কক্সবাজার উপকূলে ভেসে আসা বিশাল আকৃতির মৃত তিমির শরীরে মাছ ধরার জাল প্যাঁচানো ছিল এবং মাথায়ও আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানা গেছে। সমুদ্রবিজ্ঞানী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সপ্তাহ খানেক আগে গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার কিংবা ট্রলিং জাহাজের পাখার (প্রপেলার) আঘাতে ও জালে আটকে পড়ে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার ভোরে কক্সবাজার সৈকতের কলাতলী পয়েন্টের (সায়মান বিচ রিসোর্টের সামনে) বালুচরে মৃত তিমির দেহ পুঁতে ফেলা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতে মারা যাওয়া তিমিটি ভাসতে দেখেন স্থানীয় জেলেরা। বিকেল চারটা পর্যন্ত রশি বেঁধে তিমিটি কূলে তুলে আনার চেষ্টা হয়েছিল। তবে বিশাল আকৃতির দেহটি টেনে আনা সম্ভব হয়নি। পরে ভাটা শুরু হলে স্রোতের টানে তিমিটি গভীর সাগরের দিকে ভেসে যেতে থাকে।

বুধবার ভোরে জোয়ারের সময় মারা যাওয়া তিমিটি পুনরায় সৈকতের কলাতলী পয়েন্টের কাছে ভেসে আসে।

সৈকতের একজন বিচকর্মী বলেন, ভোর চারটার দিকে বাতাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ ভেসে এলে তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপর খোঁজ নিয়ে দেখেন, হিমছড়ি সৈকতে আগের দিন ভাসতে থাকা তিমিটি কলাতলী সৈকতে চলে এসেছে।

ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বন ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা এবং পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিমিটি বালুচরে দ্রুত পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করেন।

এর আগে পরীক্ষার জন্য তিমির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা।

ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, গভীর সমুদ্রে বিচরণের সময় সম্ভবত তিমিটি মাছ ধরার ট্রলার কিংবা ট্রলিং জাহাজের ধাক্কা খেয়েছিল। অথবা জাহাজের প্রপেলারে আঘাত পেয়েছিল। মরা তিমির মাথায় আঘাতের একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজের ধাক্কা খেয়ে তিমিটি ওই ট্রলারের জালে আটকে পড়েছিল। এ কারণে তিমিটির মৃত্যু হয়। তিমির নমুনা পরীক্ষা ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

আবার কেউ কেউ বলেন, তিমিটি মাছ ধরার জালে আটকে পড়লে ওই ট্রলারের লোকজন তিমিটির মাথায় আঘাত করায় হয়ত তমিটি মারাযায়।