ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১
কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা ও দ্বীপাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে

কক্সবাজারে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা

Daily Inqilab কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা

১২ মে ২০২৩, ০৫:০৮ পিএম | আপডেট: ১২ মে ২০২৩, ০৫:০৮ পিএম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে আগামী রোববার ভোর থেকে দুপুরের মধ্যে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার, মহেশখালী, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ হয়ে মিয়ানমারে আঘাত হানতে পারে। তাই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কক্সবাজার, মহেশখালী, উখিয়া, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ দুশ্চিন্তায় আছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান বলেন, বর্তমান আবহাওয়ার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অনুমান করা যায় আগামী রোববার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানবে। সেক্ষেত্রে এনালাইসিস করে দেখা গেছে, এবারের ঘূর্ণিঝড় কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলবর্তী এলাকা দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই জন্য আমাদের প্রয়োজন সর্বাত্মক জনসচেনতা বোধ, সঠিক আবহাওয়ার তথ্য-উপাত্ত যাতে মানুষের মনে বিভ্রান্তি বা ভয়-ভীতির উদ্বেগ যাতে না হয়। সঠিক তথ্য পেয়ে আমরা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।

মো. আবদুর রহমান আরও বলেন, বিশেষ করে উপকূলবাসি আগামী শনিবার (১৩ মে) দুপুর থেকে ১৪ ও ১৫ মে পর্যন্ত সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে থাকা উচিত।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাত নিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপসহ উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে জলোচ্ছ্বাস ও বাতাসে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে। অপরদিকে মাঝারি আকারের ঝড় বয়ে গেলেও রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলো লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই সাথে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাব্য থাবার শঙ্কায় রয়েছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া-মহেশখালীর দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দারা।

অপরদিকে চারদিকে বেড়িবাঁধবিহীন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দাও রয়েছে চরম উদ্বেগে। দ্বীপবাসী জলোচ্ছ্বাস ও বাতাসের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার অপেক্ষায় রয়েছে। দ্বীপের কর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এ রকম ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যেই তো আমরা বেড়ে উঠছি। সাগরের মাঝখানে আমাদের বসবাস। আমরা দ্বীপ ছেড়ে যাব কোথায়?’

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, জলোচ্ছ্বাস হলে দ্বীপের তিনতলাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল, জেলা পরিষদ, নেভি, পুলিশ ভবনসহ প্রায় ৩০০ হোটেল-কটেজে আশ্রয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ট্রলারযোগে দ্বীপ ছেড়ে টেকনাফ আসতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অনন্ত ২শ পরিবারের দেড় হাজারের কাছাকাছি মানুষ দ্বীপ ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, কত সংখ্যক মানুষ দ্বীপ ছেড়ে টেকনাফ চলে এসেছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান বলা যাচ্ছে না। তবে দ্বীপে ব্যবসার জন্য অবস্থান নেওয়া বাইরের লোকজন এবং স্থানীয় কিছু মানুষ এখানে চলে এসেছেন।

সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা ও দ্বীপাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার উপকূলে ১৯টি পোল্ডারের আওতায় ৩৯০ কিলোমিটারের বেড়িবাঁধ রয়েছে। গত এক বছরে এ পরিমাণ বাঁধের মধ্যে ১৪০টি পয়েন্টের ২২ কিলোমিটার বাঁধের সংস্কারকাজ করা হলেও এখনো পর্যন্ত ৫৬ পয়েন্টের ২৫ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে ভাঙাচোরা অবস্থায়। সবচেয়ে কাহিল অবস্থা কুতুবদিয়া, মহেশখালীর ধলঘাটা-মাতারবাড়ী ও টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার।

মহেশখালীর ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, 'ধলঘাটার উত্তর-পূর্বে গভীর সমুদ্রবন্দরের কারণে রক্ষা পাচ্ছি আমরা। কিন্তু দক্ষিণে ও পশ্চিমে বেড়িবাঁধ না থাকায় আমার এলাকাবাসী বিপদসংকুল অবস্থায় রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ধলঘাটা ইউনিয়নে কোনো কাজ করেনি গত এক বছরেও। এমনকি বোর্ডের কোনো কর্মকর্তাকেও গত ছয় মাসে এলাকা পরিদর্শনেও পাওয়া যায়নি।'

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী ইশতিয়াক নয়ন এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা কুতুবদিয়া, মাতারবাড়ী-ধলঘাটায় সুপার ডাইক (টেকসই বাঁধ) বাঁধের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি।’

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলাতে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। উপকূল ও দূর্গত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য অন্তত ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৫ লাখ ১০ হাজারের মতো। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু কক্সবাজারের দিকে আঘাত হানার কথা বলা হচ্ছে, সেহেতু প্রস্তুতিও আগেভাগে নিতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখন দুর্গত এলাকার লোকজনকে সরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক যানবাহন ও সরঞ্জাম সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।’

