বরিশালে কৌশলী প্রচারনায় আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি
০৭ মে ২০২৩, ০৭:০৫ পিএম | আপডেট: ০৭ মে ২০২৩, ০৭:০৫ পিএম
আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থী ইতোমধ্যে কৌশলী ও অনানুষ্ঠানিক প্রচারনায় ব্যাস্ত সময় পাড় করলেও ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী এখনো এ নগরীতে পা রাখেননি। আর এ নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে নিরুদ্বিগ্ন এবং অনেকটা অখন্ড অবসর সময় পাড় করছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। তবে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দলীয় কাজে রোববার ঢাকায় থাকলেও সোমবার নগরীতে ফিরে পুনরায় অনানুষ্ঠানিক প্রচারনায় অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তার পক্ষে দলীয় নেতৃবৃন্দ রোববারেও নগীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে গনসংযোগ করেছেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ রোববারে নগরীর স্বÑরোডে মজিদ মমতাজুননেসা বালিকা বিদ্যালয়ে শ্রমিক দলের ৩টি ওয়ার্ডের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সবার দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করেন। আবুল খায়ের প্রতিদিনই কোন না কোন সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহনের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগও করছেন। তার স্ত্রী ও একমাত্র পুত্রও ভোটের মাঠে রয়েছেন।
এদিকে মনোনয়ন লাভের পরে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী সোমবারেই বরিশালে পা রাখবেন বলে কথা রয়েছে। তাকে বরন করতে দলীয় নেতা কর্মীদের পক্ষ থেকে বড় ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে ইতোমধ্যে। এ লক্ষে মোটর সাইকেল র্যালী সহ দলের পক্ষ থেকে নানামুখি প্রস্তুতিও গ্রহন করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে চরমোনাই’র পীর ছাহেবের ছোট ভাই মুফতী ফয়জুল করিমকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চুড়ান্ত করার দশ দিন পরেও তিনি এখনো নগরীতে না অসলেও তৃনমূল পর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন।
তবে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই এবার তাকে বরিশালের ভোটের মাঠে নামতে হচ্ছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের সাথে ভোটর মূল লড়াই ছিল বিএনপি’র। সেখানে আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিপক্ষ না হলেও এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
এতদিন বরিশাল মহানগরী সহ সদর আসনে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও ভোটের শত্রু বিএনপি’কে ইসলামী আন্দোলনও প্রধান প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে আসছে। আর এ প্রেক্ষাপটেই আওয়ামী লীগের শত্রু বিএনপি’র প্রতিপক্ষ ইসলামী আন্দোলনকে কিছুটা মিত্র ভেবে আসছিল আওয়ামী লীগ। ইসলামী আন্দোলনও বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে বরিশালের রাজপথে গত প্রায় ১৫ বছরে নানা কর্মসূচী পালন করে আসছিল নির্বিঘেœ।
কিন্তু আসন্ন সিটি নির্বাচনে ভোটের মাঠে বিএনপি নেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এ নির্বাচনে ত্রীমুখি লড়াই হতে পাড়ে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে। এমনকি বিগত দিনে বরিশালের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি কোন গ্রহনযোগ্য অবস্থানে না থাকলেও এবার বিএনপি বিহীন ভোটে তারা একটি অবস্থান তৈরী করতে যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের হিসেবে এ নির্বাচনে বিএনপি না থাকলেও বিএনপি’র ভোট ব্যাংকে কে কতটা ভাগ বসাতে পাড়বে, তার ওপরই ফলাফল নির্ভর করবে।
কিন্তু বিএনপি’র তরফ থেকে এ নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি কোন ধরনের দিক নির্দেশনা সহ মতামত না থাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি নিয়েও কিছুটা সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে। তবে দল ভোট বর্জনের ঘোষনা দিলেও কাউন্সিলর পদে নগরীর ৪০টি কাউন্সিলর পদেই বিএনপি’র বিপুল সংখ্যক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তারা ভোটারদের কেন্দ্রে নেয়ার চেষ্টাও করবেন। ফলে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট দিতে হলেও বিএনপি’র অনেক ভোটার কেন্দ্রে যাবেন। তাদের মধ্যে কতভাগ মেয়র পদেও ভোট দেবেন এবং সেখানে কোন দলের প্রার্থী কতটা ভাগ বসাতে পাড়বেন, সে বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষনে রেখেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
মহলটির মতে, বিএনপির ভোটাররা আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে ভোট দিলেও তা আওয়ামী লীগের পক্ষে যাবার সম্ভবনা যেমনি কম, তেমনি ইসলামী আন্দোলনকেও সেক্ষেত্রে অনেকটাই হতাশ করার সম্ভবনা রয়েছে। ২০০১-এর জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মুজিবুর রহমান সারোয়ার চরমোনাই ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে সেখানে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা তার ও সংগী কর্মী-সমর্থকদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায়। সে হামলায় সারোয়ার শারিরিকভাবে চরম নিগৃহীত হন। গুরুতর আহতবস্থায় তাকে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়।
সে থেকে ইসলামী আন্দোলনের সাথে বিএনপি’র ইতিবাচক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হয়নি। এমনকি চরমোনাই ইউপি’র বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এককাট্ট হয়ে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিল।
তবে এসব কিছুর পরেও আগামী ১২ জুনের বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিএনপি’র ভোট ব্যাংকে হাত বাড়াবার চেষ্টা রয়েছে মূল তিন প্রার্থীরই। প্রতিদন্ধী তিন প্রার্থী ও তাদের সহযোগীদের মূল হিসেবই হচ্ছে বিএনপি’র ভোটারদের কে কতটা কাছে টানতে পারেন।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বিষয়টি নিয়ে এখনই কোন মন্তব্য করতে রাজী নন। ভোটের সময় যত ঘনিয়ে আসবে, পরিস্থিতির ততই পরিবর্তন ঘটবে বলেও মনে করছে মহলটি। সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হলেও আসন্ন সিটি নির্বাচনে বরিশালের মেয়র পদে জয় পরাজয় যে বিএনপি’র ভোটারদের হাতে থাকছে, তাও মনে করছেন মহলটি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চুয়াডাঙ্গার আন্দুলবাড়ীয়া বালিকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল ডিসপ্লেতে ভেসে উঠল‘আ.লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’
জন্মভিটায় গিয়ে অদ্বৈতের প্রতি শ্রদ্ধা
বিপিএল টি- ২০ উপলক্ষে সমন্বয় সভা করলো বিসিবি
৫৫ দিনের তারুণ্য উৎসবে শত আয়োজন
৫ সমন্বয়কের ফেসবুক আইডিতে আক্রমণ, নেপথ্যে জানা গেল যাদের নাম
এক বছরে ১৫০ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ৮৬
ভারত থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় বেনাপোল সীমান্তে আটক ৭
মতলব দক্ষিণে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত
৫৭৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে রূপালী ব্যাংক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের জন্য হেলথকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন
ঢাবি দাবা প্রতিযোগিতা শুরু
জোকোভিচ-কিরগিওস জুটির বিদায়
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকাভুক্তির সময় বাড়ল
হাসিনার বিরুদ্ধে সিনেমা করে হুমকির মুখে তিশা
ডুয়েটে টেকনিক্যাল সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত
প্রতিদিনের বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হলেন মোরছালীন বাবলা
‘লেখাপড়া না করে দেশ শাসন করতে গেলে আ.লীগের মতো ভুল করার আশঙ্কা রয়েছে’
বিরলে অবৈধ সুদ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বিরলে বুরো বাংলাদেশের আয়োজনে শীতবস্ত্র বিতরণ
বিরল প্রেস ক্লাবে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত