা ০৩৫ জি ক্লাসের এ দু'টি সাবমেরিনে আছে নানা সুবিধা৷ শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করার সক্ষমতা রয়েছে টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত এই সাবমেরিনগুলোর৷ ডিজেল ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন দু'টির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার এবং প্রস্থ ৭ দশমিক ৬ মিটার৷ নৌ-বাহিনীতে এগুলো যুক্ত হওয়ার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত সাগর এলাকা নিরবচ্ছিন্নভাবে পাহারা দেওয়া ও আঘাত করার সক্ষমতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে৷''
জানা গেছে, এই সাবমেরিন দু'টি চীন থেকে গত ২২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে আসে৷ এর আগে ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দু'টি হস্তান্তরের আগে চীন ও বাংলাদেশের নৌ-বাহিনীর অফিসার ও নাবিকদের যৌথ তত্ত্বাবধানে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও ‘সি ট্রায়াল' সফলভাবে সম্পন্ন করে বলে জানায় আইএসপিআর৷ এই সাবমেরিন দু'টি কিনতে ২০১৪ সালে ২০৬ কোটি ডলারে চীনের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ৷
এ অঞ্চলে মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের কোনো সাবমেরিন নেই৷ তবে ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইরান ও ইন্দোনেশিয়ার আছে৷ নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে ‘কার আছে, কার নাই এটা মুখ্য নয়৷ তাছাড়া বাংলাদেশ কারুর সঙ্গে যুদ্ধের মানসিকতা নিয়েও সাবমেরিন কেনেনি৷ বাংলাদেশ চায় তার নৌ-সীমা নিরাপদ রাখতে৷ আর এটা সত্য যে, সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ত্রিমাত্রিকতার দিকে যাত্রা শুরু করলো৷'
মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদের
মতে, ‘‘বাংলাদেশের এখন যা সমুদ্রসীমা এবং সমুদ্র সম্পদ, তার পাহারায় সাবমেরিনের প্রয়োজন আছে৷ শত্রু এবং জরদস্যুরা যখন জানবে বাংলাদেশের সাবমেরিন সক্ষমতা সম্পর্কে তখন তারা অনেক কিছু থেকেই নিবৃত হবে৷''
জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তর ও ক্ষমতা বাড়াতে ১০ বছরব্যাপী একটি পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বর্তমান সরকার সাবমেরিন নৌ-ঘাঁটি স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল।
এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১’শ কোটি মার্কিন ডলার। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, সাবমেরিন উপযোগী কর্মকর্তা তৈরি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। সে কারণে আগে থেকেই শুরু হয় প্রশিক্ষণ ট্রেনিং। নৌবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তাদেরকে এ বিষয়ে পারদর্শী হতে ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়েছিল ইউরোপ মহাদেশের একটি নৌ-ঘাঁটিতে।
সশস্ত্র বাহিনী সূত্র মতে এই সাবমেরিন নৌবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে পরিণত করবে। সাবমেরিন হচ্ছে বিশেষ ধরনের ডুবো যুদ্ধজাহাজ যা পানির তলদেশে এবং উপরিভাগে সমানতালে চলতে সক্ষম। বাংলাদেশ বিশ্বের উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ রয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স ও গণচীন ছাড়া বিশ্বের অনেক দেশে। তাই সাবমেরিন সংযোজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের শক্তিশালী দেশের কাতারে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
সাবমেরিন ঘাঁটি বিষয়ে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২ সালের শুরুতে সেনা নিবাস অধিদফতর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চাহিদামতো কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামার প্রায় ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল ওই এলাকা পরিদর্শন করে মগনামা ইউনিয়নের কাকপাড়াকে নৌ-ঘাঁটির জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে বিবেচনা করেন।
দেশের এ বৃহত্তম নৌ-ঘাঁটি পেকুয়ায় হওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি। এর সাথে আরো বহু উন্নয়ন এবং পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এতে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান বাড়ালো বার্সা

নোয়াখালীর বিপণী-বিতানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় হলেও মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

কোচ ছাঁটাই করল লাইপজিগ

কলাপাড়ায় ঈদের চাঁদ উৎসব

পেকুয়ায় জামায়াতের শিক্ষা বৈঠকে রাষ্ট্র গঠনে ঐক্যের আহ্বান

আওয়ামী লীগ যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তার কোনো ক্ষমা নেই: খোকন

যেভাবে একটি অন্যায়ের সম্মিলিত প্রতিবাদ হলো

শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশসহ তার বাহিনীর ১০ জন গ্রেফতার, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার

শেষ মুর্হুতের কেনাকাটায় সিলেট নগরীর রাজপথ থেকে শপিংমলে ক্রেতারা

জাতীয় ঈদগাহে আসবেন না প্রেসিডেন্ট, ঈদের নামাজ পড়বেন বঙ্গভবনে

৩৯২টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সিলেট মহানগরীতে, প্রধান জামাত শাহী ঈদগাহ ময়দানে

শহীদ মীর মুগ্ধের বাসায় জামায়াত আমীর

ডিএসই, সিএসই এবং পিএসএক্স’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

সিলেটে চা বাগানের ভেতরে ৩ ট্রাক ভর্তি ৪৬৭ বস্তা ভারতীয় চিনি রেখে পালালো চালক

অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে: রিজভী

অসৎ ব্যবসার অহংকার সিলেটের হরিপুরের সেই "বুঙ্গার বাজার" গুড়িয়ে দিয়েছে যৌথবাহিনী

লন্ডনে ঈদের নামাজ আদায় করলেন তারেক রহমান

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ-র নিরাপত্তায় ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেশী বন্দুক উদ্ধার

আমরা বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে চাই : ধর্ম উপদেষ্টা