ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১
ক্যাম্পে গুম খুন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘিরে নতুন ষড়যন্ত্র

Daily Inqilab কক্সবাজার ব্যুরো

১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৯ পিএম

  • রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাক তা চায় না মহল বিশেষ
  • প্রত্যাবাসনের পক্ষে কথা বললেই আক্রান্ত সাধারাণ রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সে দেশের সেনা নির্যাতনের কারণে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দেয়। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে এই রোহিঙ্গা মুসলমানরা বসবাস করে আসছে।বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় মানবিক সহযোগিতাও দিয়ে আসছে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্যও সেই থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু দেখা গেছে প্রতাবাসন প্রক্রিয়া কিছুটা এগুলেই ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়। আর এর সাথে দেশি-বিদেশি কিছু এনজিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ গোড়া থেকেই রয়েছে। তারা চায় না রোহিঙ্গা সমস্যার একটি দ্রুত সমাধান। অভিযোগ রয়েছে এ সমস্যার সমাধান হলে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। আর রোহিঙ্গা
মুসলমানরা নিজেদের দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। তাই সেই ষড়যন্ত্রকারী মহল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত হোক সেটা চায় না বলেই সচেতন মহলের ধারণা।

সম্প্রতি চীন ভারতের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অনেক দূরে গিয়েছে। গত মাসে সপ্তাহব্যাপী মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা টেকনাফে অবস্থান করে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তারা যাচাই বাছাই করেছেন তাদের কাছে দেয়া তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গারা আরাকান রাজ্যের নাগরিক কিনা সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।

প্রকৃতপক্ষে এটি ছোট আকারে অত্যাবাসনের অংশ হলেও পর্যবেক্ষক মহলের মতে এটি প্রশংসিত হয়েছে। তারা মনে করেন ছোট আকারের হলেও প্রত্যাবাসন শুরু হোক পর্যায়ক্রমে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চলতে থাকুক। ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা মিয়ানমারের আরাকানে গিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন। এতে তারা কোন আপত্তি জানাননি।

কিন্তু মিয়ানমার প্রতিনিধি দল ফিরে যাওয়ার পরে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হঠাৎ করে বলতে শুরু করেন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের এখনো পত্যাবাসনের সময় হয়নি। সেখানে রোহিঙ্গাদের যাওয়া কল্যাণকর হবে না। হঠাৎ করে তাদের এই বোল পাল্টানো উদ্দেশ্যমূলক এবং রহস্যজনক বলেই মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।

আর সেই থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে শুরু হয়েছে অশান্ত করার পাঁয়তারা। গুম খুন গোলাগুলি অপহরণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম। জানা গেছে সাধারণ রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যেতে উদগ্রীব। তারা আর শিবির বন্দী হয়ে জীবন যাপন করতে চায় না। তারা যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরতে চায়। আর ক্যাম্পের ভিতরে ফিরে যাওয়ার এবং প্রত্যাবাসনের পক্ষে কথা বললেই তাদেরকে গুলি করে খুন করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মহলবিশেষের উস্কানিতে কিছু সন্ত্রাসীরা এসব কর্মকাণ্ড করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিদিন এই এরকম গুম খুন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটানো হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে। এতে করে সাধারণ রোহিঙ্গারা ভয়-ভীতির মধ্যে জীবন যাপন করছে। বিশ্বস্ত সূত্র মতে ২০/২৫টির মত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে। তারা মিয়ানমারের স্বার্থ এবং সেই ষড়যন্ত্রকারী মহলের স্বার্থ রক্ষা করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অশান্ত করে চলেছে। তারা সীমান্ত ভিত্তিক মাদকচড়া চালান নিয়ন্ত্রণ নিয়েও পরস্পর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তবে সম্প্রতি পুলিশের শক্ত প্রতিরোধে সে সন্ত্রাসীদের অনেকেই ধরা পড়ছেন অথবা মারা পড়ছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের ঘাড়ে বসে ব্যবসা করার চেষ্টা করবে - মুশফিকুর রহমান

আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের ঘাড়ে বসে ব্যবসা করার চেষ্টা করবে - মুশফিকুর রহমান

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ

বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ

শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু

শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু

শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে

শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে

এবার বম্বে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের, বাতিল ফ্যাক্ট চেক ইউনিট

এবার বম্বে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের, বাতিল ফ্যাক্ট চেক ইউনিট

যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম

যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম

কাশ্মীরে ভোটের ডিউটিতে যাওয়ার পথে বাস উল্টে নিহত ৪ সীমান্তরক্ষী নিহত

কাশ্মীরে ভোটের ডিউটিতে যাওয়ার পথে বাস উল্টে নিহত ৪ সীমান্তরক্ষী নিহত

লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ভারত যোগ, ঘটনার পরেই উধাও ভারতীয় যুবক

লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ভারত যোগ, ঘটনার পরেই উধাও ভারতীয় যুবক