মো. আবু সুফিয়ান আরও বলেন, দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৪৯০ মেট্রিক টন চাল, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির (সিপিপি) ৮ হাজার ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রোভার স্কাউট সদস্য, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও অন্তত দেড় হাজার সদস্যকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতায় নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের রেসকিউ টিম, রেসকিউ বোট, মেডিকেল টিম ও কমান্ডো প্রস্তুত রাখা হবে। আশা করি, সবার সহযোগিতা এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ব্যাপক প্রস্তুতি বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে প্রস্তুতি সভা করেছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন। এই সভায় আন্তর্জাতিক সংস্থা, এনজিও সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীসহ ক্যাম্প সংশ্লিস্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় কিভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে হবে এবং ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী কি কি করতে হবে তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।

এব্যাপারে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দ্দৌজা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন। এরই মধ্যে প্রস্তুতি সভাও করা হয়েছে। কারণ ঘূর্ণিঝড়ে ঝড়-বৃষ্টি কিংবা বাতাস হলেই বসতিগুলো বিধ্বস্ত হয়ে যায়। তবে সব বিষয় মাথায় রেখে ক্যাম্পের হাসপাতাল, লার্নিং সেন্টার, ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়, এনজিও সংস্থার কার্যালয়গুলো আশ্রয়কেন্দ্রে ঘোষণা করে ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হবে। এরই মধ্যে ৩ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ দাতা সংস্থাগুলো স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মুহুর্তে কাজ কবরে। আশা করি, সকলের সহযোগিতায় এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা সম্ভব হবে। আর ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি হলে তাও নিরসনে প্রস্তুত রয়েছি। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা, এনজিও সংস্থাগুলোকে নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

'নিরাপদ চাঁদপুর' চাই দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

'নিরাপদ চাঁদপুর' চাই দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

৩ মাসেরও বেশি সময় পর ঢাবিতে ক্লাস শুরু

৩ মাসেরও বেশি সময় পর ঢাবিতে ক্লাস শুরু

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ

৩৫ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক, চলছে সমালোচনা

৩৫ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক, চলছে সমালোচনা

ইবিতে ভিসির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত, মহাসড়ক অবরোধ

ইবিতে ভিসির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত, মহাসড়ক অবরোধ

অভিনেত্রী বাঁধনকে নিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য

অভিনেত্রী বাঁধনকে নিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য

আ.লীগ নেতাদের সম্পর্কে চাঞ্চল্য তথ্য দিলেন যুব মহিলী লীগ নেত্রী

আ.লীগ নেতাদের সম্পর্কে চাঞ্চল্য তথ্য দিলেন যুব মহিলী লীগ নেত্রী

পরিচয় লুকানো ঢাবি শিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক কায়েম?

পরিচয় লুকানো ঢাবি শিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক কায়েম?

‘হিন্দুপ্রধান’ জম্মু দিয়ে বিজেপির পক্ষে ‘মুসলিম প্রধান’ কাশ্মির জেতা কি সম্ভব?

‘হিন্দুপ্রধান’ জম্মু দিয়ে বিজেপির পক্ষে ‘মুসলিম প্রধান’ কাশ্মির জেতা কি সম্ভব?

গাজীপুরে হাজিরা বোনাস বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ

গাজীপুরে হাজিরা বোনাস বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় আসছে চীনের মেডিক্যাল টিম

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় আসছে চীনের মেডিক্যাল টিম

মীলাদুন্নবী মাহফিল থেকে আমরা ঈমানকে পুনর্জ্জীবিত করতে পারি  -সায়্যিদ মাআন আল হাসানী আল মক্কী

মীলাদুন্নবী মাহফিল থেকে আমরা ঈমানকে পুনর্জ্জীবিত করতে পারি -সায়্যিদ মাআন আল হাসানী আল মক্কী

কলাপাড়ায় নবজাতককে রেখে পালিয়ে গেলেন মা

কলাপাড়ায় নবজাতককে রেখে পালিয়ে গেলেন মা

প্রথম সেশনেই বাংলাদেশের গলায় পরাজয়ের মাল্য

প্রথম সেশনেই বাংলাদেশের গলায় পরাজয়ের মাল্য

সিলেটে একদিনে ৫ থানার ওসি বদলি

সিলেটে একদিনে ৫ থানার ওসি বদলি

সংখ্যালঘু কমিউনিটি থেকে ভিসি-প্রোভিসি নিয়োগের দাবি

সংখ্যালঘু কমিউনিটি থেকে ভিসি-প্রোভিসি নিয়োগের দাবি

তেজগাঁও থানার হত্যা মামলা ইনু-মেনন-পলক-দীপু মনি, মামুন-রুপা-শাকিল গ্রেপ্তার

তেজগাঁও থানার হত্যা মামলা ইনু-মেনন-পলক-দীপু মনি, মামুন-রুপা-শাকিল গ্রেপ্তার

নিজ বাড়িতে কোয়াড নেতাদের আমন্ত্রণ জানালেন বাইডেন

নিজ বাড়িতে কোয়াড নেতাদের আমন্ত্রণ জানালেন বাইডেন

ফিরলেন লিটনও, সঙ্গী পাচ্ছেন না শান্ত

ফিরলেন লিটনও, সঙ্গী পাচ্ছেন না শান্ত

থিতু হয়ে ফিরলেন সাকিব

থিতু হয়ে ফিরলেন সাকিব